রাজনীতি
একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল

দেশে একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার বিকালে জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আজকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের কথা বার বার স্মরণ করতে চাই। এজন্য চাই যে, ১৯৭১ সাল আমাকে একটা স্বাধীন দেশ দেওয়া হয়, ভূখণ্ড দেওয়া হয়, আমাকে একটা স্বাধীন সত্ত্বা দেওয়া হয় এবং সেজন্য আজকে আমার অস্তিত্ব আছে, আমি টিকে আছি। আমি স্মরণ করতে চাই চব্বিশের জুলাই-আগস্টের শহীদদের কারণ আমাদের একটা গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছি।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি কয়েকদিন আগে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলাম। ব্যাংককে গিয়ে আমি আমার বন্ধুদের কাছে শুনলাম- ওখানে এখন ব্যাংককে সবচাইতে যেগুলো আপনার অভিজাত এলাকা সেই অভিজাত এলাকাগুলোতে বাড়ি ভাড়ার ধুম পড়ে গেছে। সেই বাড়িগুলো ভাড়া করছেন সমস্ত আওয়ামী লীগের বিতাড়িত নেতারা। তারা একটা যে গাড়ি কিনছেন সেই গাড়িগুলো কোনোটাই আপনার ২ কোটি ৩ কোটি টাকার কমে নয়। এসব টাকা কোথা থেকে গেল? এ দেশের সম্পদকে তারা প্রচার করেছেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এ দুইটা জিনিসই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আজকে একটা প্রচ্ছন্ন প্রচেষ্টা আছে একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার। এটার বিরুদ্ধে কিন্তু আমাদের সমস্ত বাংলাদেশের নাগরিককে তাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। চব্বিশের জুলাই-আগস্ট যেভাবে সত্য ঠিক একইভাবে সত্য কিন্তু একাত্তরের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন কে? শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে একটা নতুন করে কথা উঠছে ষড়যন্ত্র চলছে- আপনার বাংলাদেশে এখানে এক ধরনের উগ্রবাদ মাথা চালা দিয়ে উঠছে। এ উগ্রবাদকে মাথা চালা দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। এ উগ্রবাদকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। তাহলে আমাদের বাংলাদেশের যে আত্মা, যে সোল সেই অস্তিত্ব আমাদের রক্ষা পাবে না। এই কথাটা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আমি কথাটা আজকে এজন্য আরও বেশি করে বলছি- এইখানে আপনাদের সবাইকে বিভক্তি বিভাজনের রাজনীতি কেউ করবেন না। অতীতে যা হয়েছে হয়েছে। এখন বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য, বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য, বাংলাদেশের সামনে নেওয়ার জন্য, বাংলাদেশ আরও আরও উন্নত করবার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সম্মানে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়। বিকাল ৪টা ১৫ মিনিটে লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা উলুধ্বনি এবং ঢাক-ঢোল বাজিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানায় এবং তারেক রহমান হাত নেড়ে এ অভিবাদনের জবাব দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর যারা আমাদের ভুল বুঝিয়ে আমাদের ভোট নিয়ে আমাদের শাসন করেছেন তারা ১৫ বছর আমাদের বন্ধু হিসেবে মনে করেননি। তারা মনে করেছেন প্রজা হিসেবে। আমাদের ওপর অত্যাচার করেছে নির্যাতন করেছে, আমাদের সমস্ত দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলাম। ব্যাংককে গিয়ে আমি আমার বন্ধুদের কাছে শুনলাম- ওখানে এখন ব্যাংককে সবচাইতে যেগুলো আপনার অভিজাত এলাকা সেই অভিজাত এলাকাগুলোতে বাড়ি ভাড়ার ধুম পড়ে গেছে। সেই বাড়িগুলো ভাড়া করছেন সমস্ত আওয়ামী লীগের বিতাড়িত নেতারা। তারা একটা যে গাড়ি কিনছেন সেই গাড়িগুলো কোনোটাই আপনার ২ কোটি ৩ কোটি টাকার কমে নয়। এসব টাকা কোথা থেকে গেল? এ দেশের সম্পদকে তারা প্রচার করেছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা সবাই জানেন এটা নতুন করে বলার কিছু বলতে চাই না। শুধু এইটুকু বলতে চাই যে, আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক যে কাঠামো সে কাঠামো ভেঙে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এদেশের সম্পদকে লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। প্রায় 88 লাখ কোটি টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছে।
