ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ইবি শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু: তদন্ত শুরু, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভে সমাবেশ ও দিনব্যাপী প্রশাসন ভবন অবরোধ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এদিকে শিক্ষার্থী রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শাখা ছাত্রদল।
অপরদিকে, ইবি পুকুর থেকে শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার দ্রুততম সময়ের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করতে ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শহিদ জিয়াউর রহমান হলে এবং ক্যাম্পাসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় সাজিদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভে করতে থাকেন তারা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারাও অংশ নেন। তবে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন শেষে র্যালি নিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে আসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, এসময়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের লিখিত আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর প্রশাসন ভবনের অবরোধ তুলে নিলেও প্রকৃতপক্ষে দাবিসমূহ স্বাক্ষরিত হওয়ার পর প্রধান ফটকের তালা খোলা হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা সাজিদের মৃত্যুর তদন্ত দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ, পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা, আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের এন্ট্রি ও এক্সিট শতভাগ মনিটরিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা, ক্যাম্পাসের চারপাশে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তাবেষ্টিত বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা, ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত স্ট্রিট লাইট স্থাপন ও সক্রিয় রাখা ও বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন দাবি জানান।
মানববন্ধনে শাখা ছাত্রদল আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদ বলেন, আমার ভাই সাজিদের মৃত্যর ঘটনায় আমরা শোকাহত। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই। কোষাধ্যক্ষকে হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, নতুন অর্থবছর শুরু হয়েছে। অর্থের কোন অভাব নেই। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে যা কিছু প্রয়োজন তার সবই আপনাদের করতে হবে। আপনাদের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসিনি, আমাদের জন্য আপনারা এখানে এসেছেন।
আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. খান মুহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছি। প্রশাসনের কাছে জানতে চাই, আমার ছেলে কেন এভাবে মৃত্যুবরণ করলো? এর সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের সাথে আমরা থাকবো। যে ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারণে সাজিদের মত ছেলেরা জীবন দেয়, এই জীবন দেয়ার ব্যবস্থা কে ভেঙ্গে দিতে হবে। সুরক্ষিত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে, দুপুরেতদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেনের নেতৃত্বে মরদেহ উদ্ধারের তথ্য ও সাজিদের কক্ষ পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
এসময় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বলেন, রবিবার তার রুমমেট, বন্ধু সার্কেল এবং শিক্ষকদের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলা হবে। এ ঘটনার ব্যপারে সাংবাদিকদের নিকট যদি কোন তথ্য থাকে তা প্রদানের জন্য কমিটির পক্ষ থেকে অনুরোধ করছি।
তিনি আরও বলেন, সুরতহাল রিপোর্ট রেজিস্ট্রারের (ভারপ্রাপ্ত) কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে। সাজিদের ব্যবহৃত মোবাইলের এক সপ্তাহের কল রেকর্ডও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত)-এর মাধ্যমে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে চাওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাজিদের যোগাযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কমিটির দুজন সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে শহিদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী বলেন, নির্ধারিত দিনের পূর্বে ৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছি এবং প্রশাসনে সাথে মিটিং হয়েছে পরবর্তীতে আরও পর্যাপ্ত ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, তদন্ত কার্যক্রম কীভাবে দ্রুত করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোও মেনে নেওয়া হয়েছে। আজকে থেকেই সিসিটিভি লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। আমরা এখন যত পদক্ষেপ ই নেই না কেন, সাজিদকে তো আর ফিরে পাব না। তবে তার মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদের আকস্মিক মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও শোকাহত। দেশের বাইরে থাকায় সরাসরি আমি উপস্থিত থাকতে না পারা আমার জন্য দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পরপরই আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। আমি বলেছি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে যতদ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন দাখিল করে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা যে দাবিগুলো করছে সেগুলো অত্যন্ত যৌক্তিক দাবি। আমরা তাদের দাবির সাথে একমত। শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছি।
