শিল্প-বাণিজ্য
বিশ্ববাজারে চালের দাম আরো বাড়ার আশঙ্কা
সমাপ্ত ২০২৩ সালে বিশ্ববাজারে চালের তীব্র সরবরাহ সংকট ছিল। নতুন বছরের প্রথম দিকেও এ সংকট অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে এশিয়াসহ বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যটির দাম নতুন উচ্চতায় পৌঁছতে পারে।
তথ্য মতে, গত বছরের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম বেড়ে ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। শস্যটির দামে এমন উল্লম্ফনের কারণে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। এশিয়া ও আফ্রিকায় অনেক নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশের অর্থনীতিতে বাড়ছে ঝুঁকি।
বিশ্ববাজারে চালের সরবরাহ সংকটের পেছনে অনেকগুলো বিষয়কে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। এল নিনোর কারণে আবহাওয়ার অপ্রত্যাশিত আচরণ খাতসংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। কোথাও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, আবার কোথাও খরা ব্যাহত করছে শস্যটির আবাদ ও উৎপাদন প্রক্রিয়া।
ভারত বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে দেশটির সরকার পণ্যটির রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করতে শুরু করে। ওই সময় বাসমতী ছাড়া সব ধরনের সাদা চাল রফতানিতে দেয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। স্থানীয় সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতেই এ রফতানি নীতি গ্রহণ করে নয়াদিল্লি। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে শস্যটির সরবরাহ সংকট দেখা দেয়।
এদিকে সরবরাহ ব্যাহত হলেও গত বছর শস্যটির চাহিদা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ভারতসহ সব রফতানিকারক দেশেই আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে দাম। চলতি বছরও চাহিদায় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্ট্যাটিস্টার দেয়া তথ্যমতে, থাইল্যান্ড বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ চাল রফতানিকারক। গতকাল ৫ শতাংশ ভাঙা থাই চালের (সাদা চাল) দাম কিছুটা কমে টনপ্রতি ৬৪৬ ডলারে নামে। কিন্তু এখনো এটি ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দাম।
বিশ্বের কয়েকশ কোটি মানুষের প্রধান খাদ্য চাল। শস্যটির এমন মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। গৃহস্থালির নিত্যদিনের ব্যয় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর অনেক পরিবার।
লন্ডনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিলের বিশ্লেষক পিটার ক্লাব বলেন, নিকট ভবিষ্যতে বাজারে চালের সরবরাহ সংকট অব্যাহত থাকবে। এক্ষেত্রে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা পালন করবে ভারতের রফতানি নিষেধাজ্ঞা।
তিনি আরো বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে আগামী এপ্রিলে। ঈদের আগে এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের মুসলমানদের মাঝে শস্যটির চাহিদা বাড়বে।
ভারত আগামী এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখবে বলে মনে করছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা। কারণ ভোটার সমর্থন আদায় করে নিতে এ সময়ের মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভারত চাল রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপের পরই চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলো। ফিলিপাইনে চালের মূল্যস্ফীতি বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। ফিলিপাইনের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়াও শীর্ষস্থানীয় চাল আমদানিকারক। দেশটির সরকার চালের উৎপাদন বাড়াতে সেনাবাহিনীকে কৃষকদের সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হালনাগাদ মূল্যসূচক প্রতিবেদনের তথ্য মতে, ডিসেম্বরে চালের বৈশ্বিক দাম নভেম্বরের তুলনায় ১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৩ সালে দাম বেড়েছে আগের বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ।
অর্থসংবাদ/কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
সাত দিনের জাতীয় এসএমই মেলা শুরু রবিবার
১১তম জাতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প পণ্য (এসএমই) মেলা শুরু হচ্ছে আগামী রবিবার (১৯ মে)। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের ‘হল অব ফেম’-এ সাতদিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৫ মে) মেলা উপলক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মাসুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আগামী ১৯ থেকে ২৫ মে শতভাগ দেশি পণ্য নিয়ে এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের এসএমই উদ্যোক্তাদের পুরস্কার প্রদান করা হবে। এতে সাতজন ক্ষুদ্র, মাঝারি ও স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তার হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এবারের মেলায় অংশ নেবে সাড়ে তিনশোরও বেশি প্রতিষ্ঠান, যাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই নারী-উদ্যোক্তা।
