আন্তর্জাতিক
লোহিত সাগরের সংঘাতে বাড়বে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি

বৈশ্বিক বাণিজ্যের ১২-১৫ শতাংশ পণ্যবাহী জাহাজ লোহিত সাগর দিয়ে চলাচল করে। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনের প্রতিবাদে এ পথে চলা পণ্যবাহী জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা। ইয়েমেনে হুথিদের দমন করতে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের যৌথ বাহিনী। এ তিন কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ বাণিজ্য পথে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কারখানায় উপকরণ সংকট দেখা দিয়েছে এবং উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে মূল্যস্ফীতি আবার বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন অর্থনীতিবিদরা।
বিশ্লেষকরা জানান, বাব আল-মান্দেব প্রণালি (২০ মাইল প্রশস্ত চ্যানেল) ইয়েমেন ও আফ্রিকার ইরিত্রিয়া ও জিবুতিকে বিভক্ত করেছে। গত বছরের অক্টোবরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে হামলা শুরু করে। এরপর শিপিং জায়ান্টরা লোহিত সাগর দিয়ে পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেয়।
ব্রিটিশ সমুদ্র নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান অ্যামব্রেয়ের মতে, চলতি সপ্তাহে পশ্চিমা বাহিনীর হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও হামলা অব্যাহত। ইয়েমেনের দক্ষিণ উপকূলে একটি মার্কিন মালিকানাধীন পণ্যবাহী জাহাজ আক্রান্ত হয়েছে।
প্রধান শিপিং সংস্থাগুলো এখন আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপ ঘুরে তাদের জাহাজগুলোকে পরিচালনা করছে। এতে সিঙ্গাপুর ও উত্তর ইউরোপের মধ্যে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলে ১২ দিন অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হচ্ছে।
শিপিং জায়ান্ট হ্যাপাগ-লয়েডের মতে, সিঙ্গাপুর থেকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে যাতায়াতকারী জাহাজের জন্য অতিরিক্ত ১৮ দিন যোগ করতে হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ, জাহাজ ভাড়া ও কর্মীদের বেতন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, কভিড-১৯ মহামারী এবং এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। সে মূল্যস্ফীতিও বিভিন্ন দেশে কমতে শুরু করেছে। তবে লোহিত সাগরের অনিশ্চয়তা নতুন করে মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে তেল ও খাদ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল মার্কেট ইন্টেলিজেন্স জানিয়েছে, এশিয়া ও উপসাগরীয় দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের প্রায় ১৫ শতাংশ সমুদ্রপথে পাঠানো হয় ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায়। এর মধ্যে রয়েছে ২১ দশমিক ৫ শতাংশ পরিশোধিত তেল এবং ১৩ শতাংশের বেশি অপরিশোধিত। এছাড়া তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পরিবহনে লোহিত সাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার পরে গত সপ্তাহে তেলের দাম বেড়েছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
ক্যান্সারে আক্রান্ত জো বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত বলে তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। ক্যান্সার তার শরীরের হাড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার ৮২ বছর বয়স্ক মি. বাইডেনের শরীরে এই রোগ শনাক্ত হয়। তিনি প্রস্রাব জনিত সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন।
চিকিৎসক জানিয়েছেন তার ক্যান্সার কিছুটা আগ্রাসী ধরনের এবং গ্লিসন মাত্রা দশের মধ্যে নয়। এর মানে হলো এটি একটি উচ্চ ধাপের ক্যান্সার, যা শরীরে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। মি. বাইডেন ও তার পরিবার চিকিৎসার সম্ভাব্য উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার কার্যালয় বলছে, যে ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছে তা কিছুটা হরমোন সংবেদনশীল হওয়ায় এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ক্যান্সারের খবর প্রকাশের পর সাবেক প্রেসিডেন্টকে সমর্থন করে অনেকে বিবৃতি দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন যে, তিনি এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এই খবর শুনে দু:খ পেয়েছেন।
“আমরা জিল ও পরিবারের প্রতি আন্তরিক শুভকামনা জানাচ্ছি। আমরা দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি,” লিখেছেন তিনি।
সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, তিনি ও তার স্বামী বাইডেন পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ক্যান্সারের জন্য চিকিৎসা খুঁজে পেতে বাইডেনের চেয়ে বেশি কেউ কিছু করেননি। তিনি ও তার স্ত্রী মিশেল ওবামা মি. বাইডেনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
জো বাইডেন ২০১৬ সালে ‘ক্যান্সার মুনশট’ কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন এবং তিনি নিজেই এর নেতৃত্বে থাকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
স্বাস্থ্য ও বয়স নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হবার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে ২০২৪ সালে নিজেকে সরিয়ে নেয়ার এক বছর পর এ ধরনের একটি খবর এলো। তিনিই সবচেয়ে বেশি বয়সে দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন।
একটি টেলিভিশন বিতর্কে দুর্বল পারফরম্যান্সের কারণে সমালোচিত হবার পর সমালোচনা জোরদার হলে এক পর্যায়ে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
এক পর্যায়ে তার জায়গায় কমালা হ্যারিস ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেন।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য মতে, বিশ্বব্যাপী পুরুষদের ক্ষেত্রে ত্বকের ক্যান্সারের পর প্রোস্টেট ক্যান্সারেই বেশি মানুষকে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।
