অর্থনীতি
ভ্যাট সার্ভারে যুক্ত হচ্ছে সিমেন্ট খাতের দুই প্রতিষ্ঠান

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট সার্ভারে দেশের সিমেন্ট খাতের বড় দুই প্রতিষ্ঠান যুক্ত হচ্ছে। এর ফলে কোম্পানিগুলো ভ্যাট রিটার্ন দেওয়ার সময় তারা প্রয়োজনীয় সব তথ্য-উপাত্ত স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভ্যাট অনলাইনের সার্ভারে পাঠাতে পারবে। তাতে একদিকে রিটার্ন ও কাগজপত্র জমায় ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানের সময় বাঁচবে, অন্যদিকে ভ্যাট কর্মকর্তারা সহজেই ওই সব প্রতিষ্ঠানের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করতে পারবেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, সিমেন্ট খাতের দুটি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে এই সুবিধার আওতায় আসছে। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো সেভেন রিংস সিমেন্ট ও সিয়ামসিটি সিমেন্ট। এই দুটি প্রতিষ্ঠান আগামী মাসে ভ্যাট রিটার্ন দেওয়ার সময় তাদের বেচাকেনাসহ অর্থবিষয়ক যাবতীয় তথ্য–উপাত্ত সরাসরি ভ্যাট অনলাইন সার্ভারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা দিতে পারবে।
ইতিমধ্যে এই দুটি কোম্পানির ভ্যাট–সংক্রান্ত তথ্য–উপাত্ত ভ্যাট সার্ভারে পাঠানোর বিষয়টি পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষা। উদ্বোধন হলে আগামী মাসের (ফেব্রুয়ারি) ১৫ তারিখের মধ্যে প্রতিষ্ঠান দুটি তাদের জানুয়ারি মাসের ভ্যাট রিটার্ন দিতে পারবে। এই সময়ের মধ্যেই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানা গেছে।
এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইউনিটের কমিশনার ও ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের সাবেক পরিচালক কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু হলে ব্যবসায়ীদের সুবিধা হবে। তাঁরা ঘরে বসেই সহজে ভ্যাট রিটার্নের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও তথ্য–উপাত্ত সরাসরি ভ্যাট সার্ভারে জমা দিতে পারবেন। এখনকার মতো আলাদাভাবে সনাতন পদ্ধতিতে জমা দিতে হবে না।’
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, শুধু সিমেন্ট খাত নয়, উৎপাদন এবং সেবাসহ আরও কিছু খাতের কোম্পানিও এই ব্যবস্থায় আসতে ইতিমধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় ২০টির বেশি কোম্পানি আছে।
২০১৮ সালে এনবিআর বড় কোম্পানিগুলোর হিসাবে স্বচ্ছতা আনয়ন ও ভ্যাট ফাঁকি রোধে সফটওয়্যার ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়। ২০১৯ সালের ৩০ জুন এক আদেশে বার্ষিক পাঁচ কোটি টাকার বেশি টার্নওভার (লেনদেন) থাকা কোম্পানিগুলোর জন্য নির্ধারিত সফটওয়্যার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ। কিন্তু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তখন এই সফটওয়্যার ব্যবহারে অনীহা দেখা যায়। কারণ, এই সফটওয়্যারের সঙ্গে ভ্যাট বিভাগের সার্ভারের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের কথা বলা হয়েছিল।
অর্থসংবাদ/এমআই

অর্থনীতি
এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মুকিতুল বরখাস্ত

রাষ্ট্রের গোপনীয় নথি প্রকাশ করে চাকরির শৃঙ্খলা পরিপন্থি আচরণের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দ্বিতীয় সচিব (উপ-কমিশনার) মুকিতুল হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের শুল্ক-১ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৩৯(১) ধারা অনুযায়ী মুকিতুল হাসানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তাকে এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বরখাস্তকালীন তিনি নিয়ম অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।
এ আদেশ জনস্বার্থে জারি করা হয়েছে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। প্রজ্ঞাপনে সই করেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খান।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, অভিযোগটি তদন্তাধীন থাকায় মুকিতুল হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তদন্ত শেষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় এনবিআরের ভেতরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, গোপন নথি ফাঁসের ঘটনা প্রশাসনিকভাবে অত্যন্ত গুরুতর, যা দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
অর্থনীতি
ডলারের দাম বাড়লো

