আইন-আদালত
অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ ৫ শীর্ষ কর্মকর্তার কারাদণ্ড
আদালতের আদেশ অমান্য করায় অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মো. মুরশেদুল কবীরসহ ৫ শীর্ষ কর্মকর্তাকে ৩ মাসের দেওয়ানি বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায় পাওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন।
এমডি ছাড়া কারাদণ্ড পাওয়া অন্য চার কর্মকর্তা হলেন- অগ্রণী ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর-২ শ্যামল কৃষ্ণ সাহা, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর-১ ওয়াহিদা বেগম, প্রিন্সিপাল শাখার জেনারেল ম্যানেজার মো. ফজলুল করিম, এলপিআরে যাওয়া আরেক জেনারেল ম্যানেজার এ কে এম ফজলুল হক।
আবেদনকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুরুল আমীন রায়ের নিশ্চিত করে বলেন, আদালত অবমাননার দায়ে অগ্রণী ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের হাইকোর্ট ৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। একইসঙ্গে তাদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন। বিস্তারিত তথ্য পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর জানা যাবে।
এদিকে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এই আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তাদের আইনজীবী শামীম খালেদ।
আইনজীবীরা জানান, ২০১৭ সাল পর্যন্ত মুন গ্রুপের কাছে অগ্রণী ব্যাংকের ডিগ্রি মূলে পাওনা ৫৩৯ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে পাওনার ২৫ শতাংশ কিস্তিতে পরিশোধের জন্য মুন গ্রুপের কাছে চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঋণের ২৫ শতাংশ পরিশোধ না করলে মুন গ্রুপকে খেলাপি তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে পাঠানো হবে।
ব্যাংকের এই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিম্ন আদালতে ঘোষণামূলে ডিগ্রি প্রার্থনা করা হয়। একইসঙ্গে ব্যাংকের চিঠির বিরুদ্ধে আদেশ প্রার্থনা করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। নিম্ন আদালত এই আদেশ নামঞ্জুর করেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে মুন গ্রুপ হাইকোর্টে বিবিধ আপিল দায়ের করেন। হাইকোর্ট ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ব্যাংকের চিঠির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। পাশাপাশি রুল দেন।
এদিকে নির্ধারিত সময়ে ঋণের ২৫ শতাংশ কিস্তি পরিশোধ না করায় মুন গ্রুপকে খেলাপি তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকে সিআইবি পাঠায় অগ্রণী ব্যাংক। পরে মুন গ্রুপ অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ চার নির্বাহীর বিরুদ্ধে ভায়োলেশন মোকাদ্দমা দায়ের করেন। মামলার শুনানি শেষে অগ্রণী ব্যাংকের এমডি, ডিএমডিসহ ৫ কর্মকর্তাকে ৩ মাসের দেওয়ানি কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। এদের মধ্যে একজন এলপিআরে যাওয়া নির্বাহী কর্মকর্তা রয়েছেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায় আজ
নব্বই দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে বৃহস্পতিবার (০৯ মে)। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক অরুনাভ চক্রবর্তীর আদালতে এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
গত ২৯ এপ্রিল রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে একই আদালত রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, সেলিম খান, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী, তারিক সাঈদ মামুন, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, আদনান সিদ্দিকী ও ফারুক আব্বাসী।
চলতি বছর ২৮ জানুয়ারি এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ৩৮ সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাদিয়া আফরিন শিল্পী বলেন, মামলাটির বেশির ভাগ সাক্ষী মারা গেছেন। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনও আদালতে এসেছে। আদালতে যারা এসেছেন, তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমেই প্রক্রিয়া সমাপ্ত করা হয়েছে।
১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যান নায়ক সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী রাজধানীর গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
ওই বছরই এক আসামি মামলা বাতিলে হাইকোর্টে আবেদন আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সাল থেকে হাইকোর্টের আদেশে মামলার বিচারকাজ স্থগিত ছিল।
২০১৫ সালে সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। তারও সাত বছর পর ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার নথি বিচারিক আদালতে ফেরত এলে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
ফের পেছাল রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে অর্থ চুরির মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৯ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ সোমবার (৬ মে) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও তদন্ত সংস্থা সিআইডি প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী নতুন এ দিন ধার্য করেন।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে হ্যাক করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেওয়া হয়। পরে ওই টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো হয়।
সংশ্লিষ্টরা ধারণা করেন, দেশের অভ্যন্তরের কোনো চক্রের সহায়তায় হ্যাকার গ্রুপ রিজার্ভের অর্থ পাচার করেছে।
ওই ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ৪ ধারাসহ তথ্য ও প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর ৫৪ ধারায় ও ৩৭৯ ধারায় মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি সিআইডির তদন্তাধীন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
ফের চার দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে মানব পাচার আইনের আরেকটি মামলায় চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার (০৫ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তারের আদালত শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিন ভুয়া মৃত্যু সনদ প্রদানের অভিযোগে করা মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
তখন এ মামলায় তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর জোনাল টিমের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। এ ছাড়া মানবপাচার আইনের আরেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে ডিবি পুলিশ।
পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুবের আদালত এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখান।
এর আগে রাজধানীর মিরপুর থেকে গত বুধবার রাতে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর জোনাল টিম।
তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে মিরপুর মডেল থানায় ৩টি মামলা করা হয়। আরও কয়েকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
গত বৃহস্পতিবার মিল্টনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমে জাল মৃত্যুসনদ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এদিকে মিল্টন সমাদ্দারের গ্রেপ্তার হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে মিরপুরের পাইকপাড়া এবং বরিশালের উজিরপুরের সাধারণ মানুষজন।
এছাড়া বুধবার রাতেই রাজধানীতে আনন্দ মিছিল করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন। গ্রেপ্তারের পর থেকেই ভুক্তভোগীদের অনেকে মিল্টনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক কোটি ষাট লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের। এ বিশাল অনুসারীদের কাজে লাগিয়ে তার মূল টার্গেট ছিল বিভিন্ন মানবিক কাজ প্রচার করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
মিল্টন সমাদ্দার ৩ দিনের রিমান্ডে
প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জাল মৃত্যু সনদ তৈরির অভিযোগে মিরপুর মডেল থানার মামলায় চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২ মে) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতে মিরপুর মডেল থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জালাল উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জাল মৃত্যু সনদ তৈরির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি দায়ের হয়। এরপর তার আশ্রমের টর্চার সেলে মারধর করার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের হয়। সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
এর আগে, বুধবার (১ মে) রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
সম্প্রতি মিল্টন সমাদ্দারের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। মুখ খুলতে থাকেন ভুক্তভোগীরাও। যদিও কয়েকটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন মিল্টন সমাদ্দার।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
অর্থ আত্মসাৎ মামলায় জামিন পেলেন ড. ইউনূস
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের সংরক্ষিত ফান্ডের লভ্যাংশের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে করা মামলায় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২ মে) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালত আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। এদিন মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। এর আগে সকালে ড. ইউনূস পূর্বশর্তে জামিন আবেদন করেন। এরপর এ মামলায় হাজিরা দিতে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে তিনি আদালতে পৌঁছান।
২০২৩ সালের ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সংস্থার উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
এরপর ২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার।দুদকের মামলায় আসামি ছিলেন ১৩ জন। চার্জশিটে নতুন একজন আসামির নাম যুক্ত হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।গত ২ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালত এ চার্জশিট গ্রহণ করে মামলার বিচারের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ বদলির আদেশ দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। সদস্যদের উপস্থিতিতে ২০২২ সালের ৯ মে অনুষ্ঠিত ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় হিসাব খোলা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনা লভ্যাংশ বিতরণের জন্য গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন এবং গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট চুক্তি হয় ওই বছরের ২৭ এপ্রিল।
গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সভার হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত ৯ মে হলেও হিসাব খোলা হয় একদিন আগে ৮ মে। সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টেও ৮ মে ব্যাংক হিসাব দেখানো আছে, যা বাস্তবে অসম্ভব। এরকম ভুয়া সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্ত অনুযায়ী ও ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২২ সালের ১০ মে গ্রামীণ টেলিকমের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মিরপুর শাখা থেকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা স্থানান্তর করা হয়।
পরবর্তী সময়ে ২২ জুন অনুষ্ঠিত গ্রামীণ টেলিকমের ১০৯তম বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে অতিরিক্ত ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকা প্রদানের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়। অন্যদিকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাব থেকে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নামীয় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের লোকাল অফিসের হিসাব থেকে তিন দফায় মোট ২৬ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা স্থানান্তর করা হয়।
কিন্তু কর্মচারীদের লভ্যাংশ বিতরণের আগেই তাদের প্রাপ্য অর্থ তাদের না জানিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে ২০২২ সালের মে ও জুন মাসের বিভিন্ন সময়ে সিবিএ নেতা মো. কামরুজ্জামানের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখার হিসাবে মোট ৩ কোটি টাকা, সিবিএ নেতা মাইনুল ইসলামের হিসাবে ৩ কোটি ও সিবিএ নেতা ফিরোজ মাহমুদ হাসানের ডাচ-বাংলা ব্যাংক মিরপুর শাখার হিসাবে ৩ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়।
একই ভাবে অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলীর কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ধানমন্ডি শাখার হিসাবে ৪ কোটি টাকা ও দ্য সিটি ব্যাংকের গুলশান শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠানো হয়। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই অনুসন্ধান শুরু হয়।
আসামিরা হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।
এছাড়া অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।
এসএম