এবারের মেলায় তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ৭৫টি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া পাটজাত পণ্যের ৪২টি, হস্ত ও কারুশিল্পের ৩৮টি, চামড়াজাত পণ্যের ৩২টি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের ২৭টি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ২৩টি, খাদ্যপণ্যের ১৪টি, তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা খাতের ১৩টি, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের এসএমই ক্লাস্টারের উদ্যোক্তাদের ১২টি, হারবাল/ভেষজ শিল্পের ৫টি, জুয়েলারি শিল্পের ৫টি, প্লাস্টিক পণ্যের ৪টি, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স খাতের ৩টি, ফার্নিচার খাতের ৩টি এবং বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ১৯টি টল থাকবে মেলায়।
এছাড়া ৩০টি ব্যাংক, ১৫টি সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ক্লাবসহ আরও প্রায় ৫০টি উদ্যোক্তাদের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেবে।
মেলায় এসএমই ঋণ বিতরণকারী প্রায় ২৫টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। এছাড়া মেলায় প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী আগ্রহী উদ্যোক্তাদের নিবন্ধন করা হবে। এসএমই ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পরিচালিত বিজনেস ইনকিউবিশন সেন্টার সম্পর্কে ধারণা প্রদানের পাশাপাশি ইনকিউবিশন সেন্টার ব্যবহারের জন্য আগ্রহী স্টার্ট-আপ/নতুন উদ্যোক্তাদের প্রাথমিক নিবন্ধন করা হবে।
মেলা শেষে মেলায় স্টল ডেকোরেশনসহ প্রচলিত ও বহুমুখী পণ্য বিচারে শ্রেষ্ঠ স্টলকে পুরস্কার দেওয়া হবে। মেলায় সন্ধানীর সহযোগিতায় একটি রক্তদান কেন্দ্র থাকবে। যে কোনো ব্যক্তি এখানে রক্তদান করতে পারবেন।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সাতদিনের মেলার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের উইন্ডি টাউন হলে ২০-২৩ মে ক্রেতা-দর্শনার্থী এবং এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ অর্থায়ন, নারী-উদ্যোক্তা, প্রযুক্তি, আইসিটি ও ক্লাস্টার উন্নয়নের ওপর আয়োজন করা হবে ৬টি সেমিনার।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এর আগে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ১০টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলায় প্রায় ২ হাজার ৩৩০ জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা প্রায় ৪৩ দশমিক ৬২ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি এবং প্রায় ৭২ দশমিক ৮৫ কোটি টাকার অর্ডার গ্রহণ করেন। এছাড়া এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সারাদেশের ৫০টি জেলায় ৮৬টি আঞ্চলিক-বিভাগীয় এসএমই পণ্য মেলায় অংশ নেন ৪ হাজার ৭২ জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু
দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভারত থেকে পেঁয়াজবোঝাই একটি ট্রাক হিলি বন্দরে প্রবেশের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। মেসার্স আরএসবি ট্রেডার্স এসব পেঁয়াজ আমদানি করেছে। প্রথমদিন একটি ট্রাকে ৩০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
আমদানি শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে পাইকার ও সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে। ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থাকায় দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা গেল ৪ মে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরও ৪০ শতাংশ শুল্ক থাকায় নানা জল্পনাকল্পনা শেষে ১১ দিন পর আজ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
আমদানি স্বাভাবিক থাকলে পেঁয়াজের দাম কোরবানি ঈদে বাড়বে না বলেও জানান তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান পাটমন্ত্রীর
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক। এসময় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এবং বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান মন্ত্রী।
রোববার (১২ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রীর অফিস কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকালে উভয় দেশের প্রতিনিধিরা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
পাটমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। বিশেষত বস্ত্র ও পোশাকখাতে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এসময় মন্ত্রী বস্ত্র ও পোশাক খাতে বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণের সুযোগ প্রদান এবং উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কোরিয়ার আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদানের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে আমরা বাজারের বৈচিত্র্য বাড়ানো, পণ্য উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ইত্যাদিতে জোর দিচ্ছি।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বৃদ্ধির জন্য আমরা কোরিয়ান কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করছি।