টানা চারদিন কমার পর আজ (মঙ্গলবার) আবার বাড়ল ডলারের দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের পর এই উল্টো পরিবর্তন দেখা গেছে। মঙ্গলবার একদিনেই ডলারের দাম বেড়েছে ১ টাকা ৪০ পয়সা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, দেশের মুদ্রাবাজারে মঙ্গলবার ডলারের সর্বোচ্চ দাম ১২১ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন ১২০ দশমিক ৮০ টাকা, সোমবার যা ছিল যথাক্রমে ১২০ দশমিক ১০ টাকা ও সর্বনিম্ন ১১৯ দশমিক ৫০ টাকা। আজ ডলারের গড় দাম ১২১ দশমিক ১১ টাকা, অর্থাৎ ডলারের বিক্রয়মূল্য বেড়েছে ১ টাকা ৪০ পয়সা।
রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়লেও আমদানি খরচ খুব একটা বাড়েনি। তাই ডলারের চাহিদা কিছুটা কমে গিয়েছিল। ফলে টাকার বিপরীতে ডলারের মান কমতে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে অর্থাৎ ডলারের দর ধরে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাজার থেকে ডলার কেনা শুরু করে।
গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ১৭ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার কিনেছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগের ফলে ডলারের দাম কমার প্রবণতা থেমে গেছে এবং আবার দাম বাড়তে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, গত কয়েক মাসে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। পাশাপাশি, জুন মাসে আইএমএফ, এডিবি, জাইকা এবং এআইআইবি থেকে বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তা আসায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভেও ডলার বেড়েছে। এসব কারণে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের চলতি হিসাবে ঘাটতি কমেছে এবং ডলারের ওপর চাপ কম থাকায় দাম কমছে।
এর আগে, গত বছরের ডিসেম্বরে ডলারের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল। মাত্র দুই কার্যদিবসে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম রেকর্ড ভেঙে ১২৮ টাকায় ওঠে যায়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে বাজার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তখন ১৩টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক দামে রেমিট্যান্স কেনার অভিযোগ ওঠে এবং তাদের ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। সেসময় গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছিলেন, কয়েকটি ব্যাংকের ভুল সিদ্ধান্তে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো ইচ্ছেমতো ডলারের দাম বাড়াচ্ছিল, যা সহ্য করা হবে না।
তিনি বলেন, ডলারের দাম ঠিক হবে বাংলাদেশের বাজারেই।
চলতি বছরের ১৫ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনার পর ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন ব্যাংক ও গ্রাহক নিজেরাই দর নির্ধারণ করছে। অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন, এতে ডলারের দাম বেড়ে যাবে, কিন্তু বাস্তবে তা কমেছে।
দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি হিসাবের নেতিবাচক অবস্থার পরিমাণ কমেছে। ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে— এই ১১ মাসে বৈদেশিক লেনদেনে যে ভারসাম্যহীনতা ছিল, তা এখন অনেকটাই কমে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে চার হাজার ৮৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। অন্যদিকে আমদানি হয়েছে ছয় হাজার ২৫ কোটি ডলার। ফলে এক হাজার ৯৩৮ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল দুই হাজার ২২ কোটি ডলার। সেই হিসাবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বাণিজ্য ঘাটতি ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ কমেছে। এই সূচক আমাদের অর্থনীতির জন্য ভালো সংবাদ। পাশাপাশি এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে রেকর্ড প্রবাহ এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই অংক এক অর্থবছরে দেশে আসা রেমিট্যান্সের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রবাসী আয়ের এমন ধারাবাহিক বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ও ডলারের জোগানে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে দেশের মোট রিজার্ভ দাড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের এই অংক গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২৩ সালে জুনে রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার ছিল। এ ছাড়া, আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে মোট রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতি
চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক

ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ, মানিলন্ডারিং ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এস এম মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, অনুসন্ধান করার জন্য দুদকের সহকারী পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-৫) মো. নওশাদ আলী ও উপসহকারী পরিচালক মো. ইমরান আজানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া মনিরুজ্জামানের বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক। নির্বাচন কমিশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ একাধিক সংস্থার কাছে চাওয়া হয়েছে তথ্য।
যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- কর্নফুলী নদীর ড্রেজিং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অনুমোদনপত্র আর্থিক বরাদ্দপত্র টেন্ডার ডকুমেন্ট, টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি, দাখিল করা দরপত্র, দরপত্র উন্মুক্ত ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন, তুলনামূলক বিবরণী, কার্যাদেশ, চুক্তি, বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন, বিল পরিশোধ সংক্রান্ত বিল-ভাউচারসহ সংশ্লিষ্ট সব রেকর্ডপত্র, এস এম মনিরুজ্জামানের ব্যক্তিগত নথির ছায়ালিপি ও এসএম মনিরুজ্জামান তার স্ত্রী এবং সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন/পাসপোর্টের সত্যায়িত ছায়ালিপি।
এসব রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ছায়ালিপি আগামী আগামী ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে দুদকে জমা দিতে বলা হয়েছে। এস এম মনিরুজ্জামানের নামে অভিযোগের বিষয়ে দুদকের চিঠিতে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ, মানিলন্ডারিং ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নিম্নবর্ণিত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।
অর্থনীতি
বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় ১৪ এনবিআর কর্মকর্তা বরখাস্ত

