আন্তর্জাতিক
তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে ইউরোপ, রেড অ্যালার্ট জারি

ইউরোপজুড়ে চলছে নজিরবিহীন তাপপ্রবাহ। ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, জার্মানি, পর্তুগাল, গ্রিসসহ বহু দেশে জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ মাত্রার তাপ সতর্কতা। ফ্রান্সসহ ইউরোপের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে ফ্রান্সজুড়ে বড় আকারে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার প্যারিসসহ ফ্রান্সের ১৬টি অঞ্চলে সর্বোচ্চ ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে।
এছাড়া আরো ৬৮টি অঞ্চলে রয়েছে কম ঝুঁকির ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’।
সোমবার ফ্রান্সের মূল ভূখণ্ডের ৯৬টির মধ্যে ৮৪টি অঞ্চলে ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি ছিল। দেশটির জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী এটিকে ‘নজিরবিহীন পরিস্থিতি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
স্পেন, পর্তুগাল, ইতালি, জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং ক্রোয়েশিয়াসহ বলকান অঞ্চলের দেশগুলোর কিছু অংশেও তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এর বাইরে তুরস্কে দাবানল দেখা দিয়েছে।
স্পেন এবং পর্তুগাল দুই দেশেই সপ্তাহান্তে জুন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ উষ্ণতম দিন হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। অনেক দেশেই জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং জনসাধারণকে যতটা সম্ভব ঘরের ভেতরে থাকার থাকতে বলা হয়েছে।
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইউরোপের বিভিন্ন অংশে তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়ায় ফ্রান্স জুড়ে প্রায় ২০০টি স্কুলের কোনোটি বন্ধ কোনোটি আংশিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তবে সপ্তাহের মাঝামাঝি তাপদাহ সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার প্যারিসের স্থানীয় সময় দুপুর ১২ টা থেকে ফ্রান্সের রেড অ্যালার্ট কার্যকর হবে। তীব্র তাপপ্রবাহে রোববার দক্ষিণ কর্বিয়েরেস পর্বতমালায় বেশ কয়েকটি বনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটনাও ঘটেছে। ওইসব এলাকার লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একটি মোটরওয়ে।
সেখানকার কর্মকর্তারা ফরাসি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এরই মধ্যে ইতালির ২১টি শহরেও সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে রোম, মিলান, ভেনিস ও সার্ডিনিয়া দ্বীপ।
ইতালির জরুরি চিকিৎসা সেবা বিভাগের সহ-সভাপতি মারিও গুয়ারিনো সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, তাপপ্রবাহজনিত অসুস্থতা ও হিটস্ট্রোকের ঘটনা ১০ শতাংশ বেড়েছে। সোমবার যুক্তরাজ্যের কিছু অংশে জুন মাসের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণতমের কাছাকাছি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ওইদিন যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে, ৩৩ দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে উইম্বলডনে তাপমাত্রা ছিল ৩২.৯ ডিগ্রি, যা টেনিস টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণতম দিন।
তাপ সতর্কতা রয়েছে স্পেনেও। যেখানে এবারের জুন হতে পারে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণতম মাস। একই রকম পরিস্থিতি পর্তুগালেও। রাজধানী লিসবনসহ সাতটি জেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে।
