জাতীয়
রাজধানীতে সেপটিক ট্যাংক ও এসটিপি স্থাপনের নির্দেশ

রাজধানীর নদী ও খাল দূষণমুক্ত করে ঢাকাকে সবুজ এবং আধুনিক নগরীতে রূপান্তর করতে প্রতিটি ভবনে সেপটিক ট্যাংক ও স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) স্থাপন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, কার্যকর সুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা ছাড়া নগরীর দূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় এবং শুধু ড্রেজিং করে বা দায় এড়িয়ে এ সমস্যা সমাধান হবে না।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে আয়োজিত ‘নির্মিত/নির্মাণাধীন ভবনসমূহে সেপটিক ট্যাংক/এসটিপি স্থাপন’ বিষয়ক অংশীজন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এ নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরের হাসপাতাল, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরনের স্থাপনার জন্য এসটিপি স্থাপন কোনোভাবেই কঠিন কাজ নয়। উৎস থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নদী–খাল দূষণমুক্ত করা কঠিন হলেও তা অসম্ভব নয়।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, শুধু ড্রেজিং করে, কিংবা দায় এড়িয়ে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে, তবেই রাজধানীর পরিবেশ রক্ষা করা যাবে।
তিনি দীর্ঘমেয়াদি ভিশন, কার্যকর গভর্নেন্স এবং আইনগত সংস্কারের ওপর জোর দেন। আশা প্রকাশ করেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আইন সংশোধন ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকা একটি পরিচ্ছন্ন, আধুনিক ও বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত হবে।
তিনি আরও বলেন, নগরীর ছাদবাগান, সড়ক বিভাজকে সবুজায়ন এবং পার্ক সংরক্ষণকে গুরুত্ব দিতে হবে। একইসঙ্গে ভবন নির্মাণে সেপটিক ট্যাংক ও এসটিপি স্থাপন বাধ্যতামূলক করার বিধান কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল মতিন। এছাড়া রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) মো. গিয়াস উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
প্রারম্ভিক উপস্থাপনা দেন রাজউকের উপনগর পরিকল্পনাবিদ সাঈদ রেজাউল হক। বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা করেন ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, ডাইকি এক্সিস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুই ওয়াসে এবং প্রধান নির্বাহী শফিকুল ইসলাম।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা মত দেন, কার্যকর সেপটিক ট্যাংক এবং এসটিপি বাস্তবায়নই ঢাকাকে টেকসই ও বাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তরের মূল হাতিয়ার হতে পারে।

জাতীয়
নির্বাচনে মাঠে থাকবে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নির্বাচনের মাঠে সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী ও বিমানবাহিনী থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এখন মাঠে ৩০ হাজার সেনাবাহিনী আছে। নির্বাচনে প্রায় এক লাখের মতো থাকবে, নৌ-বাহিনী ও বিমানবাহিনী থাকবে। এবং আমাদের পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার কোস্টগার্ড আছে সবাই নির্বাচনে কাজ করবে। সুষ্ঠু নির্বাচন শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না, নির্বাচন নির্ভর করবে জনগণের ওপর।
লুট হওয়া পুলিশের অস্ত্র উদ্ধারের প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ। কিছু অস্ত্র বাইরে রয়ে গেছে। চট্টগ্রাম ভৌগোলিকভাবে পাহাড় সমুদ্র ও সমতল, যা অন্য এলাকায় নেই। সেজন্য এখানে অভিযান পরিচালনা করা ডিফিকাল্ট। নির্বাচনের আগে আরও অস্ত্র উদ্ধার করা হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের জন্য পুলিশের প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে গিয়েছে।
পাশের দেশের গুজবের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে উপদেষ্টা বলেন, প্রথম দিকে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ অনেক উল্টাপাল্টা খবর ছড়িয়েছে। আপনারা এটার কাউন্টার করেছেন। আপনারা কাউন্টার করায় তারা সুবিধা করতে পারেনি। সামনে পূজা উপলক্ষ্যে তারা আবার গুজব করা শুরু করবে। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, আগে যেভাবে ভূমিকা পালন করেছেন, সেভাবে করবেন। এতে করে জনগণ সত্য সংবাদটি পাবে।
জাতীয়
