অর্থনীতি
রিটার্ন দাখিল বেড়েছে ২১ শতাংশ, আয় ৫ হাজার ৯০১ কোটি টাকা

২০২২-২০২৩ অর্থবছরে আয়কর রিটার্ন দাখিল বেড়েছে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৪২০টি। গত অর্থ বছরের তুলনায় যা প্রায় ২১ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে রিটার্ন দাখিলের বিপরীতে কর আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৯০১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আদায় বেড়েছে হাজার কোটি টাকা। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্যানুসারে, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছে ৩৬ লাখ ৬২ হাজার ৮১টি। যেখানে একই সময়ে আগের বছরে ছিল ৩০ লাখ ২৮ হাজার ৬৬১টি। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে রিটার্ন জমা বেড়েছে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৪২০টি।
আর রিটার্ন বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে আয়করের পরিমাণও। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত জমা দেওয়া রিটার্নের বিপরীতে আয়কর আদায় হয়েছে ৫ হাজার ৯০১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। যা আগের বছরে ছিল ৪ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা।
টিআইএনধারীদের সংখ্যা প্রত্যাশা অনুযায়ী বৃদ্ধি পেলেও এখনো বাড়েনি কাঙ্ক্ষিত আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সংখ্যা। সর্বশেষ ৯৮ লাখ ৩৪ হাজার ব্যক্তি টিআইএন নিয়েছেন।
চলতি বছরে ৪২ ধরনের সেবায় রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দেখানো বাধ্যতামূলক করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও আয়কর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না। এনবিআরের প্রত্যাশা ছিল টিআইএনধারীদের মধ্যে অন্তত ৪০ লাখ করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করবে। কিন্তু যে হারে রিটার্ন দাখিল হচ্ছে সেই লক্ষ্য থেকে ঢের পিছিয়ে রয়েছে।

অর্থনীতি
একনেকে ১১ প্রকল্প অনুমোদন, ব্যয় ৯ হাজার ৩৬১ কোটি

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৯ হাজার ৩৬১ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
রোববার (১৭ আগস্ট) শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপার্সন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.); শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন; পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।
পরিকল্পনা উপদেষ্টার কার্যালয় জানায়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৯ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ ২ হাজার ৪২৮ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৫৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৫টি, সংশোধিত প্রকল্প ২টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ৩টি প্রকল্প রয়েছে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প; বাপবিবোর বিদ্যমান শিল্পসমৃদ্ধ এলাকার ৩৩/১১ কেভি আউটডোর উপকেন্দ্রের আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন প্রকল্প; বিএমআর অব কেরু অ্যান্ড কোং (বিডি) লি. (২য় সংশোধিত) প্রকল্প; রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ স্থাপন প্রকল্প; ৫টি নির্ধারিত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিলেট, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী এবং ফরিদপুর) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প; ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনির ভেতরে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (জোন-সি) প্রকল্প; ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ২টি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প; ঢাকা এনভায়রনমেন্টাল সাসটেনেবল ওয়াটার সাপ্লাই (তৃতীয় সংশোধিত) ও বান্দরবান পৌরসভা এবং বান্দরবান জেলার ৩টি উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প; চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্প; উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) (প্রস্তাবিত প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।
সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টার নিজস্ব ক্ষমতাবলে এরইমধ্যে অনুমোদিত ৯টি প্রকল্প সর্ম্পকে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ১. হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন (২য় সংশোধিত), ২. রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে নেসকোর আওতাধীন এলাকায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্বাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, ৩. বরগুনা জেলার ২টি পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ৪. তিন পার্বত্য জেলায় দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৫. লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসবের অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত), ৬. তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত), ৭. সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৮. কপোতাক্ষ নদ ও তৎসংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত), ৯. বিদ্যালয় বহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতা কেন্দ্রিক সাক্ষরতা (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
কাফি
অর্থনীতি
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে বছরের ব্যবধানে গ্রাহক বেড়েছে ১৪ লাখ