জার্মানির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার ও বুধবার তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। এটি আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে জার্মানির রাইন নদীর পানি কমে গেছে। নদীর পানি কমে যাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এই নৌরুটে পণ্যবাহী জাহাজে মালামাল পরিবহন কঠিন হয়ে পড়েছে। জাহাজগুলোকে কম পণ্য নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। যে কারণে পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে।
বলকান অঞ্চলের দেশগুলোও তীব্র গরমে ভুগছে। যদিও কিছু কিছু এলাকার তাপমাত্রা একটু একটু করে কমতে শুরু করেছে। ইউরোপের পাশেই তুরস্কে উদ্ধারকারীরা ৫০ হাজারেরও বেশি লোককে সরিয়ে নিয়েছে। বেশিরভাগই দেশটির পশ্চিমে অবস্থিত ইজমির থেকে লোকদের সরানো হয়েছে। দমকল কর্মীরা এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
ঘন্টায় ১২০ কিমি বা ৭৫ মাইল বেগে বাতাসে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার অন্তত ২০টি ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। ক্রোয়েশিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল। সেখানকার উপকূলীয় এলাকায় রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। পাশের দেশ মন্টিনেগ্রোতেও তীব্র তাপমাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
গ্রিসে কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছেছে। রাজধানী এথেন্সের আশেপাশের উপকূলীয় এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে হয়েছে, অনেকে নিরাপদ স্থানে যেতে বাধ্য হয়েছে।
বুধবার ছিল সার্বিয়ায় ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম দিন। দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, দেশের অনেক অংশে চরম খরা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার রাজধানী সারায়েভোতে রেকর্ড ৩৮দশমিক ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। শনিবার স্লোভেনিয়ায় জুন মাসের ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
শুক্রবার উত্তর ম্যাসেডোনিয়ার রাজধানী স্কোপজেতে তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর। এই তাপপ্রবাহ শুধু স্বাস্থ্য নয়, পরিবেশেও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এড্রিয়াটিক সাগরের উষ্ণ পানিতে বিষাক্ত ‘লায়নফিশ’ প্রজাতির মতো বিষাক্ত মাছের দেখা মিলছে। এর পাশাপাশি পাহাড়ি হিমবাহগুলো আরও দ্রুত গলতে শুরু করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, এই তাপপ্রবাহ দেখিয়ে দিচ্ছে যে আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রস্তুত হতে হবে। এবং জীবাশ্ম জ্বালানির মতো দূষণকারী শক্তির ব্যবহার কমাতে হবে।
তিনি বলেন, ‘তাপমাত্রা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, বন্যা, খরা ও দাবানল, এসব আমাদের জীবনের অধিকার, স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত অধিকার হুমকির মুখে ফেলছে।’
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যানেলের মতে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে তাপপ্রবাহ ক্রমশ বাড়ছেই।
এতে বলা হয়েছে, পৃথিবী উষ্ণ হতে থাকলে তীব্র গরম আবহাওয়া আরও ঘন ঘন ঘটবে। ধীরে ধীরে এটি আরো তীব্র হবে। যত উষ্ণ হচ্ছে, তত বেশি এবং তীব্র গরম দেখা দেবে বলে সতর্ক করেছে তারা।
যুক্তরাজ্যের রিডিং ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া বিজ্ঞানী রিচার্ড অ্যালান বলছেন, গ্রিনহাউজ গ্যাস বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর পক্ষে অতিরিক্ত তাপ বের করে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাতাস আরও বেশি শুকনো হয়ে গেছে। ফলে মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে মাঝারি মাত্রার গরমও এখন ভয়াবহ তাপপ্রবাহে পরিণত হচ্ছে।’

