লাইফস্টাইল
কর্মীদের চাপে রাখলে কি অফিস লাভবান হয়, নাকি ক্ষতিগ্রস্ত?

সময়মতো অফিসে আসা, নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণ এবং নিয়ম মেনে কাজ করা—এসবই একজন আদর্শ কর্মীর বৈশিষ্ট্য। কিন্তু এই ‘আদর্শ’ ধারণার আড়ালে অনেক সময় লুকিয়ে থাকে এক ধরনের অসহনীয় চাপ, যা কর্মজীবনকে করে তোলে বিষাক্ত। অতিরিক্ত চাপের কারণে কর্মীদের মধ্যে দেখা দেয় অবসাদ ও ভুলভ্রান্তি
অফিসে দীর্ঘসময় অতিরিক্ত চাপে থাকতে হলে কর্মীদের মধ্যে দেখা দিতে পারে অবসাদ, ঘুমের সমস্যা, মেজাজের অবনতি এবং মানসিক ক্লান্তি। এইসব সমস্যার কারণে পরদিন কাজে মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। হঠাৎ করে ছোটখাটো ভুল, সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারা, কিংবা সহকর্মীদের সঙ্গে মনোমালিন্য—এসবই তখন ঘন ঘন ঘটতে শুরু করে।
কাজের চাপ যখন পেরিয়ে যায় অফিসের গণ্ডি
একজন কর্মী অফিসের বাইরেও যদি কাজের চাপ বয়ে বেড়ান, তা হলে তার ব্যক্তিজীবন ও সামাজিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ভারসাম্যহীনতা ধীরে ধীরে কাজের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দেয়। এমনকি সৃজনশীলতাও হারিয়ে যায়।
চাপ বেশি মানেই কাজ বেশি? গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় কাজ করেন, তাদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ এবং হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ১৭ শতাংশ বেশি।
মানবদেহ কোনো যন্ত্র নয়
একটানা দীর্ঘ সময় কাজ করলে শরীর ও মস্তিষ্ক—দুটোই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জানাচ্ছে, একটানা ৯০ মিনিট কাজ করলে কাজের মান কমে যায় এবং ভুলের হার বেড়ে যায়।
অতিরিক্ত চাপের কারণে আর্থিক ক্ষতিও কম নয়
মার্কিন গবেষণায় উঠে এসেছে একজন অবসন্ন কর্মীর কারণে কোম্পানিকে বছরে গড়ে ৪ হাজার থেকে ২১ হাজার ডলার পর্যন্ত ক্ষতি হয়, ১ হাজার কর্মীর জন্য বছরে লোকসান: ৫.৩ মিলিয়ন ডলার। অতিরিক্ত চাপে থাকা কর্মীদের মধ্যে ভুল করার হার: ১১ গুণ বেশি। অসুস্থতাজনিত ছুটির হার: ৮ গুণ বেশি। অফিসে থেকেও অকার্যকর হওয়ার হার: ৪ গুণ বেশি
সুস্থ কর্মী, সফল অফিস: করণীয় কী?
