রাজনীতি
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দেশে বেকার থাকবে না: গোলাম পরওয়ার

তরুণ প্রজন্মের প্রথম ভোট ‘দাঁড়িপাল্লায়’ হবে বলে মন্তব্য করে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জামায়াত ইসলামী ক্ষমতায় গেলে দেশে কোনো বেকার থাকবে না।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনার ডুমুরিয়ায় স্বাধীনতা চত্বরে আয়োজিত ছাত্র-যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে কোনো এমপি বা মন্ত্রী সরকারি গাড়ি, বাড়ি বা অন্য কোনো সুবিধা নেবে না। পারলে অন্য দলও সেই অঙ্গীকার করুক।
সেক্রেটারি জেনারেল প্রতিশ্রুতি দেন, দেশে কোনো তরুণ বেকার থাকবে না; কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে জামায়াত। এছাড়া ডুমুরিয়ার বিল ডাকাতিয়া এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন ও এলাকায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়ার ঘোষণা দেন।
তিনি আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে জামায়াতের সহযোগিতার আশ্বাসও দেন।
জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘যারা এর আগে দুর্নীতিতে বারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তারা আবারও সেই ধারাবাহিকতায় কাজ শুরু করেছে। বালু চুরি, পাথর চুরি, দুর্নীতি—সবই করছে তারা।’
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের ব্যাপারে একটি দল বাদে সবাই এক মত হয়েছে। অথচ তারা ভাবছে, ক্ষমতায় গেলে তবেই না সংস্কার করবে!
এদিন সকাল থেকেই সমাবেশে একের পর এক মিছিল নিয়ে স্বাধীনতা চত্বরে জড়ো হন জামায়াত নেতাকর্মীরা। স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো চত্বর।

রাজনীতি
গৎবাঁধা রাজনীতি দিয়ে এখন আর চলবে না: আমীর খসরু

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রাজনীতিতে এখন ভিশন থাকতে হবে, দূরদৃষ্টি থাকতে হবে, ওই গৎবাঁধা রাজনীতি দিয়ে এখন আর চলবে না।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত জিয়া সুইং মিন কার্নিভালে এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রাজনীতিতে ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন, যে পরিবর্তন রাজনীতিতে এসেছে, সেটি গ্রহণ করতে হবে। জনগণ বিএনপিকে একটি আদর্শিক দল হিসেবে দেখতে চায়। আমরা যদি সেটা ধারণ করতে না পারি, তাহলে তো আমরা সেই বিএনপি এই দেশ গড়ে তুলতে পারব না।
তিনি বলেন, বর্তমান রাজনীতিতে ভিশন ও দূরদৃষ্টি থাকা জরুরি। গৎবাঁধা রাজনীতির মাধ্যমে আর এগোনো যাবে না। জনগণকে নতুন নতুন ধারণার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করতে হবে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের মানুষের মনোজগতে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটছে, সেটি উপলব্ধি ও গ্রহণ করতে হবে। তা করতে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতের রাজনীতি টিকবে না। আমরা দেশে রাজনীতিকে গণতান্ত্রিক করার কথা বলি, কিন্তু খেলাধুলাকে গণতান্ত্রিক করার কথা বলি না। খেলাধুলাকেও গণতান্ত্রিক করতে হবে, যেন দেশের প্রত্যেক নাগরিক এতে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।
তিনি বলেন, একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার আমরা করেছি, ইনশাআল্লাহ এখানে রাজনীতিকে গণতান্ত্রিক করা হবে, অর্থনীতিকেও গণতান্ত্রিক করা হবে। এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তোলা হবে যেখানে সবার অংশগ্রহণ থাকবে, দেশের প্রতিটি মানুষ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুফল ভোগ করতে পারবে। একইভাবে খেলাধুলাকেও গণতান্ত্রিক করতে হবে, যাতে দেশের প্রতিটি নাগরিক অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।
তিনি আরও বলেন, তারেক রহমান ও তার পরিবারের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ সবারই জানা। ইতোমধ্যে সুইমিং, ক্রিকেট ও ফুটবল টুর্নামেন্টসহ বিভিন্ন আয়োজন শুরু হয়েছে, যা কেবলমাত্র সূচনা মাত্র। আগামী দিনে খেলাধুলা নিয়ে তারেক রহমান যে স্বপ্ন দেখছেন, তা অনেকে এখনো উপলব্ধি করতে পারেননি। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে স্পোর্টস সেন্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব সেন্টারের মাধ্যমে ক্রিকেট, ফুটবল, সাঁতারের মতো সব ধরনের খেলাধুলায় যোগ্যতা ও আগ্রহ অনুযায়ী সবার জন্য সুযোগ তৈরি করা হবে, যাতে প্রত্যেকে নিজ নিজ সম্ভাবনা অনুযায়ী অংশ নিতে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আগামী দিনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে খেলাধুলা নিয়ে একটি বড় স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রীড়া অঙ্গনে বিশ্বে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি হবে ইনশাআল্লাহ। এজন্য সবার সহযোগিতা অপরিহার্য।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব মোস্তফা জামান।
রাজনীতি
জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে সন্তুষ্ট বিএনপি: ফখরুল

