রাজনীতি
জুলাই সনদের আগে নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের সামিল: এনসিপি

নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপকে ইতিবাচকভাবে দেখছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে জুলাই সনদ চূড়ান্তের আগে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা সরকারের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের সামিল বলে মনে করছে তারুণ্য নির্ভর দলটি।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা জানান দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব।
এ সময় এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, যুগ্ম সদস্য সচিব আরিফ সোহেলসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা ছিল বিচার ও সংস্কার। সেই লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করে, যেখানে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো জাতীয় নাগরিক পার্টিও নিজেদের মতামত তুলে ধরে। এই সংস্কার কার্যক্রম চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ঐকমত্য কমিশন প্রণীত জুলাই সনদের খসড়া কিছুদিন আগে আমাদের কাছে এসে পৌঁছায় এবং এ বিষয়ে আমরা আমাদের মতামত তুলে ধরে তা কমিশনের কাছে জমা দিয়েছি। যদিও, জুলাই সনদের খসড়ায় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো রোডম্যাপ না থাকা আমাদের হতাশ করেছে।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ৬টি উপায় নিয়ে ঐকমত্য কমিশনে মতামত পাওয়া গেছে, যার মধ্যে আমরা গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি। অন্যান্য দলের প্রস্তাবে গণভোট ও সংবিধান সংস্কার সভাসহ বিভিন্ন প্রস্তাব রয়েছে। কোন প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়ন করা হবে, তার সাথে নির্বাচনী প্রস্তুতির সম্পর্ক রয়েছে। এই আলোচনা চলাকালেই প্রধান উপদেষ্টার একপাক্ষিকভাবে নির্বাচনের সময় ঘোষণা আমাদের হতবাক করলেও, বৃহত্তর স্বার্থে আমরা তা মেনে নিয়েছিলাম। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, ২০২৬ সালের পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
আরিফুল ইসলাম আদীব আরও বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, এর নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশের পূর্বেই সরকার সংস্কার বিষয়ক পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জনের রোডম্যাপ প্রকাশ করা হবে। কিন্তু আমরা হতাশার সাথে লক্ষ্য করছি অজানা কারণে ঐকমত্য কমিশনের পরবর্তী দফার বৈঠক পেছানো হয়েছে এবং এখনো জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার উপায় নির্ধারণ হয়নি। জুলাই সনদ চূড়ান্ত না করে এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত না হয়ে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের সামিল।
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, আমরা মনে করি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা থেকে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য নির্বাচন আয়োজন প্রয়োজন, আমরা কোনভাবেই নির্বাচন বিরোধী নই। সেদিক থেকে রোডম্যাপ ঘোষণা ইতিবাচক তবে, যতো দ্রুত জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি হবে, তত দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাওয়া যাবে। সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না করে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ ভবিষ্যতে সংকট তৈরি করতে পারে, যার দায় সরকারকেই নিতে হবে।

