জাতীয়
বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ভূমি জরিপ সংক্রান্ত সমঝোতা

দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমি, অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ডিজিটাইজড ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে ও সমন্বিত ভূমি তথ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম বাস্তবায়ন বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে ভূমিসেবায় নতুন দিগন্তের উন্মোচন হলো বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ায় আয়োজিত ২০২৫ কে-জিও ফেস্টে বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমদ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমি, অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মি. লি সাং কিয়ং এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানায়, এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে ডিজিটাইজড ভূমি জরিপ পরিচালনা এবং সমন্বিত ভূমি তথ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম বাস্তবায়নের পথ সুগম হলো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় শতভাগ ডিজিটালাইজেশনের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ জরিপ হিসেবে এটি বিবেচিত হচ্ছে। আনুমানিক প্রতি ২৫ বছর পরপর ভূমি জরিপ হয়ে থাকে। বাংলাদেশে নতুন যে জরিপ শুরু হয়েছে এটি সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হবে। বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে মূলত ভূমি সংক্রান্ত আধুনিক ডিজিটাল জরিপ কার্যক্রম, যা ভূমি মন্ত্রণালয় ভূমি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন ও ডিজিটালাইজেশন করার লক্ষ্যে পরিচালনা করছে।
এর ফলে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জমি সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ, মালিকানা যাচাই এবং ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আরও স্বচ্ছ, দক্ষ ও জনবান্ধব করা সম্ভব হবে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো জমি নিয়ে বিরোধ কমানো, দলিল ও রেকর্ডের সঠিকতা নিশ্চিত করা এবং নাগরিক সেবা অটোমেশনের মাধ্যমে মানুষের ভোগান্তি কমানো।
এছাড়াও ভূমির পরিমাণ, অবস্থান, ব্যবহারযোগ্যতা ও ভূমির শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কে নির্ভুল ও হালনাগাদ তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করার একটি ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।

জাতীয়
আগামী নির্বাচন হবে গণতন্ত্রের নতুন ভিত্তি: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হবে একটি ভিত্তি স্থাপনকারী নির্বাচন, যা দেশের গণতন্ত্রে নতুন যুগের সূচনা করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে রয়েছে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) প্যারিসের মেয়র আনে হিদালগো নিউইয়র্কে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে হোটেলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ সব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।
সৌজন্য এ সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম, খেলাধুলা ও অলিম্পিকে সামাজিক ব্যবসার ভূমিকা এবং বৈশ্বিক শরণার্থী সংকট, বিশেষ করে রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে দুই নেতা বিস্তারিত আলোচনা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্যারিস ২০২৪ অলিম্পিককে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক ব্যবসার আসরে রূপান্তরিত করতে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ভবিষ্যতের সব অলিম্পিক গেমস, লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকসহ কার্বন-নিউট্রাল করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
প্যারিসের মেয়র আনে হিদালগো এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি আপনার নেতৃত্বের প্রশংসা করি। আপনি অসাধারণ কাজ করছেন।
দুই নেতা দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থীর মানবিক সহায়তার জন্য তহবিল বাড়ানোর জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মেয়র হিদালগো বিশ্বব্যাপী শরণার্থী শিবিরে জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের আহ্বান জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে রোহিঙ্গারা একদিন নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারবেন।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানান, আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে, যা বিশ্বের দৃষ্টি এই দীর্ঘস্থায়ী শরণার্থী সংকটের দিকে পুনর্নির্দেশ করবে।
তিনি মেয়র হিদালগোকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এসময় এসডিজি সমন্বয়ক ও সরকারের সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
আগামী নির্বাচন সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস সচিব