উল্লেখ্য, এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখা, ছাত্রশিবির’সহ ক্রিয়াশীল সকল সামাজিক ও রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ করেন এবং তাদের সাথে সহাবস্থান করেন।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম

ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ভোটের ফল ম্যানিপুলেট করা হলে শিক্ষার্থীরা জবাব দেবে: আবিদুল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর নির্বাচনের ফলাফল ম্যানিপুলেট (প্রভাবিত) করা হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এটা প্রতিহত করবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি (সহ-সভাপতি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। নির্বাচনের ফল সঠিকভাবে হলে নিজেদের প্যানেলের ভূমিধস বিজয়েরও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে আবিদুল এ কথা বলেন। এর আগে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ডাকসুর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
ভোটগ্রহণ শুরুর পর সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে বেশ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ভোট দিতে আসেন ভোটাররা। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে প্রায় সব প্যানেলের প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি নানা অভিযোগ বাড়তে থাকে। একজন পোলিং অফিসারকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আবিদুল ইসলাম বলেন, আমরা আশা করেছিলাম সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। কিন্তু প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
আবিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বেগম রোকেয়া হল, অমর একুশে হলের ভোটকেন্দ্রে সিলমারা ব্যালট দেওয়া হয়েছে। আমরা জানি না কতটা ব্যালট সিলমারা ছিল। নির্বাচন কারচুপি করে উল্টো দায় আমাদের ওপর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যখন বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে গিয়েছি, আমাদের এতিমের মতো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। আমাদের সময় নষ্ট করা হয়েছে।
নিজেদের প্যানেলের কার্ড বিলির অভিযোগের জবাবে ভিপি প্রার্থী বলেন, একজন ভোটারের ৪১টা ভোট দিতে হয়। ৪১টা ব্যালট মনে রাখা সম্ভব না। এজন্য আমরা লিখে দিয়েছিলাম।
জামায়াত-শিবিরের অনেক নেতা ক্যাম্পাসে এসেছেন উল্লেখ করে আবিদুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে অনেক জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা উপস্থিত হয়েছে। তাদের নিবারণ করার আহ্বান জানাই।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ডাকসুর ভোটগ্রহণ শেষ, ফলের অপেক্ষা

শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। কিছুক্ষণ পর শুরু হবে ভোট গণনা। প্রার্থীরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করলেও ভোটের বড় কোনো অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আট কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে ডাকসু এবং হল সংসদে শিক্ষার্থীদের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকাল ৪টার মধ্যে যারা কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন, নির্ধারিত সময় শেষ হলেও তাদের ভোটগ্রহণ করা হবে।
বিকেল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। এরপরই বেশিরভাগ কেন্দ্রের গেট বন্ধ করতে দেখা যায়। তবে গেটের সামনে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন।
প্রতিনিধি নির্বাচনে ছয় পৃষ্ঠার ওএমআর শিটের ব্যালট পেপারে রায় দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আটটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ ভোটের ব্যালট গণনা করা হবে ১৪টি মেশিনে। এগুলোর কোনোটির স্ক্যানিং স্পিড- ঘণ্টায় ৫০০০, কোনোটির ৮০০০ পাতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন থেকে ভোটের ফল ঘোষণা করা হবে।
ভোটগ্রহণ চলাকালে কেন্দ্রে আগে থেকে ক্রস চিহ্ন দেয়া ব্যালট নিয়ে শিবির ও ছাত্রদলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেল।
এদিকে ভোটের শেষ সময়ে এসে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্টের সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী তাহমিনা আক্তার।
