জাতীয়
নির্বাচন কমিশনের ৭১ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আরও ৭১ জন কর্মকর্তাকে বদলি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার (২৭ জুলাই) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ইসি সচিবালয়ের সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমানের সই করা বদলির আদেশ জারি করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, বদলিকৃত কর্মকর্তারা আগামী ৩ আগস্টের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হবেন, অন্যথায় আগামী ৪ আগস্ট তাৎক্ষণিক অবমুক্ত মর্মে গণ্য হবেন। বদলিকৃত ৭১ নির্বাচন কর্মকর্তার বেশিরভাগই উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা।
এছাড়া নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকার সহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেনকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সহকারী সচিব পদে পদায়ন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দা সাদিকা সুলতানাকে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকার সহকারী পরিচালক করা হয়েছে।
কাফি

জাতীয়
আরও বড় হলো জুলাই শহীদ-আহতদের তালিকা, গেজেট প্রকাশ

জুলাই শহীদ হিসেবে আরও ১০ জন এবং আহত জুলাই যোদ্ধা হিসেবে আরও ১ হাজার ৭৫৭ জনের নামের তালিকা প্রস্তুত করে গেজেট প্রকাশ করেছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২৮ জুলাই) মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হরিদাস ঠাকুর স্বাক্ষরিত এই গেজেট প্রকাশ হয়। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে দ্বিতীয় ধাপে ১০ জন শহীদসহ ১৭৫৭ জন জুলাই যোদ্ধার নামে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রকাশিত গেজেটে ১০ জন শহীদ ছাড়াও ক—ক্যাটাগরির আহত (অতি গুরুতর) হিসেবে আছেন ১০৯ জন। গুরুতর খ—ক্যাটাগরিতে আহত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ২১০ জনের নাম।
এছাড়া গুরুতর থেকে একটু কম আহত হয়েছেন এমন ১৪৩৮ জনকে গ—ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৪০৫ জন, খুলনা বিভাগের ১৬৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ২২৬ জন, বরিশাল বিভাগের ১১৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগের ১১১ জন, রংপুর বিভাগের ৯০ জন, রাজশাহী বিভাগের ২৩৬ জন এবং সিলেট বিভাগের ৮৮ জন।
এর আগে, প্রথম ধাপে ১২ হাজার ৮৭৭ জন জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধার গেজেট প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়।
বিধিমালা অনুযায়ী, সরকার প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে সঞ্চয়পত্রের আকারে এককালীন ৩০ লাখ টাকা অনুদান দেবে। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৭৭২টি শহীদ পরিবারের প্রত্যেক পরিবারকে (স্বামী বা স্ত্রী, ঔরসজাত বা গর্ভজাত সন্তান/মাতা ও পিতা) উত্তরাধিকার আইন অনুসারে প্রত্যেক পরিবারকে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়া হয়েছে। মোট ৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র হয়েছে। অবশিষ্ট ৭২টি শহীদ পরিবারের মধ্যে পারিবারিক ও ওয়ারিশগত জটিলতা নিরসন করে সঞ্চয়পত্র প্রদানের প্রক্রিয়া চলমান। শহীদ পরিবারের এককালীন অনুদানের অবশিষ্ট ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাস থেকে দেওয়া হবে। এ ছাড়া বিধিমালা অনুযায়ী প্রত্যেক শহীদ পরিবার মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন।
বিধিমালা অনুযায়ী, শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত ব্যক্তির কর্মসংস্থানের জন্য সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি এবং তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা ভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শহীদ পরিবার এবং আহত জুলাই যোদ্ধাদের ভাতা কার্যক্রম অনলাইনে দেওয়া এবং সমৃদ্ধ তথ্যভান্ডারের জন্য ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) তৈরির কার্যক্রম চলমান আছে বলে জানা গেছে।
জাতীয়
স্বাস্থ্যখাতের টেকসই সংস্কারে সরকার বদ্ধপরিকর: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জনগণের দোরগোড়ায় সুলভ ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্যখাতের টেকসই সংস্কারে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বদ্ধপরিকর।
‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’ উপলক্ষে রোববার (২৭ জুলাই) দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য- ‘হেপাটাইটিস: লেটস ব্রেক ইট ডাউন’- যা হেপাটাইটিস নির্মূলের লক্ষ্য অর্জনে তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
তিনি আরও বলেন, লিভার রোগ সম্পর্কে অজ্ঞতা, সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ না করা এবং বিদ্যমান নানা কুসংস্কারের কারণে বাংলাদেশে লিভার রোগের প্রকোপ দিন দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ হেপাটাইটিস-বি এবং শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ হেপাটাইটিস-সি ভাইরাসে আক্রান্ত। দেশে প্রতিবছর বহু মানুষ হেপাটাইটিস, লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সার এবং লিভার ফেইলিওরের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। আশার কথা, সচেতনতা ও সময়মতো সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এসব রোগ প্রতিরোধ এবং সুস্থ ও দীর্ঘ জীবনযাপন সম্ভব।
সরকার সারা দেশের হাসপাতালগুলোর মান ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা প্রদান কার্যক্রম জোরদার করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা চালু করা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী হেপাটাইটিস নির্মূলের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তা বাস্তবায়নে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তবে এ লক্ষ্য অর্জনে সবার সমন্বিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।
নীরব ঘাতক হেপাটাইটিস প্রতিরোধে ড. ইউনূস দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন, গণমাধ্যম, অভিভাবকসহ সচেতন নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
জাতীয়
আহতদের চিকিৎসায় সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস চীনের

