আন্তর্জাতিক
কর্মী নেবে যুক্তরাজ্য, যেভাবে যাবেন

যুক্তরাজ্য বিশ্বের অন্যতম উন্নত দেশ। দেশটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি কর্মী নেয় কৃষিখাতে মৌসুমী কর্মী হিসেবে। মৌসুমী কর্মী হিসাবে বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য ভিসা দেয়া হয়ে থাকে৷ কাজ শুরুর আগে আগে তাদের ইউরোপে প্রবেশ করতে দেয়া হয় এবং কাজের মাসগুলো শেষে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়৷
এই ভিসায় আসা লোকদের অন্য কোনো সেক্টরে কাজ করতে দেয়া হয় না, তবে ইউরোপের কিছু দেশ মৌসুমি ভিসায় আসা কর্মীদেরকে পড়াশোনার বা প্রশিক্ষণের জন্য আবেদনের সুযোগ দেয়৷
গ্রিসে মৌসুমী কর্মী হিসেবে আসতে চাইলে, যে বিষয়গুলো জানতে হবে-
> বিষয়টি ভিসা এবং চাকরিদাতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যে একজন কর্মী এই ভিসায় এসে কতোদিন দেশটিতে থাকতে পারবেন৷ তবে ভিসার মেয়াদকাল পর্যন্ত কাজ করতে পারার নিশ্চয়তা রয়েছে৷ কিন্তু অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে চাকরি ছেড়ে দিতে হলে, বিষয়টি কঠিন হয়ে উঠতে পারে৷
> প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শর্তপূরণ করা না হলে, আপনি যে দেশে কাজ করছেন সেই দেশের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন৷ তবে এটি বিপজ্জনকও হতে পারে৷ কারণ, আপনি ওই দেশে ততক্ষণ থাকতে পারবেন, যতক্ষণ আপনি আপনার নিয়োগকর্তার জন্য কাজ করছেন।
>এমন পরিস্থিতিতে, আপনি যে খাতে কাজ করছেন, সেই খাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কোনো প্রতিনিধি বা মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তাহলে তারা আপনাকে সঠিক নির্দেশনা দিতে পারবেন৷
ব্রিটেনে মৌসুমী কাজ
> যুক্তরাজ্য সরকার অভিবাসী কর্মীদের জন্য ফল, শাকসবজি বা ফুল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ছয় মাসের অনুমতি দিয়ে মৌসুমী কাজের ভিসা দেয়।
> বড়দিনের চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে পোলট্রিখাতে কাজের জন্য ২ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি বিশেষ ভিসা দেয়া হয়৷
> প্রতি বছর ১৫ নভেম্বরের পোলট্রি ভিসার আবেদন জমা দিতে হয়৷
> আপনি যেকোনো সময় অন্য যেকোনো মৌসুমি কর্মী ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
> ভিসা পেতে, আপনার একটি স্পনসরের (নিয়োগদাতা বা কর্মসংস্থান সংস্থা) প্রয়োজন হবে৷ যেখান থেকে আপনাকে আপনার ভিসা আবেদনে ব্যবহারের জন্য স্পনসরশিপ রেফারেন্স নম্বরের একটি চিঠি দেবেন৷
যেসব শর্ত মানতে হবে
> আপনার বয়স ১৮ এর বেশি হতে হবে।
> যুক্তরাজ্যে চলার জন্য আপনার অবশ্যই যথেষ্ট অর্থ থাকতে হবে। সাধারণত আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে এক হাজার ২৭০ পাউন্ড সঞ্চয় থাকতে হবে৷ এই অর্থ আপনার ব্যাংক হিসাবে অন্তত ২৮ দিন ধরে থাকতে হবে৷ ভিসা আবেদনের সময় ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিয়ে এর প্রমাণ দেখাতে হবে৷
> আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি থাকতে হবে, যা আপনার পরিচয় এবং জাতীয়তা নিশ্চিত করবে৷
>পাসপোর্ট ছাড়া আপনার অন্য কোনো নথি যদি ইংরেজি ভাষায় না থাকে তবে তা সত্যায়িত অনুবাদ করে জমা দিতে হবে৷
নিয়োগপ্রক্রিয়া
বড় বড় কৃষি ব্যবসায়ীরা সরাসরি বিজ্ঞাপন দেয়, অন্যরা এজেন্ট ব্যবহার করে যারা যুক্তরাজ্য এবং আবেদনকারীর দেশে কাজ করে৷ যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় বেরি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান হলো হান্টার৷ বেরি তোলার ভালো সময় হলো জুন এবং জুলাই৷ কিন্তু প্রায়ই মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এবং কখনও কখনও বছরের শুরুতেও খামারের কাজ পাওয়া যায়।
