আন্তর্জাতিক
আমাকেও বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে: অমর্ত্য সেন

প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক অমর্ত্য সেন ভারতে ক্রমবর্ধমান ভাষাগত অসহিষ্ণুতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) কলকাতায় ‘ভারতের তরুণ সমাজ: তাদের কী ধরনের সামাজিক সুযোগ থাকা উচিত’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় তিনি বিশেষ করে বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী মানুষের প্রতি বিরূপ আচরণ নিয়ে মন্তব্য তুলে ধরেন। এ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশিত একটি ঘটনার উল্লেখ করে অমর্ত্য সেন বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বাংলাভাষী কিছু ব্যক্তিকে সন্দেহের ভিত্তিতে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি রসিকতা করে বলেন, তার নিজেরও ঢাকায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ তার পৈতৃক ভিটা সেখানেই।
৯১ বছর বয়সী এই নোবেল বিজয়ী বলেন, আমি সংবাদপত্রে দেখলাম যে এক ব্যক্তিকে বাংলায় কথা বলার কারণে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এটি আমাকে কিছুটা চিন্তিত করেছে। স্বভাবসুলভ রসবোধে তিনি আরও বলেন, আমি ঠিক করেছিলাম ফরাসি ভাষায় কথা বলব, কিন্তু সমস্যা হলো, আমি ফরাসি জানি না।
তিনি আরও বলেন, আমাকেও বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে, কারণ আমার পৈতৃক বাড়ি ঢাকায়। আর তাতে আমার খুব একটা আপত্তি নেই।
পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে জন্মগ্রহণকারী এই অর্থনীতিবিদ এ সময় একদল স্নাতক ও উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।
বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের হয়রানি নিয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে অমর্ত্য সেন বলেন, বাংলার মানুষ বা বাংলাভাষী মানুষ পেশাগত বাধা ও অসম্মানের শিকার হচ্ছেন।
তিনি ভারতীয় সভ্যতার বৈচিত্র্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, বাংলা, পাঞ্জাবিসহ প্রতিটি সাংস্কৃতিক পরিচয়ের নিজস্ব গুরুত্ব ও ঐতিহ্য রয়েছে, যা উদ্যাপন করা উচিত। তিনি বলেন, আমি বলছি না যে বাঙালি সংস্কৃতি ও সভ্যতা সেরা, তবে আমাদের বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার ইতিহাস তুলে ধরা উচিত। বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি সম্মান থাকতে হবে। যদি না থাকে, তবে প্রতিবাদ করতে হবে।

আন্তর্জাতিক
ইন্টেলের ১০ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করলো যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন সরকার ইন্টেলের ১০ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করেছে। আর একে এক নজিরবিহীন চুক্তি বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক।
মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক এক্স-এ লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এখন ইন্টেলের অংশীদার। ধন্যবাদ ইন্টেলের সিইও লিপ-বু ট্যানকে, যিনি এমন একটি ন্যায্য চুক্তি করেছেন।’
চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে চলতি মাসের শুরুতে ইন্টেলের সিইও লিপ-বু ট্যানের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ও বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন লিপ-বু ট্যান। বৈঠক শেষেই এই চুক্তিতে পৌঁছেছেন তারা।
শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি চাকরি রাখতে এসেছিলেন, কিন্তু শেষমেষ আমাদের জন্য ১০ বিলিয়ন ডলার দিয়ে গেলেন। আমরা ১০ বিলিয়ন ডলার পেয়ে গেলাম।’
এবিষয়ে ট্রাম্প বিস্তারিত না জানালেও ধারণা করা হচ্ছে, ‘চিপস অ্যান্ড সায়েন্স অ্যাক্ট’-এর অধীনে মার্কিন কারখানা নির্মাণের জন্য ইন্টেল যে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার সরকারি অনুদান পাচ্ছে, তার সমপরিমাণ শেয়ার সরকার গ্রহণ করেছে।
