জাতীয়
কোন দল কত আসন পেলো, জানালো ইসি

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে কোন দল কত আসন পেয়েছে তা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে দুটি আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়েছে। ফলে ২৯৮টি আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যাক ২২২টি আসন লাভ করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টি ১১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ১টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১টি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি এবং স্বতন্ত্র পদে মোট ৬২ টি আসনে জয়লাভ করেছেন প্রার্থীরা।
গতকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া সারা দেশে নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়। ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ১৯৭১ জন। ভোট নেওয়া হয়েছে ব্যালট পেপারে।
ভোটগ্রহণ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল দাবি করেন নির্বাচনে ৪০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বড় অংশই বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন আটক ২০ বাংলাদেশি

মিয়ানমারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়া ২০ বাংলাদেশি দেশে ফিরছেন। রবিবার (১৩ এপ্রিল) মিয়ানমারের বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে।
দূতাবাস জানায়, অসাধু দালালরা এসব অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরদের মালয়েশিয়ায় পাচারের চেষ্টা করেছিল। পথিমধ্যে মিয়ানমারের আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তারা অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক হন। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এবং তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পর বাংলাদেশ দূতাবাস আজকে তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে। গত কয়েক মাস ধরে তারা মিয়ানমারে আটক ছিলেন।
মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন ২০ জন বাংলাদেশি তরুণের হস্তান্তরের সময় বন্দরে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, যারা অবৈধভাবে মিয়ানমারে প্রবেশ করেছেন, তাদের যাচাই-বাছাই করে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য দূতাবাস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি সম্প্রতি মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টার থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত আনার উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন।
একই জাহাজে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার ও চিকিৎসা সেবার জন্য যাওয়া বাংলাদেশের ৫৫ সদস্যের দলটিও দেশে ফিরছেন। তারা মিয়ানমারে ১০ দিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন দলটির সদস্যদের তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে মিয়ানমারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সকলকে কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানান। তিনি বিদেশগামীদের সন্দেহজনক বা প্রতারণামূলক চাকরির প্রস্তাবের শিকার না হওয়ার পরামর্শ দেন।
গত দুই বছরে মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাস ৩৫২ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে প্রত্যাবাসন করেছে। সর্বশেষ গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার থেকে ৮৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকের প্রত্যাবাসন হয়েছিল।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’ শুক্রবার মিয়ানমারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য ১২০ মেট্রিক টন মানবিক সহায়তা নিয়ে ইয়াঙ্গুনে যায়। আগামী মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে জাহাজটি চট্টগ্রামে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সৌদিতে ১৩৫৮ হজযাত্রীর বাড়িভাড়া করেনি ২০ এজেন্সি

সৌদির মক্কায় ১২৬৫ ও মদিনায় ৯৩ জন হজযাত্রীর বাড়িভাড়া করেনি ২০টি এজেন্সি। এসব হজযাত্রীর বাড়িভাড়া আজ (১৪ এপ্রিল) রাত ৮টার মধ্যে সম্পন্নকরার আলটিমেটাম দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
কোনো এজেন্সি এই সময়ের মধ্যে হজযাত্রীর বাড়িভাড়া সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন-২০২১’ এবং ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২২’ অনুসারে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির লাইসেন্স বাতিলসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
উপসচিব মামুন আল ফারুক সই করা এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা হজযাত্রীদের বাড়িভাড়া সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হওয়া এজেন্সিগুলোকে পাঠানো হয়েছে।
এ-সংক্রান্ত চিঠিতে, ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত মক্কায় ১২৬৫ ও মদিনায় ৯৩ জনের বাড়িভাড়া না করার কারণ ব্যাখ্যাসহ ১৪ এপ্রিল রাত ৮টার মধ্যে বাড়িভাড়ার সব প্রক্রিয়া সম্পন্নকরার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের হজে ৭০টি লিড এজেন্সির অধীনে আরও ৬৮৩টি এজেন্সি হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে। সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের রোডম্যাপ অনুসারে প্রথমে ২০২৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যে সব সেবা চুক্তি সম্পন্ন করার সময় নির্ধারিত ছিল। সৌদি সরকার পরবর্তীতে পরিবহন চুক্তি এবং হজযাত্রীদের জন্য মক্কা ও মদিনায় বাড়ি/হোটেল ভাড়া করার জন্য ২৫ মার্চ পর্যন্ত সময় বর্ধিত করে।
এই সময়ের মধ্যে যে সব এজেন্সি পরিবহন চুক্তি এবং হজযাত্রীদের জন্য মক্কা ও মদিনায় বাড়ি/হোটেল ভাড়া সম্পন্ন করতে পারেনি তাদের জন্য আরও ১০ দিন অর্থাৎ ৩ এপ্রিল মধ্যে চুক্তিসমূহ সম্পাদনের সময় বৃদ্ধি করে। তবে সৌদি সরকার ১৩ এপ্রিল তাসরিয়া প্রাপ্ত বাড়ি ভাড়ার অপশন বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে এখন সর্বশেষ সুযোগ হিসেবে মক্কা ও মদিনায় তাসনিফ প্রাপ্ত অর্থাৎ শুধু হোটেল ভাড়া নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এটিও যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে- বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এরূপ অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সব এজেন্সি/লিড এজেন্সিকে নিয়ে কয়েক দফা সভা করে এবং পত্র দিয়ে ও মোবাইলে মেসেজ দিয়ে এজেন্সিসমূহকে অনুরোধ করার পরেও ২০টি লিড এজেন্সি মক্কায় ১২৬৫ ও মদিনায় ৯৩ জনের বাড়ি ভাড়া সম্পন্ন করেনি।
এর ফলে এসব এজেন্সির মাধ্যমে নিবন্ধিত এসব হজযাত্রীদের হজে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এজেন্সির অবহেলার কারণে কোনো হজযাত্রী হজে যেতে না পারলে তাতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। আগামী ১৮ এপ্রিলের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করার সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে ২০টি লিড এজেন্সিকে মক্কায় অবশিষ্ট ১২৬৫ জনের ও মদিনায় ৯৩ জনের বাড়িভাড়ার সব প্রক্রিয়া ১৪ এপ্রিল রাত ৮টার মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, অন্যথায় ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন-২০২১’ এবং ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০২২’ অনুসারে লাইসেন্স বাতিলসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এবার হজে বাংলাদেশ থেকে ৮৭ হাজার ১০০ জন হজ পালন করবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমে ৫ হাজার ২০০ এবং বেসরকারি মাধ্যমে ৮১ হাজার ৯০০ জন হজে যাবেন। আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু

‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ শুরু হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য—‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।
পয়লা বৈশাখের সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে বের হওয়া এই শোভাযাত্রায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি যুক্ত হয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র ও দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে।
আগেই বলা হয়েছিল, এবারের শোভাযাত্রায় ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরা অংশ নিচ্ছেন। শোভাযাত্রায় রয়েছে সাতটি বড় মোটিফ, সাতটি মাঝারি মোটিফ ও সাতটি ছোট মোটিফ।
গত শনিবার ভোরে চারুকলা অনুষদের ভেতরে শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা দুটি মোটিফে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ২০ ফুট উচ্চতার ‘স্বৈরাচারের মুখাকৃতি’ নামে মোটিফটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। তার পাশেই রাখা ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফের একটি ডানা ও লেজের খানিকটা পুড়ে যায়।
স্বৈরাচারের মুখাকৃতি মোটিফটি বাঁশ ও বেত দিয়ে দাঁতাল মুখের এক নারীর মুখাবয়ব বানানো হয়। মাথায় খাড়া চারটি শিং, হাঁ করা মুখ, বিশালাকৃতির নাক ও ভয়ার্ত দুটি চোখ। এটিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি হিসেবে ধারণা করেছিলেন অনেকে।
ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কালো টি-শার্ট ও বাদামি প্যান্ট পরা এক যুবক চারুকলা অনুষদের দক্ষিণ দিকের গেট টপকে ভেতরে প্রবেশ করেন। যুবকটি ভেতরে এসে স্বৈরাচারের মুখাকৃতি মোটিফে তরল দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। তারপর আর তাঁকে দেখা যায়নি।
শোভাযাত্রার জন্য বানানো ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ পুড়ে যাওয়ার পর সেটি নতুন করে তৈরির কাজ শুরু করেন চারুকলার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। গত শনিবার রাতেই থার্মোকল বা সোলা দিয়ে নতুন করে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি বানানোর কাজ শুরু হয়। এ ছাড়া শোভাযাত্রার জন্য তরমুজের ফালি, বাঘ, ইলিশ, শান্তির পায়রা ও পালকির মোটিফ তৈরির কাজ গতকাল রোববার রাতের মধ্যেই শেষ করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক নববর্ষের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা

বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই এই নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার হোক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এই অভ্যুত্থান বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ, শান্তিময় ও আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের প্রেরণা দেয়।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রিয় দেশবাসী, সবাইকে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২- এর শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, শুভ নববর্ষ। পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব। বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। পুরো পৃথিবীতে যেখানে যেখানে বাঙালিরা আছেন, আজ আমাদের সবার আনন্দের দিন, বর্ষবরণের দিন।
তিনি বলেন, ফসলি সন হিসেবে কৃষিকাজের সুবিধার জন্য বাংলা সাল গণনা শুরু হয়েছিল। এখনো এ দেশের কৃষক বাংলা তারিখের হিসাবে বীজ বোনেন, ফসল তোলেন। বাংলা নববর্ষের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হালখাতা। এখনকার আধুনিক সময়েও এখনো হালখাতার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বাংলাদেশের হাট বাজারে, শহরে-বন্দরে।
ড. ইউনূস বলেন, নববর্ষের বৈশাখী মেলায় বাংলাদেশের জেলায় জেলায় উদ্যোক্তারা নিজেদের সৃজনশীলতা তুলে ধরেন। এ দিনকে উপলক্ষ্য করে সারাদেশে ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি, মাটির হাড়ি-পাতিল, খেলনা, হাতপাখা ইত্যাদি তৈরি করেন তারা। বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় এবং একে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের এইসব ঐতিহ্য যেন আমাদের নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। আমাদের সংস্কৃতি যেন বিশ্বের দরবারে আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি। আমাদের স্বর্গীয় ঐতিহ্য নতুনভাবে নতুন প্রজন্মের কাছে উৎসবমুখর পরিবেশে তুলে ধরতে এবং পৃথিবীর সামনে তুলে ধরতে বছরের এ দিনটিতে আমরা সুযোগ পাই।
পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীও চৈত্র সংক্রান্তি এবং নববর্ষ এবার বড় পরিসরে উদযাপন করছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পহেলা বৈশাখ সম্প্রীতির দিন, মহামিলনের দিন। আজ সবাইকে আপন করে নেওয়ার দিন। এবারের নববর্ষ নতুন বাংলাদেশের প্রথম নববর্ষ। আসুন আমরা বিগত বছরগুলোর গ্লানি, দুঃখ বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি। চলুন নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।
তিনি বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগ যেন আমরা না হারাই। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এ বছরের নববর্ষের আমাদের অঙ্গীকার।
নববর্ষের সব আয়োজন ও উদ্যোগের সাফল্য কামনা করে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, নববর্ষ ১৪৩২ আমাদের সবার জন্য শুভদিনের সূচনা করুক। নববর্ষ আমাদের সবার জন্য নতুন ও গভীর আনন্দের উন্মোচন করুক, এই কামনা করছি। সবাইকে আবারও নববর্ষের শুভেচ্ছা ও সালাম জানাচ্ছি। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
পহেলা বৈশাখ আজ, স্বাগত ১৪৩২

আজ পহেলা বৈশাখ, নববর্ষের প্রথম দিন। বাংলা পঞ্জিকার পাতায় আজ যুক্ত হলো এক নতুন বছর। পহেলা বৈশাখ বাঙালির জীবনে শুধু নতুন বছরের শুরুই নয়, এদিনে জীর্ণ-পুরোনোকে ছুড়ে ফেলে নতুনের আবাহন করে বাঙালি।
নতুন বছরকে বরণ করে নিতে বরাবরের মতো এবারও প্রস্তুত বাংলাদেশ। বর্ষবরণ উপলক্ষে বাঙালি ছাড়াও বিভিন্ন জাতিসত্তা মাতে তাদের নিজেদের উৎসবে। এবার তাই সরকারিভাবেই বর্ষবরণের আয়োজনে যুক্ত হয়েছে অন্য জাতিসত্তাগুলোও।
সৌর পঞ্জিকা অনুসারে বাংলা বারো মাস অনেক কাল আগে থেকেই পালিত হতো। এই সৌর পঞ্জিকার শুরু হতো গ্রেগরীয় পঞ্জিকায় এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে। সৌর বছরের প্রথম দিন আসাম, বঙ্গ, কেরালা, মনিপুর, নেপাল, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু এবং ত্রিপুরার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অনেক আগে থেকেই পালিত হতো। এখন যেমন নববর্ষ নতুন বছরের সূচনার নিমিত্তে পালিত একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে, তখন এমনটি ছিল না।
মুঘল সম্রাট আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেকে বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সব খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে বাধ্য থাকতো। এর পর দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদের মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হতো। এই উৎসব একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়, যার রূপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে।
তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল হালখাতা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হলো বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিক হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা- সব স্থানেই পুরোনো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন হিসাব বই খোলা হয়। হালখাতার দিনে দোকানদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকেন।
বাংলাদেশ এবং ভারত ছাড়াও পৃথিবীর আরও নানান দেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়ে থাকে। মূলত প্রবাসী বাঙালিরা সেসব দেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করে থাকেন। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার প্রধান তিনটি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার প্রত্যেকেরই বছরের নতুন দিনে উৎসব আছে। এদের মধ্যে ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু উৎসব।