প্রতিষ্ঠানের উচিত এমন একটি কর্মপরিবেশ গড়ে তোলা, যেখানে কর্মীরা চাপমুক্তভাবে কাজ করতে পারেন। কাজের পর কর্মীদের যেন সময় থাকে পরিবার, বন্ধু ও নিজের যত্ন নেওয়ার।
সহজ কিছু উদ্যোগ:
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষের লক্ষ্য
অতিরিক্ত ওভারটাইম না করিয়ে কাজের বণ্টন সুষম করা
মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া
কর্মীদের সৃজনশীলতাকে মূল্যায়ন করা
চাপ নয়, যত্নই প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেয়
অতিরিক্ত কাজ বা চাপ যতটা না লাভ দেয়, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি ডেকে আনে। সুস্থ, সুখী, এবং উৎসাহী কর্মীরাই প্রতিষ্ঠানকে সফলতার পথে নিয়ে যেতে পারেন। সুতরাং, কর্মীদের শ্বাস নেওয়ার সুযোগ দিন, চাপ নয়—দিন সহানুভূতি ও সহায়তা।

লাইফস্টাইল
চার ভুলেই বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি

আন্তর্জাতিক গবেষণা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, সকাল ৭টা থেকে ১১টার মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। অথচ ঘুম থেকে উঠে এই সময়টাতেই আমরা ছোট ছোট ভুল করে বসি। সকালে এমন চারটি ভুলের কারণে বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে ক্যালিফোর্নিয়ার কার্ডিওলজিস্ট ডা. সঞ্জয় ভোজরাজের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরে কর্টিসল নামের স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায়, রক্তের প্লেটলেটগুলো আঠালো হয়ে ওঠে এবং রক্তচাপ দ্রুত বাড়ে। ফলে হঠাৎ করেই হার্টের ওপর চাপ তৈরি হয়। এই সময় যদি খালি পেটে চা বা কফি খাওয়া, পানি না খাওয়া, ওষুধ বাদ দেয়া বা সরাসরি ব্যস্ততায় ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো অভ্যাস গড়ে ওঠে, তাহলে ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।
সকালের ৪টি ক্ষতিকর অভ্যাস
খালি পেটে চা বা কফি খাওয়া
পানি না খাওয়া বা নিয়মিত ওষুধ এড়িয়ে যাওয়া
ঘুম থেকে উঠেই কাজ বা ইমেইলে ডুবে যাওয়া
শরীরকে সময় না দিয়ে তাড়াহুড়োয় ব্যস্ত হয়ে পড়া
হৃদয়বান্ধব সকাল কেমন হওয়া উচিত: কার্ডিওলজিস্ট ডা. সঞ্জয়ের মতে, কিছু ছোট পরিবর্তন হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রেখে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে। এসব হলো:
ঘুম ভাঙার পর প্রথমেই পানি পান করা
নির্ধারিত ওষুধ সময়মতো খাওয়া
হালকা ও প্রোটিনসমৃদ্ধ নাশতা গ্রহণ
১০-১৫ মিনিট স্ট্রেচিং, হাঁটা বা যোগব্যায়ামের মতো হালকা ব্যায়াম
দিনের শুরুটা যদি অগোছালো, তাড়াহুড়ো আর ভুল অভ্যাসে ভরা হয় তাহলে তার প্রভাব পড়ে সরাসরি হার্টের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুম ভাঙার পর শরীরকে একটু সময় দেয়া, পর্যাপ্ত পানি খাওয়া, সময়মতো ওষুধ সেবন, হালকা নাশতা ও অল্প ব্যায়াম এসব ছোট পদক্ষেপই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে পারে।
লাইফস্টাইল
নবজাতকের চোখে পুঁজ হলে করণীয়

নবজাতকের চোখ থেকে নানা কারণে পানি বা পুঁজ পড়তে পারে। এ ধরনের সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন, যাতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ না করে। এমন দুটি রোগ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক, যা এমন পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
আমাদের চোখে একটা বিশেষ নালি থাকে। এর নাম নেত্রনালি বা ন্যাসোলেক্রিমাল ডাক্ট। এই নালি দিয়ে চোখের পানি নাকের ভেতর দিয়ে নেমে যায় স্বাভাবিক নিয়মে। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে জন্মের সময় এই নালিপথ পুরোপুরি খোলা থাকে না। একে বলা হয় কনজেনিটাল ন্যাসোলেক্রিমাল ডাক্ট অবস্ট্রাকশন।
উপসর্গ
চোখে বারবার পানি আসা
চোখের কোনায় ঘন ঘন পুঁজ বা সাদা স্রাব জমা হওয়া