আন্তর্জাতিক
ফেডের সুদহার কমানোর ইঙ্গিতে সম্পদ বাড়ল শীর্ষ ধনীদের

ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত দেওয়ার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে নতুন উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে। শুক্রবার ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল সূচক বেড়েছে ৯০০ পয়েন্টের বেশি; এটি নতুন অন্তর্বর্তীকালীন রেকর্ড। একই সঙ্গে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক বেড়েছে প্রায় দেড় শতাংশ এবং নাসডাক সূচক প্রায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, পাওয়েলের সতর্ক আশাবাদী বক্তব্য বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করেছে। এক বছর আগেও তাঁর ‘কঠোর’ অবস্থানের কারণে চাপে পড়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা, কিন্তু এবার নমনীয় হওয়ার সংকেতে উল্টো ইতিবাচক সাড়া পড়েছে।
শেয়ারবাজারে সূচকের উত্থানে স্বাভাবিকভাবে ধনীদের সম্পদমূল্য বেড়েছে। দেখে নেওয়া যাক, ফোর্বস ম্যাগাজিনে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর মধ্যে কার সম্পদ কত বাড়ল:
১. ফোর্বসের তালিকায় বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের সম্পদমূল্য বেড়েছে ১ হাজার ১২০ কোটি ডলার। টেসলার শেয়ারের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাঁর মোট সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৯২০ কোটি ডলার।
২. বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী ওরাকলের প্রধান নির্বাহী ল্যারি এলিসনের সম্পদমূল্য বেড়েছে ৪৪০ কোটি ডলার। ওরাকলের শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
৩. তৃতীয় স্থানে থাকা মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গের সম্পদমূল্য বেড়েছে ৫৪০ কোটি ডলার। মেটার শেয়ারের দাম বাড়ায় তাঁর সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৩০ কোটি ডলার।
৪. এদিকে চতুর্থ স্থানে থাকা অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৭০ কোটি ডলার। অ্যামাজনের শেয়ারের দাম বাড়ায় তাঁর সম্পদমূল্য বেড়েছে ৬১০ কোটি ডলার।
৫. অ্যালফাবেটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিনও সম্পদ বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছেন। পঞ্চম স্থানে থাকা পেজের সম্পদমূল্য বেড়েছে ৪৯০ কোটি ডলার। ফলে তাঁর মোট সম্পদমূল্য এখন ১৭ হাজার ৩০০ কোটি ডলার।
৬. ষষ্ঠ স্থানে থাকা ব্রিনের সম্পদমূল্য গতকাল বেড়েছে ৪৫০ কোটি ডলার। অ্যালফাবেটের শেয়ারমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদমূল্যও বেড়েছে। ফলে এই প্রতিবেদন লেখার সময় তাঁর সম্পদমূল্য ১৬ হাজার ১০০ কোটি ডলার।
৭. সপ্তম স্থানে থাকা এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াংয়ের সম্পদমূল্য বেড়েছে মোট ২৬০ কোটি ডলার। ফলে তাঁর সম্পদমূল্য এখন ১৫ হাজার ৪৯০ কোটি ডলার।
৮. অষ্টম স্থানে থাকা সাবেক মাইক্রোসফট প্রধান স্টিভ বালমারের সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৭৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের। ফলে তাঁর সম্পদমূল্য এখন ১৫ হাজার ৪৩৩০ কোটি ডলার।
৯. নবম স্থানে থাকা ফ্রান্সের এলভিএমএইচ প্রধান বার্নার্ড আর্নল্ট ও তাঁর পরিবারের সম্পদমূল্য বেড়েছে প্রায় ২৯০ কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে এলভিএমএইচের শেয়ার লেনদেন না হলেও বৈশ্বিকভাবে তার কোম্পানির শেয়ারের দাম ৩ শতাংশের বেশি বাড়ায় তাঁদের সম্পদ দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯০ কোটি ডলার।
