জাতীয়
ভিসাপ্রত্যাশীদের জরুরি নির্দেশনা দিলো যুক্তরাষ্ট্র

এফ, এম বা জে শ্রেণির নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসার জন্য আবেদনকারীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক প্রতিবেদনে এফ (F), এম (M), অথবা জে (J) ভিসার জন্য আবেদনকারী শিক্ষার্থী ও বিনিময় কর্মসূচির অংশগ্রহণকারীদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, যারা এফ, এম বা জে শ্রেণির নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসার জন্য আবেদন করছেন, তাদের সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে- নিজেদের সব সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের গোপনীয়তা সেটিং পাবলিক করে দিতে। এটি আবেদনকারীর পরিচয় ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ভেটিং (জানাচাই) প্রক্রিয়া সহজতর করতে সহায়তা করবে।
এফ ভিসা কী
F-1 ভিসা: এই ভিসাটি মূলত একাডেমিক অধ্যয়নের জন্য, যেমন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি প্রোগ্রামের জন্য।
F-2 ভিসা: F-1 ভিসাধারীর স্বামী বা স্ত্রী এবং ২১ বছরের কম বয়সী অবিবাহিত সন্তানেরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারে।
M ভিসা কী
M-1 ভিসা: এই ভিসাটি অ-একাডেমিক বা বