গণমাধ্যম
অতিরিক্ত আইজিপি হলেন সাবেক সংবাদকর্মী কৃষ্ণ পদ রায়
অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। তিনি ১৯৯৫ সালে ১৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ পান। এর আগে ঢাকায় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের স্টাফ রিপোর্টার পদে বেশ কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগ পুলিশ-১ শাখার উপসচিব মো. মাহাবুব রহমান শেখের সই করা এক আদেশে এ পদোন্নতি দেওয়া হয়।
একই আদেশে আরও ৯ জনকে অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন— ঢাকা পুলিশ টেলিকমের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহিদুর রহমান ও বশির আহম্মদ, ঢাকা ট্রেনিং ড্রাইভিং স্কুলের কমান্ড্যান্ট মো. ময়নুল ইসলাম, ঢাকা স্পেশাল সিকিউরিটি এন্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়নের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক গোলাম কিবরিয়া, ঢাকা অপরাধ তদন্ত বিভাগের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক কুসুম দেওয়ান, ঢাকা পুলিশ অধিদপ্তরের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কেম এম হাফিজ আক্তার ও ড. খ. মহিদিউদ্দিন এবং রংপুর রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. আবদুল বাতেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৩০ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়কে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা হয়।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের হালিতলা গ্রামের গোপাল চন্দ্র রায় এবং রমা রানী রায়ের প্রথম সন্তান কৃষ্ণ পদ রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পুলিশে তার কর্মজীবন শুরু হয় বগুড়ায়।
শেরপুর ও চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কৃষ্ণ পদ রায়। এরপর চট্টগ্রাম মেট্রোপিলিটন পুলিশের (সিএমপি) সহকারী কমিশনার পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের ডেপুটি কমিশনার, ডিবি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কৃষ্ণ পদ রায়।
পরবর্তীতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) হিসেবে দায়িত্ব পালনকাল করেন কৃষ্ণ পদ রায়। ডিআইজি পদমর্যাদায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ক্রাইম ও অপারেশন পদেও দায়িত্ব পালন করেন। গত বছরের ৭ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পূর্ণ দায়িত্ব পান তিনি।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
গণমাধ্যম
পুলিৎজার পুরস্কার পেল রয়টার্স-ওয়াশিংটন পোস্ট
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় চলমান ইসরাইলি নৃশংসতা ছবির মাধ্যমে তুলে ধরার স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স। যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ও বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার সিইও ইলন মাস্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনিয়মের বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্যও পুরস্কৃত করা হয়েছে বার্তা সংস্থাটিকে। এ ছাড়া তিনটি করে পুরস্কার পেয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট ও দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।
স্থানীয় সময় সোমবার (৬ মে) এবারের পুলিৎজার পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পর্যায়ে অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার পুলিৎজার; সাংবাদিকতার ‘নোবেল’ হিসেবে খ্যাত এটি। ১৯১৭ সাল থেকে এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। সাংবাদিকতা ছাড়াও সাহিত্য, সংগীত ও নাটকে বিশেষ অবদানের জন্যও এ পুরস্কার দেওয়া হয়। প্রতিবছর কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির একটি বোর্ড এ পুরস্কার ঘোষণা করে।
এবার পুলিৎজারের ‘ব্রেকিং নিউজ ফটোগ্রাফি’ বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে গাজা সংঘাত নিয়ে রয়টার্সের বেশ কয়েকটি ছবি। এর মধ্যে একটি আলোকচিত্রী মোহাম্মদ সালেমের। তাতে দেখা যায়, গাজায় নিহত পাঁচ বছরের এক শিশুর মরদেহ জড়িয়ে ধরে আছেন এক ফিলিস্তিনি নারী। ছবিটি এ বছর সম্মানজনক ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারও পেয়েছে।
এছাড়া ইলন মাস্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ‘ন্যাশনাল রিপোর্টিং’ বা ‘জাতীয় বিষয়াদি নিয়ে প্রতিবেদন’ বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে রয়টার্স। ‘দ্য মাস্ক ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স’ শিরোনামে ধারাবাহিক ওই প্রতিবেদনে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্স, নিউরালিংক ও টেসলার বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরা হয়েছে।
রয়টার্সের পাশাপাশি ‘ন্যাশনাল রিপোর্টিং’ বিভাগে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছে ওয়াশিংটন পোস্টও। যুক্তরাষ্ট্রের এআর-১৫ রাইফেল এবং দেশটিতে বিভিন্ন বন্দুক হামলায় এই অস্ত্রের ভূমিকা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল সংবাদমাধ্যমটি। এ প্রতিবেদন ছাড়াও ‘এডিটোরিয়াল রাইটিং’ (সম্পাদকীয়) এবং ‘কমেন্টারি’ (মতামত) বিভাগে পুরস্কার জিতেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি।
এ ছাড়া ‘ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং’ (অনুসন্ধানী প্রতিবেদন), ‘ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টিং’ (আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রতিবেদন) ও ‘ফিচার রাইটিং’ বিভাগে পুরস্কার জিতেছে নিউইয়র্ক টাইমস। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলা, ইসরাইলি গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা ও ইসরাইলের পাল্টা হামলা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টিং বিভাগে সেরার পুরস্কার পেয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
আর ‘ব্রেকিং নিউজ’ বিভাগে এবার পুলিৎজার পেয়েছে লুকআউট সান্তা ক্লজ নামের একটি নিউজ পোর্টাল। এবারের পুলিৎজারে অভিবাসীদের নিয়ে ছবি প্রকাশ করে ‘ফিচার ফটোগ্রাফি’ বিভাগে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। ‘এক্সপ্লেনেটরি রিপোর্টিং’ (বিষদ ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন) ও ‘ইলাস্ট্রেটেড রিপোর্টিং অ্যান্ড কমেন্টারি’ বিভাগে পুরস্কার জিতেছেন দ্য নিউইয়র্কারের সাংবাদিকেরা। আর ‘ক্রিটিসিজম’ (সমালোচনা) বিভাগের পুরস্কারটি দখলে গেছে দ্য লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
গণমাধ্যম
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস আজ
আজ ৩ মে, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। ১৯৯১ সালে ইউনেসকোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ মোতাবেক ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ৩ মে তারিখটিকে ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ অর্থাৎ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের স্বীকৃতি দেয়া হয়।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় সাংবাদিকতা’। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে দেশের সাংবাদিকরা পেশাগত অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে।
গণমাধ্যম হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে পুরাতন ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রবাহের মাধ্যম হচ্ছে সংবাদপত্র। পরবর্তীতে এর সঙ্গে রেডিও, টেলিভিশন জনপ্রিয় গণমাধ্যম হিসেবে যুক্ত হয়। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অনলাইন নিউজ পোর্টাল পাঠকদের মধ্যে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে।
সাধারণত মুক্ত গণমাধ্যম বলতে বোঝায়, পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা কোনো প্রকার হয়রানি বা সহিংসতার শিকার হবে না। ভয়ভীতি ছাড়া তারা নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবে। পাশাপাশি তাদের তথ্যে অবাধ প্রবেশাধিকার থাকবে।
১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ঘোষণাপত্রের ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘প্রত্যেকেরই মতামত পোষণ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে; কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়া অবাধে মতামত পোষণ করা এবং রাষ্ট্রীয় সীমানানির্বিশেষে যেকোনো মাধ্যমের মারফতে তথ্য ও ধারণাগুলো জানা বা অনুসন্ধান, গ্রহণ ও বিতরণ করা এই অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।’
বাংলাদেশের সংবিধানেও চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা ও বাক্-স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। ‘চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক্-স্বাধীনতা’ শিরোনামে সংবিধানের ৩৯নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে (১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাদান করা হইল। (২) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশি রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা ও নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত-অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ-সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে (ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক্ ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের এবং (খ) সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হইল।
সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমকে একটা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে অভিহিত করা হয়। তাই একটি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। এটি সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।
রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যম যাতে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে পারে সে জন্য সাংবাদিকরা যেন বিনা বাধায় এবং নিরাপদ পরিবেশে যথাযথভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারে তার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। আর সাংবাদিকদের প্রকৃত স্বাধীনতা ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সুদূর পরাহত।
শুধুমাত্র পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই সাংবাদিকরা কমবেশি ভয়ভীতির শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রভাবশালী মহলের চাপ, হামলা-মামলা, রাজনৈতিক হুমকির কারণে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে অনেক ক্ষেত্রেই বাধার সম্মুখীন হতে হয়। মাঠপর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তারাও এ ব্যাপারে কম যান না। সুযোগ পেলেই তারা সাংবাদিকদের নানাভাবে হয়রানি করে থাকেন এমনকি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অপব্যবহারও হয়ে থাকে। অথচ বর্তমান সরকার কর্তৃক ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের’ কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে ভূমিকা পালনের কোনো বিকল্প নেই।
