অর্থনীতি
সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা নয়, যেতে পারবেন বিকল্প পথে

মিয়ানমার অভ্যন্তরে সংঘাতের কারণে আজ (শনিবার) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী সকল জাহাজ চলাচল বন্ধ করা হলেও সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়নি। কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন ও চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করছে। পর্যটকরা বিকল্প পথ ব্যবহার করে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন।
এর আগে, বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী সকল জাহাজ চলাচল বন্ধ করার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, আজ শনিবার থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী সকল জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে এটি সাময়িক সময়ের জন্য। যেহেতু মিয়ানমার সীমান্তে সংঘাতময় পরিস্থিতি চলমান। সব স্বাভাবিক হয়ে গেলে আবার এই পথে জাহাজ চলতে পারবে।
তিনি বলেন, পর্যটকরা চাইলে এখন কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন ও চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলাচলকারী পর্যটকবাহী জাহাজে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন। সেখানে ভ্রমণে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুট যেহেতু একদম মিয়ানমার সীমান্ত লাগোয়া। তাই নিরাপত্তার জন্য আমরা এ নৌরুট বন্ধ করেছি।

অর্থনীতি
ট্রাফিক সার্জেন্টকে গালিগালাজ করা সহকারী কর কমিশনার বরখাস্ত

রাজধানীর পলাশী মোড়ে ট্রাফিক সার্জেন্টের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে সহকারী কর কমিশনার ফাতেমা বেগমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রবিবার (১০ আগস্ট) এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ১২ এপ্রিল রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ঢাকা মেট্রো-গ-৩৪৫৯০৬ নম্বর একটি প্রাইভেটকারে করে যাওয়ার সময় ফাতেমা বেগম পলাশী মোড় এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের চেকিংয়ের মুখে পড়েন। এ সময় সিয়েরা ট্যাঙ্গো-৩৫ ডিউটিতে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্ট শাহা জামাল তার গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান।
তবে, সহকারী কর কমিশনার ফাতেমা বেগম কাগজপত্র সঠিক আছে দাবি করলেও তা দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পুনরায় অনুরোধ করা হলে, তিনি গাড়ি থেকে নেমে সার্জেন্টকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। অভিযোগে বলা হয়, তিনি সার্জেন্টকে ‘ছোট লোকের বাচ্চা’, ‘ফকিন্নির বাচ্চা’, ‘সারাজীবন ঘুষ খাইছে’ ইত্যাদি ভাষায় গালমন্দ করেন।
ঘটনার পরদিন ১৩ এপ্রিল লালবাগ থানায় ফাতেমা বেগমের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৮৬/৩৫৩/৩৩২/১৭৯/১১৪ ধারায় একটি মামলা (নম্বর: ০৩) দায়ের করা হয়।
এছাড়া, ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’-এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী তার এ আচরণ ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য হওয়ায় বিভাগীয় কার্যধারা শুরু করা হয়েছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় ওই বিধিমালার ১২ ধারা অনুসারে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।
জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে।
অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার

দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৩০২৪৮ দশমিক ১১ মিলিয়ন ডলার বা ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
রবিবার (১০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০২৪৮ দশমিক ১১ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২৫২৩২ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে গত ৪ আগস্ট পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩০ বিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী ২৪.৯৮ বিলিয়ন ডলার। তার আগে গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩০০০৪ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৪৯৮৮ দশমিক ২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুসারে। দেশের মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়।
অর্থনীতি
১০০ টাকার নতুন নোট বাজারে আসছে মঙ্গলবার