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ভাষণ রেখেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার এ ভাষণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ব্যাপারে জোরালো বার্তা থাকায় দলের পক্ষ থেকে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ সন্তুষ্টির কথা জানান তিনি।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন বিষয়ে জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে আরও জোরালো অবস্থান থাকা প্রয়োজন ছিল কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে এটি খুবই জোরালো ছিল। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের অন্তত কোনো সংশয় নেই। আমরা যারা রজনৈতিক দলগুলো আছি আমাদের কোনো সংশয় নেই। আমরা কনভিন্সড ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমরা অত্যন্ত খুশি এজন্য যে, প্রথমবারের মতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে তিনি সরকারের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে জাতিসংঘে নিয়ে এসেছিলেন। সেখানে তার মূল উদ্দেশ্য ছিল জাতির যে ঐক্য সেটিকে প্রকাশ করা। যেটা ইউনিক একটা এফোর্ট। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এটা খুবই প্রয়োজন। সেটার তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন। সেজন্য আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি। আমাদের নেতা তারেক সেজন্য এটিকে সমর্থন করেছেন।
এরপর পিআর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নিম্নকক্ষ পিআরের পক্ষে নই। আমরা ওপরের দিকেও পিআরের কথা বলিনি। তবে, সেগুলো পরবর্তীতে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।
এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
আনারস প্রতীকসহ নিবন্ধন পেলো লেবার পার্টি

আদালতের আদেশে নিবন্ধন পেলো লেবার পার্টি। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দলটিকে নিবন্ধন সনদ দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসি সচিব আখতার আহমেদের সই করা সনদে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব (আরপিও) অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের গত ২৯ মে’র রায় ও আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ লেবার পার্টিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করেছে নির্বাচন কমিশন।
এ নিয়ে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা দাঁড়াল ৫২টি (আওয়ামী লীগসহ)। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়।
এ পর্যন্ত ৫৬টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা ও আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়।
দলগুলো হলো- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা।
সম্প্রতি আদালতের আদেশে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা নিবন্ধন ফিরে পেলেও ইসি কেবল জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেয়।
রাজনীতি
অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে পিআর চাওয়া হচ্ছে: সালাহউদ্দিন

দেশে অনৈক্য ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “পিআর চাওয়ার উদ্দেশ্য হলো বেশি সিট পাওয়া। এ ছাড়া দেশে অনৈক্য ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা, যাতে মেজরিটি পার্টি ক্ষমতায় না আসতে পারে। এ সময় যারা কম জনপ্রিয় তাদের জন্য পিআর লাভজনক। ”
তিনি আরও বলেন, “এ পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে শেখ হাসিনার মতো আরেকটি ফ্যাসিস্ট বা দুর্বল সরকার তৈরি হতে পারে। এমনটা হলে দেশ স্থায়ীভাবে অস্থিতিশীল হবে। ”
কোন পদ্ধতিতে ভোট হবে তা সংবিধানে স্পষ্টভাবে বলা আছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সংবিধানে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের কথা বলা রয়েছে, তা জানতে জামায়াতকে সংবিধানে খুলে দেখতে হবে।
কোনো রাজনৈতিক দলের অসাংবিধানিক, অরাজনৈতিক, অবৈধ কোনো আবদার মেনে জাতিকে বিপদে ফেলা যাবে না মন্তব্য করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “এই সরকার সাংবিধানিক সরকার। তাই সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় রক্ষা করে আইনানুগভাবে সরকারকে চলতে হবে। ”
রাজনীতি
শাপলা প্রতীক চেয়ে ফের নির্বাচন কমিশনে আবেদন এনসিপির

নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধান সংশোধনপূর্বক শাপলা, সাদা শাপলা অথবা লাল শাপলাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অনুকূলে শাপলা, সাদা শাপলা অথবা লাল শাপলা প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে ফের আবেদন করেছে দলটি।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর ই-মেইলের মাধ্যমে এই আবেদন প্রেরণ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলটির মিডিয়া সেল সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন।
আবেদনে বলা হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টি নির্বাচন কমিশনের কাছে ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশের আপামর জনসাধারণ প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’-কে চিনতে শুরু করে এবং গণমানুষের সঙ্গে এনসিপির শাপলা প্রতীককেন্দ্রিক এক অভূতপূর্ব আত্মিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এ ছাড়া গত জুলাইয়ে এনসিপি দেশজুড়ে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে এবং ওই কর্মসূচিতে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ এনসিপিকে আপন করে নেয় এবং আত্মিক খাল-বিল-জলাশয় থেকে শাপলা সংগ্রহ করে কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এনসিপির প্রতীক হিসেবে শাপলাকে হৃদয় থেকে বরণ করে নেয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হঠাৎ করে বিগত ৯ জুলাই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে এনসিপি জানতে পারে যে, নির্বাচন কমিশন শাপলাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ‘শাপলা’ জাতীয় প্রতীক হওয়ায় নির্বাচনের প্রতীক হিসেবে এটি বিধিমালার তপশিলভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানায় নির্বাচন কমিশন।
এরপর ১৩ জুলাই এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনারদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে এক বৈঠকে মিলিত হন এবং বৈঠকের আলোচনায় ও একটি লিখিত আবেদনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দেন যে, শাপলাকে জাতীয় প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের প্রদত্ত ব্যাখ্যা আইনানুগভাবে সঠিক নয় এবং এই বিষয়ে কমিশনের গৃহীত অবস্থানের আইনি ভিত্তি নেই। বিদ্যমান আইন অনুসারে ‘শাপলা’ প্রতীক তপশিলে অন্তর্ভুক্ত করা এবং রাজনৈতিক দলকে বরাদ্দ দিতে কোনো আইনগত বাধা নেই।
আইনের ব্যাখ্যায় এনসিপি জানায়, শাপলা জাতীয় প্রতীকের চারটি স্বতন্ত্র উপাদানের একটি মাত্র উপাদান। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) জাতীয় প্রতীকের চারটি উপাদানের একটি উপাদান ‘ধানের শীষ’ বরাদ্দ দিয়েছে এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলকে (জেএসডি) আরেকটি উপাদান ‘তারা’ প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে। সেহেতু নির্বাচন কমিশন শাপলাকে প্রতীকের তালিকাভুক্ত করে রাজনৈতিক দলকে বরাদ্দ দিতে পারে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন জাতীয় ফল কাঁঠালকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে এবং তৃণমূল বিএনপি নামের আরেকটি দলকে ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে। সুতরাং ‘শাপলা’ জাতীয় ফুল হলেও দলের প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে আইনগত কোনো বাধা নেই। ধানের শীষ, শাপলা, পাটপাতা এবং তারকা আলাদা আলাদা করে চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। আর এই চারের সমষ্টিই হচ্ছে জাতীয় প্রতীক, যা দুই রঙের দুটি বৃত্ত দ্বারা পরিবেষ্টিত। জাতীয় প্রতীকের উপাদানের মধ্যে দুটি উপাদান ইতোমধ্যে দুটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বরাদ্দকৃত। সর্বোপরি, শাপলাকে প্রতীকের তালিকায় তালিকাভুক্ত না করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নীতিগত সিদ্ধান্ত ভুল আইনি ভিত্তি ও বোঝাপড়ার ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
এতে বলা হয়, ৩ আগস্টের বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে শাপলাকে প্রতীক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক ও আশ্চর্যজনকভাবে ডিজিএফআইসহ আরও বেশ কিছু সংস্থার লোগোতে শাপলা রয়েছে এবং এ কারণে আইনগত কোনো বাধা না থাকলেও এনসিপিকে শাপলা বরাদ্দ না দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনের মনোভাবের কথা ব্যক্ত করেন। কিন্তু ওই বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিদল স্পষ্ট করে উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ পুলিশের লোগোর উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে ধানের শীষ প্রতীক বর্তমান থাকা, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর লোগোর উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে ঈগল প্রতীক বর্তমান থাকা এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের লোগোর পুরোটা অংশজুড়ে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন ইতোপূর্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতীক হিসেবে ধানের শীষ, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রতীক হিসেবে ঈগল এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু শুধু ডিজিএফআইয়ের লোগোর সঙ্গে কিছুটা সাদৃশ্য থাকার কারণ দেখিয়ে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়া বৈষম্যমূলক এবং স্বেচ্ছাচারী।
শাপলা বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি মাঠ পর্যায়ে সব যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হওয়ার পর এবং নিবন্ধনের সব শর্ত প্রতিপালন করার ফলশ্রুতিতে নির্বাচন কমিশন জাতীয় নাগরিক পার্টিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কিন্তু গত ২৩ সেপ্টেম্বর কমিশনের সিনিয়র সচিব সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার প্রতীক তালিকায় শাপলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এবং এ কারণে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশনের এমন স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত এবং উক্তরূপ বক্তব্য অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। নির্বাচন কমিশনের এহেন একরোখা কার্যকলাপে তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উত্থাপিত হয় এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন ও সব দলের ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সার্বিক বিবেচনায় আমরা আশা করি, নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালের নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে জাতীয় নাগরিক পার্টির অনুকূলে ১. শাপলা, ২. সাদা শাপলা এবং ৩. লাল শাপলা থেকে যে কোনো একটি প্রতীক বরাদ্দ করবে এবং এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ইতোপূর্বের স্বেচ্ছাচারী ও একরোখা মনোভাব পরিত্যাগ করবে।