চোখের পাপড়ি বারবার ভিজে যাওয়া
চোখ লাল হয়ে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে
করণীয়
জন্মের সময় নেত্রনালির নিচের অংশে পাতলা পর্দা রয়ে গেলে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এই সমস্যা সাধারণত এক বছরের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়।
তবে চিকিৎসা হিসেবে চোখের ভেতরের কোনায় (যেখানে নাকের পাশ দিয়ে পানি বের হয়) চিকিৎসকের পরামর্শমতো আঙুল দিয়ে হালকা চাপ দিয়ে মালিশ করতে হয়।
মালিশের দিক হয় ওপর থেকে নিচে। রোজ ৮-১০ বার ম্যাসাজ করতে হয়। তবে তা করতে হয় খুব সাবধানে। নইলে নালির ভেতরের পর্দা ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এ ছাড়া ভেজা, পরিষ্কার, নরম কাপড় বা জীবাণুমুক্ত তুলা দিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে হয়। চোখ লাল হলে বা সংক্রমণের অন্য উপসর্গ থাকলে চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ দিতে পারেন।
এক বছর পরও যদি না সারে, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক প্রযুক্তির সহায়তায় নেত্রনালি ছিদ্র করার ব্যবস্থা করতে পারেন। তাতেও না সারলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
জন্মের পর চোখ ওঠা
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় নিওন্যাটাল কনজাংটিভাইটিস (অফথ্যালমিয়া নিওন্যাটোরাম)। শিশুর জন্মের ২৮ দিনের মধ্যে চোখ লাল হওয়া, চোখ থেকে পুঁজ বা স্রাব বের হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিলে ধরে নেওয়া হয় এ রোগ হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এ রোগ হয়ে থাকে।
উপসর্গ
চোখ লাল হওয়া
চোখ ফুলে যাওয়া
প্রচুর পানি ও ময়লা আসা
গুরুতর ক্ষেত্রে কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তাতে দাগ পড়ে যায়, যাতে শিশু অন্ধও হয়ে যেতে পারে
করণীয়
এটি জরুরি অবস্থা, অবহেলা করা যাবে না। যত দ্রুত সম্ভব চক্ষুবিশেষজ্ঞ/শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিতে হবে।
চোখ সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে (চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ দিতে হবে এবং ফুটানো ঠান্ডা করা পানি বা জীবাণুমুক্ত স্যালাইন দিয়ে মুছে দিতে হবে)।
লাইফস্টাইল
জাপানিদের দীর্ঘ জীবনের রহস্য কী?

জাপানে ১০০ বছর বা তারও বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা এখন রেকর্ড সর্বোচ্চ, প্রায় এক লাখ। এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির সরকার। টানা ৫৫ বছর ধরে এ বিষয়ে রেকর্ড করে চলেছে জাপান। চলতি সেপ্টেম্বরে জাপানে শতবর্ষী মানুষের সংখ্যা ৯৯ হাজার ৭৬৩ জন, যাদের ৮৮ শতাংশই নারী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাকামারো ফুকোকা ৮৭ হাজার ৭০৪ জন নারী এবং ১১ হাজার ৯৭৯ জন পুরুষকে শতবর্ষী হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং সমাজের উন্নয়নে তাদের বহু বছরের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
জাপান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আয়ুষ্কালের মানুষের দেশ। প্রায়ই দেশটির নাম বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তির আবাসস্থল হিসেবে উঠে আসে। যদিও কিছু গবেষণায় বিশ্বব্যাপী শতবর্ষী মানুষের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
এটি বিশ্বের দ্রুততম গতিতে বয়স্ক হয়ে ওঠা সমাজের একটি, যেখানে বাসিন্দারা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করেন এবং জন্মহার যেখানে বেশ কম।
জাপানের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হলেন ১১৪ বছর বয়সী শিগেকো কাগাওয়া, তিনি নারা শহরের উপকূলবর্তী ইয়ামাতোকোরিয়ামায় বসবাসকারী একজন নারী। অন্যদিকে, দেশটির সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ, ১১১ বছর বয়সী কিয়োতাকা মিজুনো উপকূলীয় শহর ইওয়াতার বাসিন্দা।
