অর্থনীতি
বাণিজ্যঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির চুক্তি আজ

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ব্যবধান কমে আসুক—বাংলাদেশ সরকারও তা চায়। কীভাবে এ ব্যবধান কমিয়ে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি বাড়ানো যায়, সে জন্যই মার্কিন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তার অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকারিভাবে গম আমদানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এত দিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আসত সাহায্য হিসেবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির জন্য উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে আজ রোববার। বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে খাদ্য অধিদপ্তর এবং ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচারের (ইউএসডিএ) পক্ষে ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটসের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা সমঝোতা স্মারকে সই করবেন।
সূত্রগুলো জানায়, সরকার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরাসরি তিন লাখ টন গম আমদানি করবে। প্রতি টনে ২০ থেকে ২৫ মার্কিন ডলার বেশি দিয়ে হলেও এ গম যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হবে। তবে এ দফায় তিন লাখ টনের এমওইউ হচ্ছে না, হচ্ছে ২ লাখ ২০ টনের। প্রতি লটে বা কনসাইনমেন্টে ১ লাখ ১০ হাজার টন করে গম আসবে।
এবিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, তিন উদ্দেশ্য সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠকগুলো চলছে। উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি, বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠন (অ্যাডভোকেসি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যঘাটতি কমানো।
সপ্তাহব্যাপী চলা বৈঠকগুলোর মধ্যে শেষটি হতে যাচ্ছে ২২ জুলাই, মঙ্গলবার। এটি হবে আমেরিকান অ্যাপারেলস অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের (এএএফএ) সঙ্গে। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ও জুতা আমদানিকারক কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে এই সংস্থা।
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেভরন, এক্সিলারেট এনার্জি এবং ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটস, ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউএসএসইসি) ও ইউএস কটন অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে এরই মধ্যে অনলাইনে বৈঠক করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক হার কমিয়ে আনার ব্যাপারে দুই দফা আলোচনা চললেও এখন পর্যন্ত কোনো ফয়সালা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৮ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো চিঠির ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১ আগস্ট নতুন হার কার্যকর হলে বিদ্যমান ১৫ শতাংশের সঙ্গে নতুন হার যোগ হয়ে মোট শুল্কহার দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে।
এ হার কমিয়ে আনার ব্যাপারে আরেক দফা আলোচনা করতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে একটি দল যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, তাঁরা যাচ্ছেন। তবে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ গতকাল শনিবার পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, পাল্টা শুল্কের হার কমিয়ে আনার ব্যাপারে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনার তারিখের জন্য আজ রোববার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ই-মেইল পাঠিয়ে অনুরোধ করা হবে।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ব্যবধান বরাবরই বাংলাদেশের পক্ষে, যা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অসন্তুষ্টি রয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, গত জুন মাসে শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ৮৭৬ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। এক বছর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ৭৬৮ কোটি ডলারের পণ্য। তার বিপরীতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ দেশটি থেকে আমদানি করেছে ২৫০ কোটি ডলারের পণ্য। অথচ এক বছর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি করেছিল ২৬২ কোটি ডলারের পণ্য। যুক্তরাষ্ট্র থেকে একক পণ্য হিসেবে সবচেয়ে বেশি আমদানি করা হয় স্ক্র্যাপ লোহা বা লোহার টুকরা। আর দেশটিতে একক পণ্য হিসেবে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করা হয় তৈরি পোশাক।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, গমের পাশাপাশি উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ, ভোজ্যতেল, তুলা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ইত্যাদি আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনবে বাংলাদেশ, যা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যঘাটতি কমাতে বাংলাদেশ আগে থেকেই ১৯০টি পণ্যের শুল্কহার শূন্য রেখেছে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট করার সময় আরও ১০০ পণ্যকে এই তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। যদিও এ সুবিধা শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, অন্য দেশও পাবে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধি অনুযায়ী, নির্দিষ্ট কোনো দেশের নির্দিষ্ট কোনো পণ্যের ওপর শুল্ক কমানো যায় না। শুল্ক কমাতে হয় পণ্যের ওপর। কেউ যদি শুধু একটি দেশের কোনো পণ্যের ওপর শুল্ক কমায়, তাহলে অন্য কোনো দেশ ডব্লিউটিওর কাছে অভিযোগ করতে পারে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আমার দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। বাণিজ্য কৌশল যেন এক দেশমুখী না হয়ে যায়। কারণ, রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি অন্য অংশীদারদেরও অবদান কম নয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করে যে বাণিজ্য চাপ দেওয়া হচ্ছে, ডব্লিউটিওর ভূমিকা সেখানে হতাশাজনক।’
ডলারসংকটের এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চ দামে গম আমদানি, প্রতিযোগিতার বাইরে গিয়ে অন্য পণ্য আমদানির উদ্যোগ এবং আপাতত চাহিদা না থাকলেও উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ আমদানির কথা যে শোনা যাচ্ছে, এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, দর-কষাকষি পর্যায়ে যেটুকু অঙ্গীকার করা দরকার, সেটুকুই করতে হবে। চুক্তি যদি দীর্ঘমেয়াদি হয়, তা বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে ঝুঁকিপূর্ণ হবে।

