অর্থনীতি
বন্ড মার্কেটে সঞ্চয়পত্র ছাড়ার সুপারিশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

টাকার সংকটের কারণে কিছু ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার নিচ্ছে। আবার সরকার বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। প্রতি বছর সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমেও বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক নির্ভরশীলতা কমাতে সঞ্চয়পত্র বন্ড মার্কেটে ছাড়ার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন সুপারিশ করা হয়েছে। ‘সরকারি সিকিউরিটিজ প্রতিবেদন ২০২২-২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। প্রতি বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, টাকার সংকটের কারণে গড়ে প্রতিদিনই কিছু ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার করছে। গড়ে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ওপরে ধার করা হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, খেলাপি ঋণ আদায় কমে যাওয়া, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাজারে ডলার বিক্রি করে টাকা তুলে নেওয়া, এটা গত কয়েক মাস ধরেই ব্যাংকিং খাতে চলে আসছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের ঋণের জোগান এখনো ব্যাংক খাতনির্ভর। মোট ঋণের ৬২ শতাংশই নেওয়া হয় ব্যাংক খাত থেকে। আইএমএফ ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ কমিয়ে বন্ড মার্কেটের মাধ্যমে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে বেশি ঋণ নেওয়ার সুপারিশ করেছে। এটি করতে সরকার বন্ড মার্কেট উন্নয়ন করছে। বর্তমানে বন্ড মার্কেটে সরকারের বিভিন্ন ধরনের ট্রেজারি বিল ও বন্ড বেচাকেনা হচ্ছে। এগুলোর বেশির ভাগই ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমা কোম্পানিগুলো বেচাকেনা করে। ব্যক্তি ও অন্যান্য করপোরেট প্রতিষ্ঠান এখনো এই খাতে বিনিয়োগ করছে না। এই খাতে ব্যক্তি ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে আসার জন্য সব ধরনের আকর্ষণীয় বন্ড মার্কেটে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এর অংশ হিসেবেই সরকারি খাতের সঞ্চয়পত্র ও সঞ্চয়ী বন্ডগুলো মার্কেটে নিয়ে আসা হবে। এগুলো এখনো বন্ড মার্কেটে বেচাকেনা হচ্ছে না। এখনো এসব সঞ্চয়পত্রে স্থায়ীভাবে সবচেয়ে বেশি মুনাফা দেওয়া হয়। এছাড়া রয়েছে সরকারি খাতের গ্যারান্টি। এসব কারণে সঞ্চয়ী উপকরণের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা রয়েছে। এসব বন্ড বাজারে এলে বিনিয়োগ আগমন বেশি হবে। কারণ তখন সঞ্চয়পত্র বা সঞ্চয়ী বন্ডের ক্রেতারা নিজেদের প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে এগুলো বিক্রি করে টাকা নগদায়ন করতে পারবে। বর্তমানে এগুলো মেয়াদপূর্তির আগে বিক্রি করতে হলে ব্যাংক বা সঞ্চয় ব্যুরোতে যেতে হয়। বিক্রি করে অর্থ তুলে আনাও সময়সাপেক্ষ। আবার মুনাফা পাওয়া যায় কম। এসব ঝামেলা এড়াতে এগুলো বন্ড মার্কেটে সহজেই বিক্রি করা যাবে। তখন মুনাফাও বেশি পাওয়া যাবে। কারণ বন্ড মার্কেটের ঘোষিত মুনাফার চেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাজারে ডলার-সংকটের কারণে ব্যাংকগুলোতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলারের জোগান দিতে হয়েছে। এতে তারল্যের একটি বড় অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চলে গেছে। এসব তারল্য আবার ট্রেজারি বিল কিনে নেওয়ার চুক্তি বা রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে রেপো নিলামের প্রবণতা বেড়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে সবজি ও মুরগির দাম

বাজারে সবজি ও মুরগির দাম বেশ কম। সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত আছে ডিমের দামও। অন্য মুদি পণ্যগুলোর দামও স্থিতিশীল। শুক্রবার (২৩ মে) সকালে রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও তালতলা ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে বেশিরভাগ সবজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পটোল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গা ও কাঁকরোল আছে এই তালিকায়। এছাড়া বরবটি, কচুর লতি, উস্তা, বেগুন, ঝিঙে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।
রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা আহাদুজ্জামান বলেন, বাজারে গ্রীষ্মের সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে, যে কারণে দাম অনেকটা কম। অনেক এলাকায় বন্যার শঙ্কার কারণে অনেকে ক্ষেতের সবজি তুলে ফেলছেন। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় প্রতিটি সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা করে কমেছে।
এদিকে, বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম নেমেছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। কিছু বাজারে দাম ১৭০ টাকা হাঁকলেও দরদাম করলে ওই দামে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ২০ টাকা কম। একইভাবে কমে সোনালী মুরগি প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির বিক্রেতা বজলু মিয়া বলেন, বাজারে এতো সস্তা দামে মুরগি দীর্ঘদিন পরেই বিক্রি হচ্ছে। এখন মুরগি বিক্রি করে খামারিদের প্রচুর লোকসান হচ্ছে। দাম ২০০ টাকা কেজির কাছাকাছি থাকা ভালো।