আগামী মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) থেকে দেশে প্রথমবারের মতো গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট প্রচলন করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রবিবার (১০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ (ডিসিপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের সকল মূল্যমানের (১০০০, ৫০০, ২০০, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫ ও ২ টাকা) নতুন নোট মুদ্রণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এরমধ্যে ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের নোট বাজারে প্রচলন দেয়া হয়েছে। বর্তমানে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোট ১২ আগস্ট থেকে প্রথমবারের মতো বাজারে প্রচলন দেয়া হবে।
নোটটি সেদিন প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য অফিস থেকে ইস্যু করা হবে।।‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য হলো-
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্বাক্ষরিত ১০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪০ মিলিমিটার × ৬২ মিলিমিটার। নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি এবং মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত থাকবে।
নোটের পেছনভাগে বাংলাদেশের।সুন্দরবনের ছবি মুদ্রিত থাকবে। নোটে জলছাপ হিসেবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখের নিচে উজ্জ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপে ‘100′ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম রয়েছে। নোটটিতে নীল রঙের আধিক্য রয়েছে।
১০০ টাকা মূল্যমান নোটটিতে মোট ১০ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটের সম্মুখভাগে ডানদিকে কোনায় মুদ্রিত মূল্যমান ‘১০০’ রঙ পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি দ্বারা মুদ্রিত; নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রঙ সোনালি থেকে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ৪ মিলিমিটার চওড়া লাল রঙ এবং উজ্জ্বল রূপালি বারের সমন্বয়ে পেঁচানো নিরাপত্তা সুতা রয়েছে।
এছাড়া নোটটি নাড়াচাড়া করলে নিরাপত্তা সুতার রঙ লাল হতে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়, যাতে ‘১০০ টাকা’ খচিত রয়েছে এবং উজ্জ্বল রংধনুর রঙের বারে রূপান্তরিত হয়ে উপর থেকে নীচে চলতে দেখা যাবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য নোটের সম্মুখভাগে ডানে নীচের দিকে ৩টি ছোট বৃত্ত রয়েছে যা হাতের স্পর্শে অসমতল অনুভূত হয়।
নোটটিতে ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত অংশগুলো হাতের স্পর্শে অসমতল অনুভব করা যাবে। ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত অংশগুলোর মধ্যে রয়েছে- নোটের সম্মুখভাগের বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ ছবি, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’, ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’, বাংলা ও ইংরেজিতে মূল্যমান নোটের ডানদিকে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত ৬টি লাইন এবং নোটের পেছন ভাগে সুন্দরবনের ছবি, সব মূল্যমান (অংকে ও কথায়), বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম, ‘BANGLADESH BANK’ ইত্যাদি।
নোটের সম্মুখভাগে নিরাপত্তা সুতা সংলগ্ন নকশাগুলো IR absorbent ink দ্বারা মুদ্রিত যা IR detector machine দ্বারা দৃশ্যমান হবে। নোটের সম্মুখভাগে নিরাপত্তা সুতার বামপাশে ও ‘BANGLADESH BANK’ লেখাটির নিচে Microprint হিসেবে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK’ ও ‘100 Taka’ পুনঃপুনঃ মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের পেছন ভাগে বামপাশে নীচে ও ডানপাশে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK’ এবং বামপাশে উপরে ‘100 Taka’ Microprint হিসেবে পুনঃপুনঃ মুদ্রিত রয়েছে যা শুধু ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে দেখা যাবে।
নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে See Through image হিসেবে ‘১০০’ মুদ্রিত রয়েছে যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘১০০’ লেখা দৃশ্যমান হবে। নোটের সম্মুখভাগে নীচের দিকের বর্ডারের মাঝখানে নীল ডিজাইন অংশে গুপ্তভাবে ‘100′ লেখা আছে; যা নোটটি অনুভূমিকভাবে ধরলে দেখা যাবে। নোটের কাগজে লাল, নীল ও সবুজ রংয়ের অসংখ্য fiber রয়েছে যা UV detector machine দ্বারা দৃশ্যমান হয়। নোটটির উভয় পৃষ্ঠে ইউভি কিউরিং ভার্নিশ সংযোজন করা হয়েছে। এর ফলে নোটটি চকচকে অনুভূত হবে, নোটের স্থায়িত্ব বাড়বে।
নতুন ডিজাইনের ১০০ টাকা মূল্যমানের নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে। এছাড়া মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০ টাকা মূল্যমান নমুনা নোট (যা বিনিময়যোগ্য নয়) মুদ্রণ করা হয়েছে; যা মিরপুরের টাকা জাদুঘর থেকে নির্ধারিত দামে সংগ্রহ করা যাবে।
অর্থনীতি
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঋণ পুনর্গঠনে কাজ চলছে: গভর্নর