এটি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মার্কিন কোম্পানিগুলোর একাধিক অস্বাভাবিক চুক্তির অংশ। উদাহরণস্বরূপ, এআই চিপ জায়ান্ট এনভিডিয়াকে চীনে তাদের এইচ২০ চিপ বিক্রির অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এর বিনিময়ে মার্কিন সরকার সেই বিক্রয়ের ১৫ শতাংশ অংশীদারত্ব পায়। চিপ নির্মাতা এএমডিও অনুরূপ চুক্তি করেছে।
করপোরেট বিষয়ে সরকারের এই ব্যাপক হস্তক্ষেপ সমালোচকদের উদ্বিগ্ন করছে। তারা বলছেন, ট্রাম্পের পদক্ষেপ করপোরেট ঝুঁকির নতুন মাত্রা তৈরি করছে।
আন্তর্জাতিক
ইতালিতে অনিয়মিত অভিবাসীর শীর্ষে বাংলাদেশ

গত বছরের তুলনায় এ বছর ইতালিতে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সমুদ্রপথে ইতালি পৌঁছেছেন ৩৮ হাজার ২৬৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশিরা।
সার্ডিনিয়ায় নৌকাডুবি
গত ৯ আগস্ট রাতে ইতালির দক্ষিণ সার্ডিনিয়ায় আটজন অভিবাসীকে নিয়ে ডুবে গেছে একটি নৌকা। সান্ত’আন্তিওকোর কাছের উপকূল থেকে এক অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে একজনকে।
ওই অভিবাসনপ্রত্যাশী জানিয়েছেন, নৌকায় আটজন ছিলেন, সবাইকে নিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
নিখোঁজ অভিবাসীদের খোঁজে সোমবারও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছিল ইতালি। এতে অংশ নিচ্ছে ইতালির ফিন্যান্স গার্ডের টহল নৌকা এবং একটি হেলিকপ্টার, কোস্টগার্ডের কয়েকটি টহল নৌকা। সার্ডিনিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের সান্ত’আন্তিওকো এলাকায় উপকূলেই তারা তল্লাশি করছিলেন।
৯ আগস্ট ফিন্যান্স গার্ডের একটি বিমান সমুদ্রে এক অভিবাসীর মরদেহ শনাক্ত করার পর অনুসন্ধান শুরু হয়।
গত কয়েক দিনে ৩৪ জন অভিবাসী সমুদ্রপথে সার্ডিনিয়ায় পৌঁছেছেন। ১০ আগস্ট সন্ধ্যায় ৯ জন অভিবাসী সান্ত’আন্তিওকোতে পৌঁছে। ওই দিন আরও ১২ জনকে সান্ত’আন্না আরেসির পৌরসভার পোর্তো পিনোর সমুদ্র সৈকত থেকে উদ্ধার করা হয়। তার আগে আরও ১৩ জন তেউলাদা বন্দরে পৌঁছেছেন।
এই ৩৪ অভিবাসীকে কাগলিয়ারি প্রদেশের মোনাস্তির আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইতালির একেবারে দক্ষিণ প্রান্তের ছোট দ্বীপ লাম্পেদুসাতেও আগমন অব্যাহত রয়েছে। ১০ আগস্ট ৫৮ জন অভিবাসী দ্বীপটিতে পৌঁছেছেন। তাদের মধ্যে দুজন ছিলেন অপ্রাপ্তবয়স্ক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্স এবং ফিন্যান্স গার্ডের টহল নৌকা তাদের উদ্ধার করেছে।
অভিবাসীদের মধ্যে আছেন মিসরীয়, ইরিত্রীয়, সিরিয়ান ও ইরানি নাগরিকরা। ৯ আগস্ট রাত ২টায় তারা লিবিয়ার জুওয়ারা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেন।
তাদের সবাইকে কন্ত্রাদা ইমব্রিয়াকোলা হটস্পটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারণ, ওই দিন রাতে ১৭৩ জন অভিবাসীকে ফেরিতে করে পোর্ট এম্পেদোকলে স্থানান্তর করা হলে ওই আশ্রয়কেন্দ্রটি খালি হয়ে যায়।
ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধারের পর ১৪৬ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইতালির সাভোনায় পৌঁছে দিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ইমার্জেন্সির অভিবাসী উদ্ধারকারী জাহাজ লাইফ সাপোর্ট।
১০ আগস্ট সন্ধ্যায় লিগুরিয়া অঞ্চলের সাভোনা বন্দরে পৌঁছায় জাহাজটি। ৬ ও ৭ আগস্ট ভূমধ্যসাগরে তিনটি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে লাইফ সাপোর্ট।
প্রথম উদ্ধার অভিযানে একটি ছোটো নৌকায় গাদাগাদি অবস্থায় থাকা ৩১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়। লাইফ সাপোর্ট জানিয়েছে, তাদের মধ্যে একজন সন্তানসম্ভবা নারী এবং ১১ জন সঙ্গীবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন।
দ্বিতীয় নৌকাটিতেও তার আকারের তুলনায় বেশি যাত্রী ছিলেন। নৌকাটিতে ৪৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী থাকলেও তাদের কারও শরীরে কোনো লাইফ জ্যাকেট ছিল না। তাদের মধ্যে তিনজন ছিলেন অপ্রাপ্তবয়স্ক।