তিনি বলেন, আর আমাদের সম্পদ বলতে আর কিছু নেই সব পাচার হয়ে গেছে। আমাকে একজন অর্থনীতিবিদ জিজ্ঞেস করছিলেন- দেখে শুনে তো মনে হচ্ছে এর পরে তোমরাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসবে জনগণ তোমাদের ওপরে আস্থা রাখবে। তো তোমরা দেশ চালাবে কোথা থেকে? কারণ টাকা তো সব পাচার হয়ে গেছে অর্থাৎ আমাদের দেশের অর্থনীতির অবস্থা কী করুণ করেছে সেই জিনিসটাই শুধু আমি আপনাদেরকে বললাম।
অসাম্প্রদায়িক একটি ‘রেইনবো রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠাই বিএনপি তথা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লক্ষ্য উল্লেখ করে ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে’ গঠনে সকলকে ঐক্য হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।

রাজনীতি
দল হিসেবে আ.লীগের বিচারে তদন্ত শুরু, কর্মকর্তা নিয়োগ

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ‘রাজনৈতিক দল’ হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এরই অংশ হিসেবে একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছি। এটি পুরোদমে শুরু হলে বিষয়টি কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে, তা তখনই বলা সম্ভব হবে।
এর আগে, গত বছরের ২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর অভিযোগ জমা দেন এনডিএম-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।
অভিযোগে বলা হয়, আওয়ামী লীগসহ ১৪টি রাজনৈতিক দল গণহত্যার সরাসরি হুকুমদাতা হিসেবে দায়ী।
প্রসঙ্গত, গত ৫ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ‘রাজনৈতিক দল’ হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হওয়ার ইঙ্গিত দেন চিফ প্রসিকিউটর।
রাজনীতি
অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে জবাবদিহিতার রাজনীতি গড়তে চাই: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ভবিষ্যতের বিএনপি হবে গণতন্ত্রের শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়ানো একটি জবাবদিহিতামূলক রাজনৈতিক দল।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিবিসি বাংলায় সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য—জনগণ, দেশ ও দেশের সার্বভৌমত্ব। অতীতের ভালো কাজগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বুনিয়াদ গড়তে চাই।
তারেক রহমান আরও বলেন, আমরা গর্ব করি যে, বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প ও প্রবাসীদের প্রেরিত বৈদেশিক মুদ্রা—এই দুটো ক্ষেত্রই বিএনপির শাসনামলেই শুরু হয়েছিল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম। এমনকি সেই সময় বাংলাদেশ বিদেশে খাদ্য রপ্তানিও করেছিল।
তিনি বলেন, যখন দেশে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সব দল নিষিদ্ধ ছিল, তখন বিএনপির হাত ধরেই বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরেছিল। সেই ইতিহাস আমাদের অনুপ্রেরণা।
রাজনীতিতে জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, অভিযোগ থাকতেই পারে। অভিযোগকে আমরা বিবেচনায় রাখব। তবে সুযোগ পেলে প্রমাণ করব, জবাবদিহিতা কেমন হওয়া উচিত। এটা একদিনে সম্ভব নয়, ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশ গঠনের কাজে শুধু রাজনীতিক নয়, নাগরিকরাও অংশীদার। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে।
প্রবাসজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৭ বছর আমি বিদেশে আছি। পরিবারের সহযোগিতা ছাড়া এই দূরত্ব থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব হতো না। আমার স্ত্রী ও সন্তানকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ তাদের সহায়তা না থাকলে এই কঠিন কাজ আরও কঠিন হতো।
তারেক রহমান আরও বলেন, নানা বাধা-বিপত্তি, দমন-পীড়নের মধ্যেও যারা দলকে সুসংগঠিত রেখেছেন, রাজপথে সক্রিয় থেকেছেন, জনগণের দাবির পক্ষে সোচ্চার ছিলেন—আমি তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞ। যুক্তরাজ্যে থেকে ভালো যা কিছু দেখেছি বা শিখেছি, সুযোগ পেলে সেই অভিজ্ঞতা দেশের মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাতে চাই।