দ্যা ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বা সিডিসি বলছে, প্রতি ১০০ জন পুরুষের মধ্যে ১৩ জনই জীবনের একটা পর্যায়ে প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তাদের মতে বয়সের সাথে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ উইলিয়াম ডাহুট বিবিসিকে বাইডেনের ডায়াগনোসিসের যেসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তার ভিত্তিতে বলেছেন, এই ক্যান্সারটির চরিত্রই অনেকটা আগ্রাসী।
“সাধারণত ক্যান্সার হাড়ে ছড়িয়ে পড়লে সেটাকে আমরা নিরাময়যোগ্য ক্যান্সার মনে করি না,” বলেছেন তিনি।
তিনি অবশ্য বলেছেন প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসায় অনেক রোগীর মধ্যেই ভালো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। “এবং অনেকে চিকিৎসা নিয়ে অনেক বছর বাঁচতে পারেন,” বলেছেন তিনি। বাইডেন হোয়াইট হাউজ ছাড়ার পর জনসম্মুখে এসেছেন কমই। তিনি গত এপ্রিলে শিকাগোতে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আয়োজিত একটি সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
মে মাসে বিবিসিকে একটি সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন তিনি, যেখানে তিনি বলেছিলেন যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিলো তার জন্য কঠিন। এতে স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ‘এর সমর্থনে কোনো ধরনের প্রমাণ নেই’।
বহু বছর ধরেই জো বাইডেন ক্যানসার গবেষণার পক্ষে প্রচার চালিয়ে আসছেন। ২০২২ সালে তিনি ও তাঁর স্ত্রী জিল বাইডেন ‘ক্যানসার মুনশট’ উদ্যোগ পুনরায় শুরু করেন, যার মূল লক্ষ্য ছিলো ২০৪৭ সালের মধ্যে ৪০ লাখের বেশি ক্যানসারের মৃত্যু প্রতিরোধে গবেষণার গতি বাড়ানো।
বাইডেনের বড় ছেলে বাউ বাইডেন ২০১৫ সালে মস্তিষ্কের ক্যানসারে মারা গিয়েছিলেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
গাজায় ‘ব্যাপক’ স্থল হামলা শুরু করল ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘ব্যাপক’ স্থল হামলা শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েল। রোববার (১৮ মে) এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ।
তারা বলেছে, হামাসের বিরুদ্ধে বড় হামলার অংশ হিসেবে স্থল হামলা শুরু হয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গতকাল, অপারেশন গিডিয়ন চ্যারটের অংশ হিসেবে আমাদের দক্ষিণ কমান্ডের স্যান্ডিং এবং রিজার্ভ সেনারা উত্তর ও দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় ব্যাপক স্থল হামলা শুরু করেছে।”
প্রতিরক্ষা বাহিনী আরও জানিয়েছে, স্থল হামলায় সহযোগিতা ও হামাসের পাল্টা হামলা প্রতিহতে গত এক সপ্তাহে তাদের বিমানবাহিনী হামাসের ৬৭০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। যার মধ্যে ছিল হামাসের বিভিন্ন সেল, সুড়ঙ্গ এবং ট্যাংক বিধ্বংসী সাইট।
এখন পর্যন্ত হামাসের কয়েক ডজন সদস্য এবং বেশ কিছু অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। এছাড়া গাজার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো দখল করে রাখার তথ্য জানিয়েছে দখলদারদের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
বসতি (অবৈধ) স্থাপনকারী ইসরায়েলিদের রক্ষায় এই হামলা প্রয়োজন অনুযায়ী অব্যাহত থাকবে এবং বিমানবাহিনী এতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গত এক সপ্তাহে ইসরায়েলিদের বিমান হামলায় গাজায় পাঁচশর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। দখলদার ইসরায়েল হামাসের সদস্যদের হত্যার দাবি করলেও; তাদের হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ।
শুধুমাত্র আজ রোববার গাজায় অন্তত ১৩৫ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা। ইসরায়েলিদের হামলার কারণে গাজার উত্তরাঞ্চলের সব হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে করে আহত মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করছেন। ইসরায়েলিদের এ বর্বরতা বন্ধে কাতারের রাজধানী দোহায় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে হামাসের আলোচনা চলছে। আজও সেখানে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কথা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ আলোচনা সফলতার মুখ দেখেনি।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে হামাসের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “ইসরায়েলের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। তারা যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি না দিয়ে জিম্মিদের মুক্ত করতে চায়। কিন্তু আমরা বলেছি গাজা থেকে ইসরায়েলের সব সেনাকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে, গাজার অবরোধ তুলে নিতে হবে এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে তাহলে তাদের সব জিম্মিকে আমরা একসঙ্গে মুক্তি দেব।”
যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দখলদারদের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আজ বলেছেন, তারা হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা করছেন। তবে হামাস যদি গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চায় তাহলে সংগঠনটির যোদ্ধাদের গাজা ছেড়ে চলে যেতে হবে এবং এ উপত্যকাকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে বলে শর্ত দিয়েছেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
স্থলপথে কেন বাংলাদেশি পণ্যে নিষেধাজ্ঞা, জানাল ভারত

বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে পণ্য আমদানিতে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। শনিবার (১৭ মে) দেশটি জানায়, বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু পণ্য আর স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ কয়েকটি রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না।
এ নিষেধাজ্ঞা মূলত পোশাকসহ কয়েকটি জনপ্রিয় পণ্যের ওপর কার্যকর হবে, যা ভারতীয় আমদানিকারকদের এখন বাধ্যতামূলকভাবে সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে বাধ্য করবে।
ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ৭৭০ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঝুঁকিতে পড়বে বলে মনে করছে গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই)। এ পরিমাণ বাংলাদেশের ভারতের সঙ্গে মোট রপ্তানির প্রায় ৪২ শতাংশ।
রোববার (১৮ মে) ভারতীয় প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি, আর আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের সীমান্ত শুল্ক পয়েন্টগুলো দিয়ে এখন থেকে ফলমূল, কার্বনেটেড পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার, তুলার বর্জ্য, কাঠের আসবাবপত্র ও নির্দিষ্ট কিছু প্লাস্টিক পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জিটিআরআই বলছে, ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্ত কেবল অর্থনৈতিক নয়, এতে কূটনৈতিক বার্তাও নিহিত। সংস্থাটির ভাষ্যমতে, বাংলাদেশ সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, যার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবেই ভারত এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে ‘সমুদ্রপথ থেকে বিচ্ছিন্ন’ বলে অভিহিত করেন। সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ২.১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি হয়। বিষয়গুলো ভারতের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থে প্রভাব ফেলেছে বলে জিটিআরআই মনে করছে।
এএনআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ গত এক বছরে ভারতীয় সুতা, চাল, কাগজ, মাছ, গুঁড়া দুধ এবং তামাকজাত পণ্যের আমদানিতে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে এসব পণ্যের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ কার্যকর হবে।
তাছাড়া বাংলাদেশ তাদের ভূখণ্ড দিয়ে ভারতের পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে টনপ্রতি ১.৮ টাকা করে ট্রানজিট ফি আরোপ করেছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মতে, এসব পদক্ষেপে ভারতের রপ্তানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং এটি ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট করছে’।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করে ভারতে। এতদিন এসব পণ্য মূলত স্থলবন্দর দিয়ে যেত। কিন্তু ভারতের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে কেবল কলকাতা ও নাভা শেভা (মহারাষ্ট্র) বন্দরের মাধ্যমে এসব পোশাক আমদানি করতে পারবে ভারতীয় ক্রেতারা।
জিটিআরআই বলছে, এতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে সময় ও খরচ উভয়ই বাড়বে, ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। সংস্থাটি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, ভারতের এই পদক্ষেপ সরাসরি বাংলাদেশি সুতা আমদানিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার জবাব।
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত স্পষ্ট। দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক বাধা সৃষ্টির অভিযোগ করছে। ফলে ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে আরও জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চলবে: ভারতীয় সেনাবাহিনী

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ভারতের সেনাবাহিনী। সেই সঙ্গে এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষের কোনো তারিখ নেই বলেও জানানো হয়েছে।
রবিবার (১৮ মে) ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভি দেশটির একজন সেনা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায়।
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রোববার ভারত ও পাকিস্তানের ডিজিএমওদের মধ্যে কোনো আলোচনা হওয়ার সময়সূচী নির্ধারিত নেই।
পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি অস্থায়ী ছিল এবং আজই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে এমন ধারণা উড়িয়ে দিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের ডিজিএমও (ডিরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশনস) আলাপচারিতায় যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তার কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই।
এর আগে শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ১৮ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ মে ভারত ও পাকিস্তান ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
ভারত ও পাকিস্তানের চার দিনের পাল্টাপাল্টি হামলার পর এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাতব্যাপী আলোচনার পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন তারা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আজ শেষ হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি

আজ শেষ হতে চলেছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির মেয়াদ। দুই দেশের প্রশাসনের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ নবায়নের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। এতে করে সীমান্ত এলাকায় বিরাজ করছে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা।
দীর্ঘদিন ধরেই নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) বরাবর যুদ্ধবিরতির আওতায় শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় থাকলেও, মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর অভিযান পরিচালনাকারী মহাপরিচালকরা শিগগিরই বৈঠকে বসবেন বলে জানা গেছে। তবে এই বৈঠক ঠিক কবে এবং কোথায় অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য দেয়নি দিল্লি কিংবা ইসলামাবাদ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি নবায়ন না হলে সীমান্তে গোলাগুলির আশঙ্কা বাড়তে পারে, যার প্রভাব পড়বে সীমান্তবর্তী সাধারণ মানুষের ওপর।
সীমান্ত পরিস্থিতি নজরে রেখে নিরাপত্তা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।