রাজনীতি
বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে পাকিস্তানি হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের নবনিযুক্ত হাইকমিশনার ইমরান হায়দার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
সাক্ষাৎকালে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
এ সৌজন্য সাক্ষাতে পারস্পরিক সম্পর্ক ও বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বৈঠকের বিস্তারিত বিষয়বস্তু সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি।

রাজনীতি
মাজার ভাঙা ও লাশ পুড়িয়ে দেওয়া রাসুলের শিক্ষা নয়: রিজভী

আজ আমরা নিজেরা দ্বিধাবিভক্ত। আমরা কারো মাজার ভাঙছি। কোনো লাশ পুড়িয়ে দিচ্ছি। এটা তো রাসুলের শিক্ষা নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজ আমরা গণতন্ত্রের চেতনাই বলি, আমরা রাষ্ট্রীয় চেতনাই বলি– পৃথিবীর কাছে নিদর্শন দিয়ে গেছেন আরবের সেই মহামানব। আমরা সেখান থেকে শিক্ষা না নিয়ে আমরা নিজেদের যে ধর্ম, নিজেদের যে ইসলাম, সেটাকেই আমরা কত ফেরকা, কত ফিতা, কত ধরনের কথাবার্তা দিয়ে শুধু বিভাজন করছি। অথচ ঐক্যের প্রতীকই ছিলেন আমাদের মহানবী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ যে মহামানবকে নিয়ে এখানে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে, মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে, তার সম্পর্কে আমার মতো একজন ক্ষুদ্র মানুষের বিস্তারিত বলা খুবই কঠিন ব্যাপার। এটা সম্ভব নয়। শুধু তার রেখে যাওয়া যে আদর্শ এবং তিনি আল্লাহর কাছ থেকে প্রাপ্ত যে বাণী সমগ্র বিশ্বের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিয়েছেন, ছড়াতে গিয়ে তিনি যে অনুপম নিদর্শন এবং তার ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তিনি রেখে গেছেন। যদি আমরা সামান্যতম অনুকরণ করতাম বা আমরা লালন করতাম তাহলে এই দেশ থেকে অন্যায়-অনাচার, কুপ্রবৃত্তি, পাপাচার, হানাহানি রক্তারক্তি সব বন্ধ হয়ে যেত।
তিনি বলেন, যিনি আমাদের মডেল, যিনি আমাদের আদর্শের প্রতীক, তাকে আমরা কেউ অনুসরণ করি না। তাকে আমরা কেউ অনুকরণ করি না। এটাই হলো মুসলিম সমাজের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজ যে দেশে বাস করছি, সেই দেশের যিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনিও মুসলমান ছিলেন, কাজে না হলেও নামে ছিলেন। একবার বলেছিলেন মদিনা চার্টার অনুযায়ী দেশ চালাবেন, সেটা আমরা কি দেখলাম– তার এক মন্ত্রীর ১৪০টা বাড়ি লন্ডনে, তার বাড়ি থাকার পরও তার ছেলেমেয়ের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা জায়গা।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের ওপর বিপদ আসে, আমরা দেশেই থাকি, আমাদের নেত্রী দেশেই থাকেন, মিথ্যা মামলায় পাঁচ-ছয় বছর তিনি নির্যাতনে কারাবন্দি অবস্থায় থাকেন, আমরা কোনো পন্থি দল নই, বাংলাদেশপন্থি দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। আপনারা কি পন্থি আপনারা নিজেরাই প্রমাণ করেছেন। ১৯৮১ সালের দেশে যখন ফিরলেন, জিয়াউর রহমান যখন আপনাকে ফেরার অনুমতি দিলেন, দেশে ফিরলেন কোন দেশ থেকে? আপনি এসেছিলেন, আবার ৫ আগস্টে কোন দেশে পালিয়ে গেলেন? আপনাদের অধিকাংশ লোক কোন দেশে পালিয়ে গেছে? এটা জনগণ দেখেছে। এখনো দেখছি। আবার ওই দেশ থেকেই আমরা অডিও বার্তা, ভিডিও বার্তা শুনি যে তোমরা উল্টে দাও, পাল্টে দাও, কারো হাত ভেঙ্গে দাও, কারো পা ভেঙ্গে দাও, এটা কীভাবে সম্ভব।
তৌহিদী জনতার নামে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, বাংলাদেশ একটি উদার নৈতিক দেশ। বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে বাস করে। এই দেশের পূজামণ্ডপ পাহারা দেয় আলেম-ওলামারা। সেই দেশে মাজার ভেঙে সেখানে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এটার আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবশ্যই এর পেছনে আন্তর্জাতিক কোনো ষড়যন্ত্র আছে। বিএনপির আমলে চক্রান্ত করেছিলেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করার জন্য এখন আবার সেই প্রচেষ্টা চলছে কি না, এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে খতিয়ে দেখতে হবে।
মিলাদ মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর শরাফত আলী শফু। এতে মোনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা সেলিম রেজা।
