ব্যাংক
প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হবে ইউনিয়ন ক্যাপিটাল
বেসরকারি খাতের প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ক্যাপিটাল। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদিত পথ নকশায় অপেক্ষাকৃত সবল কোম্পানির সঙ্গে দুর্বল কোম্পানির একীভূতকরণের উদ্যোগ নিয়ে আলোচনার মাঝে এ সিদ্ধান্ত জানা গেছে।
সূত্রে জানা যায়, প্রাইম ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ক্যাপিটাল উভয় প্রতিষ্ঠানের সম্মতিতে শর্তসাপেক্ষে একীভূতকরণের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে উভয় প্রতিষ্ঠানকে জানানো হবে। প্রতিষ্ঠান দুটির পরিচালনা পর্ষদে কর্তৃত্বে রয়েছেন জ্বালানি খাতের ব্যবসায়ী ও প্রাইম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী পরিবারের সদস্যরা। আজম জে চৌধুরী ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমানে পরিচালক। তাঁর ছেলে তানজিল চৌধুরী প্রাইম ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান। আমানতকারীর জমা অর্থ যথাসময়ে ফেরত দিতে না পারা, টানা পাঁচ বছর ধরে বড় লোকসানসহ বিভিন্ন সংকটে থাকা ইউনিয়ন ক্যাপিটালকে প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার মূল উদ্যোগ নেন আজম জে চৌধুরী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান একীভূত হওয়ার ঘটনা হবে প্রথম। অবশ্য এর আগে ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংক কিংবা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারি প্রতিষ্ঠান একীভূত হওয়ার ঘটনা রয়েছে। চরম খারাপ অবস্থায় থাকা আরও কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান অন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূতকরণের কাজ চলছে বলে জানা গেছে। আর্থিক খাত সংস্কারের লক্ষ্যে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত অনুমোদনের পর এখন একীভূতকরণ-পরবর্তী ইউনিয়ন ক্যাপিটালের আমানতকারীর অর্থ কীভাবে পরিশোধ করা হবে, তার পরিকল্পনা জানাতে হবে। এ ছাড়া সম্পদের মূল্যায়ন, মূলধন, ঋণ আদায় প্রক্রিয়া, কর্মীদের পুনর্বহালসহ সব বিষয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি চুক্তি করতে হবে। তালিকাভুক্ত হওয়ায় এ বিষয়ে উভয় প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে ঘোষণা দেবে। সে আলোকে পুরো প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত পাঁচ বছরে ইউনিয়ন ক্যাপিটালের লোকসান হয়েছে ৬২৮ কোটি টাকা। মূলত শেয়ারবাজারে সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ করে লোকসানের কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি সংকটে পড়েছে। ইউনিয়ন ক্যাপিটাল থেকে এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্টে ঋণ রয়েছে ৪৭৩ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এ ঋণের বিপরীতে দীর্ঘদিন ধরে কোনো আদায় নেই। এর বাইরে আরও কিছু ঋণ আটকে গেছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে আমানতকারীর অর্থ যথাসময়ে ফেরত দিতে পারছে না ইউনিয়ন ক্যাপিটাল। বিএটি বাংলাদেশের শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের ১০৮ কোটি ২৫ লাখ টাকাসহ অনেক আমানত দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে। এ কারণে ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে আমানত পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ১ কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্বানুমতি নিতে হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সাবসিডিয়ারিতে নতুন ঋণ এবং সুদ মওকুফ বা অবলোপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এসব কারণে প্রতিষ্ঠানটি এখন অনেকটাই নিষ্ক্রিয়।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, বর্তমানে প্রাইম ব্যাংকের আমানত রয়েছে ৩৪ হাজার কোটি টাকার মতো। আর গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৩০২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ব্যাংকটি ২০২২ সালে নিট মুনাফা করে ৪০২ কোটি টাকা। ২০২১ সালে নিট মুনাফার পরিমাণ ছিল ৩১১ কোটি টাকা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকে সব ধরনের নির্বাচন স্থগিত
দলীয় রাজনীতির প্রভাব থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে মুক্ত করতে দলীয় নির্বাচনের পরিবর্তে ব্যক্তি নির্বাচনের মত দিয়েছেন ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। একই সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠেয় সব ধরনের নির্বাচন স্থগিত করেন তিনি।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সঙ্গে দেখা করে ৪০ সদস্যের একটি টিম দুই ডিজির পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন। নির্ধারিত সময়ে পদত্যাগ না করলে পরে ব্যাংকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩০তলা ভবনে সর্বদলীয় ডাক দিয়েছিলেন। এরপর আবারও গভর্নরের সঙ্গে দেখা করেন। তখন ড. আহসান এইচ মনসুর এসব কথা বলেন।
এদিন দুই ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার ও ড. হাবিবুর রহমানের পদত্যাগ দাবিতে উত্তপ্ত হয় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। এনিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা সকাল থেকে একাধিকবার বৈঠক করে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পদোন্নতি পাওয়া দুজন ডেপুটি গভর্নরকে পদত্যাগের দাবি জানান।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিগত সরকারের সময় যে দুইজন ডেপুটি গভর্নর নিয়োগপ্রাপ্ত তাদেরকে অপসারণ করতে হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে জানানো হয়েছে এবং এ বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলেও নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান।