তৃতীয় অভিযানটি অপেক্ষাকৃত চ্যালেঞ্জিং ছিল বলে জানিয়েছে ইমার্জেন্সি কর্তৃপক্ষ৷ ফাইবারগ্লাসের তৈরি একটি নৌকায় ছিলেন ৬৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী৷ লাইফসাপোর্ট জাহাজটিকে দেখা মাত্র সর্বোচ্চ গতিতে খুবই বিপজ্জনকভাবে নৌকাটি জাহাজের দিতে এগোতে থাকে৷ লাইফসাপোর্টের কাছাকাছি আসতেই নৌকার চালকেরা অভিবাসীপ্রত্যাশীদের উদ্ধারকারী জাহাজে লাফিয়ে পড়তে বলেন৷ এসময় কিছু অভিবাসী পানিতে পড়ে যান৷ তাদের কারো শরীরে কোনো লাইফজ্যাকেট ছিল না৷
এই অভিবাসীদের মধ্যে শারীরিকভাবে গুরুতর অবস্থায় থাকা একজনকে কোস্টগার্ডের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে৷
এই তিন অভিযানে উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি ছিলেন সুদানের নাগরিকেরা৷ এরপরেই রয়েছেন আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, বুরকিনা ফাসো, ক্যামেরুন, আইভরি কোস্ট, ইরিত্রিয়া, গাম্বিয়া, ঘানা, গিনি, মালি, নাইজেরিয়া, সেনেগাল ও সোমালিয়ার নাগরিকরা।
শীর্ষে বাংলাদেশিরা
সরকারের নেওয়া কঠোর পদক্ষেপের কারণে ২০২৪ থেকে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কমেছে ইতালিতে।
ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ইতালিতে সমুদ্রপথে আসা অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার ৬৪৪ জন। কিন্তু এ বছর তা কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৩৮ হাজার ২৬৩ জন।
তবে ২০২৩ সালে একই সময়ে রেকর্ড ৯৯ হাজার ৫২২ জন অভিবাসী এসেছিলেন।
চলতি বছর আসা অভিবাসীদের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশিরা৷ ১২ হাজার ৮৬ জন বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছেছেন৷ এরপরেই আছে ইরিত্রিয়া৷ দেশটির ৫ হাজার ২১৫ জন নাগরিক পৌঁছেছেন ইটালিতে৷ আর এরপরে আছে মিশর, পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, সুদান ও সোমালিয়ার নাম।
আন্তর্জাতিক
দক্ষিণ আমেরিকায় ভয়াবহ ভূমিকম্প

দক্ষিণ আমেরিকা ও অ্যান্টার্কটিকার মাঝামাঝি ড্রেক প্রণালীতে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। তবে এ ঘটনায় কোনো সুনামি সতর্কতা নেই বলে জানিয়েছে প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টার।
শুক্রবার (২১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা প্রথমে ৮ ধরা হলেও পরে তা সংশোধন করে ৭.৫ করা হয়। ভূমিকম্পটির উৎসস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ১১ কিলোমিটার গভীরে।
ইউএসজিএস আরও জানায়, ভূমিকম্পের কেন্দ্র আর্জেন্টিনার উশুয়া শহর থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। শহরটিতে প্রায় ৫৭ হাজার মানুষের বসবাস।
চিলির নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক ও ওশানোগ্রাফিক সার্ভিস এক বুলেটিনে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর তাদের অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলের জন্য সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। কেন্দ্রটি ছিল ওই অঞ্চলের ফ্রেই বেস থেকে প্রায় ২৫৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।
আন্তর্জাতিক
জাপানে চালের দাম বেড়েছে ৯১ শতাংশ

চলতি বছরের জুলাই মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় জাপানে চালের দাম প্রায় ৯১ শতাংশ বেড়েছে। শুক্রবার (২২ আগস্ট) প্রকাশিত সরকারি তথ্য থেকে এ তথ্য জানা গেছে। তবে আগের মাসগুলোর তুলনায় এই বৃদ্ধির হার কিছুটা কম, যা প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার জন্য স্বস্তির কিছু ইঙ্গিত দিতে পারে।
তবে ইশিবার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। চলতি বছর হওয়া নির্বাচনে তার জোট উভয় কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। মূলত মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে জন-অসন্তোষের কারণে বহু ভোটার তার দীর্ঘদিনের দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
চালের দাম হঠাৎ করে বাড়ার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে ২০২৩ সালের অতি গরম গ্রীষ্মকাল, সরবরাহ সমস্যাসহ একটি মেগা ভূমিকম্পের সতর্কতা ঘিরে তৈরি হওয়া ভোক্তা আতঙ্ক ও অতিরিক্ত মজুত করার প্রবণতা।
