অর্থনীতি
বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্বাহী পরিচালক পদে পদোন্নতি পেলেন ৪ কর্মকর্তা

বাংলাদেশ ব্যাংকের চার কর্মকর্তা পরিচালক পদ থেকে নির্বাহী পরিচালক (ইডি) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা হলেন- গভর্নর অফিসের পরিচালক মো. সরোয়ার হোসেন, ব্যাংক পরিদর্শন-৩ বিভাগের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদার, চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মো. সালাহ উদ্দিন এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) পরিচালক মো. মফিজুর রহমান খান চৌধুরী।
রবিবার (৩১ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্সেস ডিপার্টমেন্ট-১ এর পরিচালক মো. জবদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক অভ্যন্তরীণ আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পদোন্নতি নীতিমালা-২০২২ এর বিধান অনুসারে এই পদোন্নতি কার্যকর হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, নতুন নির্বাহী পরিচালক পদে উন্নীত কর্মকর্তাদের দপ্তর পরবর্তী নির্দেশনার মাধ্যমে বণ্টন করা হবে।

অর্থনীতি
আগস্টে রেমিট্যান্স এলো সাড়ে ২৯ হাজার কোটি টাকা

চলতি আগস্ট মাসে দেশে ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলারের (২.৪২ বিলিয়ন ডলার) রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে। স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরেক হোসেন খান জানান, আগস্ট মাসের পুরো সময়ে ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত বছরের (২০২৪ সালের আগস্টে মাসের পুরো সময়ে) একই সময়ের চেয়ে ১৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি এসেছে। গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ ছিল ২২২ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
আর চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্টে) মোট ৪৯০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এসেছিল ৪১৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের চেয়ে ৭৬ কোটি ২০ ডলার বেশি এসেছে। যা প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ।
এর আগে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। তবে মাসটিতে ৮ ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।
এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল, যা ছিল বছরের রেকর্ড পরিমাণ। আর পুরো অর্থবছর (২০২৪-২৫) জুড়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহে দেখা যায়, জুলাই: ১৯১.৩৭ কোটি ডলার, আগস্ট: ২২২.১৩ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বর: ২৪০.৪১ কোটি ডলার, অক্টোবর: ২৩৯.৫০ কোটি ডলার, নভেম্বর: ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বর: ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারি: ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারি: ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চ: ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিল: ২৭৫ কোটি ডলার, মে: ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুন: ২৮২ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা ও প্রবাসী আয়ের পথ সহজ করায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
অর্থনীতি
ঢাকায় আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা শুরু ৩০ অক্টোবর

আগামী ৩০ অক্টোবর ঢাকার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ কনফারেন্স সেন্টারে শুরু হতে যাচ্ছে দেশের বৃহত্তম পর্যটন মেলা ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার’ (বিটিটিএফ)। তিন দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে টোয়াব এই তথ্য জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে মেলার প্রেক্ষাপট ও সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে বর্ণনা করেন টোয়াবের পরিচালক (বাণিজ্য ও মেলা) মো. তাসলিম আমিন শোভন। তিনি জানান, এবারের মেলা হবে ১৩তম সংস্করণ এবং মেলাটি আগের সব বছরের তুলনায় অনেক বৃহৎ পরিসরে, আকর্ষণীয় ও জাঁকজমকপূর্ণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই মেলার সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়; সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; পর্যটন করপোরেশন; ট্যুরিজম বোর্ড; ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং এফবিসিসিআই।
তিনি জানান, এ ছাড়া প্রথমবারের মতো কোনো মেলায় সরাসরি অংশগ্রহণ করছে টার্কিশ এয়ারলাইন্স। মেলায় গোল্ড স্পন্সর হিসেবে ইতোমধ্যে যুক্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক হোটেল চেইন প্রতিষ্ঠান আইএসজি, হসপিটালিটি পার্টনার হিসেবে আছে ইন্টার কন্টিনেন্টাল ঢাকা, ক্রাউন প্লাজা গুলশান, হলিডে ইন ঢাকা।
তাসলিম আমিন শোভন জানান, পাকিস্তান, নেপাল, ভূটান ও শ্রীলঙ্কা এর জাতীয় পর্যটন সংস্থা ও ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে এবং আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে মেলায় অংশগ্রহণের আলোচনা চলমান রয়েছে। এছাড়াও মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপ, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও তুরস্কের ট্যুর অপারেটর ও ট্রাভেল এজেন্টরা অংশগ্রহণ করছে।
তিনি বলেন, এবারের মেলায় মেডিকেল ট্যুরিজমের জন্য আলাদা জোন থাকবে। মেলায় ৪টি হলে প্যাভিলিয়নসহ ২২০ টি স্টল থাকবে। এবারের মেলায় ২৫০ প্রদর্শক, ২০টি দেশের অংশগ্রহণ, ২ হাজার বাণিজ্যিক প্রতিনিধি এবং ৫০ হাজার দর্শনার্থী উপস্থিত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা বলেন, এ মেলা বাংলাদেশের পর্যটন সেক্টরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন। দেশের পর্যটনের বিকাশে এই আয়োজনের গুরুত্ব অনেক। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সবাই এই আয়োজনের সঙ্গে আছি এবং এই আয়োজনকে সফল করে তুলতে একসঙ্গে কাজ করবো।
সংবাদ সম্মেলনে টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, পর্যটন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং এর টেকসই উন্নয়ন এই মেলার প্রধান উদ্দেশ্য। এবারের মেলা ব্যবসায়ী, দেশি-বিদেশি পর্যটক এবং পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট সবার মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অর্থনীতি
বিদেশি সফটওয়্যার ছাড়াই কার্ড ইস্যু করতে পারবে দেশের ব্যাংকগুলো

