অর্থনীতি
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঋণ পুনর্গঠনে কাজ চলছে: গভর্নর

করোনা মহামারি, অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঋণ পুনর্গঠনে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, এসব কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে।
রোববার (১০ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব নিয়ে কাজ করছে। এ পর্যন্ত ১২০০-এর বেশি আবেদন এসেছে। এর মধ্যে ২৫০টি সমাধান করা হয়েছে, বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন। প্রতিটি আবেদন আলাদাভাবে দেখা হচ্ছে—বাংলাদেশ ব্যাংক, ঋণ প্রদানকারী বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আবেদনকারী-এই তিন পক্ষের সমন্বয়ে সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। কোনো সাধারণীকরণ করা হচ্ছে না, যাতে কেউ সুযোগ নিয়ে টাকা তুলে নিতে না পারে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা, সম্ভাব্য সমাধান ও অতীত রেকর্ড যাচাই করেই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
ড. মনসুর বলেন, খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে তিন মাস করা হয়েছে। প্রথমে ব্যাংক বা উদ্যোক্তারা বিষয়টি মেনে নিতে না পারলেও এখন তারা গ্রহণ করেছে। প্রভিশন সংরক্ষণ না করে কোনো ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে না—প্রথমবারের মতো এই নীতি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ বা ন্যূনতম মূলধন রিকোয়ারমেন্ট (১০ শতাংশ) পূরণ করতে না পারা ব্যাংকগুলো লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৭২-এ মৌলিক পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে গভর্নর বলেন, শক্তিশালী আর্থিক খাতের জন্য শক্ত নেতৃত্ব ও আইনগত ভিত্তি দুটিই জরুরি। দুর্বল নেতৃত্ব দিয়ে শক্ত প্রতিষ্ঠান চালানো যায় না, আর শক্ত নেতৃত্ব দিয়েও কিছু হবে না যদি আইনগত ক্ষমতা না থাকে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও আমলাতান্ত্রিক বাধা দূর করে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়বদ্ধতা ও স্বশাসন বাড়াতে হবে। অতীতে যে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে, তা ভবিষ্যতে ঠেকানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।

অর্থনীতি
১০০ টাকার নতুন নোট বাজারে আসছে মঙ্গলবার

আগামী মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) থেকে দেশে প্রথমবারের মতো গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট প্রচলন করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রবিবার (১০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ (ডিসিপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের সকল মূল্যমানের (১০০০, ৫০০, ২০০, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫ ও ২ টাকা) নতুন নোট মুদ্রণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এরমধ্যে ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের নোট বাজারে প্রচলন দেয়া হয়েছে। বর্তমানে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোট ১২ আগস্ট থেকে প্রথমবারের মতো বাজারে প্রচলন দেয়া হবে।
নোটটি সেদিন প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য অফিস থেকে ইস্যু করা হবে।।‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’- শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ১০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য হলো-
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্বাক্ষরিত ১০০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪০ মিলিমিটার × ৬২ মিলিমিটার। নোটের সম্মুখভাগে বামপাশে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি এবং মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলার ছবি মুদ্রিত থাকবে।
নোটের পেছনভাগে বাংলাদেশের।সুন্দরবনের ছবি মুদ্রিত থাকবে। নোটে জলছাপ হিসেবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখের নিচে উজ্জ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপে ‘100′ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম রয়েছে। নোটটিতে নীল রঙের আধিক্য রয়েছে।
১০০ টাকা মূল্যমান নোটটিতে মোট ১০ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটের সম্মুখভাগে ডানদিকে কোনায় মুদ্রিত মূল্যমান ‘১০০’ রঙ পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি দ্বারা মুদ্রিত; নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রঙ সোনালি থেকে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ৪ মিলিমিটার চওড়া লাল রঙ এবং উজ্জ্বল রূপালি বারের সমন্বয়ে পেঁচানো নিরাপত্তা সুতা রয়েছে।
এছাড়া নোটটি নাড়াচাড়া করলে নিরাপত্তা সুতার রঙ লাল হতে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়, যাতে ‘১০০ টাকা’ খচিত রয়েছে এবং উজ্জ্বল রংধনুর রঙের বারে রূপান্তরিত হয়ে উপর থেকে নীচে চলতে দেখা যাবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য নোটের সম্মুখভাগে ডানে নীচের দিকে ৩টি ছোট বৃত্ত রয়েছে যা হাতের স্পর্শে অসমতল অনুভূত হয়।
নোটটিতে ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত অংশগুলো হাতের স্পর্শে অসমতল অনুভব করা যাবে। ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত অংশগুলোর মধ্যে রয়েছে- নোটের সম্মুখভাগের বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ ছবি, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’, ‘প্রতিশ্রুত বাক্য’, বাংলা ও ইংরেজিতে মূল্যমান নোটের ডানদিকে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত ৬টি লাইন এবং নোটের পেছন ভাগে সুন্দরবনের ছবি, সব মূল্যমান (অংকে ও কথায়), বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম, ‘BANGLADESH BANK’ ইত্যাদি।
নোটের সম্মুখভাগে নিরাপত্তা সুতা সংলগ্ন নকশাগুলো IR absorbent ink দ্বারা মুদ্রিত যা IR detector machine দ্বারা দৃশ্যমান হবে। নোটের সম্মুখভাগে নিরাপত্তা সুতার বামপাশে ও ‘BANGLADESH BANK’ লেখাটির নিচে Microprint হিসেবে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK’ ও ‘100 Taka’ পুনঃপুনঃ মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের পেছন ভাগে বামপাশে নীচে ও ডানপাশে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK’ এবং বামপাশে উপরে ‘100 Taka’ Microprint হিসেবে পুনঃপুনঃ মুদ্রিত রয়েছে যা শুধু ম্যাগনিফাইং গ্লাস দিয়ে দেখা যাবে।
নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে See Through image হিসেবে ‘১০০’ মুদ্রিত রয়েছে যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘১০০’ লেখা দৃশ্যমান হবে। নোটের সম্মুখভাগে নীচের দিকের বর্ডারের মাঝখানে নীল ডিজাইন অংশে গুপ্তভাবে ‘100′ লেখা আছে; যা নোটটি অনুভূমিকভাবে ধরলে দেখা যাবে। নোটের কাগজে লাল, নীল ও সবুজ রংয়ের অসংখ্য fiber রয়েছে যা UV detector machine দ্বারা দৃশ্যমান হয়। নোটটির উভয় পৃষ্ঠে ইউভি কিউরিং ভার্নিশ সংযোজন করা হয়েছে। এর ফলে নোটটি চকচকে অনুভূত হবে, নোটের স্থায়িত্ব বাড়বে।
নতুন ডিজাইনের ১০০ টাকা মূল্যমানের নোটের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে নোট এবং ধাতব মুদ্রাও যথারীতি চালু থাকবে। এছাড়া মুদ্রা সংগ্রাহকদের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে নিয়মিত নোটের পাশাপাশি ১০০ টাকা মূল্যমান নমুনা নোট (যা বিনিময়যোগ্য নয়) মুদ্রণ করা হয়েছে; যা মিরপুরের টাকা জাদুঘর থেকে নির্ধারিত দামে সংগ্রহ করা যাবে।
অর্থনীতি
‘জিরো রিটার্ন’ দিলে পাঁচ বছরের জেল: এনবিআর

‘জিরো রিটার্ন’ (শূন্য রিটার্ন) নামে কোনো রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংস্থাটি জানায়, করদাতার প্রকৃত আয়ের পরিমাণ আইনানুযায়ী করযোগ্য না হলে তাকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না। তবে আয়কর রিটার্নে আয়-ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য না দিলে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধানের কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
রবিবার (১০ আগষ্ট) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: আল আমিন শেখ।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিলবিষয়ক কতিপয় ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত পোস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নজরে এসেছে। এসব পোস্টে রিটার্ন পূরণের সবকয়টি ঘর ‘শূন্য’ হিসেবে পূরণ করে রিটার্ন দাখিল করা যায় মর্মে প্রচার করা হচ্ছে। এসব ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে কোনো কোনো করদাতা তাদের আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের বিষয়ে অসত্য ঘোষণা প্রদান করে আসছেন মর্মে জানা যায়।’
জিরো রিটার্ন প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, আয়কর আইন, ২০২৩ অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই। করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে এর কোনো একটি শূন্য অথবা সবগুলো তথ্য শূন্য হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বে-আইনি এবং ফৌজদারি অপরাধ। আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩১২ ও ৩১৩ অনুসারে করদাতাকে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদানের বিধান রয়েছে।
বিষয়টি আরও পরিষ্কার করে বিবৃতিতে বলা হয়, করদাতার প্রকৃত আয়ের পরিমাণ আইনানুযায়ী করযোগ্য না হলে তাকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না। তবে কর প্রদেয় না হলেও সঠিক তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শন না করে শূন্য আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে শূন্য বা জিরো রিটার্ন দাখিল করার কোনো সুযোগ আয়কর আইনে নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সকল করদাতা দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আয়কর রিটার্নে প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন করে দেশের উন্নয়নে গর্বিত অংশীদার হবেন। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত প্রতারনামূলক জিরো রিটার্নের ফাঁদে পা না দিয়ে নিজেকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে সুরক্ষিত রাখবেন।
প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেন। সেখানে সারা বছরের আয়-ব্যয়ের তথ্য দিতে হয়।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরের ১৭ লাখের মতো করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দেন। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ করদাতা কোনো কর দেননি। তবে রিটার্ন দিয়েছেন।
বর্তমানে এক কোটি ১২ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। তাদের মধ্যে বছরে ৪০ লাখের মতো করদাতা রিটার্ন দেন। চলতি অর্থবছর থেকে সব করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে হবে।
অর্থনীতি
ট্রাম্পের নতুন শুল্কহারেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সুবিধাজনক অবস্থানে বাংলাদেশ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের উপর দেওয়া ট্রাম্পের নতুন শুল্কহারে প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। যদিও নতুন করে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের সঙ্গে বিদ্যমান ১৬.৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক যোগ হবে। এতে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকে কার্যকর শুল্ক হার দাঁড়াবে ৩৬.৫ শতাংশ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত নতুন এই শুল্ক বিশ্বব্যাপী সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোকে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কের বোঝা সামলাতে হচ্ছে, সেখানে ৩৬.৫ শতাংশকে সুবিধাজনক বলেই মনে করছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।
তাদের ভাষ্যমতে. যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের শীর্ষ পাঁচ রপ্তানি পণ্য— ট্রাউজার, নিটেড পোলো শার্ট, ওভেন শার্ট ও ব্লাউজ, সোয়েটার এবং অন্তর্বাস— একত্রে মোট পোশাক রপ্তানির ৮০ শতাংশ। এই সবগুলোতে তুলার ব্যবহার অনেক বেশি। সিনথেটিক পোশাকের চেয়ে সুতির পোশাকের ওপর অনেক কম শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এ দিক থেকেই ভিয়েতনাম ও চীনের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, কোনো রপ্তানি পণ্যে যদি ২০ শতাংশ মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, তবে পণ্যের মূল্যের ওই অংশের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক মওকুফ করা হবে। এর মানে হলো, বাংলাদেশে তৈরি ১০ ডলারের একটি শার্টে যদি ২০ শতাংশ মার্কিন তুলা ব্যবহার করা হয়, তবে পাল্টা শুল্ক শুধু ৮ ডলারের ওপর প্রযোজ্য হবে, পুরো ১০ ডলারের ওপর নয়। কারণ কিছু বাংলাদেশি রপ্তানিকারক তাদের পণ্যে ইতোমধ্যে আমেরিকায় উৎপাদিত তুলা ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যবহার করছেন, যার ফলে তাদের পণ্যে আরও কম শুল্ক প্রযোজ্য হবে।
ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষক বলছেন, বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্ক প্রতিযোগী ভিয়েতনাম, ভারত ও চীনের চেয়ে কম। নতুন শুল্ক বিভিন্ন দেশকে ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রভাবিত করছে এবং বাংলাদেশের জন্য এটি সুবিধাজনক হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৮৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাকের বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৯.৩ শতাংশ, যা এখন উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, মার্কিন পোশাক ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতারা তুলনামূলক কম শুল্কের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নেবে।
এদিকে, বৈশ্বিক পোশাক বাজারে বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিযোগী ভিয়েতনাম বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১৮.৯ শতাংশ হিস্যা নিয়ে আছে এবং তাদের ওপরও ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে তাদের পণ্যের মোট শুল্ক এর চেয়ে অনেক বেশি হবে। ভিয়েতনামের রপ্তানি তালিকায় বেশিরভাগই উচ্চমূল্যের সিনথেটিক পোশাক (যেমন—অ্যাকটিভওয়্যার, স্কিওয়্যার), যেগুলোর ওপর আগে থেকেই গড়ে ৩২ শতাংশ শুল্ক ছিল। এর সঙ্গে নতুন শুল্ক যোগ হওয়ায় তাদের কার্যকর শুল্ক হার ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ ছাড়া, চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক এড়াতে ভিয়েতনামের মাধ্যমে কোনো পোশাক রপ্তানি হলে তার ওপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। ভিয়েতনামের পোশাক খাত যেহেতু চীনের কাঁচামাল, বিনিয়োগ ও সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, তাই এটি তাদের জন্য প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে বলে বলা যায়।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের বাজারে বাংলাদেশের আরেক প্রধান প্রতিযোগী দেশ ভারতের হিস্যা আছে ৫.৯ শতাংশ। তবে ওয়াশিংটন থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে এই দেশটি। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রশাসন দেশটির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। তৈরি পোশাকে যুক্তরাষ্ট্রের গড় শুল্ক মিলিয়ে ভারতের কার্যকর শুল্ক হার এখন ৬৬.৫ শতাংশ দাাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, বিশ্বের বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী দেশ চীনের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে হিস্যা ২০.৮ শতাংশ। দেশটির কার্যকর শুল্ক হার এখন ৫৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র-চীন শুল্ক আলোচনা অমীমাংসিত থাকায় এই হার আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিকারী অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ বলেন, শুল্কের এই হার আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক।
ট্রাম্পের নতুন শুল্কহার বাংলাদেশের জন্য আর্শীবাদ বয়ে আনবে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, আশা করা যায় বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি বাড়বে, কারণ শুল্কের দিক থেকে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমারা সুবিধাজন অবস্থানে আছি। পোশাক ছাড়াও জুতা এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানিও এই শুল্ক সুবিধার কারণে বাড়বে বলে জানান তিনি।
অর্থনীতি
ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু আজ

স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য (ভোজ্যতেল, চিনি ও মশুর ডাল) বিক্রয় কার্যক্রম চলমান রেখেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্য আজ রোববার (১০ আগস্ট) থেকে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে সরকারি সংস্থাটি।
শনিবার (৯ আগস্ট) টিসিবির উপপরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে টিসিবি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ১০ আগস্ট থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ব্যতীত) এবং চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ৬টি, কুমিল্লা মহানগরীতে ৩টি, ঢাকা জেলায় ৮টি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় ৪টি, পটুয়াখালী জেলায় ৫টি ও বাগেরহাট জেলায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ১০ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ব্যতীত) দৈনিক ট্রাক প্রতি ৫০০ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্য (ভোজ্যতেল, চিনি ও মশুর ডাল) বিক্রয়ের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
এতে জানানো হয়, ভোক্তা প্রতি ভোজ্য তেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মশুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। এছাড়া স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারীদের কাছে বিক্রয় মূল্য আগের মতো বহাল থাকবে।
সে অনুযায়ী, একজন স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী ডিলারের কাছ থেকে কার্ড দেখিয়ে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দামে ৫ কেজি চাল, প্রতি লিটার ১০০ টাকা দামে ২ লিটার সয়াবিন তেল, প্রতি কেজি ৬০ টাকা দামে ২ কেজি মশুর ডাল ও ৭০ টাকা দামে ১ কেজি চিনি নিতে পারবেন। এই চারটি প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৪০ টাকা।
কাফি
অর্থনীতি
সারাদেশে টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম শুরু রোববার

টিসিবির স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্যাদি (ভোজ্যতেল, চিনি ও মশুর ডাল) বিক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি ঢাকা মহানগরীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আগামীকাল রোববার থেকে শুরু হবে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম।
শনিবার (৯ আগস্ট) টিসিবির উপপরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১০ আগস্ট হতে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ব্যতীত) ঢাকা মহানগরীতে ৬০টি, চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ছয়টি, কুমিল্লা মহানগরীতে তিনটি এবং ঢাকা জেলায় আটটি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় চারটি, পটুয়াখালী জেলায় পাঁচটি ও বাগেরহাট জেলায় পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে দৈনিক ট্রাক প্রতি ৫০০ জন সাধারণ মানুষের নিকট সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্যাদি (ভোজ্যতেল, চিনি ও মশুর ডাল) বিক্রয়ের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
যেকোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। ভোক্তা প্রতি ভোজ্য তেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মশুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। উল্লেখ্য, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারীর নিকট বিক্রয় মূল্য পূর্বের ন্যায় বহাল থাকবে।
কাফি