মুরগির দাম কম থাকলেও ডিমের দাম মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১০ টাকা বেড়ে ১৪০-১৪৫ টাকা হয়েছে। এখনো সে দামেই পাওয়া যাচ্ছে। নতুন করে দামের কোনো হেরফের হয়নি।
মালিবাগ বাজারে পাইকারি ডিম বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, বর্ষার এই সিজনে অন্য বছরগুলোতে ডিমের দাম আরও বেশি থাকে। সে হিসেবে এ বছর দীর্ঘদিন ধরে ডিমের দাম কম।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় বাজারগুলোতে এখন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা ডজন দরে। পাড়া-মহল্লায় এক ডজন ডিম ১৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
পুরোনো মিনিকেট চাল বাড়তি দামে বিক্রি হলেও কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে বাজারে নতুন আসা মিনিকেট। চাল বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, নতুন চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে। এখন প্রতি বস্তা মিনিকেটের দাম ২০০০ টাকার মধ্যে এসেছে, যা আগে ২২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
তিনি বলেন, বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দামই কমেছে। তবে পুরোনো কোনো চালের দাম এখনো কমেনি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পুরোনো মিনিকেট চাল যেখানে সর্বনিম্ন ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে নতুন মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। তবে ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পুরনো মিনিকেট চাল এখনো সর্বোচ্চ ৮৫-৮৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
অন্যদিকে মুদি বাজারে তেল চিনি ডালের দামে খুব একটা পার্থক্য দেখা যায়নি। তবে মাছের বাজারে চড়াভাব দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে চাষের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম।
বাজারে প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে।
এছাড়া কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙাশও আগের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি চাষের রুই, কাতলা ৩২০-৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা ও পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকদের মজুরি বাড়ালো সরকার

সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে দৈনিকভিত্তিক সাময়িক শ্রমিকদের মজুরি ১৫০ থেকে ২২৫ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। তবে এজন্য কিছু শর্ত মানতে হবে তাদের। গতকাল বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, যা আগামী এক জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
পরিপত্রে বলা হয়, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জরুরি কার্য সম্পাদনের সম্পূর্ণরূপে সাময়িকভাবে দৈনিকভিত্তিতে শ্রমিকদের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে। ইতোমধ্যে জারি হওয়া ‘দৈনিক ভিত্তিক সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী সরকার সাময়িক শ্রমিকের দৈনিক মজুরির হার পুনর্নির্ধারণ করেছে।
পুনর্নির্ধারিত মজুরি অনুযায়ী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় নিয়মিত দক্ষ এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ধরা হয়েছে ৮০০ টাকা। এতদিন এ এলাকায় নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৬০০ টাকা আর অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫৭৫ টাকা। অর্থাৎ এই এলাকায় শ্রমিকের মজুরি বাড়ছে ২০০ থেকে ২২৫ টাকা পর্যন্ত।
এছাড়া বিভাগীয় শহর এবং অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় নিয়মিত দক্ষ এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫০ টাকা। এতদিন যা ছিল যথাক্রমে ৬০০ এবং ৫৫০ টাকা। সেই হিসাবে মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। একইসঙ্গে জেলা ও উপজেলা এলাকায় নিয়মিত দক্ষ এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ধরা হয়েছে ৭০০ টাকা। এতদিন নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫৫০ টাকা, আর অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫০০ টাকা। এক্ষেত্রেও মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
পরিপত্রে বেশ কিছু শর্তের কথাও উল্লেখ করা হয়। এগুলো হচ্ছে– ‘দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োজন, মজুরি প্রদান এবং উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতসহ অন্যান্য নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে; শ্রমিকের সংখ্যা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে; সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, সংস্থার অনুকূলে বাজেটে দেওয়া বরাদ্দ থেকে এ ব্যয় নির্বাহ করতে হবে; উল্লিখিত দৈনিক মজুরির হারে মাসিকভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না; এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে এবং এ ব্যয়ের ক্ষেত্রে যাবতীয় আর্থিক বিধি বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জরুরি অত্যাবশ্যক কাজ সম্পাদনে গত এপ্রিলে ‘দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করে সরকার। নীতিমালা অনুযায়ী, শুধু দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে সাময়িকভাবে এ ধরণের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া যাবে, যারা সাময়িক ধরনের কাজের জন্য নিয়োজিত হবেন। এজন্য কোনো ধরনের পদ সৃজন করা যাবে না এবং এ ধরনের শ্রমিকদের মাসে ২২ দিনের বেশি সময়ের জন্য নিয়োজিত রাখা যাবে না।