আপনি যুক্তরাজ্যে যেদিন কাজ শুরু করবেন, তার তিন মাস আগে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন৷ অনলাইনে আবেদন করার পর, আপনি মোটামুটি তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত আশা করতে পারেন৷ ভিসা আবেদনে খরচ হয় ২৫৯ পাউন্ড৷ পরের বছর ফসল কাটার জন্য ভিসার সুবিধা থাকবে কিনা, তা ডিসেম্বরে ঘোষণা দেয়া হয়৷ অনেক খামার বছরের পর বছর ধরে একই কর্মীদের ওপর নির্ভর করে এবং প্রায়শই একই দেশ বা সংস্থা থেকে তাদের নিয়োগ করে৷
ভিসা দিয়ে আপনি যা করতে পারবেন এবং যা করতে পারবেন না
> একবার আপনার ভিসা হয়ে গেলে, আপনি শুধুমাত্র আপনার স্পনসরশিপের চিঠিতে উল্লেখিত চাকরিতে কাজ করতে পারবেন।
> পড়াশোনা করতে পারবেন৷
> কোনো স্থায়ী চাকরি বা এমন কোনো চাকরি নিতে পারবেন না, যা আপনার স্পনসরশিপের চিঠিতে উল্লেখ নেই।
> পাবলিক ফান্ডের জন্য যোগ্য হবেন না৷
> আপনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনতে পারবেন না।
শোষণ এবং আধুনিক দাসত্ব
> ফার্মিং কমিউনিটি নেটওয়ার্ক ফার্মওয়েল-এর ওয়েবসাইটে মৌসুমী শ্রমিক এবং আধুনিক দাসত্ব সম্পর্কে একটি নিবন্ধ রয়েছে। তারা অনুমান করে যে প্রতি বছর ১০ হাজার থেকে ১৩ হাজার মানুষ খাদ্য ও কৃষি শিল্পে নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকতে পারেন৷
> নির্যাতনের শিকার হলে পুলিশ, গ্যাংমাস্টারস অ্যান্ড লেবার অ্যাবিউজ অথরিটি (জিএলএএ) বা মডার্ন স্লেভারি হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন৷ নম্বরটি হলো: ০৮০০০১২১৭০০৷
নিজের অধিকার সম্পর্কে জানুন
> ব্রিটেনের পাবলিক সার্ভিস ইউনিয়ন ইউনিসন-এর ওয়েবসাইটটি যুক্তরাজ্যে অভিবাসী কর্মীদের অধিকার সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে। আপনি ইউনিসনকে সরাসরি ০৮০০০৮৫৭৮৫৭ নম্বরে কল করতে পারেন।যুক্তরাজ্যে বৈধভাবে কাজ করার জন্য, সব অভিবাসী কর্মীদের একটি জাতীয় বিমা নম্বরের জন্য নিবন্ধন করতে হবে।
> অন্য সব কর্মীদের মতো একই কর্মসংস্থান আইন দ্বারা সুরক্ষিত। একই কাজ করা ব্রিটিশ শ্রমিকদের সমান বেতন আপনার পাওয়া উচিত। জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা আছে এবং সব নিয়োগকর্তাকে অবশ্যই তা দিতে হবে। প্রতি ঘন্টার পরিবর্তে, আপনি যদি কাজ শেষে অর্থ দেয়া হয়, তবে আপনার বেতন অবশ্যই কমপক্ষে জাতীয় ন্যূনতম মজুরির সমতুল্য হতে হবে৷
> বেতন থেকে ট্যাক্স এবং জাতীয় বীমা কেটে নেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে একটি পেস্লিপ দেয়া হবে৷
> মজুরি থেকে অন্য কোন কারণে অর্থ কাটার কথা নয়, যদি আপনার চুক্তিতে সে সম্পর্কিত কোনো কিছু লেখা না থাকে৷ যেকোনো চুক্তি লিখিতভাবে নিশ্চিত করতে হবে৷
> আপনি যদি কিছুতে সম্মতও হন, তারপরেও একজন নিয়োগকর্তা আপনার অর্জিত অর্থ থেকে কোনো অর্থ কাটতে পারবেন না, যদি আপনি ন্যূনতম মজুরির চেয়ে কম উপার্জন করেন৷ তবে আবাসন সম্পর্কিত কিছু হলে কেটে নেয়ার অধিকার থাকবে নিয়োগকর্তার৷
> এমনকি বাসস্থানের জন্য একজন নিয়োগকর্তা কী পরিমাণ অর্থ কাটতে পারেন তার সীমা রয়েছে। আপনি যদি মনে করেন যে, আপনার নিয়োগকর্তা বাসস্থানের জন্য খুব বেশি টাকা কেটে নিচ্ছেন, তাহলে ইউনিসনের পে অ্যান্ড ওয়ার্ক রাইটস হেল্পলাইন ০৮০০৯১৭২৩৬৮ নম্বরে ফোন করতে পারেন৷
> ইউনিসন আপনাকে জেসিডাব্লিউই-এর সঙ্গে একত্রিত হয়ে বিনা খরচে অভিবাসন পরামর্শ দিতে পারে। আপনি যদি একজন অভিবাসী কর্মী হন, তাহলে আপনাকে অসুস্থতার অর্থও দেওয়া উচিত।
> যদি সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ করেন, আপনি প্রতি বছরে ২৮ দিন বেতনের বার্ষিক ছুটি পাওয়ার অধিকার রাখেন৷

আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলকে রুখতে বৈঠকে বসছে বাংলাদেশসহ ২০ দেশ

আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আগামী সপ্তাহে কলম্ববিয়ার রাজধানী বোগোটাতে প্রায় ২০টির বেশি দেশ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। কূটনৈতিকরা মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য জানিয়েছে।
আগামী ১৫-১৬ জুলাই এই ‘জরুরি বৈঠক’ অনুষ্ঠিত হবে। কলম্বিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এতে ইসরায়েল ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক এবং আইনিভাবে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যায় তার পথ খুঁজে বেরা করা হবে। কারণ ইসরায়েল তার মিত্রদের সহযোগিতায় দায়হীনভাবে গাজায় সকল ধরনের অপরাধ করে যাচ্ছে।
হেগ জোট আটটি রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গত ৩১ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডে গঠিত হয়েছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা এই গ্রুপটির প্রধান দায়িত্ব।
দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সমন্বয়ক বিষয়ক মন্ত্রী রোনাল্ড লামোলা মিডল ইস্ট আইকে বলেন, গত জানুয়ারিতে ‘হেগ গ্রুপটি’ গঠিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক আইনের বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে বিশ্বব্যাপী সাড়া জাগাতে পেরেছে।
তিনি আরও বলেন, বোগোটা সম্মেলনে একই ধরনের সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেখানে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হবে- ‘কোনো জাতি আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং কোনো অপরাধই উত্তরহীন থাকতে পারে না।’
তিনি বলেন, এজন্য আমরা এক সঙ্গে আইনি, কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে এমন কিছু করার চেষ্টা করছি যাতে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিকে ধ্বংস করতে না পারে।
২০২৩ সালে অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলার পর থেকে ৫৭ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকার ও বিশেষজ্ঞরা একে গণহত্যার হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন। এছাড়া হামলায় লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং অনাহারে রয়েছে অন্তত ২০ লাখ মানুষ।
কলম্বিয়ার বহুপাক্ষিক সম্পর্কিত বিষয়ক উপ-মন্ত্রী মাউরিসিও জারামিলো জাসির বলেন, ফিলিস্তিনি গণহত্যা বহুত্ববাদের জন্য হুমকি স্বরূপ। এ অবস্থায় বর্ণবাদ এবং জাতিগত নিধনে কলম্বিয়া কখনও নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, বোগোটা সম্মেলতে যোগদান করা দেশগুলো শুধু গণহত্যার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করবে না। বরং সুনির্দিষ্টভাবে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, তার জন্যও কাজ করবে।
হেগ জোটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের মধ্যে রয়েছে- বলিভিয়া, কলম্বিয়া, কিউবা, হুন্ডুরাস, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, সেনেগাল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কলম্বিয়ার রাজধানীতে আয়োজিত ওই সম্মেলনে আরও যেসব দেশ যোগ দিবে তার মধ্যে রয়েছে- আলজেরিয়া, বাংলাদেশ, বলিভিয়া, ব্রাজিল, চিলি, চীন, কিউবা, জিবুতি, হুন্ডুরাস, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, লেবানন, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, নিকারাগুয়া, ওমান, পর্তুগাল, স্পেন, কাতার, তুরস্ক, সেইন্ট ভিসেন্ট এবং দ্য গ্রিনাডিনেস, উরুগুয়ে ও ফিলিস্তিনি।
আন্তর্জাতিক
পুতুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া অফিসের ‘বিতর্কিত’ আঞ্চলিক পরিচালক ও ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
চার মাস আগে দুর্নীতি দমন সংস্থা দুদক তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জালিয়াতির অভিযোগ এনে দুটি মামলা করে। এরপরই তাকে ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গতকাল শুক্রবার (১১ জুলাই) থেকে এটি কার্যকর হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক ডাক্তার টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস স্টাফদের একটি ছোট ইমেইল বার্তায় জানিয়েছেন, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে ১১ জুলাই থেকে ছুটিতে পাঠানো হবে। তার জায়গায় আঞ্চলিক অফিসের দায়িত্ব পালন করবেন সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক ডাক্তার ক্যাথরিনা বোহমি। তিনি ১৫ জুলাই নয়াদিল্লিতে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন পুতুল। তবে তার এ নিয়োগ নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। অভিযোগ আছে, তার মা শেখ হাসিনা তাকে এই পদে নির্বাচিত করতে অবৈধ প্রভাব খাটিয়েছেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানায় হেলথ পলিসি ওয়াচ।
এদিকে দুদক পুতুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করে। সংস্থাটি অভিযোগ করে, আঞ্চলিক পরিচালক হওয়ার সময় পুতুল তার শিক্ষাগত রেকর্ড নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নিতে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে সম্মানসূচক পদ থাকার দাবি করেন।
এছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে ২ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নেন বলেও অভিযোগ করেছে দুদক।
বাংলাদেশে মামলা হওয়ার পর আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে তার কার্যক্রম চালানোর ক্ষমতা হ্রাস পায়।
আন্তর্জাতিক
ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া নিয়ে বড় ঘোষণা দেবেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে ন্যাটোর মাধ্যমে এবং তিনি সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেবেন।
ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে অগ্রগতির ঘাটতির কারণে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকেই এই যুদ্ধ চলছে।
এনবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন, আমি সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি বড় ঘোষণা দিতে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা অস্ত্র ন্যাটোতে পাঠাচ্ছি এবং ন্যাটো সেই অস্ত্রের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করবে। তারপর ন্যাটো সেগুলো ইউক্রেনকে দেবে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সরবরাহ করবে, কিন্তু সেই খরচ ন্যাটো বহন করবে।
তিনি ইউক্রেনকে সরাসরি মার্কিন অস্ত্র পাঠাবেন প্রেসিডেনশিয়াল ড্রডাউন অথরিটি ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টদের নিজস্ব অস্ত্র মজুত থেকে জরুরি ভিত্তিতে মিত্র দেশকে সহায়তা দেওয়ার সুযোগ দেয়।
দুই সূত্র জানায়, এই প্যাকেজের মূল্য হতে পারে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার এবং এতে থাকতে পারে প্রতিরক্ষামূলক প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ও আক্রমণাত্মক মাঝারি পাল্লার রকেট।
এই পদক্ষেপের আগে ট্রাম্প প্রশাসন শুধু সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদিত অস্ত্রই পাঠিয়েছে ইউক্রেনে। তবে এখন নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী সরাসরি অস্ত্র সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প এর আগে ইউক্রেনে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, কিন্তু সাম্প্রতিক বক্তব্যে তিনি কিয়েভের প্রতি সমর্থনও জানিয়েছেন এবং রাশিয়ার নেতৃত্বের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
আন্তর্জাতিক
দুই মাসে ৬৩শ প্রবাসীকে ফেরত পাঠালো কুয়েত

কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মে ও জুন মাসে প্রায় ৬ হাজার ৩০০ প্রবাসীকে আবাসিক ও শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, আবাসিক এবং শ্রম আইনের কঠোর বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এই বহিষ্কারের প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে। অভিযুক্তদের অনেকে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের মাধ্যমে এবং কিছু ক্ষেত্রে আদালতের রায় অনুযায়ী বহিষ্কৃত হয়েছেন।
দেশটির বহিষ্কার ও আটক বিভাগ জানায়, মানবিক সেবা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বহিষ্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, কুয়েতের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বসবাসকারী বা কর্মরত প্রবাসীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযানে আটক ব্যক্তিদের নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে এই অভিযান জোরদার করা হয়েছে, যা দেশটির শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণ এবং অভিবাসন আইন বাস্তবায়নের বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ।
আন্তর্জাতিক
আরও ৭ দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

বিশ্বের আরও ৭টি দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একথা জানিয়েছেন। শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইনসহ এই ৭টি দেশের ওপর মার্কিন শুল্ক কার্যকর হবে আগামী ১ আগস্ট থেকে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, আগামী ১ আগস্ট থেকে ৭টি দেশের পণ্যের ওপর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র আমদানি শুল্ক আরোপ করবে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ঘোষণা করেছেন।
এর মধ্যে ফিলিপাইনের ওপর ২০ শতাংশ, ব্রুনেই ও মলদোভার ওপর ২৫ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কা, ইরাক, আলজেরিয়া ও লিবিয়ার ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এই তথ্যগুলো ট্রাম্প তার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল–এ প্রকাশিত চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছেন। সেসব চিঠি মূলত তিনি সংশ্লিষ্ট দেশের নেতাদের উদ্দেশে পাঠিয়েছেন। তিনি লেখেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে অগ্রসর হতে চাই, তবে সেটা হবে কেবল আরও ভারসাম্যপূর্ণ ও ন্যায্য বাণিজ্যের ভিত্তিতে।
ট্রাম্প আরও বলেন, এসব শুল্ক হার এখনো যথেষ্ট নয় যাতে ওই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি পুরোপুরি দূর করা যায়।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যেসব পণ্য অন্য দেশের হয়ে অন্য মাধ্যমে পাঠিয়ে শুল্ক এড়ানোর চেষ্টা করা হবে, সেগুলোর ওপরও উচ্চ শুল্ক বসানো হবে। পাশাপাশি যদি কোনো দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তবে যুক্তরাষ্ট্র তার জবাবে ওই দেশের পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে।
ট্রাম্পের ভাষায়, দীর্ঘদিন ধরে শুল্ক ও অশুল্ক নীতির মাধ্যমে এবং নানা বাণিজ্যিক বাধার কারণে আমাদের বিপক্ষে যে অস্থিতিশীল বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা শুধরাতেই এই পদক্ষেপ প্রয়োজন।
এর আগে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি সপ্তাহের শুরু থেকে বিভিন্ন দেশের প্রতি নতুন শুল্ক হার সংক্রান্ত চিঠি পাঠাবেন। আগেই জানানো হয়েছিল, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে ১ আগস্ট থেকে।
পরে আরও ১২টি দেশের ওপর শুল্ক ঘোষণা করেন তিনি। সোমবার ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যাতে এই নতুন শুল্ক নীতিগুলো ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়।