১০. দশম স্থানে থাকা বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের প্রধান ওয়ারেন বাফেটের সম্পদমূল্য বেড়েছে প্রায় ২৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বাজারের সার্বিক উত্থানে তাঁর সম্পদমূল্য এখন ১৪ হাজার ৬২০ কোটি ডলার।
আন্তর্জাতিক
ইন্টেলের ১০ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করলো যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন সরকার ইন্টেলের ১০ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করেছে। আর একে এক নজিরবিহীন চুক্তি বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক।
মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক এক্স-এ লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এখন ইন্টেলের অংশীদার। ধন্যবাদ ইন্টেলের সিইও লিপ-বু ট্যানকে, যিনি এমন একটি ন্যায্য চুক্তি করেছেন।’
চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে চলতি মাসের শুরুতে ইন্টেলের সিইও লিপ-বু ট্যানের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ও বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন লিপ-বু ট্যান। বৈঠক শেষেই এই চুক্তিতে পৌঁছেছেন তারা।
শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি চাকরি রাখতে এসেছিলেন, কিন্তু শেষমেষ আমাদের জন্য ১০ বিলিয়ন ডলার দিয়ে গেলেন। আমরা ১০ বিলিয়ন ডলার পেয়ে গেলাম।’
এবিষয়ে ট্রাম্প বিস্তারিত না জানালেও ধারণা করা হচ্ছে, ‘চিপস অ্যান্ড সায়েন্স অ্যাক্ট’-এর অধীনে মার্কিন কারখানা নির্মাণের জন্য ইন্টেল যে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার সরকারি অনুদান পাচ্ছে, তার সমপরিমাণ শেয়ার সরকার গ্রহণ করেছে।
এটি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মার্কিন কোম্পানিগুলোর একাধিক অস্বাভাবিক চুক্তির অংশ। উদাহরণস্বরূপ, এআই চিপ জায়ান্ট এনভিডিয়াকে চীনে তাদের এইচ২০ চিপ বিক্রির অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এর বিনিময়ে মার্কিন সরকার সেই বিক্রয়ের ১৫ শতাংশ অংশীদারত্ব পায়। চিপ নির্মাতা এএমডিও অনুরূপ চুক্তি করেছে।
করপোরেট বিষয়ে সরকারের এই ব্যাপক হস্তক্ষেপ সমালোচকদের উদ্বিগ্ন করছে। তারা বলছেন, ট্রাম্পের পদক্ষেপ করপোরেট ঝুঁকির নতুন মাত্রা তৈরি করছে।
আন্তর্জাতিক
আমাকেও বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে: অমর্ত্য সেন

প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক অমর্ত্য সেন ভারতে ক্রমবর্ধমান ভাষাগত অসহিষ্ণুতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) কলকাতায় ‘ভারতের তরুণ সমাজ: তাদের কী ধরনের সামাজিক সুযোগ থাকা উচিত’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় তিনি বিশেষ করে বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী মানুষের প্রতি বিরূপ আচরণ নিয়ে মন্তব্য তুলে ধরেন। এ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশিত একটি ঘটনার উল্লেখ করে অমর্ত্য সেন বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বাংলাভাষী কিছু ব্যক্তিকে সন্দেহের ভিত্তিতে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি রসিকতা করে বলেন, তার নিজেরও ঢাকায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ তার পৈতৃক ভিটা সেখানেই।
৯১ বছর বয়সী এই নোবেল বিজয়ী বলেন, আমি সংবাদপত্রে দেখলাম যে এক ব্যক্তিকে বাংলায় কথা বলার কারণে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এটি আমাকে কিছুটা চিন্তিত করেছে। স্বভাবসুলভ রসবোধে তিনি আরও বলেন, আমি ঠিক করেছিলাম ফরাসি ভাষায় কথা বলব, কিন্তু সমস্যা হলো, আমি ফরাসি জানি না।
তিনি আরও বলেন, আমাকেও বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে, কারণ আমার পৈতৃক বাড়ি ঢাকায়। আর তাতে আমার খুব একটা আপত্তি নেই।
পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে জন্মগ্রহণকারী এই অর্থনীতিবিদ এ সময় একদল স্নাতক ও উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।
বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের হয়রানি নিয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে অমর্ত্য সেন বলেন, বাংলার মানুষ বা বাংলাভাষী মানুষ পেশাগত বাধা ও অসম্মানের শিকার হচ্ছেন।
তিনি ভারতীয় সভ্যতার বৈচিত্র্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, বাংলা, পাঞ্জাবিসহ প্রতিটি সাংস্কৃতিক পরিচয়ের নিজস্ব গুরুত্ব ও ঐতিহ্য রয়েছে, যা উদ্যাপন করা উচিত। তিনি বলেন, আমি বলছি না যে বাঙালি সংস্কৃতি ও সভ্যতা সেরা, তবে আমাদের বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার ইতিহাস তুলে ধরা উচিত। বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি সম্মান থাকতে হবে। যদি না থাকে, তবে প্রতিবাদ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক
ইতালিতে অনিয়মিত অভিবাসীর শীর্ষে বাংলাদেশ

গত বছরের তুলনায় এ বছর ইতালিতে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সমুদ্রপথে ইতালি পৌঁছেছেন ৩৮ হাজার ২৬৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশিরা।
সার্ডিনিয়ায় নৌকাডুবি
গত ৯ আগস্ট রাতে ইতালির দক্ষিণ সার্ডিনিয়ায় আটজন অভিবাসীকে নিয়ে ডুবে গেছে একটি নৌকা। সান্ত’আন্তিওকোর কাছের উপকূল থেকে এক অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে একজনকে।
ওই অভিবাসনপ্রত্যাশী জানিয়েছেন, নৌকায় আটজন ছিলেন, সবাইকে নিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
নিখোঁজ অভিবাসীদের খোঁজে সোমবারও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছিল ইতালি। এতে অংশ নিচ্ছে ইতালির ফিন্যান্স গার্ডের টহল নৌকা এবং একটি হেলিকপ্টার, কোস্টগার্ডের কয়েকটি টহল নৌকা। সার্ডিনিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের সান্ত’আন্তিওকো এলাকায় উপকূলেই তারা তল্লাশি করছিলেন।
৯ আগস্ট ফিন্যান্স গার্ডের একটি বিমান সমুদ্রে এক অভিবাসীর মরদেহ শনাক্ত করার পর অনুসন্ধান শুরু হয়।
গত কয়েক দিনে ৩৪ জন অভিবাসী সমুদ্রপথে সার্ডিনিয়ায় পৌঁছেছেন। ১০ আগস্ট সন্ধ্যায় ৯ জন অভিবাসী সান্ত’আন্তিওকোতে পৌঁছে। ওই দিন আরও ১২ জনকে সান্ত’আন্না আরেসির পৌরসভার পোর্তো পিনোর সমুদ্র সৈকত থেকে উদ্ধার করা হয়। তার আগে আরও ১৩ জন তেউলাদা বন্দরে পৌঁছেছেন।
এই ৩৪ অভিবাসীকে কাগলিয়ারি প্রদেশের মোনাস্তির আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইতালির একেবারে দক্ষিণ প্রান্তের ছোট দ্বীপ লাম্পেদুসাতেও আগমন অব্যাহত রয়েছে। ১০ আগস্ট ৫৮ জন অভিবাসী দ্বীপটিতে পৌঁছেছেন। তাদের মধ্যে দুজন ছিলেন অপ্রাপ্তবয়স্ক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্স এবং ফিন্যান্স গার্ডের টহল নৌকা তাদের উদ্ধার করেছে।
অভিবাসীদের মধ্যে আছেন মিসরীয়, ইরিত্রীয়, সিরিয়ান ও ইরানি নাগরিকরা। ৯ আগস্ট রাত ২টায় তারা লিবিয়ার জুওয়ারা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেন।
তাদের সবাইকে কন্ত্রাদা ইমব্রিয়াকোলা হটস্পটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারণ, ওই দিন রাতে ১৭৩ জন অভিবাসীকে ফেরিতে করে পোর্ট এম্পেদোকলে স্থানান্তর করা হলে ওই আশ্রয়কেন্দ্রটি খালি হয়ে যায়।
ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধারের পর ১৪৬ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইতালির সাভোনায় পৌঁছে দিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ইমার্জেন্সির অভিবাসী উদ্ধারকারী জাহাজ লাইফ সাপোর্ট।
১০ আগস্ট সন্ধ্যায় লিগুরিয়া অঞ্চলের সাভোনা বন্দরে পৌঁছায় জাহাজটি। ৬ ও ৭ আগস্ট ভূমধ্যসাগরে তিনটি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে লাইফ সাপোর্ট।