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসেছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন। আজ (২৬ সেপ্টেম্বর) এ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে কী বার্তা দেবেন তিনি, সে সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। সেখানে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের গত ১৪ মাসে নেওয়া সংস্কার কার্যক্রম, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পদক্ষেপ তুলে ধরবেন।
তিনি বলেন, মূল বার্তা হলো— ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মৌলিক নির্বাচন হবে। এটি অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর হবে।
শফিকুল আলম আরও জানান, বিশ্বনেতারা ইতোমধ্যেই আসন্ন নির্বাচনে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের মতোই জনগণ অবাধে ভোট দিতে পারবেন।
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব জানান, প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে তার ভাষণে সরকারের কার্যক্রম, নির্বাচন প্রস্তুতি, বিচার কার্যক্রম এবং রোহিঙ্গা ইস্যু তুলে ধরবেন।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো দূরত্ব নেই। সরকার নিয়মিত তাদের সঙ্গে বৈঠক করছে।
আওয়ামী লীগের অতীত কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আমরা দেখেছি, তারা কী করেছে। ১৫ বছরের শাসনামলে মানুষ হত্যা, গুম এবং হাজার হাজার মিথ্যা মামলা হয়েছে। এখন দেখুন আওয়ামী লীগের অবস্থা কোথায়? তাদের আর কোনো বন্ধু নেই।
জাতীয়
ড. ইউনূসকে ‘আনলক বিগ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত থিয়ারওয়ার্ল্ডের বার্ষিক গ্লোবাল এডুকেশন ডিনারে সম্মানিত হয়েছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের এক হোটেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তাকে মর্যাদাপূর্ণ ‘আনলক বিগ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার অগ্রণী অবদান এবং শিক্ষার প্রতি দীর্ঘদিনের অঙ্গীকারের স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূত ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং থিয়ারওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান সারা ব্রাউন।
ড. ইউনূসের পাশাপাশি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডিকেও সম্মাননা জানানো হয়। তবে ইউনূসের দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণভিত্তিক কাজ এবং শিক্ষাকে মিশনের অংশ করার উদ্যোগ উপস্থিত অতিথিদের গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে।
গর্ডন ব্রাউন এসময় বলেন, গত ৫০ বছরে কোনো বেসরকারি খাতের প্রকল্প মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণে গ্রামীণ ব্যাংকের মতো অবদান রাখতে পারেনি।
পুরস্কার গ্রহণকালে ড. ইউনূস বলেন, খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মতো ঋণও একটি মৌলিক মানবাধিকার। আর্থিক ব্যবস্থার দরজা খুলে দিলে কেউ আর দরিদ্র থাকবে না। আমি ক্ষুদ্রঋণ সঙ্গে শিক্ষাকেও যুক্ত করেছি, যাতে নারীরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারে।
তিনি প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, শিশুদের ছোটবেলা থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার শিক্ষা দেওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যবসাকে মানবকল্যাণের শক্তি হিসেবে ব্যবহারের শিক্ষা দিতে হবে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, মানবজাতির সব সমস্যার সমাধান ব্যবসায়িক উপায়ে করা সম্ভব।
জাতীয়
মালয়েশিয়ায় গমনেচ্ছু কর্মীদের জন্য বোয়েসেলের সতর্কবার্তা

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ায় নিয়মিত শ্রমবাজার এখনো খোলেনি। শুধু ২০২৪ সালে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর এবং ভিসার মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও যারা নানা জটিলতায় মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি, তাদের সরকারি উদ্যোগে বোয়েসেলের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে অসাধু মহলেল কাছ থেকে যেকোনো ধরনের বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য জনসাধারণকে সর্তক করেছে বাংলাদেশ ওভারসিজ অ্যামপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল)।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বোয়েসেল মালয়েশিয়ায় গমনেচ্ছু কর্মীদের জন্য দেওয়া এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি মালিকানাধীন এ সংস্থা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ৩১ মে ২০২৪ তারিখের মধ্যে যেসব বাংলাদেশি কর্মী সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর এবং ভিসার মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও নানা জটিলতায় মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি, সেসব তালিকাভুক্ত কর্মীদের সরকারি উদ্যোগে বোয়েসেলের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