রাজনীতি
সময় চলে এসেছে, দ্রুতই দেশে ফিরে আসবো: তারেক রহমান

দীর্ঘ দুই দশক পর গণমাধ্যমে মুখোমুখি হয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সাক্ষাৎকারে তিনি দেশে ফেরাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বির ও বিবিসি বাংলার সিনিয়র সাংবাদিক কাদির কল্লোলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান দ্রতই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন।
কেন আপনি এখনো দেশে ফেরেননি- সাক্ষাৎকারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছু সংগত কারণে হয়ত ফেরাটা হয়ে উঠেনি এখনো। তবে সময় তো চলে এসেছে মনে হয়। ইনশআল্লাহ দ্রুতই ফিরে আসব।’
সেটা কবে জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দ্রুতই মনে হয়। দ্রুতই ইনশাআল্লাহ।’
নির্বাচনের আগে আপনি দেশে আসবেন এমন সম্ভাবনা বলা যায়? জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘রাজনীতি যখন করি, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে স্বাভাবিক, নির্বাচনের সাথে রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক কর্মীর একটি ওতপ্রোত সম্পর্ক। কাজেই যেখানে একটি প্রত্যাশিত, জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনের সময় কেমন করে দূরে থাকব? আমি তো আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, ইচ্ছা থাকবে, আগ্রহ থাকবে সেই প্রত্যাশিত যে প্রত্যাশিত নির্বাচন জনগণ চাইছে। সেই প্রত্যাশিত নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে জনগণের সাথে জনগণের মাঝেই থাকব ইনশাআল্লাহ।’
দেশে আসার বিষয়ে নিরাপত্তার শঙ্কার কথা বলছেন কেউ কেউ। আপনি কি কোনো ধরনের শঙ্কা বোধ করেছেন এর মধ্যে– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রকম শঙ্কার কথা তো আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে তো শুনেছি। সরকারেরও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকেও তো অনেক সময় অনেক শঙ্কার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে, বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছে।’
সাক্ষাৎকারের শুরুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘সময় তো স্বাভাবিকভাবে ব্যস্তই যাচ্ছে। ফিজিক্যালি হয়ত আমি এই দেশে আছি, বাট মন-মানসিকতা সবকিছু মিলিয়ে তো আমি গত ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশেই রয়ে গিয়েছি।’
গণমাধ্যমের সঙ্গে দীর্ঘদিন কথা না বলার বিষয়ে জানতে চাইলে তারেক রহমান বলেন, ‘ব্যাপারটা বোধ হয় এরকম না, ব্যাপারটা বোধ হয় একটু ভিন্ন। আসলে আমি কথা ঠিকই বলেছি। আমি দীর্ঘ ১৭ বছর এখানে আছি এই দেশে, প্রবাস জীবনে, তবে আমার উপরে যখন দলের দায়িত্ব এসে পড়েছে তারপর থেকে আমি গ্রামে-গঞ্জে আমার নেতাকর্মীসহ তাদের সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষ যখন যেভাবে অংশগ্রহণ করেছে, আমি সকলের সাথে কথা বলেছি।’
‘আপনারা নিশ্চয়ই জানেন বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় কোর্ট থেকে রীতিমতো একটা আদেশ দিয়ে আমার কথা বলার অধিকারকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমি যদি গণমাধ্যমে কিছু বলতে চাইতাম, হয়ত গণমাধ্যমের ইচ্ছা ছিল ছাপানোর, গণমাধ্যম সেটি ছাপাতে পারত না।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি একবার প্রেস ক্লাবে কথা বলেছিলাম। পরের দিন দেখলাম যে তখনকার প্রেস ক্লাবের যারা সদস্য ছিলেন বা কমিটি ছিল, তারা একটি মিটিং ডেকে একটি সভা করে সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা তখন আমাকে আইনের দৃষ্টিতে ফেরারি বলা হয়েছিল যে, সেরকম কোনো ব্যক্তিকে তারা প্রেস ক্লাবে কথা বলতে দেবে না। এভাবে তারা চেষ্টা করেছিল আমার কথা বন্ধ করে রাখতে।’
তিনি বলেন, ‘আমি কথা বলেছি, সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন পন্থায় আমি পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি, আমি ইনশাআল্লাহ পৌঁছেছি মানুষের কাছে। কাজেই গণমাধ্যমে যে কথা বলিনি তা না। আমি কথা বলেছি হয়ত আপনারা তখন কথা নিতে পারেননি অথবা শুনতে পারেননি। ইচ্ছা থাকলেও ছাপাতে পারেননি, হয়ত প্রচার করতে পারেননি। কিন্তু আমি বলেছি, আমি থেমে থাকিনি।’
রাজনীতি
মুলা-বেগুন মার্কা নির্বাচন কমিশনের রুচিবোধ প্রকাশ করে: সারজিস

মুলা ও বেগুন মার্কা নির্বাচন কমিশনের রুচিবোধ প্রকাশ করে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
রোববার (৫ অক্টোবর) বিকেলে পঞ্চগড় শের-ই-বাংলা পার্কে বিভিন্ন এলাকার মসজিদ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সারজিস আলম বলেন, যে ধরনের মার্কা মানুষের হাসির খোরাক জোগায়, তা নির্বাচন কমিশনের প্রতীকের তালিকায় থাকাটা তাদের রুচিবোধের প্রকাশ করে। এই জায়গাটা তাদের ঠিক করা উচিত। আমরা আশা করছি তারা এটা সংশোধন করবে।
তিনি আরও বলেন, আইনগত কোনো বাধা না থাকায় আমরা শাপলা ভিন্ন অন্যকিছু ভাবছি না। আমরা সর্বশেষ তাদের সাদা শাপলা বা লাল শাপলার অপশন দিয়েছিলাম। যদি একান্তই শাপলার সঙ্গে যদি কিছু অ্যাড করতে হয় তাহলেও আমাদের দ্বিমত থাকবে না।
জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের এই মুখ্য সংগঠক বলেন, আমরা দেখছি নির্বাচন কমিশন স্বেচ্ছাচারিতা করছে। তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করার চেষ্টা করছে। তারা কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমন আচরণ করছে। এটা আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। এর জন্য যদি আমাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হয় আমরা তা করব।
তিনি বলেন, আগামীর নির্বাচনে শাপলা নিয়েই আমরা নির্বাচন করব।
রাজনীতি
অর্থবহ নির্বাচন চাইলে ৫ দফা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই: ড. হেলাল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা–৮ আসনে দলটির মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনকে অর্থবহ করতে জামায়াতে ইসলামীর প্রস্তাবিত ৫ দফা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, এই দাবিগুলো শুধু জামায়াতের নয়, একটি দল ছাড়া দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলই এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
রবিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর কাকরাইলে ভয়েস অব সিভিল রাইটস ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও ফ্যাসিবাদমুক্ত রাষ্ট্র গঠনে মানবাধিকার, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনে জাতীয় ঐকমত্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা, সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি প্রবর্তন, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিচার, এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা—এই ৫ দফাই আজ জাতির দাবি। এই দাবিগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশ একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের অনেকেই জন্মের পর থেকে একটিবারও ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। জুলাই বিপ্লব সেই অধিকার পুনরুদ্ধারের সুযোগ তৈরি করেছে। সরকার যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারে, তবে জনগণ ইসলামের পক্ষে আরেকটি বিপ্লব ঘটাবে।
ড. হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, বিচার ও সংস্কার ছাড়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনের আগে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিচারের আওতায় না আনলে তারা কালো টাকার প্রভাবে নির্বাচনকে বিতর্কিত করবে। তিনি অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি। জনগণ সুযোগ পেলে ভোটের মাধ্যমে এই চাঁদাবাজদের প্রত্যাখ্যান করবে।
তিনি বলেন, জাতি চায় জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে একটি বৈষম্যহীন, সুখী ও সমৃদ্ধ কল্যাণরাষ্ট্র গড়ে উঠুক। জামায়াত দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ভয়েস অব সিভিল রাইটস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. মারুফ শাহারিয়ার এবং সঞ্চালনা করেন নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রহমান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সোসাইটি ফর ন্যাশনাল চ্যারিটির নির্বাহী পরিচালক শাহীন আহমেদ খান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মারুফুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।