জাপানে ১৫ সেপ্টেম্বর প্রবীণ দিবসের আগে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়, যেখানে নতুন শতবর্ষী ব্যক্তিরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অভিনন্দনপত্র ও রূপার কাপ পান।
এ বছর ৫২ হাজার ৩১০ জন ব্যক্তি এই অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
জাপানে ১৯৬০-এর দশকে, শতবর্ষীদের সংখ্যা জি-সেভেন দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম থাকলেও পরবর্তী দশকগুলোতে এই সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। দেশটির সরকার ১৯৬৩ সালে যখন শতবর্ষী মানুষের জরিপ শুরু করে, তখন সেখানে ১০০ বা তার বেশি বয়সীর সংখ্যা ছিল ১৫৩ জন। তবে, ১৯৮১ সালে এই সংখ্যা বেড়ে এক হাজার হয় এবং ১৯৯৮ সালের মধ্যে তা ১০ হাজারে দাঁড়ায়।
অধিক আয়ুষ্কালের পেছনে মূলত হৃদরোগসহ সাধারণ ধরনের ক্যান্সার-বিশেষ করে স্তন ও প্রোস্টেট ক্যান্সারে মৃত্যু কম হওয়ার মতো কারণ থাকে।
জাপানে স্থূলতার হারও কম, যা এসব রোগের একটি প্রধান কারণ।
খাদ্যাভ্যাসে লাল মাংস কম থাকা এবং মাছ ও শাকসবজি বেশি থাকাও মানুষকে দীর্ঘায়ু পেতে সাহায্য করেছে। বিশেষ করে, দেশটিতে নারীদের ক্ষেত্রে স্থূলতার হার বেশ কম, যা জাপানি নারীদের আয়ুষ্কাল পুরুষদের তুলনায় বেশি হওয়ার একটি অন্যতম কারণ বলে ধরা যেতে পারে।
বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে খাদ্যতালিকায় যখন চিনি ও লবণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে, জাপান তখন বিপরীত দিকে এগিয়ে যাচ্ছে – জনস্বাস্থ্য সচেতনতার বার্তা দিয়ে মানুষের খাবারে লবণের ব্যবহার কমাতে সফল হয়েছে দেশটি।
কিন্তু এটি কেবল খাদ্যতালিকার বিষয় নয়। জাপানিরা সক্রিয় থাকার প্রবণতাও ধরে রাখে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বয়স্ক ব্যক্তিদের তুলনায় বেশি হাঁটাচলা এবং গণপরিবহনের ব্যবহারও বেশি করে জাপানিরা।
রেডিও তাইসো, যেটি মূলত প্রতিদিন শরীরচর্চা বা ব্যয়াম করার একটি গ্রুপ, এটি ১৯২৮ সাল থেকে জাপানি সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি জাপানি সম্প্রদায়ের অনুভূতিকেও উৎসাহিত করতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এটি। শরীরচর্চার তিন মিনিটের এই রুটিন টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয় এবং সারা দেশে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীতে ছোট ছোট দলে যুক্ত হয়ে এর অনুশীলন হয়ে থাকে।
তবে বেশ কয়েকটি গবেষণায় বিশ্বব্যাপী শতবর্ষীদের সংখ্যার বৈধতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে তথ্যের ত্রুটি, অবিশ্বস্ত পাবলিক রেকর্ড এবং জন্ম সনদ না থাকাটাও শতবর্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধির নেপথ্য কারণ হতে পারে।
জাপানে পারিবারিক রেজিস্ট্রিগুলোর ওপর ২০১০ সালে পরিচালিত এক সরকারি নিরীক্ষায় ১০০ বছর বা তার বেশি বয়সী দুই লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষের নাম পাওয়া গেছে, তবে তাদের মধ্যে কেউ কেউ কয়েক দশক আগেই মারা গেছেন। ফলে অসংগত রেকর্ড রাখাকেই এমন ভুল গণনার জন্য দায়ী করা হয়।
পাশাপাশি এমন সন্দেহও করা হয় যে কিছু পরিবার হয়তো তাদের পেনশন দাবি করার জন্য বয়স্ক আত্মীয়দের মৃত্যুর খবর গোপন করার চেষ্টাও করেছে। জাপানে এসংক্রান্ত একটি জাতীয় তদন্ত শুরু করা হয়, যখন টোকিওর সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃত ১১১ বছর বয়সী সোগেন কোটোর মৃত্যুর ৩২ বছর পর পারিবারিক বাড়িতে তার দেহাবশেষ পাওয়া যায়।
লাইফস্টাইল
সকালের চার ভুলেই বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি

আন্তর্জাতিক গবেষণা ও বিশেষজ্ঞদের মতে, সকাল ৭টা থেকে ১১টার মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। অথচ ঘুম থেকে উঠে এই সময়টাতেই আমরা ছোট ছোট ভুল করে বসি। সকালে এমন চারটি ভুলের কারণে বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে ক্যালিফোর্নিয়ার কার্ডিওলজিস্ট ডা. সঞ্জয় ভোজরাজের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরে কর্টিসল নামের স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায়, রক্তের প্লেটলেটগুলো আঠালো হয়ে ওঠে এবং রক্তচাপ দ্রুত বাড়ে। ফলে হঠাৎ করেই হার্টের ওপর চাপ তৈরি হয়। এই সময় যদি খালি পেটে চা বা কফি খাওয়া, পানি না খাওয়া, ওষুধ বাদ দেয়া বা সরাসরি ব্যস্ততায় ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো অভ্যাস গড়ে ওঠে, তাহলে ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।
সকালের ৪টি ক্ষতিকর অভ্যাস
- খালি পেটে চা বা কফি খাওয়া
- পানি না খাওয়া বা নিয়মিত ওষুধ এড়িয়ে যাওয়া
- ঘুম থেকে উঠেই কাজ বা ইমেইলে ডুবে যাওয়া
- শরীরকে সময় না দিয়ে তাড়াহুড়োয় ব্যস্ত হয়ে পড়া
হৃদয়বান্ধব সকাল কেমন হওয়া উচিত: কার্ডিওলজিস্ট ডা. সঞ্জয়ের মতে, কিছু ছোট পরিবর্তন হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রেখে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে। এসব হলো:
- ঘুম ভাঙার পর প্রথমেই পানি পান করা
- নির্ধারিত ওষুধ সময়মতো খাওয়া
- হালকা ও প্রোটিনসমৃদ্ধ নাশতা গ্রহণ
- ১০-১৫ মিনিট স্ট্রেচিং, হাঁটা বা যোগব্যায়ামের মতো হালকা ব্যায়াম
দিনের শুরুটা যদি অগোছালো, তাড়াহুড়ো আর ভুল অভ্যাসে ভরা হয় তাহলে তার প্রভাব পড়ে সরাসরি হার্টের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুম ভাঙার পর শরীরকে একটু সময় দেয়া, পর্যাপ্ত পানি খাওয়া, সময়মতো ওষুধ সেবন, হালকা নাশতা ও অল্প ব্যায়াম এসব ছোট পদক্ষেপই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে পারে।
লাইফস্টাইল
দেশি সবুজ মাল্টার যত উপকারিতা

দেশি সবুজ মাল্টা লেবুর মতো দেখতে একধরনের সাইট্রাস ফল) ভিটামিন–সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ একটি ফল। এটি লেবু ও কমলার মতোই পুষ্টিগুণে ভরপুর। নিচে এর উপকারিতা তুলে ধরা হলো–
দেশি সবুজ মাল্টার উপকারিতা দেখে নিন
১. ইমিউনিটি বাড়ায়: মাল্টায় প্রচুর ভিটামিন–সি থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ঠান্ডা–কাশি ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
২. হজমে সহায়ক: মাল্টার ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। সকালে বা খাবারের পর অল্প মাল্টা খেলে পাচন ভালো হয়।
৩. হার্টের জন্য ভালো: মাল্টায় থাকা পটাশিয়াম ও ফ্ল্যাভোনয়েড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কোলেস্টেরল কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
৪. ত্বক ও চুলের যত্নে: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন–সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। নিয়মিত মাল্টা খেলে ত্বক সতেজ থাকে এবং চুলও মজবুত হয়।
৫. ওজন কমাতে সহায়ক: ক্যালরি কম ও ফাইবার বেশি থাকায় এটি সহজে পেট ভরায়, ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে।
৬. রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে: মাল্টা শরীরে আয়রন শোষণ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যাদের হিমোগ্লোবিন কম, তারা নিয়মিত মাল্টা খেলে উপকার পাবেন।
৭. ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও উপকারী: মাল্টায় প্রাকৃতিক চিনি থাকলেও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়।
সতর্কতা-
১. একসাথে অনেক বেশি মাল্টা খেলে অম্লতা বা গ্যাস্ট্রিক হতে পারে।
২. কিডনি সমস্যায় ভুগছেন এমন রোগী (বিশেষত যাদের কিডনিতে পটাশিয়াম জমে) তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বেশি মাল্টা খাওয়া ঠিক নয়।