করোনা মহামারি, অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঋণ পুনর্গঠনে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, এসব কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে।
রোববার (১০ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব নিয়ে কাজ করছে। এ পর্যন্ত ১২০০-এর বেশি আবেদন এসেছে। এর মধ্যে ২৫০টি সমাধান করা হয়েছে, বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন। প্রতিটি আবেদন আলাদাভাবে দেখা হচ্ছে—বাংলাদেশ ব্যাংক, ঋণ প্রদানকারী বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আবেদনকারী-এই তিন পক্ষের সমন্বয়ে সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। কোনো সাধারণীকরণ করা হচ্ছে না, যাতে কেউ সুযোগ নিয়ে টাকা তুলে নিতে না পারে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা, সম্ভাব্য সমাধান ও অতীত রেকর্ড যাচাই করেই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
ড. মনসুর বলেন, খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে তিন মাস করা হয়েছে। প্রথমে ব্যাংক বা উদ্যোক্তারা বিষয়টি মেনে নিতে না পারলেও এখন তারা গ্রহণ করেছে। প্রভিশন সংরক্ষণ না করে কোনো ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে না—প্রথমবারের মতো এই নীতি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ বা ন্যূনতম মূলধন রিকোয়ারমেন্ট (১০ শতাংশ) পূরণ করতে না পারা ব্যাংকগুলো লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৭২-এ মৌলিক পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে গভর্নর বলেন, শক্তিশালী আর্থিক খাতের জন্য শক্ত নেতৃত্ব ও আইনগত ভিত্তি দুটিই জরুরি। দুর্বল নেতৃত্ব দিয়ে শক্ত প্রতিষ্ঠান চালানো যায় না, আর শক্ত নেতৃত্ব দিয়েও কিছু হবে না যদি আইনগত ক্ষমতা না থাকে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও আমলাতান্ত্রিক বাধা দূর করে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়বদ্ধতা ও স্বশাসন বাড়াতে হবে। অতীতে যে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে, তা ভবিষ্যতে ঠেকানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
অর্থনীতি
‘জিরো রিটার্ন’ দিলে পাঁচ বছরের জেল: এনবিআর

‘জিরো রিটার্ন’ (শূন্য রিটার্ন) নামে কোনো রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংস্থাটি জানায়, করদাতার প্রকৃত আয়ের পরিমাণ আইনানুযায়ী করযোগ্য না হলে তাকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না। তবে আয়কর রিটার্নে আয়-ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য না দিলে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধানের কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
রবিবার (১০ আগষ্ট) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: আল আমিন শেখ।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিলবিষয়ক কতিপয় ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত পোস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নজরে এসেছে। এসব পোস্টে রিটার্ন পূরণের সবকয়টি ঘর ‘শূন্য’ হিসেবে পূরণ করে রিটার্ন দাখিল করা যায় মর্মে প্রচার করা হচ্ছে। এসব ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে কোনো কোনো করদাতা তাদের আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের বিষয়ে অসত্য ঘোষণা প্রদান করে আসছেন মর্মে জানা যায়।’
জিরো রিটার্ন প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, আয়কর আইন, ২০২৩ অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই। করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে এর কোনো একটি শূন্য অথবা সবগুলো তথ্য শূন্য হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বে-আইনি এবং ফৌজদারি অপরাধ। আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩১২ ও ৩১৩ অনুসারে করদাতাকে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদানের বিধান রয়েছে।
বিষয়টি আরও পরিষ্কার করে বিবৃতিতে বলা হয়, করদাতার প্রকৃত আয়ের পরিমাণ আইনানুযায়ী করযোগ্য না হলে তাকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না। তবে কর প্রদেয় না হলেও সঠিক তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শন না করে শূন্য আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে শূন্য বা জিরো রিটার্ন দাখিল করার কোনো সুযোগ আয়কর আইনে নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সকল করদাতা দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আয়কর রিটার্নে প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন করে দেশের উন্নয়নে গর্বিত অংশীদার হবেন। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত প্রতারনামূলক জিরো রিটার্নের ফাঁদে পা না দিয়ে নিজেকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে সুরক্ষিত রাখবেন।
প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেন। সেখানে সারা বছরের আয়-ব্যয়ের তথ্য দিতে হয়।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরের ১৭ লাখের মতো করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দেন। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ করদাতা কোনো কর দেননি। তবে রিটার্ন দিয়েছেন।
বর্তমানে এক কোটি ১২ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। তাদের মধ্যে বছরে ৪০ লাখের মতো করদাতা রিটার্ন দেন। চলতি অর্থবছর থেকে সব করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে হবে।