ধর্ম ও জীবন
জুমার দিন যেসব আমলে গুনাহ মাফ হয়
আল্লাহ রাত ও দিনকে সৃষ্টি করেছেন। সব দিনের মধ্যে জুমাবার বা শুক্রবারকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। কোরআন ও হাদিসে এই দিনের বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের জন্য এই দিনটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ।
হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা আগের জাতিগুলোর কাছে জুমার মর্যাদা অজ্ঞাত রাখেন। তাই ইহুদিরা শনিবার নির্ধারণ করে। আর খ্রিস্টানরা রবিবার নির্ধারণ করে।
আমাদের কাছে তিনি জুমার দিনের মর্যাদা প্রকাশ করেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮৫৬)
জুমার দিনের পাঁচ বৈশিষ্ট্য
সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে জুমার দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত। আবু লুবাবা বিন আবদুল মুনজির (রা.) থেকে বর্ণিত, হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার দিনের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। তা হলো-
এক. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন।
দুই. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম (আ.)-কে জমিনে অবতরণ করিয়েছেন।
তিন. এই দিনে আদম (আ.)-কে মৃত্যু দিয়েছেন।
চার. এই দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা কিছুই প্রার্থনা করবে তিনি তা দেবেন। যতক্ষণ সে হারাম কিছু প্রার্থনা করবে না।
পাঁচ. এই দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৮৯৫)
নিম্নে জুমার দিনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
১. জুমার নামাজ আদায়:
সালমান ফারসি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করবেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা, এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজান মধ্যবর্তী সময়ের পাপ মোচন করে; যদি সেই ব্যক্তি সব ধরনের কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে। (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)
২. জুমার দিন গোসল করা:
জুমার দিন গোসল করা ও আগে আগে মসজিদে যাওয়া অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। আউস বিন আউস সাকাফি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করল, দ্রুততর সময়ে মসজিদে গেল ও (ইমামের) কাছাকাছি বসে মনোযোগসহ (খুতবা) শুনল, তাঁর জন্য প্রতি কদমের বদলে এক বছরের রোজা ও নামাজের সওয়াব থাকবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৫)
৩. মসজিদে প্রথমে প্রবেশ:
জুমার দিন মসজিদে আগে প্রবেশ করা ও মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনার বিশেষ গুরুত্ব আছে। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, অতঃপর প্রথমে মসজিদে গেল সে যেন একটি উট কোরবানি করল। যে এরপর মসজিদে গেল, সে যেন একটি গরু কোরবানি করল। আর যে এরপর ঢুকল, সে যেন ছাগল কোরবানি করল, এরপর যে ঢুকল সে যেন মুরগি কোরবানি করল, আর যে এরপর ঢুকল সে ডিম সদকা করল। অতঃপর ইমাম খুতবার জন্য এলে ফেরেশতারা আলোচনা শোনা শুরু করে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৪১)
৪. জুমার দিন দোয়া কবুল হয়:
জুমার দিন একটি সময় আছে, যখন মানুষ আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, জুমার দিন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে ভালো কিছুর দোয়া করলে আল্লাহ তাকে তা দেন। তোমরা সময়টি আছরের পর অনুসন্ধান কোরো। (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর : ১০৪৮)
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো মুসলিম এ সময় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে দান করেন। এই মুহূর্তটি তোমরা আছরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান কোরো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)
৫. সুরা কাহাফ পাঠ:
জুমার অন্যতম আমল সুরা কাহাফ পাঠ করা। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পড়বে তা দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার জন্য আলোকিত হয়ে থাকবে। আর যে ব্যক্তি এই সুরার শেষ ১০ আয়াত পাঠ করবে অতঃপর দাজ্জাল বের হলে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। যে ব্যক্তি অজুর পর এই দোয়া পড়বে তার নাম একটি চিঠিতে লেখা হবে। অতঃপর তাতে সিল দেওয়া হবে, যা কেয়ামত পর্যন্ত আর ভাঙা হবে না। (সহিহ তারগিব, হাদিস : ১৪৭৩, আল মুসতাদরাক : ২/৩৯৯)
৬. গুনাহ মাফ হয়:
সালমান ফারসি থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্র হলো, তেল ব্যবহার করল, ঘর থেকে সুগন্ধি ব্যবহার করল, অতঃপর মসজিদে এলো, সেখানে দুজন মুসল্লির মধ্যে ফাঁক করে সামনে এগিয়ে যায় না, নির্দিষ্ট পরিমাণ নামাজ পড়ল, অতঃপর ইমাম কথা শুরু করলে চুপ থাকল; তাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৩)