প্রথম উদ্ধার অভিযানে একটি ছোটো নৌকায় গাদাগাদি অবস্থায় থাকা ৩১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়। লাইফ সাপোর্ট জানিয়েছে, তাদের মধ্যে একজন সন্তানসম্ভবা নারী এবং ১১ জন সঙ্গীবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন।
দ্বিতীয় নৌকাটিতেও তার আকারের তুলনায় বেশি যাত্রী ছিলেন। নৌকাটিতে ৪৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী থাকলেও তাদের কারও শরীরে কোনো লাইফ জ্যাকেট ছিল না। তাদের মধ্যে তিনজন ছিলেন অপ্রাপ্তবয়স্ক।
তৃতীয় অভিযানটি অপেক্ষাকৃত চ্যালেঞ্জিং ছিল বলে জানিয়েছে ইমার্জেন্সি কর্তৃপক্ষ৷ ফাইবারগ্লাসের তৈরি একটি নৌকায় ছিলেন ৬৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী৷ লাইফসাপোর্ট জাহাজটিকে দেখা মাত্র সর্বোচ্চ গতিতে খুবই বিপজ্জনকভাবে নৌকাটি জাহাজের দিতে এগোতে থাকে৷ লাইফসাপোর্টের কাছাকাছি আসতেই নৌকার চালকেরা অভিবাসীপ্রত্যাশীদের উদ্ধারকারী জাহাজে লাফিয়ে পড়তে বলেন৷ এসময় কিছু অভিবাসী পানিতে পড়ে যান৷ তাদের কারো শরীরে কোনো লাইফজ্যাকেট ছিল না৷
এই অভিবাসীদের মধ্যে শারীরিকভাবে গুরুতর অবস্থায় থাকা একজনকে কোস্টগার্ডের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে৷
এই তিন অভিযানে উদ্ধার হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি ছিলেন সুদানের নাগরিকেরা৷ এরপরেই রয়েছেন আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, বুরকিনা ফাসো, ক্যামেরুন, আইভরি কোস্ট, ইরিত্রিয়া, গাম্বিয়া, ঘানা, গিনি, মালি, নাইজেরিয়া, সেনেগাল ও সোমালিয়ার নাগরিকরা।
শীর্ষে বাংলাদেশিরা
সরকারের নেওয়া কঠোর পদক্ষেপের কারণে ২০২৪ থেকে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কমেছে ইতালিতে।
ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ইতালিতে সমুদ্রপথে আসা অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার ৬৪৪ জন। কিন্তু এ বছর তা কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৩৮ হাজার ২৬৩ জন।
তবে ২০২৩ সালে একই সময়ে রেকর্ড ৯৯ হাজার ৫২২ জন অভিবাসী এসেছিলেন।
চলতি বছর আসা অভিবাসীদের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশিরা৷ ১২ হাজার ৮৬ জন বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছেছেন৷ এরপরেই আছে ইরিত্রিয়া৷ দেশটির ৫ হাজার ২১৫ জন নাগরিক পৌঁছেছেন ইটালিতে৷ আর এরপরে আছে মিশর, পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, সুদান ও সোমালিয়ার নাম।
আন্তর্জাতিক
দক্ষিণ আমেরিকায় ভয়াবহ ভূমিকম্প

দক্ষিণ আমেরিকা ও অ্যান্টার্কটিকার মাঝামাঝি ড্রেক প্রণালীতে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। তবে এ ঘটনায় কোনো সুনামি সতর্কতা নেই বলে জানিয়েছে প্যাসিফিক সুনামি ওয়ার্নিং সেন্টার।
শুক্রবার (২১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা প্রথমে ৮ ধরা হলেও পরে তা সংশোধন করে ৭.৫ করা হয়। ভূমিকম্পটির উৎসস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ১১ কিলোমিটার গভীরে।
ইউএসজিএস আরও জানায়, ভূমিকম্পের কেন্দ্র আর্জেন্টিনার উশুয়া শহর থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। শহরটিতে প্রায় ৫৭ হাজার মানুষের বসবাস।
চিলির নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক ও ওশানোগ্রাফিক সার্ভিস এক বুলেটিনে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর তাদের অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলের জন্য সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। কেন্দ্রটি ছিল ওই অঞ্চলের ফ্রেই বেস থেকে প্রায় ২৫৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।