বদলির আদেশ অমান্য করে প্রকাশ্যে চিঠি ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৪ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এ-সংক্রান্ত পৃথক আদেশ জারি করেছে। আইআরডি সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান আদেশে সই করেন। দুপুরের পর থেকে তাদের নামে আদেশ জারি শুরু হয়। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত মোট ১৪ জন শুল্ক, ভ্যাট ও কর কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার আদেশ জারি হয়।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন—মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, ঢাকার কর অঞ্চল-৮–এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক সিফাত ই মরিয়ম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দ্বিতীয় সচিব শাহাদাত জামিল, ঢাকা কর অঞ্চল-২-এর যুগ্ম কর কমিশনার মাসুমা খাতুন, কর অঞ্চল-১৫-এর যুগ্ম কর কমিশনার মুরাদ আহমেদ, কুষ্টিয়া কর অঞ্চলের মোরশেদ উদ্দীন খান, নোয়াখালী কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, কক্সবাজার কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার আশরাফুল আলম প্রধান, খুলনা কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার শিহাবুল ইসলাম, রংপুর কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার নুশরাত জাহান ও কুমিল্লা কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার ইমাম তৌহিদ হাসান, খুলনা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল বশর ও ঢাকা উত্তর কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের রাজস্ব কর্মকর্তা সবুজ মিয়া।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত মাসে এনবিআরে যে আন্দোলন হয়েছে, তারা সবাই ওই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। কেউ কেউ নেতৃত্বও দিয়েছেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এই আন্দোলন হয়। বরখাস্ত হওয়া মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার এনবিআর ঐক্য পরিষদের সভাপতি এবং ঢাকার কর অঞ্চল-৮–এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা সহসভাপতি পদে আছেন।
বরখাস্তের আদেশ অনুসারে, ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ অবজ্ঞাপূর্বক প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করায় তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৩৯(১) ধারা অনুযায়ী এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগপূর্বক চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
গত মাসে রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ২৮ ও ২৯ জুন সারা দেশে কাজ বন্ধ করে দেন তারা। এরপর ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেন তারা।
এরপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। আন্দোলন প্রত্যাহারের পরে এই পর্যন্ত তিনজন সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। কাজ বন্ধ রাখার দায়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া এনবিআরের দুজন সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। তাদের বেশির ভাগই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—এই দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এর পর থেকে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে প্রায় দেড় মাস আন্দোলন করেন।
অর্থনীতি
নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৮ শতাংশ

মুদ্রানীতি কাঠামোর ইন্টারেস্ট রেট করিডোরের আওতায় আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার কার্যক্রম আরো গতিশীলকরণ এবং তারল্য ব্যবস্থাপনা সুসংহত করার লক্ষ্যে নীতি সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামীকাল বুধবার (১৬ জুলাই) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
মঙ্গলবাল (১৫ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটারি পলিসি বিভাগ থেকে জারীকৃত এক প্রজ্ঞাপন দেশের সকল তফসিলি ব্যাংক কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী বরাবর পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, নীতি সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি শতকরা ৮.৫০ শতাংশ হতে ৫০ বেসিস পয়েন্ট হ্রাস করে ৮ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করা হলো। এছাড়া, নীতি সুদহার করিডোরের উর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) বিদ্যমান শতকরা ১১.৫০ শতাংশে এবং ওভার নাইট রেপো নীতি সুদহার বিদ্যমান শতকরা ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে।
তারল্যের প্রয়োজনে বাণিজ্যিক ব্যাংক যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে, তখন তার সুদহার ঠিক হয় রেপোর মাধ্যমে। আর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে বাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে। রেপো রেটকে নীতি সুদহার নামে অভিহিত করা হয়।