রাজনীতি
ইসির রোডম্যাপে খুশি বিএনপি: মির্জা ফখরুল

এয়োদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা হওয়ায় বিএনপি ‘খুশি’ বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার বিকালে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘রোডম্যাপ ঘোষণা হয়েছে। আমরা এতে আশাবাদী হয়েছি। এ রোডম্যাপ থেকে বোঝা যায় যে, নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
রোডম্যাপ ঘোষণাকে জনগণের জন্য সুসংবাদ হিসেবে দেখছেন কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘জি।’’
বৃহস্পতিবার দুপুরে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ।
আগের দিন এ রোডম্যাপে অনুমোদন দেয় এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এতে দুই ডজন কাজের পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে, যার মধ্যে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপের কথাও রয়েছে।
মত বিনিময়, মিটিং, ব্রিফিং, প্রশিক্ষণ, মুদ্রণ, বাজেট বরাদ্দ, আইটিভিত্তিক প্রস্তুতি, প্রচারণা, সমন্বয় সেল, আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক থেকে যাবতীয় কর্মপরিকল্পনা মাথায় রেখেই রোডম্যাপটি করেছে ইসি।
রোডম্যাপের ঘোষণাকে ‘সুসংবাদ’ হিসেবে দেখছেন বিএনপির আরেক নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার বনানীতে এক অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, “রোডম্যাপ আজ এসেছে… এটা সুসংবাদ। আপনাদের সঙ্গে আমি শেয়ার করছি, আমাকে টেক্সট পাঠিয়েছে, আমি দেখলাম, ইলেকশনের রোডম্যাপ।
“মানুষ এখন নির্বাচনমুখী হয়ে যাচ্ছে এবং সবাই অপেক্ষা করছে দেশে একটা নির্বাচন হোক। এর মাধ্যমে দেশে একটা নির্বাচিত সরকার আসবে, সংসদ প্রতিষ্ঠা হবে, যে সরকার বা সংসদ জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে।”
আমির খসরু বলেন, “আমি বলতে চাই, জনগণ তাদের সিদ্ধান্ত, যেগুলো এখন স্থগিত রাখছে, সব সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছে, আমি এরই মধ্যে তা অনুভব করছি।
“নির্বাচনের পরে আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে, গুড স্কিল ডেভেলপমেন্ট হবে ইনশাআল্লাহ।”
কাফি
রাজনীতি
হাসপাতালে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রাতেই তার বাসায় ফেরার কথা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাত পৌনে ৮টার দিকে গুলশানের বাসভবনে ফিরোজা থেকে খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ি হাসপাতালে উদ্দেশে রওনা হয়। পরে রাত সাড়ে ৮টায় তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান।
বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার। তিনি বলেন, ম্যাডামকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বসুন্ধরা এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার গাড়িবহর হাসপাতালে এসে পৌঁছায়।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদের বরাতে বিএনপির এ নেতা জানান, স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে রাতেই ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) বাসায় ফেরার কথা রয়েছে।
এর আগে রাত ৮টায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান ঢাকা পোস্টকে জানান, ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বসুন্ধরা এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার গাড়িবহর হাসপাতালে রওনা হওয়ার আগে তার বাসভবনে ফিরোজা গিয়েছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
পিআর নিয়ে কোন টালবাহানা চলবে না: ড. হেলাল উদ্দিন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্যে করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রয়োজনে লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করা হবে। পিআর নিয়ে কোন টালবাহানা চলবে না।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সমাজকল্যাণ বিভাগের উদ্যোগে মহানগরী কার্যালয়ের হলরুমে মাইয়্যেতের গোসল ও কাফন-দাফন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মহানগরীর সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমেদ খানের সভাপতিত্বে কর্মশালার সঞ্চালনা করেন মহানগরীর মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা হাফিজুর রহমান।
ড. হেলাল বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের আগে জনগণের দাবির মেনে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চতকরণ ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কখনো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসেনি। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, কর্মসংস্থান, খাদ্য, বস্ত্রসহ মানুষের যেকোন প্রয়োজনে সবার আগে, সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছে; আগামীতেও দাঁড়াবে। জনগণ যদি আগামীতে জামায়াতে ইসলামীকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দেয় তবে জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
এসময় ঢাকা-৭ এবং ঢাকা-১০ আসনের ১১৫জন স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণার্থীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। মহৎ এ কাজের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন তা’মিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ফকীহ মাওলানা মহিউদ্দিন।
কাফি
রাজনীতি
নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল

একটি মহল পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য নিত্যনতুন অপ্রাসঙ্গিক দাবি উত্থাপন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর তিন মাসের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এই সংকট তৈরি হতো না, কারণ সুযোগ পেলেই অগণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতা নিয়ে নেয়।
আলোচনার শুরুতে মির্জা ফখরুল কাজী জাফর আহমদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ষাট ও সত্তরের দশকে তিনি ছিলেন কিংবদন্তিতুল্য ছাত্রনেতা। তার বক্তৃতা শুনে মানুষ বিমোহিত হতো।
কাজী জাফরের রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি যখন স্বৈরাচারী সরকারের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন, আমরা কষ্ট পেয়েছিলাম। কিন্তু অন্তরের অন্তরে তিনি ছিলেন একজন আপাদমস্তক বিপ্লবী, দেশপ্রেমিক এবং গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ।
মির্জা ফখরুল দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আমরা একটি ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণের চেষ্টা করছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু রাজনৈতিক মহল পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করতে নিত্যনতুন দাবি তুলছে।
তিনি বলেন, তারা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির মতো এমন সব বিষয় আনছে, যা এদেশের সাধারণ মানুষ চেনেও না, বোঝেও না। কাকে ভোট দিলো, কে নির্বাচিত হলো, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা চলছে।
গণঅভ্যুত্থানের পরপরই দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি ক্ষমতা পরিবর্তনের সাত-আট দিন পরেই বলেছিলাম, তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিন। কারণ আমরা ভুক্তভোগী। আমরা দেখেছি, যখনই একটি পরিবর্তন আসে, তার সুযোগ অন্যরা নিয়ে নেয়। যত দেরি হয়, অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থানের সুযোগ তত বেড়ে যায়।
মির্জা ফখরুল ২০০৭ সালের এক-এগারোর উদাহরণ টেনে বলেন, তখন দুই বছর দেরি করে নির্বাচন দেওয়ার ফলে ফ্যাসিস্টদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়েছিল, যার ভোগান্তি আমাদের ১৬ বছর পোহাতে হয়েছে।
এ সময় বিএনপির মহাসচিব সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সংকটকালে উঠে দাঁড়াতে জানে। ফিনিক্স পাখির মতো বাংলাদেশ বারবার জেগে ওঠে।
তিনি মওলানা ভাসানী, জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, আসুন, যারা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি এবং দেশকে রক্ষা করি।
কাফি
রাজনীতি
শুধুমাত্র কাগজে নয়, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেই হবে: ড. হেলাল

জুলাই সনদ শুধুমাত্র কাগজে নয়, আইনি ভিত্তিতে রূপ দিয়ে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জামায়াত ইসলামী মতিঝিল উত্তর থানার কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মতিঝিল উত্তর থানা আমীর শামসুল বারির সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মাওলানা রবিউল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, মতিঝিল দক্ষিণ থানা আমীর মাওলানা মোতাসিম বিল্লাহ।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে, সেই সময়ে নির্বাচন হতে পারে এতে কোন সমস্যা নাই। তবে অবশ্যই সেই সময়ের আগে জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চতকরণ, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং বাস্তবায়ন, গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। জুলাই সনদ শুধুমাত্র কাগজে নয়, আইনি ভিত্তিতে রূপ দিয়ে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা ১৯৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন পরবর্তী রাষ্ট্র কাঠামোর জাতীয় রূপ রেখার মতোই জুলাই সনদও শুধু এক টুকরো কাগজ হিসেবেই পড়ে থাকবে।
তিনি বলেন, গত বছরের ৩ আগস্ট ছিল বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে এক কালো অধ্যায়। এদিন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র লীগ ও আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় বাহিনী গণহত্যা চালিয়ে রাজপথ রক্তে রজ্জিত করে। রাজধানীর অলিতে-গলিতে লাশের সারি, রক্তের গন্ধ, বুলেটের আওয়াজ, অস্ত্রের মহড়া। এতোকিছুর পরও ছাত্র-জনতা রাজপথ ছাড়েনি। জীবনের মায়া বিসর্জন দিয়ে দেশপ্রেম ধারণ করে দেশ থেকে আধিপাত্যবাদের দোসর ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছে।
ছাত্র-জনতার ৩৬ দিনের আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাষ্ট্রের সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। বিপ্লবী সরকার থেকে বিপ্লবের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায় করতেও দীর্ঘ এক বছর লেগে গেছে। কারণ সরকারের ভিতরে ফ্যাসিবাদের দোসর স্তরে স্তরে বসে আছে। সরকারের কাছে জনতার দাবি জুলাই সনদ অবশ্যই আইনি ভিত্তিতে রূপ দিতে হবে এবং বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। স্বদিচ্ছা, আন্তরিকতা, নৈতিকতা, দেশপ্রেম ও দায়িত্ব বোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে এসব দাবি ১ মাসের মধ্যেই নিশ্চিত করা যায়। তাই সরকারকে জুলাই চেতনা ধারণ করে দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে তিনি আহ্বান জানান।
এসময় জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মসূচি তুলে ধরে ড. হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী কখনো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসেনি। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, কর্মসংস্থান, খাদ্য, বস্ত্রসহ মানুষের যেকোন প্রয়োজনে সবার আগে, সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছে; আগামীতেও দাঁড়াবে। জনগণ যদি আগামীতে জামায়াতে ইসলামীকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দেয় তবে জনগণের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা হবে।