ব্যাংকখাতের সংকটকালেও ডিজিটালের কারণে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এজেন্ট ব্যাংকিং। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই খাতের গ্রাহক, আমানত, ঋণ বিতরণ ও প্রবাসী আয়ের পরিমাণে গত এক বছরে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ২০২৪ সালের জুন মাস শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮টি। এক বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে ২০২৫ সালের জুনে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬ হাজার ২৩৬টিতে। অর্থাৎ এক বছরে নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়েছে প্রায় পৌনে ১৪ লাখ (১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৯৮), যা প্রবৃদ্ধির ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
একই সময়ে এ খাতে ঋণ বিতরণ ১৮ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৮ কোটি টাকায়। ফলে এক বছরে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা বা প্রায় ৫৫ শতাংশ।
প্রবাসী আয়েও বড় উল্লম্ফন দেখা গেছে। ২০২৪ সালের জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসী আয় ছিল ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩১২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুনে তা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৮ কোটি ১৫ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক বছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৫ হাজার ৫৭৫ কোটি ২১ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।
অন্যদিকে, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আমানত ২০২৪ সালের জুনের ৪০ হাজার ৭৩ কোটি টাকা থেকে বেড়ে গত জুনে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৬০৫ কোটি ২৭ লাখ টাকায়। অর্থাৎ আমানত বেড়েছে ৫ হাজার ৫৩২ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
তবে গ্রাহক ও লেনদেনে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হলেও এজেন্ট ও আউটলেটের সংখ্যা কমেছে। গত এক বছরে এজেন্ট কমেছে ৬১৮টি এবং আউটলেট কমেছে ৯১৬টি। বর্তমানে সক্রিয় এজেন্টের সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৭৩ এবং আউটলেট ২০ হাজার ৫৭৭টি।
শীর্ষ অবস্থানে ইসলামী ব্যাংক
প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এককভাবে শীর্ষে রয়েছে। ২০২৫ সালের এপ্রিল-জুন সময়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোট রেমিট্যান্সের ৫৫.০৮ শতাংশ (১ লাখ ১ হাজার ২৮২ কোটি টাকা) সংগ্রহ করেছে ব্যাংকটি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক (৫১ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা) এবং তৃতীয় স্থানে ব্যাংক এশিয়া (১৪ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা)।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের রেকর্ড ভাঙা কেবল পরিসংখ্যান নয় বরং এটি প্রান্তিক অঞ্চলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিপ্লব। বিশেষ করে প্রবাসী আয় বিতরণে এজেন্ট ব্যাংকিং এখন অন্যতম প্রধান চ্যানেলে পরিণত হয়েছে।
এর আগে ২০১৩ সালে চালু হওয়া এজেন্ট ব্যাংকিং বর্তমানে দেশের গ্রামীণ ও ব্যাংকবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কাছে সহজলভ্য আর্থিক সেবার নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবাসী আয়ের প্রবাহ, ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ ও গ্রামীণ জনগণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এটি এখন কার্যকর বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
অর্থনীতি
এলডিসি উত্তরণে দাম বাড়তে পারে ওষুধ-সফটওয়্যারসহ বিভিন্ন পণ্যে