এবারের ডাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। পাঁচ ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ ভোটের বিপরীতে ১৩ ছাত্র হলে এই সংখ্যা ২০ হাজার ৯১৫ জন।
২৮টি পদের জন্য মোট ৪৭১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতি হল সংসদে ১৩টি করে ১৮টি হলে মোট পদের সংখ্যা ২৩৪টি। এসব পদে ভোটের লড়াইয়ে নামেন ১ হাজার ৩৫ জন। এবারের ডাকসু ভোটে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ মিলিয়ে অন্তত ১০টি প্যানেল অংশ নিয়েছে। এর বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন প্রার্থীদের আরেকটি অংশ।
এবারের নির্বাচনে রয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জুলাই আন্দোলনের চেতনা ধারণ করে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), সাতটি বাম ছাত্র সংগঠনের ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’, জুলাই আন্দোলনের নেত্রী উমামা ফাতেমার ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’, ছাত্রশিবির, তিন বাম সংগঠনের ‘অপরাজেয় ৭১, অদম্য ২৪’, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ অন্তত ১০টি প্যানেল।
ভিপি পদে মনোনীত আবিদুল ইসলাম খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জিএস পদে শেখ তানভীর বারী হামিম সম্প্রতি ঘোষিত কবি জসীম উদ্দীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আর এজিএস পদের তানভীর আল হাদী মায়েদ বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক।
বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েমকে ডাকসুতে ভিপি প্রার্থী করেছে ছাত্রশিবির। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন। জিএস পদে ছাত্রশিবিরের প্রার্থী এস এম ফরহাদ এখন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। ছাত্রশিবির মনোনীত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের এজিএস প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক।
বাগছাসের ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের এবং এজিএস প্রার্থী আবু বাকের মজমুদার। এ প্যানেলের এজিএস প্রার্থী আশরেফা খাতুনও জুলাই আন্দোলন সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন। এখন তিনি বাগছাসের মুখপাত্র।
সাতটি বাম ছাত্র সংগঠন মনোনীত ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ তাদের ভিপি প্রার্থী করেছে শেখ তাসনীম্ আফরোজ ইমিকে। জিএস প্রার্থী করেছে ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসুকে। আর এজিএস পদে প্রার্থী জাবির আহমেদ জুবেল বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের থেকে বাছাই করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ নামে প্যানেল গড়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা। এই প্যানেলে জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি। উমামার প্যানেলের এজিএস প্রার্থী জাহেদ আহমদ পাঠচক্রের প্ল্যাটফর্ম ‘গুরুভার আড্ডা’র সংগঠক।
ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের একাংশ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল-বাংলাদেশ জাসদ) নিয়ে ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ প্যানেল ১৩ জন প্রার্থী দিয়েছে।
এ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী নাইম হাসান হৃদয় বিসিএল-জাসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি। ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক এনামুল হাসান অনয় এ প্যানেলের জিএস এবং ছাত্রফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব অদিতি ইসলাম এজিএস প্রার্থী।
ভিন্নধর্মী ইশতেহার দিয়ে এবার ভোটের মাঠে আলোচনা তৈরি করেছেন ভিপি পদপ্রার্থী শামীম হোসেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী; থাকেন বিজয় একাত্তর হলে। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ এবার ভিপি প্রার্থী করেছে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে। জিএস হিসেবে সাবিনা ইয়াসমিনকে এবং এজিএস পদে লড়ছেন ছাত্র অধিকারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: ঢাবি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, ডাকসু নির্বাচনে স্বচ্ছতার ঘাটতি নেই। চারটার পরও যেসব শিক্ষার্থী লাইনে থাকবেন, তাদের ভোট নেওয়া হবে।
নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, কার্জন হলে ভুলক্রমে একটি ছোট সমস্যা হয়েছে। তার জন্য আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। তবুও এই ঘটনার আমরা পুনরায় তদন্ত করে কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেব।
তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচন এখন দেশের দাবিতে পরিণত হয়েছে। আশা করছি, যিনি জিতবেন এবং যিনি বিজেতা হবেন, সবাই ফলাফল মেনে নেবেন।