রাজনীতি
চাঁদাবাজদের মা-বাবার নামসহ তালিকা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে: সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, যারা চোর, বাটপার, চাঁদাবাজ ও হুমকিদাতা বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে তাদের মা-বাবার নাম-ঠিকানাসহ তালিকা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের দাবিতে রাজনৈতিক কর্মশালা ও সমন্বয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, পঞ্চগড় জেলা ছাত্রদল স্কুলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি দেওয়া শুরু করেছে। যেই সাহস শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ করতে পারেনি সেই সাহস চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে ছাত্রদল করছে। এই বাংলাদেশের কোনো স্কুল-কলেজে ছাত্ররাজনীতির নামে লেজুরবৃত্তি রাজনীতি চলবে না। স্কুল-কলেজগুলোতে আহ্বায়ক কমিটির নামে আওয়ামী লীগের মতো বিএনপির অযোগ্য লোকজন সভাপতি হয়ে পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
সভায় এনসিপির যুগ্ম-আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারসহ পঞ্চগড়ের এনসিপি ও জাতীয় যুবশক্তির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
মুহাম্মদ (সা.) মানবতার মুক্তির দিশারি: তারেক রহমান

হযরত মুহম্মদ (সা.)-এর আবির্ভাব ছিল একটি আলোকিত বিস্ময়। মানবজাতি তার আগমনে নিজেদের কল্যাণ ও শান্তির নিশ্চয়তা লাভসহ জগতের সমস্ত অন্যায়-অবিচার, কুসংস্কার, নিপীড়ন-নির্যাতন এবং বৈষম্যের ঘোর অন্ধকার যুগ থেকে নিষ্কৃতি লাভের সন্ধান পায়। সে জন্যই তিনি হয়েছেন মানবতার মুক্তির দিশারি।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ মন্তব্য করেন। তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
বাণীতে তিনি বলেন, ঈদে মিলাদুন্নবী, এই দিনটি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দুনিয়াতে আগমনের আনন্দ ও তার জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে উদযাপন করা হয়। যিনি মানবজাতিকে পরিশোধন করেন এবং তাদের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোরআন ও কাজের কথা শিক্ষা দেন। পৃথিবীতে সৃষ্টির সেরা মানব বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমন দিবস মর্যাদাবান, গুরুত্ববহ ও আনন্দের। আল্লাহর প্রতি ঈমান ও মানবতার পথপ্রদর্শনকারী মহানবীর ধরাপৃষ্ঠে আবির্ভাবের দিন আজ।
তারেক রহমান বলেন, মুহাম্মদ (সা.) সারা বিশ্বের জন্য রহমতস্বরূপ, আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সব থেকে বড় উপহার বা এহসান। আল্লাহ তাআলা তাকে দিয়েছেন মহিমান্বিত মর্যাদা। পৃথিবীতে মানুষ ইহজগৎ ও পরজগতের মুক্তির সন্ধান পায় এই দিনে। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আবির্ভাব ছিল একটি আলোকিত বিস্ময়। মানবজাতি তার আগমনে নিজেদের কল্যাণ ও শান্তির নিশ্চয়তা লাভসহ জগতের সমস্ত অন্যায়-অবিচার, কুসংস্কার, নিপীড়ন-নির্যাতন এবং বৈষম্যের ঘোর অন্ধকার যুগ থেকে নিষ্কৃতি লাভের সন্ধান পায়। সেজন্যই তিনি হয়েছেন মানবতার মুক্তির দিশারি।
তিনি বলেন, তিনি আইয়ামে জাহেলিয়াতের অন্ধকার যুগ দূরীভূত করে ইসলাম কায়েমের মাধ্যমে সত্য, ন্যায়বিচার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। সমাজে অবহেলিত, নির্যাতিত, বঞ্চিত ও দুঃখী মানুষের সেবা, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শণ, পরমতসহিষ্ণুতা, দয়া ও ক্ষমা গুন, শিশুদের প্রতি দায়িত্ব এবং নারী জাতির মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)-এর আদর্শ অতুলনীয় এবং তাই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে স্বীকৃত।
তারেক রহমান বলেন, আমি আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনের নিকট প্রার্থনা করি মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা, আদর্শ ও ত্যাগের মহিমা আমরা সবাই যেন নিজেদের জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে পারি। আমি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলিম ভাই-বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি শেষ নবী সাইয়েদুল মুরছালিন হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর জন্য অসংখ্য দরুদ ও তার প্রতি সালাম জানাই।
