রাজনীতি
জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে গণঅধিকার পরিষদ

রাজনীতি
নুরকে সুস্থ দেখানোর একটি পরিকল্পনা চলছে: রাশেদ খাঁন

হামলায় আহত গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ নয় তাকে সুস্থ দেখানোর একটি পরিকল্পনা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রাশেদ খাঁন বলেন, নুরুল হক নুর এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার নাক দিয়ে এখনো রক্ত পড়ছে। নাক আরো বাঁকা হয়ে গেছে। মাথায় আঘাত, হাঁটতে পারছেন না এবং তিনি মুখ হা-ও করতে পারছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হবে। পরিবেশ উপদেষ্টা আমাদের জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এরইমধ্যে নুরকে বিদেশ নেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আগে যেমন ছিল তেমনই রয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি (নুরল হক) এখন প্লেনে ওঠার মতো অবস্থাতে নেই। আমরা সিঙ্গাপুর নিয়ে তাকে চিকিৎসার জন্য দাবি জানিয়েছি। আরেকটু সুস্থ হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাকে বিদেশ নেওয়া হতে পারে।
গণধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গতকাল হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে নুরুল হক নূর সম্পূর্ণ সুস্থ কিন্তু এই কথার কোনো সত্যতা নেই। নুরুল হক নুর এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ নয় তাকে সুস্থ দেখানোর একটি পরিকল্পনা চলছে। আমি একটু আগে তাকে দেখে আসলাম সেখানে ডাক্তাররাও ছিলেন। নাক থেকে তার জমাট বাধা ব্লাড বের হলো। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ডিরেক্টরকে ফোন দিলাম তিনি এলেন এবং অন্যান্য ডাক্তাররাও ছিলেন। ডিরেক্টর সঙ্গে সঙ্গে অন্য চিকিৎসকদেরও ডাকলেন এবং আমরা বললাম তার এই অবস্থা। তিনি নুরুল হক নূরের যে ধরনের চিকিৎসা দরকার তিনি সেই নির্দেশনা দিলেন। অথচ আমরা লক্ষ্য করলাম গণমাধ্যমে বলা হয়েছে- নুরুল হক নূর সুস্থ কিন্তু তিনি তো এখনো আগের মতোই রয়েছেন।
রাশেদ খান বলেন, আমি নুরুল হক নূরের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু তিনি কথা বলতে পারছেন না। তার চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, মুখ দিয়ে কথা বলতে পারছেন না, তার মুখের মাড়িতে প্রচণ্ড ব্যথা এবং ব্রেনে তার আঘাতের চিহ্ন থাকায় তার ব্রেনও ঠিকমতো কাজ করছে না। নুরুল হক নুর এখনো পরিপূর্ণ সুস্থ হননি তিনি আগে যেমন ছিলেন এখন পর্যন্ত তেমনি আছেন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই আঘাত করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, নুরুল হক নূরের ওপর যে হামলা হয়েছে এই হামলাকে কেন্দ্র করে পুরো জাতি আজ একতাবদ্ধ হয়েছে। এখন এ দেশের মানুষের যে চাওয়া সেটি হলো আওয়ামী লীগকে যেভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলসহ যারা ফ্যাসিবাদের দোসর তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এটা এই সরকারের জন্য লজ্জার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশনা ব্যতীত এই ধরনের ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই। গণধিকার পরিষদ মনে করে নুরুল হক নুরের উপরে এবং তার নেতাকর্মীদের উপরে যে হামলা হয়েছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে। এই ধরনের ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি একজন অন্যতম সদস্যকে এভাবে হামলা করার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।
তিনি দাবি করে বলেন, নুরুল হক নুরকে যে সুস্থ দেখানোর পরিকল্পনা চলছে এটা করে কোনো লাভ হবে না। হামলার বিচার হতে হবে, জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং যারা এই ঘটনায় সম্পৃক্ত অবশ্যই তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
রাজনীতি
পিআর পদ্ধতিতে ভোট না হলে জনগণ ফের রাজপথে নামবে: ড. হেলাল উদ্দিন

পিআর পদ্ধতির দাবি আদায় না হলেও আবারও জনগণ রাজপথে নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