এদিকে, এবার ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে এবার লড়ছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ভিপি পদে ৪৫, জিএসে ১৯ এবং এজিএসে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। পাঁচ ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯, আর ১৩ ছাত্র হলে এই সংখ্যা ২০ হাজার ৯১৫ জন।
নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত ‘আবিদ-হামীম-মায়েদ পরিষদ’ থেকে ভিপি পদে আবিদুল ইসলাম খান, জিএস পদে শেখ তানভীর বারী হামিম এবং এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ আলোচনায় আছেন।
ছাত্রদল-শিবির সমর্থিত প্যানেলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। শিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট থেকে ভিপি পদে আবু সাদিক কায়েম, জিএস পদে এসএম ফরহাদ এবং এজিএস প্রার্থী হিসেবে মহিউদ্দিন খান লড়ছেন।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে আবদুল কাদের এবং জিএস প্রার্থী হিসেবে আবু বাকের মজুমদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ’ থেকে জিএস মাহিন সরকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। তবে তিনি জিএস পদে আবু বাকের মজুমদারকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
এ ছাড়া ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে উমামা ফাতেমা; ছাত্রঅধিকার পরিষদ থেকে ভিপি পদে বিন ইয়ামিন মোল্লা এবং বামপন্থী শিক্ষার্থীদের প্যানেল ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ থেকে ভিপি পদে শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, জিএস পদে মেঘমল্লার বসু লড়ছেন।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
তিন ঘণ্টায় টিএসসি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৩৫ শতাংশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রথম তিন ঘণ্টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ভোট পড়েছে ৩৫ শতাংশ। এই কেন্দ্রে বেগম রোকেয়া হলের নারী শিক্ষার্থীরা ভোট দিচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে কেন্দ্র প্রধান অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১১টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ৩৫ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। আমাদের কেন্দ্রে ১৯টি বুথে ভোটগ্রহণ চলছে। প্রতিটি বুথে অন্তত ১২০ জন ভোট দিয়েছেন। এই হিসাবে তিন ঘণ্টায় প্রায় ২ হাজার ২৮০ ভোট পড়েছে।
তিনি আরও জানান, এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে নির্ধারিত সময়ের আগেই কেন্দ্রটির ভোটগ্রহণ শেষ হয়ে যেতে পারে। প্রায় ৪০ হাজার ভোটারের এ নির্বাচনে টিএসসি কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ৫ হাজার ৬৬৫ জন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। বিকেল ৪টার মধ্যে কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীরাও ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। ডাকসু নির্বাচন ঘিরে সোমবার রাত ৮টা থেকে টানা ৩৪ ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রবেশপথ সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে, যা আগামী বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
অনিয়মের অভিযোগে পোলিং অফিসার প্রত্যাহার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। এতে অনিয়মের অভিযোগে এক পোলিং অফিসারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে কার্জন হল পরীক্ষা কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা এ এম মহিউদ্দীন তাকে প্রত্যাহার করেন।
এর আগে, সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল কেন্দ্রে অমর একুশে হলের একটি বুথে ভোটারকে আগে থেকে পূরণকৃত ব্যালট সরবরাহ করার অভিযোগ ওঠে পোলিং অফিসার ও অমর একুশে হলের কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক ওই বুথ পরিদর্শন করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ সময় ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক জিয়াউর রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়।
বিষয়টি স্বীকার করে পোলিং অফিসার জিয়াউর রহমান চৌধুরী বলেন, এটি একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২০ হাজার ৯১৫ জন এবং নারী ভোটার ১৮ হাজার ৯৫৯ জন।
এবার ডাকসু নির্বাচনে ২৮ পদের বিপরীতে লড়ছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে পুরুষ প্রার্থী ৪০৯ জন ও নারী প্রার্থী ৬২ জন। তবে বিভিন্ন পদের মধ্যে মূল আকর্ষণ সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ১৯ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ২৫ ও মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন প্রার্থী লড়ছেন।
এর বাইরে কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ১৯ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক ১১ জন এবং ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে ১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে সর্বোচ্চ ২১৭ জন লড়ছেন।