অর্থনীতি
অনলাইন রিটার্নের সঙ্গে সরাসরি ব্যাংকের সংযোগে ভয় নেই: এনবিআর চেয়ারম্যান

অনলাইন রিটার্ন দাখিলের সময় সরাসরি ব্যাংকের সংযোগ স্থাপন করা হলে করদাতাদের সুবিধা হবে। এছাড়া কোনো এনবিআর কর্মকর্তা গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য দেখতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) এনবিআরের প্রধান কার্যালয় মিট দা বিজনেস শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকের তথ্য এনবিআরের কোনো কর্মকর্তা দেখতে পাবেন না। এই সুবিধা করদাতার জন্য। এতে ব্যাংকের আমানত সংগ্রহে কিংবা করদাতাদের কোনো সমস্যা হবে না। করদাতার যাতে হিসাব বিবরণী বারবার আনতে না হয়, সে কারণে আমরা বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করার চেষ্টা করছি।
অন্যদিকে করপোরেট কর প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করপোরেট কর কমতে কমতে ২০ ভাগ হয়েছে। আগামীতেও করপোরেট কর রিটার্নও অনলাইন করা হবে। আমাদের লক্ষ্য ব্যবসায়ীরা যাতে পেইন না পায়। ব্যবসায়ীরা যাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে।
তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ করদাতা রিটার্ন দেন না। টিআইএনধারীদের নোটিশ দেওয়াকে হয়রানি বলা ঠিক না। রিটার্ন জমা দিলেই সমস্যার সমাধান। আয়করে অটোমেশন করা হয়েছে। আমরা র্যানডম বেসিসে অডিট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোম্পানির ক্ষেত্রে এমনভাবে অডিট হবে। যাতে তিনটির মধ্যে অন্তত একটি নতুন ফাইল হয়।
ভ্যাট রেট নিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ভ্যাট রেট নিয়ে অনেক আপত্তি দেখলাম। আমিও প্রয়োজনে ভ্যাট রেট কমাবো। ভ্যাট রেট হবে একক রেট। আমরা চাই ডিজিটালাইজেশন। আমরা সফটওয়্যার করতে চাই। ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দেয় না। ভ্যাট দেয় চূড়ান্ত ভোক্তা। তাহলে ওটা লুকাতে এতো চেষ্টা কেন?
টোব্যাকো খাতে ৮৩ শতাংশ ভ্যাট থাকলেও আদায় হয় না এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, টোব্যাকো খাতে বড় অঙ্কের ভ্যাট ফাঁকি হয়। গত এক বছরে ৩ হাজার অডিট হয়েছে। সেখানে ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পাওয়া গেছে। অধিকাংশ ভ্যাট পাই না। আমরা কিউআর কোড কেন্দ্রিক সিস্টেম করতে চাচ্ছি। যাতে অটোমেটিকভাবে ভ্যাট জমা হয়। ব্যবসায়ীদের অটোমেশনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাবো।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ আগস্ট এনবিআর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়। যেখানে বলা হয়, করদাতাদের অনলাইন রিটার্নের সঙ্গে সরাসরি ব্যাংকের সংযোগ থাকবে। যার মাধ্যমে করদাতার অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স, সুদের আয় এবং উৎসে কর্তনকৃত কর—রিয়েল-টাইমে জানা যাবে। এরপর বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠে যে, গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে তথ্য এনবিআর কর্মকর্তাদের কাছে চলে যাবে। তাতে ব্যাংকের আমানত কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অর্থনীতি
জেট ফুয়েলের দাম কমলো

বিমানে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল জেট ফুয়েলের দাম কমানো হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে প্রতি লিটারে ৯৯ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে কমিয়ে ৯৬ টাকা ৯ পয়সা করা হয়েছে। এ ছাড়া, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে প্রতি লিটার ০.৬৫০২ ডলার থেকে কমিয়ে ০.৬৩৩৩ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) নতুন এ দাম ঘোষণা করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
এর আগে আগস্ট মাসে প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম ৯৮ টাকা ২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ টাকা ৬৬ পয়সা করা হয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে প্রতি লিটার ০.৬৪০১ ডলার থেকে বাড়িয়ে ০.৬৫০২ ডলার নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন ২০০৩ অনুযায়ী, দেশি ও বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য ডিউটি ফ্রি (শুল্ক ও মূসকমুক্ত) এবং অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য শুল্ক ও মূসকসহ জেটএ-১ (এভিয়েশন ফুয়েল) এর মূল্যহার নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) গত ২০ জানুয়ারি এবং বিপিসির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (পিওসিএল) গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জেটএ-১ বিপণনে তাদের বিপণন চার্জ পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব কমিশনে জমা দেয়।
অর্থনীতি
৯ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১২ হাজার ৪২০ কোটি টাকা

