অর্থনীতি
দেউলিয়া হচ্ছে ৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

বাংলাদেশের আর্থিক খাতে বড় ধরনের ধাক্কা আসছে। দেশের ৩৫টি নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনের (এনবিএফআই) মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানকে লিকুইডেশনের (দেউলিয়া ঘোষণা করে কার্যক্রম বন্ধ) পথে নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম, যা খাতটির অস্থিরতা ও দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনাকে স্পষ্ট করে তুলছে। আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংক এ প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত মে মাসে খারাপ অবস্থায় থাকা ২০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না জানতে চেয়ে নোটিশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় ৯ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান অবসায়নে সরকারের ৯ হাজার কোটি টাকা লাগবে বলে জানা গেছে।
বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো– পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, আভিভা ফাইন্যান্স, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানি ও প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। গতকাল গভর্নরের সম্মতি নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান অবসায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রেজল্যুশন বিভাগে তথ্য পাঠানো হয়। অবসায়নের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। কর্মরত কর্মচারীদের চাকরিবিধি অনুযায়ী সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে– এফএএস ফাইন্যান্সের মোট ঋণের এক হাজার ৮১৪ কোটি টাকা বা ৯৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ খেলাপি। ক্রমপুঞ্জীভূত লোকসান এক হাজার ৭১৯ কোটি টাকা। ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ৯৮ শতাংশ ঋণ খেলাপি। এ ছাড়া লোকসান এক হাজার ১৭ কোটি টাকা। বিআইএফসির ৯৭ দশমিক ৩০ শতাংশ ঋণখেলাপি এবং লোকসান এক হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের তিন হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা ঋণের ৯৬ শতাংশ খেলপি। ক্রমপুঞ্জীভূত লোকসান চার হাজার ২১৯ কোটি টাকা। পিপলস লিজিংয়ের ৯৫ শতাংশ খেলাপি, লোকসান চার হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। আভিভা ফাইন্যান্সের দুই হাজার ৪৩০ কোটি টাকা বা ৮৩ শতাংশ খেলাপি। লোকসান তিন হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ৯৮৪ কোটি টাকা বা ৭৫ শতাংশ খেলাপি, লোকসান ৯৪১ কোটি টাকা। জিএসপি ফাইন্যান্সের ৫১৫ কোটি টাকা বা ৫৯ শতাংশ খেলাপি, লোকসান ৩৩৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া প্রাইম ফাইন্যান্সের ৫৩৪ কোটি টাকা বা ৭৮ শতাংশ ঋণখেলাপি। ক্রমপুঞ্জীভূত লোকসান ৩৫১ কোটি টাকা।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর পর্যালোচনা প্রতিবেদন তৈরির জন্য গত জানুয়ারিতে একটি কমিটি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই কমিটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়া ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনা, ঋণের প্রকৃত অবস্থা নিরূপণ, তারল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং সম্পদ দায়ের পরিমাণের ভিত্তিতে ২০টি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে। সমস্যাগ্রস্ত অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো– ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স, হজ ফাইন্যান্স কোম্পানি, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এবং সিভিসি ফাইন্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০২৩ সালে প্রণীত ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠান অবসায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই আইনের ৭(১) ধারা অনুযায়ী মোট ৯টি কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে উল্লেখিত (ঘ) আমানতকারীর স্বার্থ পরিপন্থী ব্যবসা পরিচালনা এবং (ঙ) আমানতকারীর দায় পরিশোধে সম্পদের অপর্যাপ্ততায় লাইসেন্স বাতিলের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া (চ) উপধারায় মূলধন সংরক্ষণ করতে না পারলে লাইসেন্স বাতিল করা যাবে। লাইসেন্স বাতিলের আগে ৭(২) ধারা অনুযায়ী ১৫ দিনের সময় দিয়ে নোটিশ দিতে হবে।
জানা গেছে, একীভূত করার আগে আইনগত বাধ্যবাধকতা মেনে গত ২২ মে কেন লাইসেন্স বাতিল করা হবে না জানতে চেয়ে পরিচালনা পর্ষদকে নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নোটিশ পাওয়ার ১৫ দিনের জন্য জবাব দিতে বলা হয়। ওই নোটিশে বলা হয়, ‘আপনাদের প্রতিষ্ঠানের ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরভিত্তিক বিবরণী পর্যালোচনা করে আমানতকারীর দায় পরিশোধে সম্পদের অপর্যাপ্ততা, শ্রেণিকৃত ঋণের উচ্চহার ও ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণে ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হয়েছে। এসব ব্যর্থতার ফলে ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন ২০২৩ এর ৭(১) ধারার (ঘ), (ঙ) ও (চ) উপধারাসমূহ কেন লঙ্ঘিত হয়নি ব্যাখ্যা দিতে হবে। এ ছাড়া ৭(২) ধারা অনুযায়ী কেন লাইসেন্স বাতিল করা হবে না সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলো।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের মোট ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট ঋণ রয়েছে ৭৫ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এসব ঋণের বিপরীতে বন্ধকি সম্পদের মূল্য ৩৬ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। ডিসেম্বর পর্যন্ত সমস্যাগ্রস্ত ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ২১ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা। এসব প্রতিষ্ঠানের মোট ঋণের যা ৮৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। তাদের বন্ধকি সম্পত্তির মূল্য মাত্র ছয় হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ২৬ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানগুলোর পুঞ্জীভূত লোকসান ২৩ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। মূলধন ঘাটতি ১৯ হাজার ২১৮ কোটি টাকা। অন্যদিকে, তুলনামূলক ভালো হিসেবে চিহ্নিত ১৫টি প্রতিষ্ঠানের ৪৯ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি মাত্র তিন হাজার ৬২৭ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ। বন্ধকি সম্পত্তির মূল্য ২৯ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। এ হিসাবে মোট বন্ধকি সম্পত্তির প্রায় ৮১ শতাংশ ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর। গত বছর এসব প্রতিষ্ঠান মুনাফা করেছে এক হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা। তাদের মূলধন উদ্বৃত্ত রয়েছে ছয় হাজার ১৮৯ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ৪৮ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা আমানত এবং অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ১৮ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট আমানতের মধ্যে সমস্যাগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের আমানত ২২ হাজার ১২৭ কোটি টাকা এবং অন্য ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া ধার পাঁচ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খারাপ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যক্তি আমানত রয়েছে পাঁচ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৮৯ কোটি টাকা আমানতের বিপরীতে ঋণ নিয়েছেন গ্রাহক। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের নিট ব্যক্তি আমানত চার হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন বা একীভূতকরণের জন্য প্রাথমিকভাবে এ পরিমাণ তহবিল দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করে।
কাফি