৭. দরুদ পাঠ:
জুমার দিন নবীজি (সা.)-এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা কর্তব্য। আউস বিন আবি আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙায় ফুঁ দেওয়া হবে এবং এই দিনে সবাইকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব, তোমরা এই দিনে আমার ওপর বেশি পরিমাণ দরুদ পড়ো। কারণ জুমার দিনে তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়। সাহাবারা বললেন, আমাদের দরুদ আপনার কাছে কিভাবে পেশ করা হবে, অথচ আপনার দেহ একসময় নিঃশেষ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আল্লাহ জমিনের জন্য আমার দেহের ভক্ষণ নিষিদ্ধ করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দিন মসজিদে যে কারণে হেঁটে যাবেন
শুক্রবার বা জুমার দিন হলো সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। ছুটির দিন ছাড়াও এদিনকে গরিবের হজের দিনও বলা হয়। ‘জুমা’ শব্দটি ‘জমা’ শব্দ থেকে এসেছে, যেটি আরবি শব্দ; এর অর্থ একত্র হওয়া বা একত্রিত করা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জুমার দিন সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত। (ইবনে মাজাহ: ১০৮৪)
এই দিনে যারা হেঁটে আগে আগে মসজিদে যায় তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।
হজরত আউস ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং খুতবার সময় কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি কদমে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৫)
অন্য হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জুমার দিনে ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো— যে একটি উট সদকা করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো— যে একটি গাভী সদকা করে। তারপর আগমনকারী— তিনি মুরগি সদকাকারীর মতো। তারপর আগমনকারী— একটি ডিম সদকাকারীর মতো। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দপ্তর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন।’ (বুখারি: ৮৮২)
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
কুয়েতে কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশি আনাস
কুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৩তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় ৭৪টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম হয়েছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস মাহফুজ। এ ছাড়া এ প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছেন বাংলাদেশের ক্বারি আবু যর গিফারী। ছোটদের হেফজ গ্রুপে এই বিজয় অর্জন করেন হাফেজ আনাস মাহফুজ। তিনি ঢাকার মারকাযুল ফয়জিল কুরআন আল ইসলামীর শিক্ষার্থী।
বুধবার (২০ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালে কুয়েতের ক্রাউন প্লাজায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন কুয়েতের ধর্ম ও আইনমন্ত্রী ড. ইবরাহিম ওসামী, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রথম সচিব ডক্টর বদর আল হিজরতসহ কুয়েতে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) কুয়েতের ধর্ম মন্ত্রণালয় আয়োজিত বিশ্ব কোরআন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ৩টি ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপে এতে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের বিশ্বজয়ী হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম, হাফেজ আনাস মাহফুজ এবং ক্বারি আবু জর গিফারী।
শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা হাফেজ আনাস মাহফুজের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। এর আগে তিনি জাতীয় হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা ২০২৩ পিএইচপি কোরআনের আলোয় তৃতীয় স্থান অধিকার করেন।
বিজয়ী হাফেজ আনাস মাহফুজ বলেন, আমি হেফজ ছোট গ্রুপে কুয়েত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আমি আরো ভালো কিছ করতে পারি।
তৃতীয়স্থান অধিকারী ক্বারি আবু যর গিফারী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত হয়ে কুয়েতে কেরাত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে তৃতীয় স্থান অর্জন করি। এটা আসলে অনেক গর্বের। এর আগে জাতীয়ভাবে ২০১৪ সালে আরটিভিতে সেকেন্ড রানার আপ এবং ২০১৬/১৭-তে এটিএন বাংলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিনামূল্যে ১ হাজার মুসল্লিকে ওমরাহ করাবে সৌদি
তালিকাভুক্ত ৬৬টি দেশের এক হাজার মুসল্লিকে বিনামূল্যে ওমরাহ করার সুযোগ দেবে সৌদি সরকার। সুযোগ পাওয়া মুসল্লিদের ওমরাহর সম্পূর্ণ ব্যয় সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সৌদির বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ এ-সংক্রান্ত একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন।