এসময় দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত তিনটি বিষয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এ ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেন। এগুলো হলো-
প্রথমত, কাঁচামাল আমদানি করতে প্রচুর ট্যারিফ দিতে হয়। তার মধ্যে ৫টি পণ্য বস্ত্র ও পোশাক খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলোর ট্যারিফ কমাতে তিনি মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
দ্বিতীয়ত, ভিসা জনিত সমস্যা। বাংলাদেশে যারা কাজ করছেন তাদের খুব স্বল্প সময়ের জন্য ভিসা দেওয়া হয়। তিন মাস পর পর মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করতে হয়। এ সমস্যা উত্তরণে মন্ত্রীর সহযোগিতা চান।
তৃতীয়ত, কাস্টমস ক্লিয়ারিংয়ে দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে রাষ্ট্রদূত মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
এসময় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন।
সাক্ষাৎকালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত সচিব তসলিমা কানিজ নাহিদা, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান, জেডিপিসির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, ঢাকাস্থ দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসের কনসাল জেয়ং কি কিম উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে না দেওয়ার প্রস্তাব
বিভিন্ন ডিজিটাল পরিষেবা খাতে কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হবে চলতি অর্থবছর। তথ্যপ্রযুক্তিতে কর অব্যাহতির মেয়াদ আর বাড়াতে চায় না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নতুন (২০২৪-২০২৫) বাজেটে এ ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে নেওয়ার বিষয়টি এনবিআরকে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ।
নতুন বাজেট কেন্দ্র করে রোববার (১২ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব ভবনে অর্থমন্ত্রী ও অর্থ প্রতিমন্ত্রীর ওয়াসিকা আয়শা খান এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক এ তিন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তথ্য প্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি উঠানোর প্রস্তাব বিবেচনা করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী বাজেটের বিভিন্ন দিকে সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদান করেছে উভয়পক্ষ। রোববার সকালে আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক হয়।
২০১১ সাল থেকে ২৭টি ডিজিটাল পরিষেবা খাতে কর অব্যাহতি দিয়েছিল সরকার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সে কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হলে তা আবার চার বছরের জন্য বাড়ানো হয়। নতুন কোনো ঘোষণা না এলে চলমান এ কর অব্যাহতির মেয়াদ এ অর্থবছরে শেষ হবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো এরই মধ্যে এ অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ নতুন সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার। অর্থমন্ত্রী কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে না দিয়ে, এ খাতে অল্প অল্প করে করারোপ করা যায় কি না বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি দেশীয় শিল্প যাতে সুরুক্ষা পায় ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যাতে নাগালের মধ্যে রাখার বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
এনবিআরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন খাত থেকে কর ও ভ্যাট অব্যাহতি তুলে দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। পাশাপাশি আগামী বাজেটের এর উপযোগিতা ও যৌক্তিক কারণ তুলে ধরেন।
সূত্র জানায়, আগামী বাজটে কার্বোনেটেড পানীয় বা কোমল পানীয়র ওপরে ন্যূনতম কর ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার বিষয়টি জানানো হয়।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ড্রাফট মোটামুটি প্রস্তুত। আগামী ১৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমাদের দিনব্যাপী বৈঠক হবে। এর পরই বাজেট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তবে আগের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি প্রধানমন্ত্রী সবার কথা মনযোগ দিয়ে শুনেন। খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না হলেও তিনি আমাদেরটাই রাখেন, না হলে বিষয়টা নিয়ে অন্যকিছু করার সুযোগ আছে কী না জানতে চান। আমরা ১৪ মের এর জন্য আমাদের পেপার ও প্রেজেন্টেশন তৈরি করছি।
বৈঠকে উপস্থিত ওই কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী তিন বিভাগের বাজেট প্রস্তাবনা শুনেছেন। তাদের কিছু কোয়ারি ছিল। সিদ্ধান্তের পক্ষে বিপক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়েছে। একটা ফলপ্রসু বৈঠক হয়েছে।
সূত্র জানায়, অর্থপ্রতিমন্ত্রী জানতে চান বিদেশ থেকে আমদানি করা চিকিৎসা কিট ও অন্যান্য সামগ্রীতে শুল্কের পরিমাণ বেশি কেনো। তবে তাকে জানানো হয় দেশীয় শিল্পকে সুরুক্ষা দিতে শুল্ক যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা হয়েছে।