অর্থনীতি
আট ব্যাংক থেকে ১০ কোটি ৪০ লাখ ডলার কিনলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহকে সহায়তা দিতে ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার কিনছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) ৮টি ব্যাংক থেকে মোট ১০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার (১০৪ মিলিয়ন ডলার) কেনা হয়েছে।
এদিন প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৮০ পয়সা। মাল্টিপল প্রাইস নিলাম পদ্ধতির মাধ্যমে এসব ডলার কেনাবেচা সম্পন্ন হয়েছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ পর্যন্ত নিলাম পদ্ধতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ১৯৮১ মিলিয়ন (প্রায় দুই বিলিয়ন) মার্কিন ডলার কিনেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৩ জুলাই থেকে নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনা শুরু করে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই এখন পর্যন্ত এই বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, আজ মাল্টিপল প্রাইস অকশনের মাধ্যমে ৮ ব্যাংক থেকে ১০৪ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ৪০ লাখ ডলার কেনা হয়েছে। এ সময় প্রতি ডলারের দর নির্ধারণ হয় ১২১ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে। এ নিয়ে চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত নিলাম পদ্ধতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ১৯৮ কোটি ১০ লাখ ডলার কিনেছে।
বেসরকারি একটি ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলেন, শক্তিশালী রেমিট্যান্সপ্রবাহ ও রপ্তানি আয়ের কারণে ব্যাংকগুলো দীর্ঘদিনের আমদানি দায়, বিশেষ করে জ্বালানি আমদানির বিল পরিশোধ করতে পেরেছে। এসব দায় শোধ হয়ে যাওয়া এবং আমদানি চাপ কমে আসায় বর্তমানে বাজারে ডলারের সরবরাহ চাহিদার তুলনায় বেশি। ফলে বিনিময় হার ক্রমেই নিচের দিকে নেমে আসছে।
অর্থনীতি
সহজক্যাশের সঙ্গে লেনদেনে সতর্ক থাকার আহ্বান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