অর্থনীতি
আকু বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে ৩০ বিলিয়ন ডলারে

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৩০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দিনশেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে এখন ৩০ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুসারে রিজার্ভ এখন ২৫ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে বৃহস্পতিবার গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম৬ অনুযায়ী ছিল ২৬ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। এরপর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জুলাই ও আগস্ট মাসের আমদানি বিল বাবদ প্রায় ১৫০ কোটি ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে কমেছে রিজার্ভ।
গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে (আকু) ২ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছিল গ্রস হিসাবে ২৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন এবং বিপিএম৬ অনুযায়ী ২৪ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারে।
রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লম্ফন, রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবণতা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ঋণ সহায়তার কারণে জুন শেষে গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ৩১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে। গত ২৮ মাসের মধ্যে যা ছিল সর্বোচ্চ। বিপিএম৬ অনুযায়ী এ সময় রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার।
২০২১ সালের আগস্টে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভে পৌঁছায় বাংলাদেশ। তবে পরবর্তী সময়ে ধারাবাহিক পতনে আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে গত জুলাই শেষে রিজার্ভ নেমে যায় ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর অর্থপাচারে কঠোর নিয়ন্ত্রণ, হুন্ডি প্রবাহ কমে যাওয়া এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়ায় পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে প্রায় ২৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা ডলারে হিসাব করলে দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন।
অর্থনীতি
স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড, ভরি ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা ছাড়ালো

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনায় ২ হাজার ৭১৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৮১ হাজার ৫৫০ টাকা। এর মাধ্যমে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় উঠেছে সোনার দাম।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গত ৪ ও ২ সেপ্টেম্বর এবং ৩১ ও ২৭ আগস্ট সোনার দাম আর ৪ দফা বাড়ানো হয়। ৪ দিনের মাথায় এখন দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে বাজুস বলছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে, তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে সোনার দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ২ হাজার ৭১৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৮১ হাজার ৫৫০ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ২ হাজার ৬০১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৩০৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ২ হাজার ২২৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৯০১ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৬৩ টাকা।
এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৩ হাজার ৪৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৭৮ হাজার ৮৩২ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ২ হাজার ৯০৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার ৭০৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ২ হাজার ৪৮৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩১৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ২ হাজার ১২৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ২১ হাজার ১৬৬ টাকা। এতো দিন এটাই সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিলো। আজ রোববার পর্যন্ত এই দামে সোনা বিক্রি হয়েছে। আগামীকাল থেকে নতুন রেকর্ড দামে বিক্রি হবে সোনা।
সোনার দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮১১ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থনীতি
৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৬ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা

চলতি মাস সেপ্টেম্বরের ৬ দিনে ৫১ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে দেশে। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৬ হাজার ২৯৫ কোটি ২০ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, সেপ্টেম্বরের ৬ দিনে ৫১ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত বছরের (২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের ৬ দিন) একই সময়ের তুলানায় ৪ কোটি ডলার কম। গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স আসে ৫৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫৪১ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ৪৬৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় ৭২ কোটি ২০ ডলার বেশি এসেছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। সদ্য বিদায়ী আগস্টের পুরো সময়ে এসেছিল ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকার রেমিট্যান্স।
এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল, যা ছিল বছরের রেকর্ড পরিমাণ। পুরো অর্থবছর (২০২৪-২৫) জুড়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল জুলাইয়ে ১৯১ দশমিক ৩৭ কোটি ডলার, আগস্টে ২২২ দশমিক ১৩ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ দশমিক ৪১ কোটি ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ দশমিক ৫০ কোটি ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার, মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা ও প্রবাসী আয়ের পথ সহজ করায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
অর্থনীতি
আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমে ৮.২৯ শতাংশ, তিন বছরে সর্বনিম্ন