‘সাময়িক কাজ’-এর সংজ্ঞায় নীতিমালায় বলা হয়েছে, সরকারের মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান/স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জরুরি ধরনের অত্যাবশ্যক কাজ বোঝাবে- যা সময়ে সময়ে প্রয়োজন হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান জনবল দ্বারা সম্পাদন করা সম্ভব হয় না। কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত শূন্য পদ/নিয়মিত পদ/জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেডভুক্ত পদের বিপরীতে কাজ করার জন্য কিংবা ‘আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ নীতিমালা’র আওতাভুক্ত সেবাসমূহের বিপরীতে দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না।
নীতিমালা অনুযায়ী, জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক ১৮ থেকে ৫৮ বছর বয়সের মানসিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম যে কেউ এ নীতিমালার আওতায় সাময়িক শ্রমিক হিসেবে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের রিজার্ভ আরও বাড়ল

দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বেড়েছে। বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ হাজার ৬৪২ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন বা ২৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ হাজার ৬৪২ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২০২৭২ দশমিক ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এর আগে, ১৯ মে পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৪৪৪ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২০ হাজার ০৭০ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এনবিআর এখনই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই: অর্থ মন্ত্রণালয়

রাজস্ব নীতি সংস্কার সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটিসহ সব অংশীজনের সঙ্গে বিশদ আলোচনা করে জারি করা ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার পর অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, দুটি নতুন বিভাগের জন্য এলোকেশন অব বিজনেস (কার্যপরিধি নির্ধারণ) এবং আয়কর আইন, কাস্টমস আইন, মূল্য সংযোজন আইন এবং এসব আইনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিধি ও প্রবিধানেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন হবে। এ কাজগুলোও সময়সাপেক্ষ। এ কাজগুলো সম্পাদন না করে কোনোভাবে অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এখনই বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ১২ মে জারি করা রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সঙ্গে ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, সড়ক বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, রাজস্ব নীতি সংস্কার সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির ৫ জন সদস্য এবং এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ জন প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সভায় এনবিআর সংস্কার ঐক্যপরিষদের দুইজন প্রতিনিধি, রাজস্ব নীতি সংস্কার সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির সদস্যরা বিস্তারিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। উপদেষ্টারা সকলের বক্তব্য ধৈর্যসহকারে শোনেন এবং তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
আলোচনায় উত্থাপিত সকল বিষয় অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সভা শেষে অর্থ উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত প্রদান করেন যে, ‘রাজস্ব নীতি সংস্কার সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটিসহ সব অংশীজনের সাথে বিশদ আলোচনা করে জারি করা অধ্যাদেশ প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার পর উক্ত অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা হবে।’
এমন ফলপ্রসূ আলোচনার পর যে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে তা মেনে না নিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ পুনরায় অসহযোগ আন্দোলনের যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তার কোন যৌক্তিক কারণ নেই- বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, অধ্যাদেশটি জারি করার পর তা বাস্তবায়নের জন্য অনেকগুলো কাজ যেমন, দুইটি বিভাগের নতুন করে সাংগঠনিক কাঠামো প্রণয়ন করত, পদ সৃজনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ, বাস্তবায়ন অনুবিভাগ, সচিব কমিটি কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদন ইত্যাদি সম্পাদন করতে হবে-যা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ বিষয়।