স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প। মেধাস্বত্ব বিধি আরও কড়াকড়ি হবে। এতে ওষুধের দাম বাড়ার পাশাপাশি সফটওয়্যার, বইসহ বিভিন্ন পণ্যের কপিরাইট ইস্যুতেও অতিরিক্ত ব্যয় গুনতে হতে পারে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতি ও শিল্প বিশ্লেষকরা।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) আয়োজিত ‘মেধাসম্পদ এবং বাণিজ্য রূপান্তরের চ্যালেঞ্জ: স্থানীয় শিল্পের জন্য সর্বোত্তম কৌশল’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। এতে সভাপতিত্ব করেন বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)।
সেমিনারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, উন্নত দেশগুলোর নিজস্ব ও ভূরাজনৈতিক ইস্যু বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে। এর ফলে সময়ে সময়ে সংরক্ষণশীল বাণিজ্য ভীতি তৈরি হচ্ছে। ডব্লিউটিও দিন দিন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক সব নিয়ম-নীতি পরিবর্তন করে দিয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বহুপক্ষীয় বাণিজ্যের বাইরে গিয়ে কিছু দেশ জোটবদ্ধভাবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য করছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ এখন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করছে। তবে এফটিএ করলেই যে খুব সুবিধা হবে, তা নয়। এর সুফল নির্ভর করে দরকষাকষির সক্ষমতার ওপর।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য ড. মোস্তফা আবিদ খান বলেন, এলডিসি উত্তরণের ফলে রপ্তানিতে যে চ্যালেঞ্জ আসবে, তা মোকাবিলা কঠিন হবে না। তবে মূলত সমস্যা হবে মেধাস্বত্বের ক্ষেত্রে। উত্তরণের পর ওষুধের দাম বাড়বে। একই সঙ্গে কপিরাইট ইস্যুতে সফটওয়্যার, বইসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে বাড়তি দাম দিতে হবে। এগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
গবেষণা সংস্থা র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকার রাজস্বের ২৭ শতাংশ আহরণ করে আমদানি শুল্ক থেকে। এফটিএ করলে এ খাত থেকে রাজস্ব কমে যাবে। এ অবস্থায় প্রয়োজন যৌক্তিকতার ভিত্তিতে এফটিএ কৌশল নির্ধারণ।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানির ভিত্তি মজবুত রাখতে পণ্য ও বাজারের বৈচিত্র্য দরকার। কর্মসংস্থান বাড়াতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ডিজিটাল অর্থনীতি এবং এসএমইর মতো খাতে বিনিয়োগ বাড়ালে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, এলডিসি উত্তরণ পেছানোর জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। কারণ জোর করে এলডিসি উত্তরণের কারণে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এফটিএ করতে হচ্ছে। আমদানি শুল্ক কমে যাওয়ায় সরকার রাজস্ব হারাবে। শুল্ক কমানোর ফলে প্যাকেজিং, সিমেন্টসহ বেশ কিছু শিল্প বসে যাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় বেশি। এর অন্যতম কারণ সুদহার বেশি। এর সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরে ওয়্যারহাউস ব্যয় প্রায় চার গুণ বাড়ানো হয়েছে। ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেশি হওয়ায় আগামীতে বিদেশি ব্যাংকগুলো এলসি নেবে কিনা, তাও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক সানিয়া রিড স্মিথ বলেন, এখন বাংলাদেশ মেধাস্বত্বের বিধিনিষেধ ছাড়াই ওষুধ উৎপাদন ও রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু এলডিসি স্ট্যাটাস হারালে ওই ওষুধগুলোর ওপর পেটেন্ট বসবে, যা বিনিয়োগ কমাতে পারে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) বিজনেস ডেভেলপমেন্ট প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ওষুধসহ বেশ কয়েকটি খাতে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ হতে পারে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এফটিএ, পিটিএসহ অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করার প্রস্তুতি নিতে হবে। এ জন্য এফটিএ কৌশল গ্রহণ করতে হবে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন- মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সভাপতি আব্দুল হাই সরকার প্রমুখ।
অর্থনীতি
হিলিতে কাঁচামরিচের দাম বাড়লেও কমেছে পেঁয়াজের

হিলিতে একদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে, তবে বেড়েছে দেশি কাঁচামরিচের দাম। কেজি প্রতি ৫ টাকা কমে বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা এবং দেশি কাঁচামরিচ কেজি প্রতি ৩০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি হওয়াতে কমতে শুরু করেছে দাম।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে হিলির কাঁচাবাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়।
অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাঁচামরিচের সরবরাহ কম হওয়াতে দাম বেড়েছে। পেঁয়াজের দাম কমাতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও কাঁচামরিচের দাম বৃদ্ধিতে হতাশ সাধারণ ক্রেতারা।
হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা রায়হান কবির জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সোনা-মসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে গত বৃহস্পতিবার ৪ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আগামীকাল রোববার হিলি স্থলবন্দর দিয়েও পেঁয়াজ আমদানি হওয়ার কথা রয়েছে। যার ফলে দেশের বিভিন্ন মোকামে কমতে শুরু করেছে দাম। বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমরা কম দামে কিনে কম দামে বিক্রি করছি।
হিলি বাজারের কাঁচামরিচ বিক্রেতা বিপ্লব হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে করে কাঁচামরিচের সরবরাহ কমে গেছে। যার কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে খুচরা বাজারে ২০০ টাকা কেজি দরে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের থেকে ক্রেতা অনেক কম।
অর্থনীতি
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিলিতে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শনিবার (১৬ আগস্ট) হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যসহ বন্দরের ভেতরের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
তবে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দু’দেশের মাঝে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলা হিলি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস রহমান।
তিনি বলেন, শনিবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব শুভ জন্মাষ্টমী। এ উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় কাস্টমসের সকল বিভাগ বন্ধ থাকবে। যার কারণে এদিন বন্দর দিয়ে দু’দেশের মাঝে পণ্য আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আগামী রোববার থেকে আবারো আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হবে।
You must be logged in to post a comment Login