রাজনীতি
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই: ড. হেলাল

দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতি। মানুষের জান ও মালের নিরাপত্তা নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মালিবাগে সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এসময় তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিলেও সেই নির্বাচন কিভাবে সম্পন্ন করবে তার কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি, দিতে পারেনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনভাবেই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহনমূলক, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। জুলাই চেতনা বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম দায়িত্ব জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে সকল গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করা। তারপর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে দেশের ৭১ শতাংশ জনগনের দাবির প্রেক্ষিতে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা। সরকার এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে কিংবা কোন দলের প্রতি আনুগত্যশীল হলে জনগণ কঠোর হতে বাধ্য হবে।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী একটি দল আওয়ামী লীগের ভূমিকায় নিজেদেরকে জনগণের সামনে উপস্থাপন করেছে। আওয়ামী লীগ যেভাবে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, লুটপাট, দখল, ধর্ষণ, খূন, গুম ও নৈরাজ্যের সৃষ্টি করেছে একইভাবে আরেকটি দল এখন চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, লুটপাট, দখল, ধর্ষণ, খূন, গুম ও নৈরাজ্যের সৃষ্টি করছে। যারা ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই জনজীবন নাভিশ্বাস করে তুলছে, তারা ক্ষমতায় বসলে রাষ্ট্রের পরিস্থিতি আর পরিণতি কেমন হবে জাতি বুঝে গেছে। এজন্য জনগণ তাদেরকে ভোটের মাধ্যমেই বয়কট করবে। বয়কটের টের পেয়ে তারা জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী জনগণ যেটাই দাবি করেছে, তারা সেই দাবির বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। জনগণ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়েছে, তারা নিষিদ্ধের বিপক্ষে! জনগণ সংবিধান সংস্কার চেয়েছে, তারা সংবিধান সংস্কারের বিপক্ষে, জনগণ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চাচ্ছে, তারা জুলাই সনদকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার বিপক্ষে! জনগণ পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন চাচ্ছে তারা পিআরেরও বিপক্ষে। জনগণ যেটাই চায়, তার বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। কারণ তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের কর্মকান্ডে জনগণ বিরক্ত এটা তারা নিশ্চিতভাবে বুঝতে পেরেছে। তারা বুঝে গেছে আওয়ামী লীগের মত তাদেরও পরিণতি হতে বেশি সময় লাগবে না। সেজন্য তার দেশ ও জাতির স্বার্থের কথা চিন্তা না করে তারা নিজেদের স্বার্থে বিভোর।
তিনি আরো বলেন, জুলাই সনদ চায় না, গণহত্যার বিচার চায় না, রাষ্ট্রের সংস্কার চায় না; তারা দেশ ও জাতির দুশমন। জামায়াতে ইসলামীকে অনুসরণ করে দেশ ও জাতির স্বার্থে রাজনীতি করতে তিনি সকল দলের প্রতি আহ্বান জানান।
ড. হেলাল উদ্দিন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, জাতি যেই আশা-আকাঙক্ষায় আপনাদেরকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসিয়েছে, সেই আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে মনযোগী না হলে দেশ ও জাতির যতটা ক্ষতি হবে তারচেয়ে বেশি ক্ষতি আপনাদেরই হবে। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইনি ভিত্তি প্রয়োজনে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রয়োজন। নতুবা পরবর্তীতে যারা ক্ষমতায় বসবে তারাই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অসাংবিধানিক অবৈধ সরকার ঘোষণা দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল কর্মকান্ড বাতিল করবে। এতে বর্তমান উপদেষ্টারাও বিচারের মুখোমুখি হতে পারে। আজ যদি জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়, তবে সেদিন আপনারা জনগণকে পাশে পাবেন না। তাই ফেব্রুয়ারির আগেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে সকল গণহত্যার বিচার নিশ্চিত এবং রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার বাস্তবায়ন করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী প্রচার সম্পাদক ও ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবদুস সাত্তার সুমন, রমনা থানা আমীর আতিকুর রহমানসহ রমনা থানা জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