তিনি বলেছেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে আবার জুলাই আসবে। জুলাই চেতনাই হচ্ছে, ক্ষমতা নয় জনতা। জনতা যেভাবে চায় রাষ্ট্র সেভাবেই পরিচালিত হবে। দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন চায় কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কার স্বার্থে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিচ্ছে না জনগন সেটি জানতে চায়। সরকারের ভূমিকায় ইতোমধ্যেই জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে। নির্বাচিত রাজৈনৈতিক সরকার জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে সেই সনদ বাস্তবায়ন করবে এটি জাতি বিশ্বাস করে না। কারণ নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার দ্বারাই রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস হয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শাহবাগ থানার দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শাহবাগ পূর্ব থানা আমীর আহসান হাবীবের সভাপতিত্বে ও শাহবাগ পশ্চিম থানা আমীর এডভোকেট শাহ মাহফুজুল হক চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত দায়িত্বশীল সমাবেশে শাহবাগ পূর্ব ও পশ্চিম থানা নায়েবে আমীর, সেক্রেটারিবৃন্দ এবং মজলিসে শুরা ও কর্মপরিষদের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, পুরোনো ব্যবস্থা বাংলাদেশ আর চলতে পারে না। যেই ব্যবস্থায় শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট হয়েছে সেই ব্যবস্থা পরবর্তীতে যারাই ক্ষমতায় আসবে তারাও ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠবে। বরং কারো কারো দলীয় কর্মকান্ডে জনগণ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, তারা কোনমতে একবার ক্ষমতায় বসতে পারলে শেখ হাসিনার চেয়েও বেশি স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট হবে। শেখ হাসিনার তৈরি সংবিধান জনগণ মানে না বলেই জুলাই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। যেই সংবিধান জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে সেই সংবিধান জনগণ মানে না, মানবে না। তাই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য সংবিধান সংস্কার করে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং তার পরবর্তীতে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিয়ে জনগণের সংসদ ও জনগণের সরকার গঠন করে সেই সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সম্মানের সাথে বিদায় নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করার ফলে রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। যারা রাষ্ট্রের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিয়েছে তাদের দ্বারা কখনোই রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব নয়। অতীতের রাজনৈতিক সরকার গুলো কেউ দুর্নীতিতে দেশকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান করেছে, কেউ লুটপাটের মাধ্যমে বিদেশে বেগম পাড়া গড়ে তুলেছে। এসব দলের দ্বারা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে না। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠন করতে হবে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী পুরো জাতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর যেই আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে, সেই আস্থা ও বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষায় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠন করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতার সামিল হবে। জনগণ কোনো বিশ্বাসঘাতককে ছেড়ে দেয় না, দিবে না।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে, সেই সময়ের আগেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করা এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব। কারণ সরকারের নির্বাচনি রোডম্যাপ মোতাবেক এখনো ০৬ মাস সময় হাতে রয়েছে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, গণহত্যার বিচার নিশ্চিত ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের আয়োজন করতে সর্বোচ্চ ১ মাস হলেই যথেষ্ট। জনগণের দাবি পূরণে সময়ের চেয়ে আন্তরিকতা বেশি জরুরী। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জুলাই চেতনা ধারণ করে দেশপ্রেমের প্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানান।
ভুয়া ও হয়রানিমূলক রিটকারীর শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরী মন্তব্য করে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ডাকসু নির্বাচন বানচাল করতে যেভাবে ভুয়া ও হয়রানিমূলক রিট দায়ের হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতেও এমন আরও ভুয়া রিট দায়ের হতে পারে। ভুয়া ও হয়রানিমূলক রিট বন্ধে আদালতের উচিত ভুয়া রিটকারীর শাস্তি নিশ্চিত করা। ভুয়া ও হয়রানিমূলক রিট দায়ের হলে একদিকে আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট হয় অপরদিকে মানুষ হয়রানির শিকার হয়। তাই ভূয়া ও হয়রানিমূলক রিটকারীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে তিনি আদালতের বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাজনীতি
সুষ্ঠু ভোট হলে ডাকসু নির্বাচনে বিজয়ী হবে ছাত্রদল: রিজভী

অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠিত হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেলই বিজয়ী হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভা ও র্যালির আগে এমন দাবি করেন তিনি।
রিজভী বলেন, আন্দোলন, সংগ্রাম ও নীতি-আদর্শের দল হলো ছাত্রদল। ঢাবির শিক্ষার্থীরা যদি অবাধভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, তাহলে ছাত্রদলের প্যানেলই জয়ী হবে।
জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে রিজভী বলেন, এখন হঠাৎ করে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল অনেক কথা বলছে। ভাই, পিআর পদ্ধতি কী? কোনো জনগণ বলতে পারবে? গ্রামের মানুষ, এ দেশের সাধারণ মানুষ কি বলতে পারবে? এটা তো কখনো ব্যবহার করা হয়নি। এর কোনো দৃষ্টান্ত নেই। এটি তো জনগণ চায় না।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খোন্দকার আবু আশফাক। আর সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নিপূণ রায়।
এছাড়া, সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু, তমিজ উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি জাহিদুল কবির, ডা. জাহাঙ্গীর, ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ডা. তৌহিদ আওয়াল প্রমুখ।
কাফি
রাজনীতি
হত্যার উদ্দেশ্যেই নুরকে আঘাত করা হয়: মির্জা ফখরুল

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নুরকে দেখতে এসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, যারাই তাকে আঘাত করুক হত্যার উদ্দেশ্যেই আঘাত করা হয়েছিল। এটা খুব পরিষ্কার।
ফখরুল বলেন, নুরের অবস্থা আগের চেয়ে ইমপ্রুভ কিন্তু ক্রিটিক্যাল অবস্থায় আছে। তার যে জায়গাগুলোতে ইনজুরি হয়েছে সেই জায়গাগুলো খুব ফ্যাটাল। তার ব্রেনেও ইনজুরি হয়েছে, ব্লিডিং হয়েছে। চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ করে জানতে পেরেছি, এখানে চিকিৎসার কোনো ত্রুটি হয়নি। সে এখনো খেতে পারছে না তাকে পাইপ দিয়ে লিকুইড খেতে হয়। তার রিকভারি হতে সময় লাগছে, তাকে দেশের বাইরে পাঠানো দরকার।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অভ্যুত্থানের পরও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যদি আমাদের নেতাদের ওপর এভাবে আক্রমণ করে তাহলে সাধারণ মানুষকে কি করছে চিন্তা করেন। এটা আমি কোনোমতেই মেনে নিতে পারি না।
প্রধান উপদেষ্টা বিচার বিভাগীয় যে তদন্ত দিয়েছেন সেটা দ্রুত শেষ করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সরকারের কাছে বলছি, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানো উচিত।
কাফি
রাজনীতি
মব সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে হবে: তারেক রহমান

দেশব্যাপী চলমান মব সংস্কৃতির অবসান ঘটানোর ওপর জোর দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, নতুনভাবে আবির্ভূত এ মব সংস্কৃতির অবসান ঘটাতেই হবে।
কারণ এটি আইনবহির্ভূত একটি হিংসাত্মক আচরণ, যা জনমনে ভীতি ও আতঙ্ক তৈরি করে। বেআইনি এ মব সংস্কৃতি যে কোনো উপায়ে বন্ধ করতে হবে।
বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে রবিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, ‘দেড় যুগব্যাপী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শহীদদের আত্মদান সার্থক হবে, যদি আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, সুশাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারি। এটিই হোক বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভলগ্নে আমাদের অঙ্গীকার। দেশজুড়ে যেন আর কখনোই গুম, গুপ্তহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নারী ও শিশুদের ওপর পৈশাচিকতা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, টাকা পাচারের মতো ঘৃণ্য বিভীষিকার পুনরাবৃত্তি না হয়। জনগণের অধিকার আদায়ে তাদের দুঃখকষ্ট লাঘব করাসহ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই এখন বিএনপির মূল লক্ষ্য। ’
তিনি বলেন, ‘দেশে এখনো প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আইনের শাসন, স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ, সংবাদপত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারলেই জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আর এজন্য জনগণের নির্বাচিত জবাবদিহিমূলক সরকার অতীব জরুরি। জন্মলগ্ন থেকে এ পর্যন্ত দলের যেসব নেতা-কর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন ও দেড় দশকের আওয়ামী ফ্যাসিবাদের করাল গ্রাস এবং গত বছর ছাত্র-জনতার রক্তঝরা আন্দোলনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, আমি তাদের প্রতিও জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা। ’