কেননা, গণমাধ্যম ব্যক্তির মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করে। তথ্য প্রদানের মাধ্যমে জনমত গঠনেও গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। পাশাপাশি গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে সরকারের ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিয়ে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। এ ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম মানবাধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্যও অত্যাবশ্যক। তাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সমাজের বিকাশ ও উন্নয়নের শক্তিশালী ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়।
সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ। সংবাদপত্র কেবলমাত্র সংবাদ পরিবেশন করে না। সমাজের সার্বিক বিকাশ সাধনেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সংবাদপত্র গণতন্ত্রের সদা জাগ্রত প্রহরী। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে, গণতন্ত্র ব্যাহত হলে, কোথাও দুর্নীতি হলে গণমাধ্যম সবার আগে সোচ্চার হয়ে ওঠে। অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের মতো নানা সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে চেতনার জাগরণ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে সমাজকে ইতিবাচক উন্নতির পথে এগিয়ে নিতে সংবাদপত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
তবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতারও একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। স্বাধীনতার অর্থ এই নয়, যা ইচ্ছে তা করা বা লেখা। সাংবাদিকরা দায়বদ্ধতার ঊর্ধ্বে নন। দেশের প্রতি, সমাজের প্রতি, আইনের প্রতি, স্বীয় বিবেকের প্রতি, নীতি-নৈতিকতার প্রতি অবশ্যই তাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুসরণ করে বস্তুনিষ্ঠ লেখনী ও সঠিক এবং পরিপূর্ণ তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে তারা এই দায়বদ্ধতা মেনে চলবেন।
গণমাধ্যমের প্রধান সম্পদ হচ্ছে তার বিশ্বাসযোগ্যতা, যা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। তবে নানা কারণে আমাদের দেশের গণমাধ্যম তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে বসেছে। সাংবাদিকতা পেশার মর্যাদার প্রশ্নে এটি মোটেও সুখকর নয়। কাজেই হলুদ সাংবাদিকতা, অপসাংবাদিকতা কিংবা দায়িত্বহীন সাংবাদিকতা যেন কোনোভাবেই তাদের স্পর্শ না করে সে ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
আবার এ কথাও অস্বীকার করার উপায় নেই- অনেকেই নিজেদের স্বার্থে গণমাধ্যমকে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করছেন এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এটাকে প্রোপাগান্ডা যন্ত্রে পরিণত করছেন। কিছু কিছু গণমাধ্যম একপেশে কিংবা পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশন করে থাকে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সাংবাদিকদের একটি প্রতিবেদন তৈরি করার সময় সর্বদা মনে রাখতে হবে- ‘A half-truth is even more dangerous than a lie (অর্ধসত্য মিথ্যার চেয়েও ভয়ংকর)। সুতরাং ‘সত্য কথা লিখতে শিখো ফুঁ দিয়ে ফুলিয়ে নয়, আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে’- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই অমর বাণী তাদের অন্তরে ধারণ করতে হবে।
বর্তমান জমানায় নিয়ন্ত্রণহীন ফেসবুক, ইউটিউব ও এক্সসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়ই গুজব বা ভুল তথ্য ছড়িয়ে সমাজে অস্থিরতা তৈরি কিংবা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। শক্তিশালী ও স্থিতিশীল সমাজ গঠনে ওই সব গুজব, মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার রোধে মুক্ত গণমাধ্যম অত্যাবশ্যক।
সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। এটি মেধা ও মননের পেশা, অধ্যয়ন ও অধ্যবসায়ের পেশা; কিন্তু এ পেশায় নিয়োজিত মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, জীবনের নিরাপত্তা প্রদানের ক্ষেত্রে সব মহলেরই রয়েছে উদাসীনতা।
অন্যদিকে, পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসংখ্য সাংবাদিক হত্যার শিকার হচ্ছেন। কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)-এর তথ্যমতে, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ৯৯ জন সাংবাদিক মারা গেছেন। এর মধ্যে ৭৭ জনই গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে জীবন হারান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
গণমাধ্যম
ঈদে টানা ৬ দিন ছুটি পেলেন গণমাধ্যমকর্মীরা
এবারের পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরে টানা ৬ দিনের ছুটি পেয়েছেন সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী প্রতিবছর ২৯ রমজান থেকে ঈদে তিন দিনের ছুটি ভোগ করেন সংবাদকর্মীরা। রোজা ৩০টি পূর্ণ হলে এই ছুটি চার দিনে পরিণত হয়। সে হিসাবে ৯ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছুটি হওয়ার কথা।
কিন্তু এবার ঈদের ছুটির এক দিন পর ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ হওয়ায় ফের সরকার নির্ধারিত ছুটির ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে সংবাদমাধ্যম। এ জন্য ১৩ এপ্রিল বিশেষ ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।
আজ শনিবার (৬ এপ্রিল) নোয়াবের বৈঠক শেষে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। ফলে ৯ থেকে ১৪ এপ্রিল টানা ৬ দিন ছুটি পেয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
তবে এবার ঈদের ছুটি ৬ দিন একটি অনন্য রেকর্ড। কারণ স্বাধীনতার পর আর কখনো সংবাদমাধ্যম ৬ দিন বন্ধ থাকেনি।
জানতে চাইলে নোয়াবের কোষাধ্যক্ষ ও মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, এবার ঈদের ছুটির মাঝে এক দিনের ব্যবধানে যেহেতু পহেলা বৈশাখ পড়েছে, তাই মাঝের এক দিন বিশেষ ছুটি দেওয়া হচ্ছে।
কাফি