সংসদ এলাকায় হচ্ছে নতুন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন

নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের বাসভবন নির্ধারণে কাজ শুরু করেছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এজন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল, কমিটি নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের আবাসনের বিষয়ে সুপারিশও জমা দেয়। মূলত গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তরের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে এখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চেয়ে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনকে বেশি উপযোগী বলে মনে করছে কমিটি। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ও নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন নির্ধারণের জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেয়। তারা শেরে বাংলা নগরে দু’টি স্থান প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন হিসেবে প্রস্তুত করার বিষয়টি বিবেচনা করছে। একটি হচ্ছে- শেরে বাংলা নগরের সংসদ ভবন এলাকার স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন, আরেকটি হচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এলাকা।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ওইদিন সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে ঢুকে পড়ে। এটিতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বসবাস করতেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গণভবনকে ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’-এ রূপান্তরের কাজ শুরু করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নির্মাণকাজ অক্টোবরের মধ্যে শেষ হবে, আর আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এটি উদ্বোধন হতে পারে বলে জানিয়েছে জাদুঘর নির্মাণ কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ অবস্থায় নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন কোথায় হবে- এ বিষয়টি সরকারের সামনে আসে।
তাই গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রীদের বাসভবনের বিষয়ে সুপারিশ দিতে গত ৭ জুলাই উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি করেছিল। ছয় সদস্যের এই কমিটির প্রধান ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফারুক আহম্মেদ (বর্তমানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক)। এই কমিটি রাজধানীর বেশ কিছু এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ২০ জুলাই মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। সেই প্রতিবেদন নিয়ে বৈঠক করলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
পরে নতুন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন নির্ধারণের জন্য এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করে দেওয়া হয়। এ কমিটির প্রধান গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম। এছাড়া সংসদ সচিবালয় ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে এ কমিটি করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের গঠিত কমিটির সদস্যরা শেরে বাংলা নগর সরেজমিন পরিদর্শনও করেছেন। সূত্র জানিয়েছে, কমিটির নেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন দুটিকে একত্র করে অস্থায়ীভাবে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন করা হবে। আলাদা দুটি ভবনের মধ্যে সহজ যাতায়াতের জন্য একটি দুই স্তরবিশিষ্ট করিডর নির্মাণ প্রাথমিক পরিকল্পনার কথা জানা গেছে। একই সঙ্গে এ-১ ও এ-২ বাসা দুটিও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হবে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বাসভবন তো আগে থেকেই আছে। তারপরও সেটা আরেকটু দেখার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়ছিল। যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন অন্য একটি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, তাই সেটির বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন হিসেবে রূপান্তরের বিষয়টি বিবেচনায় ছিল। তবে যমুনা শহরের মধ্যবর্তী জায়গায়। এখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর চলাচল নগরবাসীর জন্য চরম দুর্ভোগ ডেকে আনবে। এখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দূরত্বও শেষ। যাওয়া-আসায় যানজট তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। এছাড়া মিন্টো রোডে বাংলো আছে। দুটি প্লট একত্র করেও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন করা যেতে পারে। তবে ক্ষেত্রে যানজটের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হচ্ছে।
