অর্থনীতি
রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে: বাণিজ্যসচিব

দেশে নিত্যপণ্যের আমদানি স্বাভাবিক আছে। তাই রোজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) সচিবালয়ে পবিত্র রমজান উপলক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের রমজান ৯ মার্চ শুরু হতে পারে। যদিও এটা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। সেই উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা প্রস্তুতিমূলক সভা করেছি। আমদানিকারক সমিতি, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট সবাই ছিলেন। আমাদের মূল উদ্দেশ্য, রমজানের সময় বাজারে তেল, চিনি, চাল, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজসহ যেসব পণ্যের বেশি চাহিদা থাকবে, সেগুলোর মজুতের পরিমাণ কী, এবং আগামী মাসে আরও কী পরিমাণ আসছে, আসার পরে চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্য আছে কি না; সেটা দেখা। আবার আমদানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা আছে কি না, বা বন্দরে মাল খালাসের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা আছে কি না, বৈঠকে সেসব বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
সচিব বলেন, আমদানি মোটামুটি স্বাভাবিক আছে। আমরা জানি যে, আগে থেকেই অর্থাৎ প্রায় সাত-আট মাস ধরেই চিনি আমদানি একটু কম ছিল, সেটার প্রতিফলনও দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন কারণে চিনির আমদানি করা যাচ্ছিল না, যেমন ভারত চিনি রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে, ব্রাজিল থেকে আনতেও কিছু বাধা ছিল। এখন নতুন করে আমরা জানি যে, জাহাজের ক্ষেত্রে লোহিত সাগরের চ্যানেলে কিছুটা সমস্যা হয়েছে।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের ক্ষেত্রে আমরা ভালো অবস্থানে চলে যাবো। নতুন পেঁয়াজ আসবে। ভোজ্য তেলের মধ্যে সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি হচ্ছে। আগামী দু-মাসে আরও আমদানি হবে। আলোচনা করে দেখলাম, খেজুরের ক্ষেত্রেও একটা সমস্যা হচ্ছে। খেজুরের শুল্ক নিয়ে একটা দাবি আমদানিকারকদের আছে। তাদের অভিযোগ, এনবিআর থেকে অ্যাসেসম্যান্ট ভ্যালু অনেক বেশি রাখা হচ্ছে। সেটা কমানোর জন্য আমরা লিখেছিলাম। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, মাল অনেক ক্ষেত্রে বন্দরে এসে গেছে। খালাস হচ্ছে না। আগামীকাল চট্টগ্রাম বন্দরে আমরা খবর নেবো। যদি এ ধরনের বিষয় হয় যে ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে, কিন্তু সেটির সেটেলড হয়েছে অনেক কম, এটা আলোচনা করে ফয়সালা করতে হবে। যাতে আগামী দুই মাসের মধ্যে খেজুর চলে আসে।
রমজান উপলক্ষে কতটা বাড়তি আমদানি করতে হবে? প্রশ্নে তিনি বলেন, সাধারণত বছরে বা মাসিক যে চাহিদা থাকে, রমজানে সেটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। যেমন মাসে হয়ত দেড় লাখ টন সয়াবিন তেল লাগে, রমজানে সেটা তিন লাখ টন লাগে। রমজানে চিনিও লাগে দেড় লাখ টনের মতো, যেটা স্বাভাবিক সময়ে ৭৫ হাজার টন। বেশির ভাগ পণ্যই দেড় থেকে দুই গুণ বেশি চাহিদা থাকে। আর সারা বছরে খেজুরের যে চাহিদা, সেটার অর্ধেকটাই রমজানে, ৫০ হাজার টন।
এ বর্ধিত চাহিদা মেটাতে বৈঠক করা হয়েছে। রমজান সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা একটু বেশিই আমদানি করেন, আমরা সেটাকে সহায়তা দেওয়ার জন্য, বন্দর থেকে খালাস কিংবা এনবিআরের শুল্ক নিয়ে যদি কোনো সমস্যা থাকে, সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করবো। বাংলাদেশের ব্যাংকের বিষয়েও কথা হয়েছে। অনেক সময় শতভাগ মার্জিন দিয়ে এলসি খুলতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা চাচ্ছন, এটা কমিয়ে দেওয়া বা শূন্য করা যায় কি না। এটা নিয়েও আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি লিখবো।