নজরুল ইসলাম বলেন, এখনও বাংলাদেশ ব্যাংকে আগের সরকারের নিয়োগ দেওয়া দুই ডেপুটি গভর্নর রয়েছেন। তাদের অবিলম্বের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। ডিজি এক ও ডিজি দুইতে পরিবর্তন আনার দাবি জানানো হয়েছিল আমাদের পক্ষ থেকে। গভর্নর বলেছেন এই বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নিবেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকর্তা এস আলম ও বিভিন্ন গ্রুপকে যারা সহায়তা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
নজরুল ইসলাম জানান, গভর্নর তাদেরকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। কারণ সম্প্রতি সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নির্বাচন নিয়ে যেভাবে কাজ করেছে তাতে সুস্পষ্টভাবে সেই বিষয়গুলো উঠে এসেছে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যে নির্বাচন হচ্ছে তা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলেও গভর্ন তাদেরকে জানিয়েছেন বলেও জানান নজরুল ইসলাম।
গভর্নরের বক্তব্যের কারণেও ব্যাংকিংখাতে এক ধরণের অনাস্থা তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, গভর্নরের বক্তব্যের কারণে ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নিয়েছেন অনেক গ্রাহকরা। তাই পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোন ধরণের স্ট্যাটমেন্ট দেওয়ার আগে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বলেও তিনি জানান।
গত ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর ইসলামী ব্যাংকে আন্দোলনের মাধ্যমে ব্যাংকখাতেও আন্দোলন শুরু হয়। ইসলামী ব্যাংকে এস আলমের ক্ষমতার বলয় থেকে মুক্ত করার দাবিতে ৬ অগাস্ট ইসলামী ব্যাংকের সামনে আন্দোলন করেন ব্যাংকটির কয়েকশ কর্মী।
বিক্ষোভের হাওয়া লাগে বাংলাদেশ ব্যাংকেও। ৭ অগাস্ট তৎকালীন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, চার ডেপুটি গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান ও পলিসি উপদেষ্টার পদত্যাগে উত্তাল হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এরপর ওই সপ্তাহেই গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান, পলিসি উপদেষ্টা ও দুই ডেপুটি গভর্ন পদত্যাগ করেন। সেই সময়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাকি দুই ডেপুটি গভর্ন ছিলেন নুরুন নাহার ও হাবিবুর রহমান। প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য এই দুই ডেপুটি গভর্নরদের পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সে সেসময়।
বিক্ষোভে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক বায়েজিদ সরকার ছাত্র-জনতা অভূত্যানে নিহত সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ৫ অগাস্টের আগে চুক্তিভিত্তিক ডেপুটি গভর্নর যারা এখনও বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন তাদের অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি করেন। ৭ অগাস্টে যে দাবি করা হয়েছিল সেই দাবি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে।
বায়েজিদ সরকার বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর ৭ অগাস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকে বিক্ষোভ করা হয়। সেই সময় নানা রকমের দাবিও উপস্থাপন করা হয়। সেই দাবির মধ্যে ডেপুটি গভর্নরদের পদত্যাগের বিষয়টি ছিল। তবে এখনও তারা বাংলাদেশ ব্যাংকে রয়েছে। তাদের এ পদ থেকে চলে যেতে হবে।
পরে বিক্ষুদ্ধ কর্মকর্তাদের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে দুই ডেপুটি গভর্নরের পদত্যাগের দাবি তুলে ধরেন। এসময় গভর্নর তাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি।
গভর্নর বলেন, আর্থিকখাতের সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। এই মুহূর্তে তাদের চাকরিচ্যুত করা হলে আর্থিকখাতে বড় ধরনের সমস্যার পাশাপাশি বহিঃবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে। এজন্য তাদের পোর্টফোলিও দেখে কাজের পরিধির কমিয়ে আনা হবে বলে জানান।
এ সময় কর্মকর্তারা জানান, মূলত তাদের কারণেই আর্থিকখাতের সংস্কার কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জবাবে গভর্নর বলেন, শিগগিরই আমি এ দু’জন ডেপুটি গভর্নরের বিষয়ে বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানি ও তার ভাতিজাকে মার্কিন এক্সচেঞ্জ কমিশনের তলব
ঘুষের অভিযোগে মামলায় ভারতীয় ধনকুবের আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান গৌতম আদানি ও তার ভাতিজা সাগর আদানিকে তলব করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। রবিবার (২৪ নভেম্বর) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।
নিউইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট তাদের তলবের নোটিশ জারি করেন। এতে চিঠি পাওয়ার পর থেকে ২১ দিনের মধ্যে তাদের সাড়া দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে আজ আদানি গ্রুপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এর আগে গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ফেডারেল কৌঁসুলিরা গৌতম আদানি ও তার কয়েকজন সহযোগীকে ঘুষ ও প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ পেতে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে তাদের অভিযুক্ত করা হয়। এরপরই গৌতম আদানি ও তার ভাতিজার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