চলতি মাস সেপ্টেম্বরের প্রথম ৯ দিনে এক বিলিয়ন ডলারের (১০১ কোটি ৮০ লাখ ডলার) রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে দেশে। স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ হাজার ৪২০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরেক হোসেন খান জানান, সেপ্টেম্বরের ৯ দিনে ১০১ কোটি ৮০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত বছরের (২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের ৬ দিন) একই সময়ের চেয়ে ১৮ কোটি ৫০ ডলার বেশি এসেছে। গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ ছিল ৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
আর চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের ৯ দিন পর্যন্ত ৫৯১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। যা গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এসেছিল ৪৯৭ কোটি ১০ লাখ ডলার। অর্থবছর হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের চেয়ে ৯৪ কোটি ৭০ ডলার বেশি এসেছে। যা প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ দশমিক ১০ শতাংশ।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। আর গত আগস্টের পুরো সময়ে এসেছিল ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকার রেমিট্যান্স এসেছে।
এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল, যা ছিল বছরের রেকর্ড পরিমাণ। আর পুরো অর্থবছর (২০২৪-২৫) জুড়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল জুলাইয়ে ১৯১.৩৭ কোটি ডলার, আগস্টে: ২২২.১৩ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০.৪১ কোটি ডলার, অক্টোবরে: ২৩৯.৫০ কোটি ডলার, নভেম্বরে: ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে: ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে: ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে: ২৭৫ কোটি ডলার, মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা ও প্রবাসী আয়ের পথ সহজ করায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে ৩০.৬৫ বিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বর্তমানে ৩০ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
অর্থনীতি
স্বর্ণের দামে রেকর্ড, ভরি ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪৭ টাকা

দেশের বাজারে আবারও রেকর্ড গড়লো সোনার দাম। একদিনের ব্যবধানে প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ১৩৭ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪৭ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। যা দেশের ইতিহাসে সোনার সর্বোচ্চ দাম।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
কাফি
অর্থনীতি
এইচএস কোডে ভিন্নতা থাকলেও মালামাল খালাসে জটিলতা কাটছে

বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের মালামাল খালাস প্রক্রিয়ায় এইচএস কোড অথবা পণ্যের বর্ণনার ভিন্নতায় দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে শর্তসাপেক্ষে পণ্য ছাড় করতে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) এনবিআর থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখ জানিয়েছেন।
এনবিআর জানায়, বন্ড লাইসেন্স বা প্রাপ্যতা শিট অনুযায়ী আমদানি করা পণ্যের ঘোষণায় প্রদত্ত এইচএস কোড বা বর্ণনার সঙ্গে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত এইচএস কোড বা বর্ণনা অনেক সময় ভিন্ন হয়। এর ফলে শুল্কায়ন বিলম্বিত হয় ও সময়মতো রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী জাহাজীকরণ ব্যাহত হয়।
জটিলতা নিরসনে এনবিআরের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে–
যদি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত এইচএস কোডের প্রথম ৪ ডিজিট বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভুক্ত এইচএস কোডের প্রথম ৪ ডিজিটের সঙ্গে মিলে যায়, তবে অঙ্গীকারনামা দাখিলের শর্তে দ্রুত পণ্যচালান খালাস করা যাবে।
ভিন্ন এইচএস কোড নিরূপিত হলে বন্ড লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান কাস্টমস বন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে ওই এইচএস কোডের প্রাপ্যতায় অন্তর্ভুক্ত করে সর্বোচ্চ দুই দিনের মধ্যে পণ্য খালাস করতে পারবে।
এনবিআর মনে করে, এ নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করলে বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি কার্যক্রম আরও সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী হবে। পাশাপাশি রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।