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র জন্য কোনা কার্ড পারসোনালাইজেশন সিস্টেম (কোনা-সিপিএস) সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে পেমেন্ট ও সিকিউরিটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কোনা সফটওয়্যার ল্যাব লিমিটেড।
কোনা-সিপিএস-এর প্রথম গ্রাহক হিসেবে বিশ্বমানসম্পন্ন ইএমভি কার্ড পারসোনালাইজেশন সিস্টেমের মাধ্যমে স্থানীয় ন্যাশনাল কার্ড স্কিম ‘টাকা পে’সহ ভিসা, মাস্টারকার্ড ও ইউনিয়নপে ইন্টারন্যাশনালের মতো আন্তর্জাতিক স্কিমে ইএমভি ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রিপেইড কার্ড ইস্যু করতে পারবে ইসলামী ব্যাংক।
দেশের পেমেন্ট ও ফিনটেক খাতের এ সাফল্য উদযাপনে সম্প্রতি দ্য ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হোটেলে এক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের প্রতিনিধিরাসহ শিল্পখাত সংশ্লিষ্ট শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা।
কোনা সফটওয়্যার ল্যাবের বাংলাদেশি সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো এমন একটি আধুনিক ও সম্ভাবনাময় কার্ড পারসোনালাইজেশন সিস্টেম চালু হয়েছে। এ অর্জনের ফলে বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরতা কমবে, সময় বাঁচবে এবং সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রার।
এ বিষয়ে কোনার চিফ বিজনেস অফিসার সিরাজ সিদ্দিকী বলেন, কোনা-সিপিএস-এর মাধ্যমে কোনা সফটওয়্যার ল্যাব প্রমাণ করেছে যে বাংলাদেশ আর কেবল বিদেশি প্রযুক্তির ভোক্তা নয়। আমরা এখন দেশীয় উদ্ভাবন ও সহায়তার মাধ্যমে বিশ্বমানের সমাধান তৈরি করছি। এ অর্জন নিয়ে আমরা আশাবাদী। মনে করি, এ উদ্যোগ দেশের ডিজিটাল পেমেন্টের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশের প্রথম সিপিএস বাস্তবায়নে কোনা, ইসলামী ব্যাংক ও অন্যান্য অংশীদারদের অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, এ অর্জন আমাদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। পাশাপাশি নগদ অর্থবিহীন (ক্যাশলেস) বাংলাদেশ গড়ার পথে শক্তিশালী ভিত্তিস্থাপনে ভূমিকা রেখেছে।
অনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব ডিজিটাল ব্যাংকিং উইং মোশাররফ হোসেন কোনা এসএল-এর সমাধান তাদের অভিজ্ঞতায় কেমন প্রভাব ফেলেছে, সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
এই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় কার্ড উৎপাদন কারখানা ও পারসোনালাইজেশন ব্যুরো স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে কোনা সফটওয়্যার ল্যাব। এর পাশাপাশি তারা নিজস্ব কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ও আন্তর্জাতিকভাবে মানসম্মত টোকেনাইজেশন সেবা চালু করার পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে।
কোনা সফটওয়্যার ল্যাব বিশ্বাস করে, এসব উদ্যোগ বাংলাদেশের পেমেন্ট ইকোসিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করবে, সুরক্ষিত উপায়ে ডিজিটাল কার্ড ইস্যু নিশ্চিত করবে এবং ব্যাংকগুলোকে আধুনিক পেমেন্ট সেবা দেওয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
কোনা সফটওয়্যার ল্যাব বাংলাদেশের নেক্সাসপে, নগদ ও রেইনবোসহ আরও কয়েকটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সম্পূর্ণ প্রযুক্তিগত সমাধান সরবরাহে কাজ করছে।
অর্থনীতি
আগস্টের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৭ হাজার কোটি টাকা