কৌঁসুলিরা বলছেন, বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ পেতে গৌতম আদানি ও সাগর আদানিসহ মামলার সাত অভিযুক্ত ভারতীয় কর্মকর্তাদের ২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিতে সম্মত হয়েছিলেন, যেই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলার মুনাফা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এছাড়াও ঘুষের বিনিময়ে তাদের ভারতের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির কাজও দিতে চাওয়া হয়েছিল।
তবে প্রথম থেকেই আদানি গ্রুপ এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকে কলমানি সুদহার ১০ শতাংশ ছাড়ালো
ব্যাংক খাতে কলমানি সুদহার সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। সপ্তাহের শেষ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য ধার নেওয়া টাকার গড় সুদহার উঠেছে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে। ১৩ নভেম্বর থেকে এই সুদহার ১০ শতাংশ বা তার ওপরে রয়েছে। কলমানি বাজারে সুদহার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে সুদহার ১০ শতাংশের ওপরে ওঠেনি। আবার চার দিন ও সাত দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার আরও বেশি। গতকাল চার দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ছিল সোয়া ১২ শতাংশ। আর সাত দিনের ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার ছিল ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তবে কলমানিতে বিভিন্ন মেয়াদে ধারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি টাকা লেনদেন হয় এক দিনের ধার হিসেবে।
কলমানি হচ্ছে সরকারি–বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়ার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় যেসব ব্যাংকের হাতে নগদ টাকার সংকট থাকে তারা তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য বা অর্থ থাকে তাদের কাছ থেকে টাকা ধার করে। এ জন্য সুদ দিতে হয়। সুদহার নির্ধারিত হয় চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে। ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়া করলেও দিন শেষে লেনদেন ও সুদের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কলমানি বাজারের প্রতিদিনের লেনদেন ও সুদের তথ্য প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সাল থেকে কলমানি বাজারের তথ্য রয়েছে। সেই তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬ সালের পর গতকালই প্রথম কলমানিতে এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এদিন এক দিনের জন্য কলমানিতে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা লেনদেন হয়, যার সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ১১ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সুদহার ছিল ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে কলমানিতে গড় সুদহার প্রথম ১০ শতাংশে উন্নীত হয় ১৩ নভেম্বর। ওই দিন এই বাজারে এক দিনের জন্য ৩ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
ব্যাংকাররা বলছেন, বর্তমানে কিছু ব্যাংক তীব্র তারল্যসংকটে রয়েছে। এসব ব্যাংকের সংকট এতটাই প্রকট যে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকাও ফেরত দিতে পারছে না। আবার সরকারি ট্রেজারি বিল–বন্ডের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যাংক বেশি লাভের আশায় কলমানির বদলে বিল–বন্ডে অর্থ বিনিয়োগ করছে। ফলে কলমানিতে টাকা ধার দেওয়া বা এই বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া ব্যাংকের সংখ্যা কমে গেছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আদানির সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের চুক্তি বাতিল!
ঘুষ দেয়া ও প্রতারণার মাধ্যমে কয়েকশ’ কোটি ডলারের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাগিয়ে নেয়ায় অভিযুক্ত ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে নিউইয়র্কের একটি আদালত। এ নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছেন তিনি। তবে এর মধ্যেই আরও এক দুঃসংবাদ পেলো আদানি গ্রুপ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে আলজাজিরা জানিয়েছে, আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থের চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকার দেশ কেনিয়া।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া দুটি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেন।
এর মধ্যে একটি চুক্তির অর্থমূল্য প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। এই চুক্তির আওতায় দেশটির জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে করার কথা ছিল আদানি গোষ্ঠীর। এছাড়া ৩০ বছর মেয়াদি ইজারার (লিজ) আওতায় বিমানবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল উন্নত করার কথা ছিল।
এছাড়া আদানির সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি ৭৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের সরকারি-বেসরকারি খাতের একটি অংশীদারত্ব (পিপিপি) চুক্তিও বাতিল করার কথা জানান রুটো।
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি পরিবহন এবং জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তকারী সংস্থা ও অংশীদার দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এমআই