তারেক রহমান লিখেছেন, জাতীয়তাবাদী আদর্শের সঙ্গে জনগণকে একত্র করার লক্ষ্যে মহান স্বাধীনতার ঘোষক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন। আজকের দিনটি দেশের মানুষের জন্য আনন্দ, উদ্দীপনা ও প্রেরণার। দলটি বাংলাদেশি ভূখণ্ডের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা এবং শক্তিশালী সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার নীতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য একদলীয় বাকশালী ব্যবস্থা কায়েমের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতাত্তর আওয়ামী দুঃশাসনে বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সাধারণ বিষয় হয়ে ওঠে। যার অনিবার্য পরিণতি হয় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, আর এই দুর্ভিক্ষে ১০ লাখ মানুষ মারা যায়। তৎকালীন আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী বাকশাল কায়েম করে স্বৈরশাসনকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করে।
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান ক্ষমতাসীন হয়ে পুনরায় বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করে জনগণের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। শহীদ জিয়ার সৃষ্টি বিএনপি বিগত ৪৭ বছরে কয়েকবার সুষ্ঠু নির্বাচনে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়ে দেশ, জনগণের সমৃদ্ধি ও কল্যাণে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে। আমি স্বাধীনতার মহান ঘোষক, সফল রাষ্ট্রনায়ক ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের প্রতি জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা।
তিনি বলেন, নানামুখী সুদূরপ্রসারী চক্রান্তের মধ্যেও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় চির উন্নত শীর বিএনপি অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। নির্বাসিত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে নির্দ্বিধায় জীবন উৎসর্গ করেছে অসংখ্য নেতা-কর্মী। ৮০-এর দশকে ৯ বছরের সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির রাজপথে আপসহীন ভূমিকা ইতিহাসের উজ্জ্বল অধ্যায়। তাঁর সেই অগ্রণী ভূমিকার জন্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবদানের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে বিএনপি ১৯৯১ সালে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনকালে সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেছে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে বারবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে এর চর্চা ও বিকাশসহ দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য বিএনপি আজ সমধিক জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। জাতির সব সংকটময় সময়ে বিএনপি জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার কারণেই ঐতিহাসিক সাফল্যগুলো অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির আদর্শিক ভিত্তি উদারনীতি। দলের সামাজিক অঙ্গীকার ও অর্থনৈতিক নীতি উদারপন্থি রাজনীতিতে বিশ্বাসী। বিএনপি যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ততবারই সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী প্রসারিত করেছে। দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও নারীর ক্ষমতায়নসহ তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প বাণিজ্য সেক্টরসহ ব্যাংকঋণ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান, রেমিট্যান্সপ্রবাহ ইত্যাদিতে যুগান্তকারী অগ্রগতি লাভ করে। দেশীয় অর্থনীতি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র সমুন্নত ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বিএনপি সরকারের উদ্যম ও উদ্যোগের ফলে দেশে আর দুর্ভিক্ষ স্পর্শ করেনি। মানুষ আর্থিক দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হতে থাকে। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অক্ষুণ্ন রেখে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেদের নিবেদন করে বিএনপি আগামী দিনগুলোতেও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।