তাই দ্বিতীয় অপশন শেরে বাংলা নগরের কোথাও করাই সবচেয়ে উপযোগী। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্পিকারের বাসভবন গণভবনের কাছাকাছি। এখান থেকে প্রধানমন্ত্রী চলাচল করলে রাজধানীর অন্যান্য এলাকায় খুব একটা প্রভাব পড়বে না। তাই এ অপশনটিকে অধিকতর সুবিধাজনক হিসেবে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। কমিটি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করলে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এ বিষয় কাজ শুরু করবে বলেও জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের মতো সংবেদনশীল স্থাপনার জন্য ঢাকা শহরে যুৎসই স্থান পাওয়া খুবই মুশকিল। কারণ এক্ষেত্রে একই সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টিও সমান গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে হবে। তাই খুব ভেবে ও যাচাই করে করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
তবে গণভবনে একমাত্র শেখ হাসিনা ছাড়া আর কোনো সরকার প্রধান বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করেননি। আর শেখ হাসিনাও এটি নিজের নামে লিজ নিয়ে ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো ব্যবহার করেছেন। তারপরও গণভবন থাকায় সরকারগুলো প্রধানমন্ত্রীর জন্য আলাদা করে বাসভবন নির্মাণের কথা ভাবেনি।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো. আব্দুল মতিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের আবাসনের বিষয়ে সুপারিশ দিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফারুক আহম্মেদকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি তাদের সুপারিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে এটি নিয়ে আমরা একটি মিটিংও করি। কিন্তু সেখানে সুপারিশ বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
তিনি বলেন, ‘পরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। সেই কমিটি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন নির্ধারণের কাজ করছে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই।’
মন্ত্রীদের আবাসন নিয়ে নতুন কোনো পদক্ষেপ নেই
গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের জন্য আগে থেকে আবাসনের ব্যবস্থা ছিল। তবে তাদের বাড়ি বিচারপতিসহ উচ্চ পর্যায়ের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তাই মন্ত্রীদের জন্য যে বাড়ি আছে তা পর্যাপ্ত নয়। তাই গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কমিটিকে এ বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছি।
আবাসন পরিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর মিন্টো রোড ও হেয়ার রোডে মন্ত্রীদের জন্য বাংলো বাড়ি আছে ১৫টি। এ ছাড়া বেইলি রোডে তিনটি মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্ট ভবন রয়েছে। সেখানে ৩০ জন মন্ত্রীর থাকার ব্যবস্থা (ফ্ল্যাট) আছে। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন প্রায় ৫ হাজার বর্গফুট। এ ছাড়া গুলশানের একটি সরকারি বাংলো বাড়িতে বিভিন্ন সময় কোনো না কোনো মন্ত্রী থেকেছেন। সে হিসাবে ৪৬ জন মন্ত্রীর থাকার ব্যবস্থা আছে। মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত ৩০টি ফ্ল্যাটের মধ্যে এখন ১২টিতে থাকছেন সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতিরা। বাকি ১৮টির মধ্যে ১৪টিতে থাকছেন দুজন উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার চারজন বিশেষ সহকারী, চারজন নির্বাচন কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশনের দুজন কমিশনারসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ে কর্মকর্তারা।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি প্রতিবেদনে নতুন সরকারের মন্ত্রী ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য মিন্টো রোডের দুটি বাংলো বাড়ি নিয়ে আধুনিক ভবন নির্মাণের সুপারিশ করে। একইভাবে বেইলি রোডেও দুটি বাংলো বাড়িতে আধুনিক ভবন নির্মাণেরও সুপারিশ করে কমিটি।