চলতি আগস্ট মাসের ৩০ দিনে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২২২ কোটি ৯০ লাখ (২.২৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)।
রবিবার (৩১ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠানো এ রেমিট্যান্স দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্বস্তি ফিরিয়েছে। হুন্ডি প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ, প্রণোদনা ও ব্যাংকিং ব্যবস্থার উন্নতির ফলেই রেমিট্যান্সে এ ধারাবাহিকতা এসেছে।
সব শেষ জুলাই মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২৪৮ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩০ কোটি টাকা।
সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে রেকর্ড প্রবাহ এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই অংক এক অর্থবছরে দেশে আসা সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। প্রবাসী আয়ের এমন ধারাবাহিক বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ও ডলারের জোগানে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
অর্থনীতি
চড়া সবজির বাজার, বাড়লো আটা-ময়দা ও ডালের দাম

বাজারে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সবজির দাম বেশ চড়া। এরমধ্যে বেড়েছে মুরগি, ডিম ও পেঁয়াজের দাম। নতুন করে ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে মুদি পণ্যের দামে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে মসুর ডাল ও আটা-ময়দার। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভোক্তাপর্যায়ে আলুর দামও বাড়তে পারে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে তিন-চারদিন আগেও প্যাকেটজাত এক কেজি আটা কোম্পানিভেদে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হতো। এখন দাম বেড়ে হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। অন্যদিকে, খোলা আটার দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। একইভাবে কোম্পানিভেদে ময়দার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।
বাজারে ভালো মানের মসুর ডালের দাম ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হলেও এখন দাম উঠেছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। অর্থাৎ, প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা। একইভাবে বড় দানার মসুর ডালের দাম বেড়ে ১২৫-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, চড়া দামে আটকে থাকা সবজির দামে গত সপ্তাহের ব্যবধানে খুব একটা হেরফের নেই। এক কেজি বেগুন এখনো ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। করলা প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০-১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০-৮০ টাকা, কচুর মুখি ৮০-৯০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, চিচিংগা-ঝিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০-২৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
পেঁয়াজ আমদানি বাড়লেও বাজারে দাম তেমন কমেনি। এখনো প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা কেজি দরে।
তালতলা বাজারের বিক্রেতা বুলু মিয়া বলেন, ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও বেশি। এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজের সমান দামে। ফলে আমদানি থাকলেও তা দাম কমার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারছে না।
কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেখানে দেশি পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭২ টাকায়।
এছাড়া উচ্চমূল্যে আটকে রয়েছে ডিম ও মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকার মধ্যে। যেখানে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৩০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহেও একই দামে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে মুরগির প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকা দরে।
চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ার ফলে গত কয়েকমাস ধরে লোকসানে আলু বিক্রি করছিলেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবার আলুর দাম হিমাগার পর্যায়ে ন্যূনতম মূল্য ২২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। তবে এখনো আলুর দাম সেভাবে বাড়েনি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
তারা বলছেন, এতদিন ১২-১৫ টাকা কেজি দরে হিমাগারে আলু বিক্রি হয়ে আসছিল। এখন হিমাগার পর্যায়ে ৭-১০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে যাবে। এর প্রভাব পড়বে খুচরা বাজারে। বর্তমানে খুচরায় যেখানে ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে সেই দামে হয়তো ভোক্তারা আর আলু কিনতে পারবেন না।
গত ২৭ আগস্ট কৃষি মন্ত্রণালয়ের নীতি শাখা থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে আলুর হিমাগার গেটে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। তবে খুচরায় সর্বোচ্চ কত টাকা দরে আলু বিক্রি হবে সেটা ঠিক করে দেয়নি সরকার। ফলে বাজারেই আসলে নির্ধারণ হবে আলুর দাম।
কারওয়ান বাজারের আলুর আড়তদার জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সরকার দাম নির্ধারণের পরও সামান্য একটু বেড়েছে। আমরা এখন সাড়ে ১৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছি। যখন হিমাগার গেটে ২২ টাকায় আলু বিক্রি হবে তখন আমাদের এটা পাইকারি থেকে কিনতে হবে কমপক্ষে ২৪ টাকায়। অন্যসব খরচ মিলিয়ে এটি আমাদের তখন বিক্রি করতে হবে ২৭-২৮ টাকা কেজি দরে। এর প্রভাব খুচরায় পড়বে এবং দাম কিছুটা বেড়ে যাবে, এটাই স্বাভাবিক।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, খুচরায় ৩৫-৪০ টাকা উঠে যেতে পারে আলুর দাম। তবে সরকার যদি সরবরাহ চেইনে ঠিকঠাক মনিটরিং করে তবে খুচরা পর্যায়ে বড় কোনো প্রভাব পড়বে না।
রাজধানীর খুচরা বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আলুর দাম এখনো সেভাবে বাড়েনি। এখনো আগের দাম ২৫-৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।