আমদানি সহজ করে দেওয়া, যাতে পণ্যগুলো বাজারে সহজলভ্য হয়। আমাদের মূল্য উদ্দেশ্য সেটা। কারণ দামের ক্ষেত্রেও সেটার প্রভাব পড়বে। আমরা যদি পণ্যের যথেষ্ট যোগান দিতে পারি, তাহলে ভোক্তারা দামের ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন। রমজানে খুব ভালোভাবেই এসব পণ্য সরবরাহ করতে পারবো বলে আশা করছি।
রমজান সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য যাতে সহজে আমদানি করতে পারেন ব্যবসায়ীরা, এ জন্য ব্যবসায়ীরা যাতে সহজে এলসি খুলতে পারেন, সে জন্য অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া অনেকক্ষেত্রে শতভাগ মার্জিন নেওয়া হচ্ছে। এটা আমদানিকারকরা অভিযোগ করেছেন। এসব পণ্যের আমদানিকারকদের দাবি হচ্ছে, তারা শূন্য মার্জিনে আমদানি করতে চান। এটা অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিষয় না, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেরাই করতে পারে।
কারণ রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য আসবে, সেটার যদি মার্জিন কম রাখেন, তাহলে ভোক্তাদের লাভ হবে। তারা কম দামে পণ্যটি পেতে পারেন। আশা করি, বাণিজ্য ব্যাংকগুলো সেই ভূমিকা রাখবে। তাদেরও এ বিষয়ে লিখবো।
রমজানে প্রতিবছরেই পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এর প্রভাব নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমদানিমূল্যের ওপর নির্ভর করে পণ্যের দাম। জাহাজে আনতে কত খরচ হয়, বিমায় কত দিতে হয়! সবকিছু মিলিয়ে দাম নির্ধারিত হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি থাকলে এখানেও দাম বেশি হবে, কম হলে কম হবে। আজ পর্যালোচনা করে দেখেছি, তেল ও চিনির দাম আন্তর্জাতিক বাজারে স্থিতিশীল আছে। খুব একটা বেশির দিকে না। এর মধ্যে ডাল, ছোলার দামও স্থিতিশীল আছে। পেঁয়াজের দামও কমে যাবে।
রমজানের প্রথম সাতদিন ভোক্তারা একটু বেশি কেনাকাটা করেন, এ কারণে তখন দাম একটু বেশি হয়ে যায়। আশা করি, ভোক্তারাও এ বিষয়ে সচেতন থাকবেন। রোজার প্রথম কয়েকটা দিন যাওয়ার পর দাম কমে আসে, স্থিতিশীল হয়ে যায়। আগে কিনলে লাভবান হতে পারবেন না। রমজানে যেসব পণ্য বেশি প্রয়োজন হয়, সেগুলো আমদানি করতে যাতে ডলার থাকে, সেটা আমি বলেছি। এলসি খুলতে যাতে কোনোভাবে নিরুৎসাহিত করা না হয়। রমজানে যাতে পণ্যের ঘাটতি না হয়।
আমি চাইবো, গত বছর আমরা ৮টি পণ্যের জন্য বিশেষভাবে এলসি খোলার ব্যবস্থা করতে লিখেছিলাম। এ বছরে ৬টি পণ্যের জন্য লিখেছি। এগুলো নিয়েই মূলত আজ আলোচনা করেছি। কালকেই এ বিষয়ে চিঠি লিখবো।
সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম এখনো কমছে না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বলেছিলাম, কৃষিপণ্যের দাম কমে আসবে। সেটার দাম কমে এসেছে। আরও কমে যাবে। পেঁয়াজ ও আলুসহ যেসব পণ্য এসময়ে বাজারে উঠে, সেগুলোর দাম কমে এসেছে, আরও কমবে। পেঁয়াজের দাম আরও কমে যাবে। আলুর দাম আরও কমে যাবে।
তিনি বলেন, সমসময়ই নতুন আলুর দাম বেশি থাকে। আর পুরোনো আলু সব খাওয়া শেষ হয়ে গেছে। ডিমের দাম স্থিতিশীল। ডিমের দাম নিয়ে আমি কোনো সমস্যা দেখছি না। সারাবছর যে পণ্যের দাম একই রকম রাখা যাবে, সেটা না।

অর্থনীতি
অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সারা দেশের সকল জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ মে) বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে বাজুসের সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাজুসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়সহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় রাজধানীর তাঁতীবাজার নিজ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন বাজুসের সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসান।
অর্থনীতি
৯৬৬ কারখানা ঈদ বোনাস দেয়নি, এপ্রিলের বেতন বাকি ২৪টিতে

চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আগামী ৬ অথবা ৭ জুন বাংলাদেশে ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে হিসেবে পোশাক শ্রমিকদের ঈদের বোনাস ১ জুন ও মে মাসের বেতন ৩ জুনের মধ্যে দেওয়ার কথা। তবে এখন পর্যন্ত ২ হাজর ৯২টি কারখানার মধ্যে এক হাজার ১২৬টি কারখানা শ্রমিকদের বোনাস পরিশোধ করেছে। এখনো ঈদ বোনাস দেয়নি ৯৬৬ কারখানা। আর এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করেনি ২৪ কারখানা।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত মাত্র এক হাজার ১২৬টি কারখানা ঈদ বোনাস পরিশোধ করেছে, যা মোট কারখানার ৫৩ দশমিক ৮২ শতাংশ।
অন্যদিকে বিজিএমইএর অধীনে থাকা ঢাকা ও চট্টগ্রামের মোট ২ হাজার ৯২টি কারখানার মধ্যে ৯৬৬টি কারখানা এখনো ঈদ বোনাস পরিশোধ করেনি। যদিও বোনাস পরিশোধে কারখানা মালিকদের হাতে এখন মাত্র তিনদিন সময় আছে। বিজিএমইএ আশা করছে, সরকারের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বোনাস ও বেতন পরিশোধ সম্পন্ন হবে।
বিজিএমইএ’র সর্বশেষ তথ্যমতে, এখনো এপ্রিল মাসের বেতন দেয়নি ২৪টি কারখানা। এপ্রিলে বেতন হয়েছে ২ হাজার ৬৮টি কারখানায়। তাছাড়া মার্চ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে দুটি কারখানায়। ১৩/১ ধারায় একটি কারখানা বন্ধ রয়েছে। আর কারখানা খোলার পর কাজ বন্ধু, স্ব-বেতনে ছুটি বা শ্রমিকরা চলে গেছে এমন কারখানার সংখ্যা তিনটি।
অর্থনীতি
সামাজিক উন্নয়নে করছাড় সুবিধা পেল ৯ প্রতিষ্ঠান

স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সমাজসেবাসহ নানা সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমে অবদান রাখা ৯টি প্রতিষ্ঠানকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য করছাড় সুবিধা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
মঙ্গলবার (২৭ মে) এনবিআর থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন ইস্যু করা হয়েছে। আয়কর আইন, ২০২৩-এর ক্ষমতাবলে জারি করা এ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠান ২০৩০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কর অব্যাহতি সুবিধা পাবে।
করছাড় পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজ ইন্টারন্যাশনাল ইন বাংলাদেশ, রোগীকল্যাণ সমিতি, বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, প্যালিয়েটিভ কেয়ার সোসাইটি অব বাংলাদেশ এবং আগামী এডুকেশন ফাউন্ডেশন।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, এই ধরনের উদ্যোগ করদাতাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সমাজসেবাসহ নানা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে করছাড় দেওয়া সামাজিক দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করবে এবং জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর টেকসই অর্থায়নে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন ধরে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা, রক্ত সংগ্রহ, সচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং স্ক্রিনিং সেবা দিয়ে আসছে। আর মাস্তুল ফাউন্ডেশন কাজ করছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসনের মতো খাতে। পথশিশুদের জন্য স্কুল, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনাও করছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
অন্যদিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র কম দামে ওষুধ উৎপাদন, গণ চিকিৎসা, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিকা রেখে আসছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও শিশু অধিকার, শিক্ষা উন্নয়নে কাজ করছে।
কাফি
অর্থনীতি
দেশের রিজার্ভ আরও বাড়লো

