বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটতে দেওয়া হবে না, আধিপত্যবাদী শক্তিকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের কনফারেন্স হলে আধিপত্যবাদ বিরোধী জনতার মঞ্চ কর্তৃক ‘দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় আধিপত্যবাদ বিরোধী জনতার সুদৃঢ় ঐক্যচাই’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ আধিপত্যবাদের কাছে মাথানত না করায় জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে বিচারক হত্যা করা হয়েছে। আধিপত্যবাদের দোসর আওয়ামী লীগ বিগত ১৫ বছর ক্ষমতার মসনদে বসে বাংলাদেশকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করেছে। আওয়ামী লীগের শাসনামলে ঢাকা থেকে নয় বাংলাদেশ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতো দিল্লি থেকে। দিল্লির মেটিকুলাস ডিজাইনে হাসিনা দেশের আলেম-ওলামা, ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে। যারাই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তাদের কাউকে খুন, কাউকে গুম, কাউকে আয়না করে বন্দি করে র্নিবিচারে জুলুম -নির্যাতন চালানো হয়েছে। পরবর্তীতে জাতি আধিপত্যবাদের দোসর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। ছাত্র-জনতা রাজপথে ৩৬ দিন লড়াই করে আওয়ামী লীগকে শুধু ক্ষমতাচ্যুতই করেনি বরং তাদের আপন ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়েছে। যারাই আধিপত্যবাদের গোলামী করবে তাদেরকে আধিপত্যবাদের কাছেই পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এদেশের প্রতিটি মানুষ শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রুঁখে দাঁড়াবে, লড়াই চালিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টার ভারত সফর জনমনে সংশয় তৈরি করেছে। এই সরকার যদি ভারতের অন্যায় দাবিতে নতিস্বীকার করে অথবা অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতি সাড়া দেয়, তবে দেশের ভবিষ্যৎ শুভ হবে না।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কুটনৈতিক সম্পর্ক তখনই উন্নতি হবে যখন ভারত ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি হাসিনাসহ তার সাঙ্গপাঙ্গকে ফেরত দেবে। ভারত সরকারের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে আপনাদের অনেক দায়িত্ব। বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এবং ভারত-বাংলাদেশ বন্দি বিনিময় চুক্তি মোতাবেক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক দণ্ডিত পলাতক খুনি হাসিনাসহ সকল অপরাধীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে পারেন।
আধিপত্যবাদ বিরোধী জনতার মঞ্চের সমন্বয়ক মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও কলামিস্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) রোকন উদ্দিন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটির মহাসচিব এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী, আধিপত্যবাদ বিরোধী জনতার মঞ্চের কো-চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস এম ইউসুফ, প্যানেল চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুহাম্মদ নাঈম হাসান, সাবেক এমপি এ্যাডভোকেট তাসনিম রানা, মেজর (অব:) মো. মুজিব উল হক, ড. ক্যাপ্টেন এম রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রফেসর ডক্টর এ আর খান, মুভমেন্ট ফর ফ্রী প্যালেস্টাইনের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান, দেশপ্রেমিক নাগরিক মঞ্জের প্রধান সমন্বয়ক আহসান উল্লাহ শামীম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের সহ সভাপতি ও কলামিস্ট ড. খন্দকার নাজমুল হক, সাবেক কর কমিশনার মির্জা শরিফুল আলম প্রমূখ।
বক্তারা আরও বলেন, ভারত তাদের তাবেদার সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের চিকিৎসা ও শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। মাদকের মাধ্যমে যুবসমাজকে ধ্বংস করেছে, দেশের অপার সম্ভাবনাময় পাট-শিল্প, চামড়া শিল্প শেষ করে দিয়েছে। পাহাড়কে অশান্ত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সুগভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছ। আগামী নির্বাচনে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতায় আসতে না পারে তারজন্য গভীর চক্রান্তে রতআছে। তাই আধিপত্যবাদ রুখতে দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্যের বিকল্প নেই।
এমকে