তাছাড়া, দুটি নতুন বিভাগের জন্য অ্যালোকেশন অফ বিজনেস এবং আয়কর আইন, কাস্টমস আইন, মূল্য সংযোজন আইন এবং এ সকল আইনের সাথে সম্পৃক্ত বিধি ও প্রবিধানেও পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হবে। একাজগুলোও সময়সাপেক্ষ কাজ। যেহেতু এই কাজগুলো সম্পাদন না করে কোনোভাবে অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় সেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখনি বিলুপ্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আজ রাজস্ব বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত দুইজন সদস্যের মধ্যস্ততায় সারাদিনব্যাপী দফায় দফায় আলোচনার একপর্যায়ে তাদের পাঠানো সমঝোতা প্রস্তাব সম্পূর্ণ মেনে নেয়ার পরও শেষ মুহূর্তে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে রয়েছে- যেহেতু অধ্যাদেশটি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে বাস্তবায়ন করার কাজটি অনেক সময়সাপেক্ষ, সেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সব কার্যক্রম আগের ন্যায় অব্যাহত থাকবে এবং কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিদ্যমান ব্যবস্থায় সকল কার্যক্রম সম্পাদন করবেন।
বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে পৃথকীকরণের প্রশাসনিক কাঠামো কীভাবে প্রণীত হবে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও গুরুত্বপূর্ণ সকল অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এনবিআরের সব কার্যক্রম আগের ন্যায় অব্যাহত থাকবে।
কাস্টমস ও কর ক্যাডারের সদস্যদের কোন পদ-পদবি কমানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই বরং সংস্কার কাজ সম্পাদন হলে তাদের পদসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং সচিব পদে নিয়োগসহ পদোন্নতির সুযোগ আরো অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।
রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে অর্থবছরের শেষ সময়ে জাতীয় বাজেট কার্যক্রম এবং রাজস্ব আহরণে নিয়োজিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অফিস সময়ে দপ্তরে উপস্থিত থেকে তাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় কার্যক্রম চালু রেখে এবং করদাতাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেগবান করার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
প্রথম দিনেই ১৭ কর্মী ছাঁটাই করলেন নগদের নতুন সিইও

মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগদান করেছেন মো. সাফায়েত আলম। তবে তার নিয়োগ অবৈধ এবং তাঁর পদে থাকার কোনো অধিকার নেই বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এরই মধ্যে সিইও হিসাবে যোগদানের প্রথম দিনেই ১৭ জন কর্মী ছাঁটাই করেছেন তিনি। যার ফলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ইডি) সহ প্রথমে ১৯ জনকে টার্মিনেট করে। তবে পরবর্তীতে দুইজনকে এ তালিকা থেকে বাদ দিয়ে বাকি ১৭ জনকে ছাঁটাই করা হয়। কারণ হিসেবে জানা গেছে, গত আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদে প্রশাসক বসায় বাংলাদেশ ব্যাংক, এই কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে।
সূত্র জানায়, নগদের অভ্যন্তরীণ নোটিসের মাধ্যমে বলা হয়েছিল কেউ যেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সহযোগিতা না করে। অর্থাৎ যেসব কর্মকর্তা সেই আদেশ অমান্য করেছে তাদেরকে নতুন সিইও যোগদান করে প্রথম দিনেই ১৭ জনকে চাকরিচ্যুত করেছে।
এদিকে একটি সূত্র অর্থসংবাদকে জানায় নগদের নতুন সিইও যোগদানের প্রথম দিনেই গভীর রাতে তার বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। যদিও পরবর্তীতে ছেড়ে দেয় বলে জানা গেছে।
এদিকে গত আগস্টে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নগদে প্রশাসক নিয়োগ করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে উচ্চআদালতের দ্বারস্থ হন মো. সাফায়েত আলম। তবে গত ৭ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত নগদে প্রশাসক নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে। তারপরই ১২ মে প্রতিষ্ঠানটির নতুন সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। তবে দায়িত্ব নিয়েই যোগদানের প্রথম দিনে প্রতিষ্ঠানের ১৭ জন কর্মকর্তাকে একযোগে ছাঁটাই করে মো. সাফায়েত আলম। তার এমন কর্মকান্ডে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এর আগে, গত রবিবার নগদের পরিচালনা নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, সিইও হিসেবে মো. সাফায়েত আলম অবৈধ এবং তাঁর পদে থাকার কোনো অধিকার নেই। সাফায়েত আলম জালিয়াতির মাধ্যমে এই পদে বসেছেন বলেও জানান গভর্নর।
গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যাঁর নামে মামলা করেছে, তাঁকে আবারও নগদের সিইও করা হয়েছে। সরকার তো সেটা মানবে না। এটা তো সরকারের পজিশন না। সরকারের পজিশন বাংলাদেশ ব্যাংক যেটা বলেছে, সেটাই। তবে যেহেতু বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে, এ বিষয়ে এর বেশি কিছু বলা ঠিক নয়।
জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার নগদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। প্রশাসক বসানোর পর নিরীক্ষায় উঠে আসে, নগদ লিমিটেডে বড় ধরনের জালিয়াতি সংঘটিত হয়েছে। ভুয়া পরিবেশক ও এজেন্ট দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে আর্থিক জালিয়াতি এবং অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক অর্থ বা ই-মানি তৈরি করা হয়েছে। এসব কারণে ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব মিলছে না।
সাবেক সরকারের আমলে নিয়মের বাইরে গিয়ে গ্রাহক বানানো, সরকারি ভাতা বিতরণসহ একচেটিয়া সুবিধা পায় নগদ। প্রতিষ্ঠানটিতে যখন এসব অনিয়ম সংঘটিত হয়, তখন এর পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। এ ঘটনায় ২৪ জনকে আসামি করে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসএম