অর্থনীতি
অর্থনীতিবিদরা সরকারের ভালো কাজ দেখেন না: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থনীতিবিদরা শুধু সরকারের ভুলগুলোই দেখেন, ভালো কাজ দেখেন না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, অন্তর দিয়ে দেখলে ভুলের পাশাপাশি ভালো কাজও দেখতে পারবেন।
সোমবার (০৪ আগস্ট) রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরে রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আয়কর, মূসক, ও কাস্টমস বিষয়ে নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এনবিআরের ভেতরে সেবার মান বাড়াতে হবে। টেবিলে ভালো করে সাজিয়ে রেখে ভেতরে সারশূন্য হলে ভুক্তভোগীরা খারাপ সম্পর্কে বুঝতে পারবেন। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রেও মনোনিবেশ করতে হবে।
স্বচ্ছতা বাড়াতে তথ্যপ্রবাহে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বাজেটে নেওয়া উদ্যোগগুলো গণমাধ্যমের সঙ্গে শেয়ারের মতো কাজ করছে এনবিআর। অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, ওয়েবসাইটে তথ্য দেওয়ার মতো আরও যেসব কার্যক্রম আছে, সেগুলো চালাতে হবে। এতে যারা সেবা নেবেন, তাদের সুবিধা হবে, আবার যারা সেবা দিচ্ছেন তাদেরও সহজ হবে।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আক্তার মালা বলেন, বাজেটের পর সংবাদ সম্মেলন করে বাজেট সম্পর্কে জানানো হয়। তবে মূসক, আয়কর ও কাস্টমসের মতো অনেক জটিল বিষয় থাকে, যা আমরাও বুঝি না। ফলে অনেক তথ্য আমরা পাঠককে জানাতে পারি না। বাজেটের পর এনবিআর সেমিনারের মাধ্যমে জানানোর ব্যবস্থা করলে বাজেট সম্পর্কে দেশের মানুষকে জানানোর কাজটি সহজ হবে।
শুল্কবিষয়ক প্রবন্ধে প্রথম সচিব রইস উদ্দিন বলেন, আমদানির ক্ষেত্র, ভুল ঘোষণার শাস্তি হিসাবে আগে ২০০ থেকে ৪০০ শতাংশ জরিমানা ছিল, চলতি অর্থবছরের বাজেট তা কমিয়ে শতভাগ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ শতাংশ করা হয়েছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

অর্থনীতি
ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ১ টাকা বাড়ছে, আপত্তি ব্যবসায়ীদের

প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম এক টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে এ সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি মেনুফ্যাকচারারস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সভায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক হয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে।
সভা সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে সয়াবিন ও পাম ওয়েলের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল ব্যবসায়ীরা। তবে এত মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে আপত্তি তুলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি লিটার তেলের দাম ১ টাকা করে বাড়াতে বলেছেন ব্যবসায়ীদের।
তবে এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কিংবা বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি মেনুফ্যাকচারারস অ্যাসোসিয়েশন কিছু জানায়নি। ওই বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার কথা থাকলেও সেটা হয়নি। সিদ্ধান্তহীনভাবে ভোজ্যতেলের ওই বৈঠক শেষ হয়েছে বলে জানানো হয়।
এখন বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরকার নির্ধারিত দাম ১৮৯ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৭৪ ও পাম তেলের দাম ১৫০ টাকা।
সভা সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানিগুলো তেলের দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেটা অনেক বেশি বলে মনে করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতি লিটারে ১০ টাকা বাড়ানো আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ব্যবসায়ীদের এই প্রস্তাব পর্যালোচনা করে এক টাকা বাড়ানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন সাধারণত এই ধরনের পর্যালোচনাগুলো করে থাকে। পর্যালোচনা শেষে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।
ওই সভায় সিটি, মেঘনা, টিকে গ্রুপসহ বাংলাদেশ এডিবল অয়েল এর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন কোম্পানির প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম ১২০০ ডলার ছুঁয়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে ১৮-২০ শতাংশের মতো তেলের দাম বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে পাম ওয়েলেরও। যে কারণে এই দাম সমন্বয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাত্র এক টাকা দাম বাড়াতে বলছে। যদিও ট্যারিফ কমিশনের পর্যবেক্ষণে প্রতি কেজি সয়াবিন তেলের দাম সাড়ে চার টাকা ও পাম তেলের দাম সাত টাকার বাড়ছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এটা মানছি না।’
এর আগে গত ১২ আগস্টের প্রথম ভাগে প্রতি লিটার পাম তেলের দাম ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু সয়াবিন তেলের দাম ১৮৯ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়। এরও আগে গত ১৩ এপ্রিল সয়াবিন তেলের দাম ১৮৯ টাকা এবং পাম তেলের দাম ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ১৫ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে সয়াবিন, সানফ্লাওয়ার, পাম ও ভুট্টার তেল আমদানিতে এক শতাংশ উৎসে কর বসিয়েছে। যা ভোজ্যতেলের দামে প্রভাব ফেলছে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।
অর্থনীতি
২০ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৩ হাজার ২১৬ কোটি টাকা