সহজক্যাশ লিমিটেডের নামে কোনো মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) চালুর আবেদন গৃহীত হয়নি এবং এমন কোনো অনুমোদন প্রক্রিয়াধীনও নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন করা বা প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সম্প্রতি বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় সহজক্যাশ লিমিটেডের নামে প্রকাশিত একটি চাকরির বিজ্ঞাপন বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এসেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘সহজক্যাশ লিমিটেড বর্তমানে প্রাক-পরিচালন পর্যায়ে রয়েছে এবং এমএফএস চালুর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সহজক্যাশ লিমিটেডের নামে এমএফএস চালুর আবেদন গৃহীত হয়নি এবং এ ধরনের কোনো এমএফএস চালুর অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন নেই।
সহজক্যাশ লিমিটেডের নামে কোনো এমএফএস চালুর আবেদন গ্রহণ করা হয়নি এবং অনুমোদন প্রক্রিয়াধীনও নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে লেনদেন বা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ক্ষেত্রে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে জনস্বার্থে এ সতর্কবার্তা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থনীতি
স্বর্ণের দামে রেকর্ড, ভরি ছাড়ালো ২ লাখ টাকা

দেশের বাজারে ফের সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ তিন হাজার ১৪৯ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৭২৬ টাকা। যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ দাম। আজ প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭৬ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থনীতি
মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮.৩৬ শতাংশ

চলতি সেপ্টেম্বর মাসে দেশের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশে। যা আগের মাস আগস্টে ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। আগের বছরের সেপ্টেম্বরে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে এই চিত্র উঠে এসেছে।
বিবিএসের তথ্য মতে, সেপ্টেম্বর মাসে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে খাদ্য খা3তে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ, যা আগস্টে ছিল ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। সেপ্টেম্বর মাসে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ, আগস্ট মাসে যা ছিল ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। আর গত বছরের সেপ্টেম্বরে খাদ্য খাতে ১০ দশমিক ৪০ ও খাদ্য বহির্ভূত খাতে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল।
খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, পাশাপাশি বাসাভাড়া, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যয়ের বৃদ্ধি সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি বাড়িয়েছে। ডলারের বিনিময় হার ও আমদানি ব্যয়ের চাপও মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
অর্থনীতি
পাঁচ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৫ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা

চলতি (অক্টোবর) মাসের প্রথম পাঁচদিনে ৪২ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) ৫ হাজার ১৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, অক্টোবরে পাঁচদিনে ৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার এসেছে। গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ ছিল ৪২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের জুলাই থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৮০০ কোটি ৮০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছর (জুলাই থেকে ৫ অক্টোর পর্যন্ত) ৬৯৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার এসেছিল। অর্থবছর হিসাবে ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সদ্যবিদায়ী সেপ্টেম্বরে ২ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন (২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা, যা আগের অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, আগস্টে ২৪২ কোটি ১৯ লাখ এবং সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে।
গত অর্থবছর ২০২৪-২৫ মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে, যা ছিল বছরের রেকর্ড। পুরো অর্থবছরে প্রবাসী আয় দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার— আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্সপ্রবাহ ছিল যথাক্রমে: জুলাই ১৯১ দশমিক ৩৭ কোটি ডলার, আগস্ট ২২২ দশমিক ১৩ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০ দশমিক ৪১ কোটি, অক্টোবরে ২৩৯ দশমিক ৫০ কোটি, নভেম্বরে ২২০ কোটি, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি, মার্চে ৩২৯ কোটি, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি, মে মাসে ২৯৭ কোটি এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার।