জাতীয়
খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পেছনে শেখ হাসিনার দায় আছে: আসিফ নজরুল
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ওনাকে জেলখানায় বিভিন্ন সময় যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল, ওনাকে আমরা হয়তো এত তাড়াতাড়ি হারাতাম না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বেগম জিয়ার এই মৃত্যুর পেছনে ফ্যাসিস্ট যে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা এবং ওনার যে সরকার ছিল, অবশ্যই তার দায় রয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ওনাকে একটা প্রহসনমূলক রায়ে জেলখানায় পাঠিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে যেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, এটা যে প্রহসনের একটা রায় ছিল, এটা যে একটা সম্পূর্ণ সাজানো রায় ছিল, এটা আমাদের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল এবং রিভিউ এর মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত। সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিলের ডিভিশনের রায়ের মধ্যে বারবার বলা হয়েছে যে, বেগম জিয়াকে যেই মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে, সেটা সম্পূর্ণ ভুলভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে জিজ্ঞাংসাপ্রসূতভাবে ওনাকে সাজা দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে আপনারা সবাই লক্ষ্য করেছেন— আমাদের যা করার ছিল, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোহম্মদ ইউনুস— উনি ব্যক্তিগতভাবে সব সময় খোঁজখবর রেখেছেন, যা দরকার ছিল। ওনার যদি আবার বিদেশে পাঠানোর মতো অবস্থা থাকতো, অবশ্যই আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হতো। উনি ব্যক্তিগতভাবে এই জিনিসগুলো খোঁজখবর নিয়েছেন। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা হয়তো বেগম খালেদা জিয়াকে বছরখানেক বা বছর দুয়েক আগে যদি আমরা যদি পেতাম, হয়তো আমাদের পক্ষে কিছু একটা করা সম্ভব ছিল। আল্লাহর ইচ্ছা উনি চলে গেছেন। তবে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় আনন্দের ব্যাপার হচ্ছে উনি সারাদেশের মানুষের সম্মান, শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা নিয়ে বিদায় নিয়েছেন।
এসময় উপদেষ্টা জানান, খালেদা জিয়ার জানাজা এবং দাফন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক হবে। তিনি বলেন, আমরা চাই, এই আগামীকালের যে জানাজা এবং দাফন এটা যেন সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত হয়। আপনারা সবাই সহযোগিতা করবেন। আপনারা গণমাধ্যম এই সৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর যেভাবে সরকারকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করছেন, আমরা সত্যি কৃতজ্ঞ।
এমকে
জাতীয়
হাদির অসুস্থ মাকে দেখতে হাসপাতালে জামায়াত আমির
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে গেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) হাসপাতালে গিয়ে জামায়াত আমির চিকিৎসকের কাছ থেকে শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির মায়ের চিকিৎসার সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
এ সময় তার সর্বোচ্চ ও যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসকদের অনুরোধ জানান। তিনি মহান আল্লাহর কাছে শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির মায়ের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে দোয়া করেন।
জামায়াতের আমিরের সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন এবং ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের এনডিএফ’র নেতারা।
১২ ডিসেম্বর দুপুরে পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে মোটরসাইকেল থেকে মাথায় গুলি করে মুহূর্তের মধ্যেই নিরাপদে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে দুস্কৃতিকারীরা।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। টানা ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই শেষে ১৮ ডিসেম্বর রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এতে শোক, ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরা।
জাতীয়
ঢাকায় ৩ দিন আতশবাজি-ফানুস ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর (বুধবার) থেকে ২ জানুয়ারি (শুক্রবার) পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হবে। এ উপলক্ষে মহানগর এলাকায় কয়েকটি নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
নির্দেশনায় বলা হয়, শোক পালনকালীন ঢাকা মহানগর এলাকায় সব ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো, ফানুস ও গ্যাস বেলুন ওড়ানো নিষিদ্ধ থাকবে। একই সঙ্গে উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ডিজে পার্টি, র্যালি বা শোভাযাত্রা আয়োজন করা যাবে না।
এছাড়া উচ্চশব্দে গাড়ির হর্ন বাজানো বা গণ-উপদ্রব সৃষ্টি করে এমন কোনো কর্মকাণ্ড থেকেও বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা গণবিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা মেনে চলতে নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
আগামীকাল বুধবার বাদ জোহর সংসদ ভবনের দক্ষিণপ্লাজায় খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জিয়াউর রহমানের কবরের পাশেই তার মরদেহ দাফন করা হবে।
জাতীয়
বুধবার বাড়ানো হবে মেট্রোরেলের ট্রিপের সংখ্যা
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে আসা মানুষের যাতায়াত সহজ করতে আগামীকাল বুধবার মেট্রোরেলের ট্রিপ সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ ঘোষণা দেয় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
ডিএমটিসিএল অপারেশনস বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ইফতেখার হোসেন বলেন, সরকার বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে এবং ছুটির দিনে সাধারণত ১৬৯টি ট্রিপ পরিচালনা করা হয়। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজায় অংশ নিতে মানুষের যাতায়াত সুবিধার্থে আগামীকাল ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, প্রয়োজন এবং তাদের পরিচালন সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
জাতীয়
বাংলাদেশে নিরাপদ-সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে চীন: মুখপাত্র
আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে চীন। দেশটির আশা, আসন্ন এ নির্বাচন হবে নিরাপদ, স্থিতিশীল ও সুষ্ঠু।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, চীন লক্ষ্য করেছে যে বাংলাদেশ সরকার আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে।
লিন জিয়ান বলেন, চীন বাংলাদেশে একটি নিরাপদ, স্থিতিশীল ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে। একই সঙ্গে চীন বিশ্বাস করে, বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক মহল গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি এগিয়ে নেবে এবং জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভূমিকা রাখবে।
জাতীয়
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে অর্থ উপদেষ্টার শোক
সাবেক প্রধানমন্ত্রী, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক শোকবার্তায় তিনি এই সমবেদনা জানান।
উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের এক দীর্ঘকালীন ও প্রভাবশালী নেতৃত্বের প্রতীক। রাষ্ট্র পরিচালনার বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। রাজনৈতিক প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জের মধ্যেও তাঁর নেতৃত্ব ও অবস্থান দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি স্বতন্ত্র ও স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকবে।
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে বেগম খালেদা জিয়ার ভূমিকার কথা স্মরণ করে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়া সততা, দৃঢ়তা ও দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত ও অবস্থান দেশের রাজনৈতিক অগ্রযাত্রায় একটি তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব রেখে গেছে।
উপদেষ্টা তার শোকবার্তায় উল্লেখ করেন, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, বিএনপি নেতাকর্মী ও তাঁর অসংখ্য অনুসারীর প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন রাজনীতিতে ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে পরিচিত বেগম খালেদা জিয়া। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসারত অবস্থায় দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসনের এই প্রয়াণে দেশের রাজনীতিতে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু শুধু একটি রাজনৈতিক অধ্যায়ের সমাপ্তি নয়, বরং একটি যুগের অবসান। গণতন্ত্র, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও জনগণের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে তিনি ছিলেন দৃঢ় ও আপসহীন এক নেত্রী। এই রাজনীতিকের চলে যাওয়ায় রাজনীতির ময়দান হারালো এক শক্তিশালী ও প্রভাবশালী কণ্ঠস্বর।