চলতি বছরের আগস্ট মাসে দেশের মূল্যস্ফীতি কমে বিগত তিন বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ মাসে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৮.২৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়েছে।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ।
বিবিএসের তথ্য মতে, গত জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৮.৫৫ শতাংশ। সেই হিসাবে জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমেছে ০.২৬ শতাংশ। গত বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০.৪৯ শতাংশ।
অন্যদিকে আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৬০ শতাংশে। জুলাই মাসে এ হার ছিল ৭.৫৬ শতাংশ। আর ২০২৪ সালের আগস্টে খাদ্যমূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১.৩৬ শতাংশ।
খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ের ৯.৩৮ শতাংশ থেকে কমে আগস্টে ৮.৯০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্টে এ হার ছিল ৯.৭৪ শতাংশ।
এদিকে, স্বল্প আয়ের দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির হার সামান্য কমে ৮.১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে টানা ৪৩ মাস ধরেই মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে পিছিয়ে রইল, যা নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় খাদ্যপণ্যের দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের অব্যাহত চাপের কারণে সার্বিক মূল্যস্ফীতি এখনও চড়া রয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
কাফি
অর্থনীতি
ব্যাংকের মূলধন ১০ শতাংশের নিচে হলে কোনো কর্মকর্তা বোনাস পাবেন না: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘ব্যাংকের মূলধন ১০ শতাংশের নিচে হয় এবং প্রভিশন লস করে তাহলে ডিভিডেন্ড ও বোনাস দিতে পারবে না। এ ছাড়া কোনো কর্মকর্তাকে বোনাস দেওয়া হবে না।’
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর এক হোটেলে সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশ এনআরবি আয়োজিত ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ; আসন্ন নির্বাচন, প্রবাসীদের অংশগ্রহণ, আগামীর অর্থনীতি বিষয়ক এক আলোচনায়সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘চেষ্টা করছি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার।
গত কয়েক বছর অর্থ ব্যবস্থায় শঙ্কা তৈরি হয়, একটা অস্থিরতা বিরাজ করছিল সেখান থেকে ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি এবং আংশিক হলেও কাজ করছি। ব্যালেন্স অব পেমেন্ট সবগুলোতেই উদ্বৃত্ত আছে এর কারণ হলো রেমিট্যান্সপ্রবাহ ২১% বেড়েছে আর সংকটের মধ্যে রপ্তানিও বেড়েছে।’
গভর্নর বলেন, ‘ওপরমহল থেকেও কমিশন বাণিজ্য যেভাবে হতো তবে হুন্ডিও কমে এসেছে। ৩০ শতাংশ লিকেজ হতো প্রবাসী আয়ের।
আমদানি কমেনি তবে মূল্যটা কমে এসেছে। মূল্য বাড়িয়ে পাচার করার মানুষ এখন দেশে নেই তাই ব্যয় কমেছে। যেভাবে অর্থ পাচার হতো সেভাবে এখন হয় না। এর পেছনে কাজ করছে সুশাসন।
এ জন্যই বেড়েছে রিজার্ভ।’
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের মূলধন ১০ শতাংশের নিচে হয় এবং প্রভিশন লস করে তাহলে ডিভিডেন্ড ও বোনাস দিতে পারবে না। এ ছাড়া কোনো কর্মকর্তাকে বোনাস দেওয়া হবে না। যদি তারা প্রভিশন লস করেন। তিন মাসের ঋণ অনাদায়ি থাকলে তাকে ননপারফর্মিং লোন হিসেবে ধরা হবে।’
গত এক মাসে এক বিলিয়ন মূল্যের ডলার বাজার থেকে কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিন্তু দাম বাড়েনি। ডলার সংকট না থাকলেও টাকার সংকট রয়েছে এ কথা জানিয়ে গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে কাজ করছি, আরো কাজ করতে হবে। এটা একদিনে হয় না সময় লাগে। চালের দামটা বেড়ে যাওয়ায় আগস্টে কিছুটা মূল্যস্ফীতি বেড়েছে তবে আমাদের ৫ শতাংশের নিতে নামাতেই হবে মূল্যস্ফীতি।
জুনের খেলাপি রিপোর্টে ৩০ শতাংশ খেলাপির আশঙ্কা করা হচ্ছে এ কথা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, সরকারের সাথে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে আলোচনা শুরু হবে ৫টি ব্যাংকে একীভূত করার বিষয়ে। এক-দুই বছরের মধ্যে ভালো করবে। কর্মকর্তা ও আমানতকারীদের জন্যও ভালো হবে।