দেশটির হজ এবং ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, মক্কার কাবা শরিফ, মদিনার মসজিদে নববি এবং সৌদি সরকারের অতিথি হিসেবে তারা ২০২৪ সাল শেষ হওয়ার আগেই ওমরাহ পালন করতে পারবেন। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মনোনীত সব ওমরাহ যাত্রীকে ইতোমধ্যে চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে তাদের আহ্বান করা হবে।
সৌদির ইসলামিক অ্যাফেয়ার্সবিষয়ক মন্ত্রী এবং সরকারি এই কর্মসূচির সুপারভাইজার শেখ আবদুল লতিফ আল শেখ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত ইসলামিক স্কলার, শেখ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ভ্রাতৃত্ব ও সম্পর্ক স্থাপনই এ উদ্যোগ বা কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।
বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার মুসল্লিকে অতিথি হিসেবে ওমরাহ করিয়ে আসছে সৌদি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
হজের টাকা রিফান্ডের নামে প্রতারণা, সতর্ক করলো মন্ত্রণালয়
হাজিদের রিফান্ডের টাকা ফেরতের নামে একাধিক প্রতারক চক্র মাঠে সক্রিয় থাকার তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। শনিবার (১৬ নভেম্বর) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে এক শ্রেণির প্রতারক চক্র হজের রিফান্ডের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে হাজি, হজ এজেন্সির মালিক বা প্রতিনিধি ও হজ গাইডদেরকে ফোন করে তাদের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ কিংবা নগদ ইত্যাদির তথ্য চাচ্ছে। এভাবে দুয়েকটা প্রতারণার ঘটনাও ঘটেছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে হাজি, হজ এজেন্সি ও হজ গাইডদের রিফান্ডের টাকা সরাসরি ব্যাংক হিসাবে বিইএফটিএন বা চেকের মাধ্যমে পাঠানো হয়। এজন্য কোনো ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ কিংবা নগদের তথ্য চাওয়া হয় না। প্রতারক চক্র ফোন করে টাকা ফেরতের কথা বলে এরূপ কোন তথ্য চাইলে, না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এছাড়া এ ধরনের ফোন আসলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করার জন্যও পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এর আগে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
যেসব জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হয় না
জুমা অর্থ সম্মিলন বা জমায়েত। জুমা শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো কিছু সংখ্যাক মানুষের জমায়েত। কিছু সংখ্যাক মানুষ একসাথে জামাতবদ্ধ হয়েই জুমার নামাজ আদায় করতে হয়। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ একা আদায় করা গেলেও জুমার নামাজ একা আদায় করা যায় না।
কোন জায়গায় জুমার নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। এর মধ্যে একটি শর্ত হলো জুমা হতে হবে কোনো শহর বা উপশহরে। জনমানবহীন জঙ্গল বা মরূভূমিতে জুমার নামাজ শুদ্ধ হবে না।
শহর ও উপশহরের বাইরে যেসব এলাকায় রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি নেই, মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সহজলভ্য নয়, ওইসব এলাকায় জুমা হবে না। যেমন আমাদের দেশের খাগড়াছড়ি বা বান্দরবনের গহীন জঙ্গলে বসবাসকারীদের ওপর জুমা আবশ্যক নয়।
জনবহুল এলাকা থেকে দূরের মরুভূমিতেও জুমার নামাজ পড়া যাবে না। সেনাবাহিনীর কোন ক্যাম্প যদি গহীন পাহাড়ে স্থাপন করা হয়, অথবা মরু অঞ্চলে যদি ট্রেনিংয়ে জন্য সেনা ক্যাম্প করা হয়, তাহলে তারা এসব জায়গায় জুমা পড়া থেকে বিরত থাকবে এবং জোহরের নামাজ আদায় করবে।
হজরত আলী (রা.) বলেন,
لَا جُمُعَةَ وَلَا تَشْرِيقَ إِلَّا فِي مِصْرٍ جَامِعٍ
শহর ছাড়া জুমা ও ঈদের নামাজ নেই। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক: ৫১৭৫)
জুমার নামাজ শুদ্ধ হওয়ার আরেকটি শর্ত হলো যে জায়গায় জুমার নামাজ হবে, ওই জায়গাটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকা। সবার জন্য উন্মুক্ত নয় এ রকম জায়গায় জুমা শুদ্ধ হয় না। যেমন জেলখানার মসজিদে জুমা শুদ্ধ হয় না। অফিসের নামাজ ঘর বা কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য বিশেষায়িত মসজিদ যদি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত না হয়, তাহলে সেখানে জুমা শুদ্ধ হবে না।
স্বাভাবিক অবস্থায় জুমার নামাজ কোনো জামে মসজিদে আদায় করাই বাঞ্চনীয়। তবে কখনও যদি বিশেষ প্রয়োজন দেখা দেয়, যেমন কোনো বড় সমাবেশ বা মাহফিলে যদি বহু সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হয়, যাদের জুমা আদায় করার মতো জায়গা আশপাশের জামে মসজিদগুলোতে নেই, তাহলে তারা জুমার অন্যান্য শর্ত পূরণ করে সমাবেশস্থলে বা কোনো মাঠেও জুমার নামাজ আদায় করতে পারেন।