জাপানের মূল মুদ্রাস্ফীতির হার জুলাইয়ে নেমে এসেছে ৩.১ শতাংশে, যা জুনে ছিল ৩.৩ শতাংশ। যদিও কিছুটা কমেছে, তবে এটি এখনো জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার ওপরে রয়ে গেছে।
তাজা খাবার বাদ দিয়ে মূল্যবৃদ্ধির এই হার বাজারের প্রত্যাশিত ৩.০ শতাংশের চেয়েও একটু বেশি। জ্বালানিও বাদ দিলে ভোক্তা মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়ায় ৩.৪ শতাংশ, যা জুনের মতোই।
জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানুয়ারিতে শেষবার সুদের হার বাড়িয়েছিল, কিন্তু এরপর থেকে আর নতুনভাবে কড়াকড়ি আরোপ করেনি, কারণ তারা মনে করে বর্তমান মূল্যবৃদ্ধি অস্থায়ী, যেমন চালের দাম বৃদ্ধির মতো বিষয় দ্বারা প্রভাবিত।
ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের বিশ্লেষক অভিজিৎ সূর্য বলেন, যদিও আগামী কয়েক মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা শীতল হতে পারে, তবে তা ব্যাংক অব জাপানের অক্টোবরে আবার সুদের হার বাড়ানো থামাবে না।
আন্তর্জাতিক
দুই লাখ পর্যটককে বিনামূল্যে বিমান টিকিট দেবে থাইল্যান্ড

বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে নতুন উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ড। সম্ভাব্য এই পদক্ষেপের আওতায় থাইল্যান্ডে ভ্রমণকারী দুই লাখ আন্তর্জাতিক পর্যটকদের বিনামূল্যে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের টিকিট দেওয়া হবে।
থাই সংবাদমাধ্যম দ্য নেশন থাইল্যান্ডের বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির পর্যটন ও ক্রীড়ামন্ত্রী সরাওয়ং থিয়েনথং এই পরিকল্পনার জন্য ৭০০ মিলিয়ন বাথ বাজেট প্রস্তাব করেছেন, যাতে বিদেশি ভ্রমণকারীরা শুধু বড় শহরেই সীমাবদ্ধ না থেকে দেশের অন্যান্য গন্তব্যও ঘুরে দেখতে পারেন।
দ্য নেশন থাইল্যান্ড জানিয়েছে, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ছয়টি এয়ারলাইন্সের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করা হবে— থাই এয়ারএশিয়া, ব্যাংকক এয়ারওয়েজ, নক এয়ার, থাই এয়ারওয়েজ ইন্টারন্যাশনাল, থাই লায়ন এয়ার ও থাই ভিয়েতজেট। সরকারের পক্ষ থেকে একমুখী টিকিটে ১৭৫০ বাথ ও রিটার্ন টিকিটে ৩৫০০ বাথ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হবে।
বুধবার (২০ আগস্ট) সরাওয়ং জানান, আগামী সপ্তাহে প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় তোলা হবে। অনুমোদন মিললে থাইল্যান্ড ট্যুরিজম অথরিটি (টিএটি) উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করবে ‘বাই ইন্টারন্যাশনাল, ফ্রি থাইল্যান্ড ডোমেস্টিক ফ্লাইটস’ কর্মসূচির আওতায়। এটি চলবে চলতি বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত, আর ভ্রমণ কার্যক্রম হবে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে।
সরাওয়ং আরও বলেন, ‘এই উদ্যোগে অন্তত ২ লাখ বিদেশি পর্যটককে আকৃষ্ট করার লক্ষ্য রয়েছে। তারা সারা দেশের বিভিন্ন গন্তব্য ভ্রমণ করতে পারবেন— বিশেষ করে ইউনেস্কো স্বীকৃত শহর, জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ও প্রধান আকর্ষণীয় স্থানগুলোতে।’
আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীরা যখন এয়ারলাইন্স ওয়েবসাইট, মাল্টি-সিটি অপশন বা অনলাইন ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে থাইল্যান্ডের টিকিট বুক করবেন, তখন তারা বিনামূল্যে দুটি দেশীয় ফ্লাইট টিকিট (অথবা একটি একমুখী টিকিট) এবং ২০ কেজি লাগেজ সুবিধা পাবেন।
পর্যটন মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এ উদ্যোগ থেকে সরাসরি আয় হবে অন্তত ৮.৮১ বিলিয়ন বাথ এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রভাব দাঁড়াবে প্রায় ২১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন বাথ। এটি সরকারের ঘোষিত ২০২৫ সালের ‘অ্যামেজিং থাইল্যান্ড গ্র্যান্ড ট্যুরিজম অ্যান্ড স্পোর্টস ইয়ার’ কর্মসূচির অংশ হিসেবেও কাজ করবে।
মূলত জাপানকে অনুসরণ করে এই উদ্যোগটি নিয়েছে থাইল্যান্ড। জাপানেও দেশীয় ফ্লাইটে প্রণোদনা দিয়ে বড় শহর থেকে পর্যটকদের আঞ্চলিক এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।