জাতীয়
ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়ল

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়িয়েছে সরকার। এ কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে সোমবার (১১ আগস্ট) রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এর আগে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজকে এই কমিশনের সহ-সভাপতি করা হয়।
প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিশনকে ছয় মাস সময় দেওয়া হয়। সেই সময় শেষ হওয়ার তারিখ ছিল আগামী ১৫ আগস্ট। তার আগেই আরও এক মাস সময় বাড়াল সরকার।
ঐকমত্য কমিশনের সদস্য হিসেবে রয়েছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফররাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।

জাতীয়
৭ দিন পর বন্ধ করা হলো কাপ্তাই বাঁধের ১৬ জলকপাট

হ্রদের পানি নিয়ন্ত্রণে আসায় সাত দিন খোলা থাকার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল পৌনে ৯টায় কাপ্তাই বাঁধের জলকপাটগুলো বন্ধ করা হয়।
কাপ্তাই পানি বিদুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহামুদ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, জলকপাট বন্ধ করা হলেও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট চালু রেখে ২২০ থেকে ২২১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার কিউসেক পানি নদীতে অপসারিত হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ১০৭ দশমিক ০৫ এমএসএল (মিনস সি লেভেল)। হ্রদের সর্বোচ্চ পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল।
এ বিষয়ে কাপ্তাই পানি বিদুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহামুদ হাসান বলেন, বর্তমানে বৃষ্টিপাত কমে আসায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা কমছে, তাই জলকপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবার জলকপাট খোলা হবে কি না, সেটি কাপ্তাই বাঁধের পানি বৃদ্ধির ওপর নির্ভর করছে।
এর আগে হ্রদের পানি বিপদসীমায় পৌঁছে যাওয়ায় গত ৫ আগস্ট রাত ১২টার পর বাঁধের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নির্গত হয়। পরবর্তীতে হ্রদে পানির চাপ আরো বৃদ্ধি পাওয়ায় ধাপে ধাপে জলকপাট খোলার পরিমাণ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ৭ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টায় সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ ফুট উচ্চতায় কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছিল। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৬৮ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নির্গত হয়েছে। তবে কাপ্তাই হ্রদে পানির চাপ ধীরে ধীরে কমে আসায় বাঁধের গেইট খোলার পরিমাণ কমানো হয় যা মঙ্গলবার পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে।
কাফি
জাতীয়
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে মালয়েশিরার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীমের সঙ্গে বৈঠক শেষে যৌথ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে। এ সময় বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এখানে অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা আমাদের জন্য বড় সংকট। এ সংকট সমাধানে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সাহায্য চাই।
এর আগে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।
এর আগে সকাল ৯টায় প্রধান উপদেষ্টা কুয়ালালামপুরের পুত্রজায়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা দেওয়া হয়। সেখানে ড. ইউনূসকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
গার্ড অব অনার প্রদান শেষে আনোয়ার ইব্রাহিম তার মন্ত্রিসভার সদস্যদেরকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে ড. ইউনূস প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মালয়েশিয়া পৌঁছেছেন। সোমবার (১১ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে তাকে বহনকারী বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমান কুয়ালালামপুরে অবতরণ করে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি দুপুর ২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
গত ১০ আগস্ট রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার মালয়েশিয়া সফর নিয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, সোমবার (১১ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা সফর। এই সফরে অনেকগুলো সমঝোতা স্বাক্ষর হবে। এই সফরের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর থেকে গভীরতর হবে। সফরের মূল ফোকাস অভিবাসন নিয়ে আলাপ, দ্বিতীয় ফোকাস হচ্ছে বিনিয়োগ।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়া আমাদের জনশক্তি খাতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। আমরা আমাদের অভিবাসন এমন জায়গায় নিয়ে যেতে পারি, যাতে মালয়েশিয়া আমাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক জনশক্তি নেয়। এগুলো নিয়ে কিছু আলাপ হবে এবং এটার আলোকে কিছু চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার বড় বড় যেসব কোম্পানি আছে, তাদের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে কথা হবে।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১২ আগস্ট একটি বিজনেস কনফারেন্স আছে। এরপর ১৩ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টাকে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি কেবাংসান (ইউকেএম) সম্মানসূচক ডিগ্রি দেবে। এই অনুষ্ঠানে আমরা আশা করছি, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীম উপস্থিত থাকবেন। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১২ আগস্ট একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক আছে। সেটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আমরা আশা করছি, মালয়েশিয়ার সঙ্গে আমাদের যে সুসম্পর্ক আছে, সেটা একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক শাহ আসিফ রহমান বলেন, আগামী ১১ থেকে ১৩ আগস্ট মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীমের আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় সফরে মালয়েশিয়া যাবেন প্রধান উপদেষ্টা। তার সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল যাচ্ছেন। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন-পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক বিন হারুন।
তিনি জানান, সফরের প্রথম দিন প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড অব অনারের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হবে, সেখানে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইল প্রধান উপদেষ্টাকে গ্রহণ করবেন। ১২ আগস্ট পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। বৈঠকের পর দুদেশের প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠক ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য যে সমঝোতা স্মারকগুলো সই হবে তা হলো প্রতিরক্ষা বিষয়ক সহযোগিতা; এলএনজি ও পেট্রোলিয়াম সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণসহ জ্বালানি সহযোগিতা; বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ মালয়েশিয়া (আইএসআইএস); বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই) ও চিপ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান মিমোস (এমআইএমওএস) এর সহযোগিতা এবং বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়িক চেম্বার এফবিসিসিআইর সঙ্গে মালয়েশিয়ার ব্যবসায়িক চেম্বারের মধ্যে সমঝোতা।
সম্ভাব্য এক্সচেঞ্জ নোটগুলো হলো হালাল ইকোসিস্টেম, দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি এবং উচ্চ শিক্ষা খাতে সহযোগিতা বিষয়ক নথি সই।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর কোনো দেশের সরকার প্রধান হিসেবে সর্বপ্রথম বাংলাদেশ সফর করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। গত অক্টোবরে প্রায় এক দশক পর মালয়েশিয়ার সরকার প্রধান বাংলাদেশ সফর করেন।
জাতীয়
আজ ঢাকা আসছে ইউরোপীয় প্রতিনিধিদল

তিন দিনের সফরে আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঢাকা আসছেন ইউরোপ ও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক নেতা এবং সুশীল সমাজের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল । এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত করা।
জার্মানভিত্তিক ফ্রিডরিখ নওম্যান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম (এফএনএফ)-এর দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয় এই সফরের আয়োজন করেছে। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন জার্মান পার্লামেন্টের সদস্য সান্দ্রা ওয়েজার ও মার্কুস ফাবার, লিবারেল ইন্টারন্যাশনালের ডয়চে গ্রুপের সভাপতি জুর্গেন মার্টেন্স এবং জার্মানির রাজনীতি, অর্থনীতি ও সুশীল সমাজের আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি।
এফএনএফের দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক পরিচালক কার্স্টেন ক্লেইন জানিয়েছেন, এই সফরের লক্ষ্য হলো জার্মানি ও ইউরোপের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুত বর্ধনশীল অঞ্চলের সম্পর্ক জোরদার করা এবং পারস্পরিক শেখার সুযোগ তৈরি করা।
সফরকালে প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল, নেটজ বাংলাদেশ, গ্যেটে ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, বিমসটেক সচিবালয় এবং বাংলাদেশ-জার্মান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিজিসিসিআই) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া তারা সাভারের একটি তৈরি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করবেন, যেখানে শ্রম অধিকার, শিল্প সরবরাহ ব্যবস্থা এবং দক্ষ শ্রমিক অভিবাসন বিষয়ে ধারণা নেওয়া হবে। সফরের অংশ হিসেবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং নীতি সংস্কার নিয়েও অর্থনৈতিক ও গণমাধ্যম বিশ্লেষকদের সঙ্গে তাদের সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশকে বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি এবং আঞ্চলিক রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তা এবং বিমসটেক-এর মতো আঞ্চলিক সংস্থার স্বাগতিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব অনেক। এই প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা, জলবায়ু পরিবর্তন ও দক্ষ শ্রমিক অভিবাসনের মতো বিষয়ে আলোচনা করার জন্য বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এফএনএফ নিয়মিতভাবে উদার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ ধরনের শিক্ষা সফরের আয়োজন করে থাকে।
জাতীয়
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার মধ্যে পাঁচ সমঝোতা স্মারক ও তিন নোট বিনিময়