রাজনীতি
নুরকে সুস্থ দেখানোর একটি পরিকল্পনা চলছে: রাশেদ খাঁন

হামলায় আহত গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ নয় তাকে সুস্থ দেখানোর একটি পরিকল্পনা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রাশেদ খাঁন বলেন, নুরুল হক নুর এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার নাক দিয়ে এখনো রক্ত পড়ছে। নাক আরো বাঁকা হয়ে গেছে। মাথায় আঘাত, হাঁটতে পারছেন না এবং তিনি মুখ হা-ও করতে পারছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হবে। পরিবেশ উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এরইমধ্যে নুরকে বিদেশ নেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আগে যেমন ছিল তেমনই রয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি (নুরল হক) এখন প্লেনে ওঠার মতো অবস্থাতে নেই। আমরা সিঙ্গাপুর নিয়ে তাকে চিকিৎসার জন্য দাবি জানিয়েছি। আরেকটু সুস্থ হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাকে বিদেশ নেওয়া হতে পারে।
গণধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গতকাল হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে নুরুল হক নূর সম্পূর্ণ সুস্থ কিন্তু এই কথার কোনো সত্যতা নেই। নুরুল হক নুর এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ নয় তাকে সুস্থ দেখানোর একটি পরিকল্পনা চলছে। আমি একটু আগে তাকে দেখে আসলাম সেখানে ডাক্তাররাও ছিলেন। নাক থেকে তার জমাট বাধা ব্লাড বের হলো। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ডিরেক্টরকে ফোন দিলাম তিনি এলেন এবং অন্যান্য ডাক্তাররাও ছিলেন। ডিরেক্টর সঙ্গে সঙ্গে অন্য চিকিৎসকদেরও ডাকলেন এবং আমরা বললাম তার এই অবস্থা। তিনি নুরুল হক নূরের যে ধরনের চিকিৎসা দরকার তিনি সেই নির্দেশনা দিলেন। অথচ আমরা লক্ষ্য করলাম গণমাধ্যমে বলা হয়েছে- নুরুল হক নূর সুস্থ কিন্তু তিনি তো এখনো আগের মতোই রয়েছেন।
রাশেদ খান বলেন, আমি নুরুল হক নূরের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু তিনি কথা বলতে পারছেন না। তার চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, মুখ দিয়ে কথা বলতে পারছেন না, তার মুখের মাড়িতে প্রচণ্ড ব্যথা এবং ব্রেনে তার আঘাতের চিহ্ন থাকায় তার ব্রেনও ঠিকমতো কাজ করছে না। নুরুল হক নুর এখনো পরিপূর্ণ সুস্থ হননি তিনি আগে যেমন ছিলেন এখন পর্যন্ত তেমনি আছেন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই আঘাত করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, নুরুল হক নূরের ওপর যে হামলা হয়েছে এই হামলাকে কেন্দ্র করে পুরো জাতি আজ একতাবদ্ধ হয়েছে। এখন এ দেশের মানুষের যে চাওয়া সেটি হলো আওয়ামী লীগকে যেভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলসহ যারা ফ্যাসিবাদের দোসর তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এটা এই সরকারের জন্য লজ্জার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশনা ব্যতীত এই ধরনের ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই। গণধিকার পরিষদ মনে করে নুরুল হক নুরের উপরে এবং তার নেতাকর্মীদের উপরে যে হামলা হয়েছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে। এই ধরনের ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি একজন অন্যতম সদস্যকে এভাবে হামলা করার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।
তিনি দাবি করে বলেন, নুরুল হক নুরকে যে সুস্থ দেখানোর পরিকল্পনা চলছে এটা করে কোনো লাভ হবে না। হামলার বিচার হতে হবে, জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং যারা এই ঘটনায় সম্পৃক্ত অবশ্যই তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।