তথ্য প্রযুক্তি খাতের কর অব্যাহতি উঠানো প্রসঙ্গে বেসিস সভাপতি রাসল আহমেদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাত যদি করের আওতায় আনা হয়, সেটা মোট রাজস্ব আয়ের ১ শতাংশও হবে না। এ খাত সবেমাত্র দাঁড়াতে শুরু করেছে। একটা সম্ভাবনাময় খাত হুমকির মুখে ফেলা ঠিক হবে না। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ খাতে কর অব্যাহতি বজায় রাখা আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব) প্রেসিডেন্ট এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি শামীম আহসান তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আগামী ৩ বছর কর অব্যাহতি রাখার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, দাবিকৃত তিন বছরের কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষে, ১ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ এর মধ্যে একটি বার্ষিক কর হার প্রবর্তন করা যেতে পারে। বাংলাদেশের জিডিপিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবদান ১ দশমিক ৯ শতাংশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
শিল্প-বাণিজ্য
অনলাইনে যাত্রী সুবিধা চার্জ নেবে চার স্থলবন্দর
ভারত ভ্রমণে পাসপোর্টধারীদের যাত্রা সহজ ও ভোগান্তি কমাতে অনলাইনে যাত্রী সুবিধা চার্জ (পোর্ট ট্যাক্স) আদায় করবে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। বেনাপোলসহ বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী ও নাকুগাঁও স্থলবন্দরের যাত্রী সুবিধা চার্জ অনলাইনে একযোগে আদায় করা হবে।
রবিবার (১২ মে) থেকে ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজেই ট্যাক্স পরিশোধ করা যাবে। এর মেয়াদ ইস্যু তারিখ থেকে সাত দিন বলবৎ থাকবে। এর আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর যাত্রী টার্মিনাল থেকে পাসপোর্টধারীদের পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধ করতে হতো।
এ উপলক্ষে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন এটুআই প্রগ্রাম আইসিটি ডিভিশনের যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক মোল্লা মিজানুর রহমান। সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (ট্রাফিক) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এবং ইন্টিগ্রেটেড স্মার্ট ল্যান্ডপোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে একটিমাত্র প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে এ কর্তৃপক্ষের আওতাধীন বেনাপোল, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী ও নাকুগাঁও স্থলবন্দরের যাত্রী সুবিধা চার্জ অনলাইনে আদায় করতে একপে, এটুআই কর্তৃক কেন্দ্রীয় (সেন্ট্রাল) ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করা হয়েছে। এ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে যাত্রীদের সুবিধা চার্জ অনলাইনে আদায় করতে হবে। এসব স্থলবন্দরে তা আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ছয় হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। এতে প্রতিবছর বেনাপোল স্থলবন্দরে ভ্রমণ খাতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয় এবং পোর্ট ট্যাক্স খাতে আয় হয় প্রায় ১০ কোটি টাকা।
যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় স্থলপথে ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াতকারী যাত্রীদের ৯০ শতাংশই বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করে। ভারত যাতায়াতে পাসপোর্টধারীদের বর্তমানে এক হাজার টাকা ভ্রমণ ট্যাক্স এবং ৫৫ টাকা পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধ করতে হয়। এর মধ্যে ভ্রমণ ট্যাক্স সোনালী ব্যাংকে বা অনলাইনে পরিশোধের সুযোগ রয়েছে।
তবে এই সুযোগ পোর্ট ট্যাক্সের ক্ষেত্রে এত দিন না থাকায় যাত্রীদের স্থলবন্দরে পৌঁছে আবারও দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি দালালের হয়রানির শিকার হতো যাত্রীরা।
এ বিষয়ে ভারতগামী আনিছুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, অনলাইনে পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধ করার পদ্ধতি করায় আমাদের বেশ উপকার হয়েছে। তা ছাড়া অনলাইনে তাড়াতাড়ি ও স্বচ্ছভাবে হচ্ছে।
খাদিজা আক্তার নামের আরেকজন যাত্রী বলেন, অনলাইনে পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধের নিয়ম করায় আমরা ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছি। আগে বাচ্চা কোলে করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. রেজাউল করিম জানান, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন লিংক ব্যবহার করে বেনাপোল স্থলবন্দরের প্রযোজ্য যাত্রী সুবিধা চার্জ অনলাইনে পরিশোধপূর্বক প্রামাণিক হিসেবে মানি রিসিট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের গেটে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীদের প্রদর্শনের জন্য পাসপোর্টযাত্রীদের অনুরোধ করা হলো। অনলাইনে ইস্যুকৃত মানি রিসিটের মেয়াদ যাত্রার নির্ধারিত তারিখ থেকে সাত দিন বলবৎ থাকবে। এতে যাত্রীদের যাত্রা সহজ হবে ও ভোগান্তি কমে আসবে।