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার জন্য ৫টি সমঝোতা স্মারক ও তিনটি নোট বিনিময় করেছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে কুয়ালালামপুরের পুত্রজায়ায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের উপস্থিতিতে এসব চুক্তি ও নোট বিনিময় হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রথম নোটটি উচ্চশিক্ষা খাতে সহযোগিতা নিয়ে, যা বিনিময় করেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি উতামা হাজি মোহাম্মদ বিন হাজি হাসান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। দ্বিতীয় নোটটি কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ বিষয়ে, যা বিনিময় করেন একই দুই কর্মকর্তা।
তৃতীয় নোটটি হালাল ইকোসিস্টেমে সহযোগিতা নিয়ে, যা বিনিময় করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের উপমন্ত্রী সেনেটর ড. জুলকিফলি বিন হাসান ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
পাঁচটি সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে–
১. প্রতিরক্ষা সহযোগিতা : এটিতে স্বাক্ষর করেন মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী দাতো সেরি মোহাম্মদ খালেদ বিন নরদিন ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
২. এলএনজি সরবরাহ, অবকাঠামো, পেট্রোলিয়াম পণ্য ও সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোতে সহযোগিতা : এটিতে স্বাক্ষর করেন মালয়েশিয়ার ভারপ্রাপ্ত অর্থনৈতিক মন্ত্রী দাতুক সেরি আমির হামজা বিন আজিজান ও বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা মো. ফওজুল কবির খান।
৩. কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা : ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মধ্যে সহযোগিতা নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। মালয়েশিয়ার ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (আইসিস) চেয়ারম্যান দাতুক প্রফেসর ড. মোহদ ফাইজ আবদুল্লাহ ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান এ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
৪. প্রযুক্তি সহযোগিতা : মিমোস সার্ভিসেস এসডিএন বিএইচডি ও বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিএমসিসিআই) মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা হয়েছে। মিমোস সার্ভিসেস এসডিএন বিএইচডির (এমএসএসবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ ফৌজি ইয়াহায়া ও বিএমসিসিআই শাব্বির আহমেদ খান এ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
৫. বাণিজ্য ও শিল্প খাতে সহযোগিতা : মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও বাংলাদেশের এফবিসিসিআইর মধ্যে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন এনসিসিআইএমের সভাপতি দাতো সেরি এন গোবালাকৃষ্ণন ও এফবিসিসিআইর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান।
এর আগে সফরের দ্বিতীয় দিনে সকাল ৯টায় প্রধান উপদেষ্টা কুয়ালালামপুরের পুত্রজায়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা দেওয়া হয়। সেখানে ড. ইউনূসকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
গার্ড অব অনার প্রদান শেষে আনোয়ার ইব্রাহিম তার মন্ত্রিসভার সদস্যদেরকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে ড. ইউনূস প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন।
জাতীয়
শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে খুলনায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
সোমবার (১১ আগস্ট) খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বিধান চন্দ্র রায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএম মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, এস এম কামাল হোসেন ও অ্যাডভোকেট পারভেজ আলম খান। এ ছাড়া মামলায় আরও ৩০/৪০ জনকে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২২ এপ্রিল খুলনা মহানগরীর ময়লাপোতা থেকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা এম এম মুজিবুর রহমানকে। তার কাছ থেকে জব্দ করা মোবাইল থেকে জানা যায় হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও জুম অ্যাপসের মাধ্যমে ‘তেরখাদা উপজেলা আওয়ামী লীগ’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’, ‘বিজয় একাত্তর’ ও ‘জয় বাংলা আমার প্রাণ’ গ্রুপের মাধ্যমে সরকার উৎখাতের জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়। কেএমপি থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহর মামলার অনুমতি চাওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ৪ আগস্ট রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমতি পায় কেএমপি। সোমবার এ ঘটনায় সোনাডাঙ্গা থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।