চলতি মাস সেপ্টেম্বরের প্রথম ২০ দিনে ১৯০ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে দেশে। দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ২৩ হাজার ২১৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, সেপ্টেম্বরের ২০ দিনে ১৯০ কোটি ৩০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত বছরের (২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের ২০ দিন) একই সময়ের চেয়ে ২৮ কোটি ৯০ ডলার বেশি। গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ ছিল ১৬১ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
আর চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের ২০ দিন পর্যন্ত ৬৮০ কোটি ৩০ লাখ ডলার। যা গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এসেছিল ৫৭৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থবছর হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের চেয়ে ১০৫ কোটি ১০ ডলার বেশি এসেছে। যা প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮ দশমিক ৩০ শতাংশ।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে এসেছিল ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। আর সদ্য বিদায়ী আগস্টের পুরো সময়ে এসেছিল ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকার রেমিট্যান্স এসেছে।
এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল, যা ছিল বছরের রেকর্ড পরিমাণ। আর পুরো অর্থবছর (২০২৪-২৫) জুড়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল নিম্নরূপ: জুলাই: ১৯১.৩৭ কোটি ডলার, আগস্ট: ২২২.১৩ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বর: ২৪০.৪১ কোটি ডলার, অক্টোবর: ২৩৯.৫০ কোটি ডলার, নভেম্বর: ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বর: ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারি: ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারি: ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চ: ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিল: ২৭৫ কোটি ডলার, মে: ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুন: ২৮২ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা ও প্রবাসী আয়ের পথ সহজ করায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
অর্থনীতি
সিসিসিআই নির্বাচন: ২৪ পরিচালক পদে ৭১ জনের মনোনয়ন পেশ

শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) নির্বাচনে ২৪টি পরিচালক পদের জন্য মোট ৭১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রোববার ( ২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে তারা এই মনোনয়নপত্র জমা দেন। এই নির্বাচনে দুটি প্যানেলে প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, গত ১১ আগস্ট চিটাগাং চেম্বারের ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মেয়াদের পরিচালকমণ্ডলীর নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় (বাণিজ্য সংগঠন-১) কর্তৃক গঠিত নির্বাচন বোর্ড। ১৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় মোট ছয় হাজার ৭৮০ জন সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে সাধারণ সদস্য চার হাজার একজন, সহযোগী সদস্য দুই হাজার ৭৬৪ জন, টাউন অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য পাচঁজন এবং ট্রেড গ্রুপের ১০ জন সদস্য রয়েছে।
আগামী ১ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচিত পরিচালকদের মধ্যে সাধারণ ক্যাটাগরিতে ১২ জন, সহযোগী ক্যাটাগরিতে ৬ জন, ট্রেড গ্রুপে ৩ জন এবং টাউন অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপে ৩ জন থাকবেন।
সীকম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আমিরুল হক একটি প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আনন্দমুখর পরিবেশে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এটি ব্যবসায়ীদের ভোট, কোনো রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা নয়। আমরা চাই নির্বাচিত যেই আসুক, সবাই একসঙ্গে চট্টগ্রামের ব্যবসা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান নিয়ে কাজ করবে। চট্টগ্রামের প্রতি বিদ্যমান বৈষম্য দূর করতেও আমরা কথা বলবো।
আরেক প্যানেলে প্রধান হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সচেতন ব্যবসায়ী সমাজের আহ্বায়ক এসএম নুরুল হক। তিনি বলেন, গত ২০ বছর ধরে চিটাগাং চেম্বারে সুন্দর নির্বাচন দেখা যায়নি। আমরা চাই ভোটাররা কেন্দ্রে এসে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক এবং যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করুক। নির্বাচনী কার্যক্রমে কোনো বাধা না থাকায় আমরা খুশি।
ফ্রেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবলস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবু রানা বলেন, দীর্ঘদিন পর চিটাগাং চেম্বারে একটি সত্যিকারের নির্বাচন হচ্ছে। আমরা ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাব, তারা যেন কেন্দ্রে এসে সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
অর্থনীতি
ই-ব্যাংকিংয়ে লেনদেন বেড়েছে ৮ হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা

দেশে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের জুন মাসে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও অ্যাপসের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ৪ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। জুলাই মাসে সেই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসে লেনদেন বেড়েছে ৮ হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকরা সশরীরে ব্যাংকে না গিয়ে অনলাইন ব্যাংকিং ও অ্যাপস ব্যবহারকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে কেনাকাটা ও বিল পরিশোধের ক্ষেত্রেও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুনে ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহক ছিল ১ কোটি ১৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫৬৩ জন। জুলাইয়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ১৬ লাখ ৪২ হাজার ৫৯৪ জন। অর্থাৎ মাত্র এক মাসেই নতুন গ্রাহক যোগ হয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৩১ জন। একই সময়ে লেনদেন সংখ্যাও বেড়েছে—জুনে লেনদেন হয়েছিল ১ কোটি ৮৩ লাখ ৫ হাজার ২৪টি, আর জুলাইয়ে তা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৩ লাখ ৬১ হাজার ৭৮২টিতে।
দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের সেলফিন অ্যাপস ও ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মে সর্বাধিক লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের প্রায় অর্ধেক। এর পরেই রয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নেক্সাস পে, সিটি ব্যাংকের সিটি টাচ, ব্র্যাক ব্যাংকের আস্থা, ইস্টার্ণ ব্যাংকের স্কাই ব্যাংকিংসহ আরও কয়েকটি ব্যাংকের অ্যাপস।
অতীতে কেনাকাটা বা বিল পরিশোধের জন্য নগদ টাকা বা ব্যাংকের লাইনের ওপরই নির্ভর করতে হতো। মোবাইল রিচার্জও করতে হতো দোকান থেকে। কিন্তু প্রযুক্তির প্রসারে এখন গ্রাহকেরা ঘরে বসেই বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছেন। বর্তমানে প্রায় ৮০ লাখ গ্রাহক নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও অ্যাপসের মাধ্যমে লেনদেন করছেন। এসব সেবার মাধ্যমে সহজেই টাকা স্থানান্তর, বিল পরিশোধ, রিচার্জ, টিকিট ক্রয়, কার্ড বিল প্রদানসহ নানা কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে।
অর্থনীতি
দুই মাসে এনবিআরের রাজস্ব ঘাটতি ৬ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা

আন্দোলন থেমে যাওয়ার পরও রাজস্ব আদায়ে ভালো করতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই–আগস্ট) শুল্ক–কর আদায়ে ঘাটতি হয়েছে সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা।
আজ রবিবার গত জুলাই–আগস্টের শুল্ক–কর আদায়ের হালনাগাদ চিত্র প্রকাশ করেছে এনবিআর। সেখানে দেখা গেছে, গত জুলাই–আগস্টে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৬১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এ সময়ে আদায় হয়েছে ৫৪ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা এবং ঘাটতি ৬ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা।
গত মে ও জুনে এনবিআরের আন্দোলনের কারণে গত অর্থবছরের বড় আকারের রাজস্ব ঘাটতি হয়। শেষ দুই মাসে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব হয়নি। আন্দোলনের নানা কর্মসূচিতে রাজস্ব আদায় বিঘ্ন হয়। কিন্তু জুলাই–আগস্টেও রাজস্ব আদায়ে গতি আসেনি।
এনবিআরের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, আন্দোলনের পর এনবিআরের কর্মকর্তাদের মধ্যে বরখাস্ত ও বদলি–আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাজস্ব আদায়ে মনোযোগ কম।
এনবিআরের হিসাবে, এ বছরের জুলাই–আগস্টে ভ্যাট থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়। এই খাত থেকে আদায় হয়েছে ২২ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া কাস্টমস খাতে ১৭ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা এবং আয়করে ১৪ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা আদায় হয়।