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে আহতদের চিকিৎসায় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ সফররত চীনের মেডিকেল দল। রোববার (২৭ জুলাই) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তারা এ আশ্বাস দেন।
ঢাকায় চীনা দূতাবাসের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাক্ষাতে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে চীনা মেডিকেল দলের দ্রুত সাড়া ও পূর্ণ সহযোগিতার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা খাতে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা ও নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত থাকলে দুই দেশের জনগণ উপকৃত হবে।
এসময় ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীন সুখ-দুঃখের প্রকৃত বন্ধু। রাষ্ট্রদূত আরও জানান, আহতদের চিকিৎসায় চীন তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি, স্বাস্থ্যখাতে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, সক্ষমতা উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণে যৌথ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
গত ২১ জুলাই দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী।
দগ্ধদের চিকিৎসা সহায়তায় বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ঢাকায় আসে চীনের পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স দল। ওইদিন সকালে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন চীনের কুনমিংয়ের একটি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও।
জাতীয়
প্রয়োজনে আহতদের ভারতে নেওয়া হবে: ভারতীয় চিকিৎসক দল

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে আহতদের প্রয়োজন হলে ভারতে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় চিকিৎসক দলের প্রধান।
রোববার (২৭ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তবে ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিদলে থাকা চিকিৎসকদের নাম গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়নি।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে চিকিৎসক দলের প্রধান বলেন, বাংলাদেশকে চিকিৎসা সরঞ্জাম, পুনর্বাসন সহায়তা বা রোগী স্থানান্তরের প্রয়োজন হলে ভারত সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। যদি কোনো রোগীকে ভারতে নেওয়ার প্রয়োজন হয়, সেটিও দ্রুত সমন্বয়ের মাধ্যমে সম্ভব।
ভারতীয় চিকিৎসক দল জানায়, তারা ঢাকায় এসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে। মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের পর বাংলাদেশকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন মোদী। শোকবার্তায় তিনি বলেন, দুর্ঘটনার শিকারদের দ্রুত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে ভারত সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
হাইকমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় চিকিৎসক দল বাংলাদেশের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করে সেখানকার চিকিৎসা কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
দিল্লির আরএমএল হাসপাতাল ও সাফদারজং হাসপাতাল থেকে আসা এই মেডিকেল টিমে রয়েছেন দুজন বার্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও দুজন নার্সিং অ্যাসিস্ট্যান্ট। ভারতে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির জন্য এই দুই প্রতিষ্ঠানের সুনাম রয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, চিকিৎসকরা ২৩ জুলাই ঢাকায় আসেন। গত কয়েকদিনে চারটি পরামর্শমূলক সেশন শেষে গুরুতর আহত রোগীদের অবস্থা পর্যালোচনার একটি চূড়ান্ত রাউন্ড সম্পন্ন করে সোমবার (২৮ জুলাই) ভারতে ফিরে যাবেন।
জাতীয়
সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন নির্ধারণে ২২ সদস্যের কমিশন

সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান, সরকারি মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে ২২ সদস্যের জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করেছে সরকার। কমিশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ থেকে ৬ মাসের মধ্যে সরকারের কাছে এই সুপারিশমালা জমা দিতে হবে।
এ ছাড়া কমিশন বিদ্যমান বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পর্যালোচনা করে সুপারিশমালা জমা দেবে। রোববার (২৭ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ১৫-এ দেওয়া ক্ষমতাবলে জাতীয় বেতনস্কেলের আওতাভুক্ত প্রজাতন্ত্রের সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫ গঠন করা হয়েছে। সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খানকে সভাপতি করে কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য করা হয়েছে সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক হিসাব মহানিয়ন্ত্রক মো. মোসলেম উদ্দীন এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. ফজলুল করিমকে।
কমিশনের খণ্ডকালীন সদস্যরা হলেন—সাবেক মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক আহমেদ আতাউল হাকিম, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জাহিদ হোসাইন, সাবেক সচিব ড. জিশান আরা আরাফুন্নেসা, মেজর জেনারেল (অব.) এ আই এম মোস্তফা রেজা নূর, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো হাবিবুর রহমান, সাবেক গ্রেড-১ কর্মকর্তা মিজু তহমিনা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মাকছুদুর রহমান সরকার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমেল ব্রিডিং অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সামছুল আলম ভূঁঞা, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. এ কে এম মাসুদ, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, সশস্ত্র বাহিনীর একজন প্রতিনিধি (প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত), আইন ও বিচার বিভাগের একজন প্রতিনিধি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (আইন ও বিচার বিভাগ কর্তৃক মনোনীত), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত), জননিরাপত্তা বিভাগের একজন প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (জননিরাপত্তা বিভাগ কর্তৃক মনোনীত), ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ’র প্রেসিডেন্ট, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্টি (এফবিসিসিআই)-এর সভাপতি এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রবিধি, বাস্তবায়ন, আইন ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান)।
কমিশনের সদস্যসচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন সরকারের একজন সচিব অথবা অতিরিক্ত সচিব। যিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। কমিশন প্রয়োজনে খণ্ডকালীন সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।
প্রজ্ঞাপনে কমিশনের কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান, সরকারি মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিদ্যমান বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পর্যালোচনা করে কমিশন কী কী বিষয়ে সুপারিশ করবে, তা প্রজ্ঞাপনে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে—কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি সময়োপযোগী ও যথোপযুক্ত বেতন কাঠামো নির্ধারণ। বিশেষায়িত চাকরিধারীদের বেতন কাঠামো নির্ধারণ। বেতন-ভাতার ওপর আরোপযোগ্য কর (আয়কর) জাতীয় বেতন স্কেলের আওতাভুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্তৃক সরাসরি পরিশোধ করার ক্ষেত্রে বেতন কাঠামো স্থিরীকরণ। বেতন-বহির্ভূত অন্যান্য সুবিধা, যেমন-বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত, আপ্যায়ন, প্রেষণ, কার্যভার, মহার্ঘ, উৎসব এবং শ্রান্তিবিনোদন ইত্যাদি ভাতা নিরূপণ। মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন সমন্বয়ের পদ্ধতি নিরূপণ।
এ ছাড়া যথোপযুক্ত বা সময়োপযোগী পেনশনসহ অবসর সুবিধাদি নির্ধারণ। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মান নিরূপণ, মূল্যায়নপূর্বক বেতন-ভাতা কাঠামোয় প্রতিফলন। সরাসরি সেবা (টেলিফোন, গাড়ি, মোবাইল ফোন ইত্যাদি) সংক্রান্ত প্রাধিকারগুলো আর্থিক সুবিধায় নগদায়ন এবং রেশন সুবিধা যৌক্তিকীকরণ। উচ্চতর গ্রেড ও ইনক্রিমেন্ট প্রাপ্তিতে বেতনক্রম নিরীক্ষাক্রমে কোনো অসংগতি পরিলক্ষিত হলে তা দুরীকরণের সুপারিশ প্রণয়ন।
সুপারিশ প্রণয়নে কমিশন যেসব বিষয় বিবেচনা করবে:
পিতা-মাতাসহ অনুর্ধ্ব ছয়জনের একটি পরিবারের জীবন-যাত্রার ব্যয়। অনূর্ধ্ব দুই সন্তানের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সরকারের সম্পদ পরিস্থিতি, প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য সম্পদের প্রয়োজনীয়তা। সংশ্লিষ্ট সংস্থা, প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের অবস্থা। দারিদ্র্য নিরসনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সম্পদ যোগান ও ক্রমান্বয়ে স্বনির্ভরতা অর্জনের উপায়। জনপ্রশাসনে মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা ও কর্মোদ্যোগ বৃদ্ধি করে সেবার মান উন্নয়ন।