‘এটি একটি বিশেষ উদ্যোগ। গত বছর যেতে না পারা কেবল ৭ হাজার ৮৭৩ জন তালিকাভুক্ত কর্মীর জন্য এ প্রক্রিয়া প্রযোজ্য। এ বিষয়ে যেকোনো প্রকার বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য জনসাধারণকে সতর্ক করা হচ্ছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলে গেছে মর্মে কিছু অসাধু মহল বিভ্রান্তি ছড়িয়ে নিরীহ কর্মীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অপতৎপরতায় লিপ্ত হতে পারে।
উল্লেখ্য, তালিকাভুক্ত কর্মীরা নির্ধারিত সেক্টর (কনস্ট্রাকশন, ট্যুরিজম)-এ প্রশিক্ষণ গ্রহণপূর্বক সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয় মাত্র ১ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকায় শুধু বোয়েসেলের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় গমন করবেন।
এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে বোয়েসেল জানিয়েছে, প্রথম ধাপে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য ৭ হাজার ৮৭৩ জনকে যোগ্য হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। বোয়েসেলের মাধ্যমে যেতে ইচ্ছুক সবাইকে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ১ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা অভিবাসন ব্যয় পরিশোধ করতে হবে।
জাতীয়
জাতিসংঘে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনের ফাঁকে একাধিক বৈঠকে অংশ নেন এবং শীর্ষ বিশ্বনেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
তিনি যেসব নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী, নেদারল্যান্ডসের রানি মাক্সিমা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক, চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং উরুগুয়ের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগদানের পর ড. ইউনূস অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তাদের সংক্ষিপ্ত কথোপকথনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার, ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত বাংলাদেশে আসন্ন সাধারণ নির্বাচন এবং অস্ট্রেলিয়ায় ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশি প্রবাসীসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
ড. ইউনূস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে নির্ধারিত দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন পরিচালনার জন্য তার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অখণ্ডতা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত থাকবেন।
অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ বাংলাদেশের প্রবাসী সম্প্রদায়ের অবদানকে গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করে বলেন, তার নিজ নির্বাচনী এলাকাতেই বাংলাদেশি অভিবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তিনি ভাষা শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে (২১ ফেব্রুয়ারি) একটি স্মরণানুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতাও স্মৃতিচারণ করেন।
পরে ড. ইউনূস নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমার সঙ্গে দেখা করেন, যিনি উন্নয়নের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের জন্য জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ অ্যাডভোকেট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। আলোচনায় বিশ্বব্যাপী, বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথ-এ স্বাস্থ্য বীমা সম্প্রসারণের ওপর আলোকপাত করা হয়।
দুজনের আলোচনায় তারা আর্থিক ক্ষেত্রে উদ্ভাবনগুলোর সন্ধান করেন – যার মধ্যে রয়েছে জীবন ও স্বাস্থ্য বীমা, দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় এবং পেনশন স্কিম। তারা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির গুরুত্বের ওপর জোর দেন। ড. ইউনূস মাতৃ স্বাস্থ্যসেবার জন্য বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় ঋণের জরুরি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি গ্রামীণ মহিলাদের শীর্ষ চিকিৎসা পেশাদারদের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্য পরীক্ষা ব্যবহারের প্রস্তাব করেন, যা অগণিত জীবন বাঁচাতে পারে। এসময় তিনি বৈশ্বিক ওষুধ শিল্পের পুনর্গঠনের আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস বলেন, ‘সামাজিক ব্যবসায়িক ওষুধ প্রস্তুতকারকদের দ্বারা উৎপাদিত টিকা সাশ্রয়ী মূল্যের থাকবে।’
তিনি রানি মাক্সিমাকে বাংলাদেশে সফরের আমন্ত্রণ জানান। বৈঠকে নেদারল্যান্ডসের উত্তরাধিকারী রাজকুমারী ক্যাথারিনা-আমালিয়াও উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুসের সঙ্গেও বৈঠক করেন। বৈঠকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ইস্যু ও অভিন্ন অগ্রাধিকারের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
পরে দিনটিতে ড. ইউনূস আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন—একটি ছিল ‘ফ্যাশন ফর ডেভেলপমেন্ট’ এবং অন্যটি ছিল সামাজিক উদ্ভাবনে সরকারি-বেসরকারি খাতের সহযোগিতার ওপর আলোকপাত করে।