এর বাইরে গুলশান ও ধানমন্ডিতে দুটি পরিত্যক্ত বাড়িতে মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণের প্রস্তাব করেছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি।
আইনে প্রধানমন্ত্রীর আবাসনের বিষয়ে যা আছে
প্রধানমন্ত্রী ‘দ্য প্রাইম মিনিস্টারস (রেমুনারেশেন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (অ্যামেন্ডমেন্ট) আইন, ২০১৬’ এবং মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা ‘দ্য মিনিস্টারস, মিনিস্টার অব স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টারস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (অ্যামেন্ডমেন্ট) আইন, ২০১৬’ অনুযায়ী বেতন-ভাতা ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন।
আইনে প্রধানমন্ত্রীর আবাসন সংক্রান্ত বিধানে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী জন্য একটি সরকারি বাসভবন থাকবে, যা সরকারী ব্যয়ে সজ্জিত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। যদি প্রধানমন্ত্রী নিজের বাড়িতে বা সরকারি বাসভবন ছাড়া অন্য কোনো বাড়িতে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেন, তবে তিনি প্রতি মাসে এক লাখ টাকা বাড়ি ভাড়া পাবেন। সেই বাড়িটি প্রধানমন্ত্রীদের বাসভবনের মর্যাদার উপযোগীভাবে সজ্জিত করা হবে এবং এর ব্যয় সরকার বহন করবে।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনসহ তিনি যেখানে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেবেন সেই স্থানেও বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, টেলিফোন ইত্যাদি সরবরাহের সমস্ত ব্যয় সরকার বহন করবে। যদি প্রধানমন্ত্রী নিজের বাড়ি বা সরকারি বাসভবন ছাড়া অন্য কোনো বাড়িতে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেন, তবে তিনি প্রতি বছর ওই বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এই আইনের অধীনে প্রাপ্ত বাড়ি ভাড়া ভাতার তিন মাসের সমপরিমাণ অর্থ পাবেন।
যদি প্রধানমন্ত্রী নিজের বাড়িতে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন এবং সেই বাড়িতে গার্ডদের থাকার জন্য নির্ধারিত কোনো শেড না থাকে, তবে সরকার সেখানে একটি অস্থায়ী গার্ড শেড নির্মাণ করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী তার পদত্যাগের পর পরবর্তী এক মাস পর্যন্ত সরকারি বাসভবনে বসবাস করতে পারবেন। এ সময়েও তার ওপর কোনো ব্যয় চাপানো হবে না।
জাতীয়
বেড়াতে গিয়ে বন্দি, পালিয়ে বাঁচা রেজাউলের তথ্যে ৮৩ জন উদ্ধার

কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে অপহরণের শিকার হয় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি গ্রামের রেজাউল করিম।প্রাণ বাঁচিয়ে কোনো রকমে বিজিবির কাছে পৌঁছায় তিনি। এরপর তার দেওয়া তথ্যে বেরিয়ে আসে এক ভয়াবহ জগতের সন্ধান! উদ্ধার করা হয় আরো ৮৩ জনকে। রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো এই ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। একে একে বেরিয়ে এসেছে মানব পাচারের এক ভয়ানক চক্রের সন্ধান।
দেশের এক সংবাদমাধ্যমের বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে আসে এই ভয়াবহ অধ্যায়। কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি গ্রামের রেজাউল করিম বেড়াতে এসেছিলেন কক্সবাজারের টেকনাফে। হোটেল আল করমে ওঠার পর অচেনা এক দুঃস্বপ্নে পড়েন তিনি। ৭ সেপ্টেম্বর স্থানীয় এক ব্যক্তি মো. আমিন যিনি হোটেলের সাবেক ম্যানেজার, তিনি রেজাউলকে অপহরণ করে ৫০ হাজার টাকায় পাচারকারীদের হাতে তুলে দেন। সেই থেকেই শুরু হয় তার বন্দিদশার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।
রেজাউলকে প্রথমে টেকনাফ পৌর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের ঝরনা চত্বর থেকে অপহরণ করে পাহাড়ি আস্তানায় নিয়ে যাওয়া হয়। চোখ বাঁধা অবস্থায় বুঝতেও পারেননি কোথায় যাচ্ছেন। পরে মুক্তিপণের দাবিতে টানা ১৩ দিন তাকে নির্যাতন করা হয়।
শেষ পর্যন্ত আরো একদল পাচারকারীর কাছে বিক্রি করার পথে জীবন হাতে নিয়ে পাহাড় থেকে পালিয়ে যান তিনি। সরাসরি বিজিবি ক্যাম্পে গিয়ে আশ্রয় নিলে শুরু হয় পুরো ঘটনার মোড় ঘোরা।
রেজাউলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি ও র্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে টেকনাফের বাহারছড়া কচ্ছপিয়ার গহিন পাহাড় থেকে নারী-শিশুসহ ৮৩ জনকে উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃতরা সবাই সাগরপথে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে পাচারের উদ্দেশ্যে সেখানে আটকে রাখা হয়েছিল। এসময় তিন মানব পাচারকারীকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান এবং র্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
পালিয়ে বাঁচা রেজাউল করিম জানান, চোখের বাঁধন খোলার পর দেখি চারপাশে দুই শতাধিক মানুষ আটক। সেখানে টাকার বিনিময়ে মানুষ কেনাবেচা হয়। সন্ধ্যা নামলেই শুরু হতো নির্যাতন। এক পর্যায়ে আমার পরিবারকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে পাচারকারীরা। যেদিন পালিয়ে আসি সেদিনও অন্তত ২৫০ জন ছিল সেই আস্তানায়।
তিনি আরো জানান, এখনো শতাধিক মানুষ বন্দি অবস্থায় রয়েছে, যাদের উদ্ধার করা না গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
যে হোটেল থেকে শুরু হয় রেজাউলের ভয়াবহ অধ্যায়, সেই হোটেল আল করমের মালিক মোহাম্মদ আলী জানান, হোটেলটি পারিবারিক সম্পত্তি হলেও ১০ বছরের জন্য অন্যদের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমিন দুই বছর আগে ম্যানেজারের পদ থেকে বাদ পড়েছিল। বর্তমানে তার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
অন্য ভুক্তভোগীদের অভিজ্ঞতা
একই আস্তানা থেকে টেকনাফের নয়াপাড়ার বাসিন্দা আয়েশা খাতুনও উদ্ধার হন। ঘুরতে গিয়ে অপহৃত হয়ে তিনি ছয় দিন বন্দিদশায় কাটান। নির্যাতনের স্মৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে আয়েশা বলেন, ঝুপড়ি ঘরে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছিল। মুক্তিপণ না পেলে আমাদের মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার সুযোগ থাকত না।
মুন্সীগঞ্জের অমিত হাসান ও মানিক মিয়াও একইভাবে প্রতারণার শিকার হন। পরিচিত এক কক্সবাজারবাসীর আমন্ত্রণে টেকনাফে এসে তারা পাচারকারীদের হাতে ধরা পড়েন। ২০ দিন পাহাড়ি আস্তানায় আটকে থাকার পর র্যাব-বিজিবির অভিযানে তারা মুক্তি পান।
এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, রোহিঙ্গা শিবির থেকেও প্রলোভনে আনা হচ্ছে অনেক শরণার্থীকে। উদ্ধার হওয়া ৮৪ জনের মধ্যে ৬৬ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। তাদের অনেককে মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ডে উন্নত জীবনযাপন ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে আনা হয়। আবার কয়েকজন নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়েও ফাঁদে ফেলা হয়।
উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পের দুই রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ এনাম ও আমিন বাহার জানান, তারা সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার আশায় পাহাড়ে এসেছিলেন। কিন্তু সেখানে ১০ দিন আটক রেখে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
এ ঘটনা উন্মোচন হতেই টানা ১২ ঘণ্টার অভিযানে যৌথ বাহিনী পাচারকারীদের তিন রাউন্ড গুলির মুখেও কৌশলে ভুক্তভোগীদের অক্ষতভাবে উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার হওয়া পাচারকারীরা হলেন—আবদুল্লাহ (২১), সাইফুল ইসলাম (২০) ও মো. ইব্রাহিম (২০)। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি বন্দুক, ধারালো অস্ত্র এবং গুলি উদ্ধার করা হয়।
বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘টেকনাফের পাহাড়ে কয়েকটি সক্রিয় মানব পাচারকারী গ্রুপ কাজ করছে। এর নেতৃত্বে আছেন হোসেন, সাইফুল ও নিজাম নামের তিনজন, যারা আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের মূল হোতা।’ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কিছু চক্রও পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে নদী ও পাহাড় থেকে পাচারের উদ্দেশ্যে আটকে রাখা ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১২ পাচারকারীকে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয়
আগামী নির্বাচন হবে গণতন্ত্রের নতুন ভিত্তি: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হবে একটি ভিত্তি স্থাপনকারী নির্বাচন, যা দেশের গণতন্ত্রে নতুন যুগের সূচনা করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে রয়েছে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) প্যারিসের মেয়র আনে হিদালগো নিউইয়র্কে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে হোটেলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ সব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।