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২৭ মে) পর্যন্ত দেশের মোট (গ্রস) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই হাজার ৫৮০ কোটি ডলার বা ২৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে, চলতি মাসের ২২ মে পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৬৪ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার বা ২৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ২৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার বা ২০ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।
উল্লেখ্য, নিট রিজার্ভ (প্রকৃত রিজার্ভ) গণনা করা হয় আইএমএফের বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুসারে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়।
অর্থনীতি
জিডিপি কমে ৪ শতাংশের নিচে, মাথাপিছু আয় এখন ২৮২০ ডলার

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা শঙ্কার মধ্যে ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পালিয়ে যাওয়ার পর ভঙ্গুর অর্থনীতি আরো ভেঙে পড়ে। রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব দেশের মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপিতে পড়েছে।
সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর আগের অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ২২ শতাংশ। তবে এ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমলেও মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৮২০ ডলার হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) চলতি অর্থবছরের জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রকাশ করেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বিনিয়োগ প্রত্যাশিত মাত্রায় না বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এ প্রবৃদ্ধির হার প্রতিফলিত হয়েছে। তবে বিনিয়োগের গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমানে বিনিয়োগ স্তিমিত রয়েছে এবং গত নয় মাসে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছে।
চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও সংস্থাটি এ পূর্বাভাস দিয়েছে। ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছে, বাংলাদেশ চলতি অর্থবছরে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে।
চলতি অর্থবছরে জিডিপির আকার বেড়ে ৪৬২ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আগের অর্থবছরে (২০২৩-২৪) জিডিপির আকার ছিল ৪৫০ বিলিয়ন ডলার, দেশীয় মুদ্রায় যা ৫০ লাখ ২ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকার সমান।
বিবিএস দেশের জনসংখ্যা, কৃষি, শিল্প, জনমিতি, অর্থনীতি, আর্থ-সামাজিক বিষয়াদি, প্রাকৃতিক সম্পদ, পরিবেশ ইত্যাদি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। এর মধ্যে স্থুল দেশজ উৎপাদনসহ (জিডিপি) গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক নির্দেশক প্রাক্কলন অন্যতম। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছিল। বর্তমানে সাময়িকভাবে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রাক্কলন করা হয়েছে।
বিবিএসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৮২০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। আগের অর্থবছরে (২০২৩-২৪) মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৩৮ ডলার। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে মাথাপিছু আয় ৮২ ডলার বেড়েছে।
জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিনিয়োগের বড় প্রভাব রয়েছে। বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, এ অর্থবছরে বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৩৮ শতাংশে, আগের অর্থবছরেও তা ছিল ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া দেশজ সঞ্চয় কমে ২৩ দশমিক ২৫ শতাংশে ঠেকেছে, আগের অর্থবছর তা ছিল ২৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ। তবে জাতীয় সঞ্চয় বেড়ে ২৯ দশমিক শূন্য ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, আগের অর্থবছর তা ছিল ২৮ দশমিক ৪২ শতাংশ।