সৌজন্য এ সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম, খেলাধুলা ও অলিম্পিকে সামাজিক ব্যবসার ভূমিকা এবং বৈশ্বিক শরণার্থী সংকট, বিশেষ করে রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে দুই নেতা বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিককে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক ব্যবসার আসরে রূপান্তরিত করতে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ভবিষ্যতের সব অলিম্পিক গেমস, লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকসহ কার্বন-নিউট্রাল করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
প্যারিসের মেয়র আনে হিদালগো এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি আপনার নেতৃত্বের প্রশংসা করি। আপনি অসাধারণ কাজ করছেন।
দুই নেতা দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থীর মানবিক সহায়তার জন্য তহবিল বাড়ানোর জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মেয়র হিদালগো বিশ্বব্যাপী শরণার্থী শিবিরে জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের আহ্বান জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে রোহিঙ্গারা একদিন নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারবেন।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানান, আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে, যা বিশ্বের দৃষ্টি এই দীর্ঘস্থায়ী শরণার্থী সংকটের দিকে পুনর্নির্দেশ করবে।
তিনি মেয়র হিদালগোকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এসময় এসডিজি সমন্বয়ক ও সরকারের সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ভূমি জরিপ সংক্রান্ত সমঝোতা

দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমি, অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ডিজিটাইজড ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে ও সমন্বিত ভূমি তথ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম বাস্তবায়ন বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে ভূমিসেবায় নতুন দিগন্তের উন্মোচন হলো বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ায় আয়োজিত ২০২৫ কে-জিও ফেস্টে বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমদ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমি, অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মি. লি সাং কিয়ং এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানায়, এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে ডিজিটাইজড ভূমি জরিপ পরিচালনা এবং সমন্বিত ভূমি তথ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম বাস্তবায়নের পথ সুগম হলো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় শতভাগ ডিজিটালাইজেশনের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ জরিপ হিসেবে এটি বিবেচিত হচ্ছে। আনুমানিক প্রতি ২৫ বছর পরপর ভূমি জরিপ হয়ে থাকে। বাংলাদেশে নতুন যে জরিপ শুরু হয়েছে এটি সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হবে। বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে মূলত ভূমি সংক্রান্ত আধুনিক ডিজিটাল জরিপ কার্যক্রম, যা ভূমি মন্ত্রণালয় ভূমি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন ও ডিজিটালাইজেশন করার লক্ষ্যে পরিচালনা করছে।
এর ফলে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জমি সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ, মালিকানা যাচাই এবং ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আরও স্বচ্ছ, দক্ষ ও জনবান্ধব করা সম্ভব হবে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো জমি নিয়ে বিরোধ কমানো, দলিল ও রেকর্ডের সঠিকতা নিশ্চিত করা এবং নাগরিক সেবা অটোমেশনের মাধ্যমে মানুষের ভোগান্তি কমানো।
এছাড়াও ভূমির পরিমাণ, অবস্থান, ব্যবহারযোগ্যতা ও ভূমির শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কে নির্ভুল ও হালনাগাদ তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করার একটি ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।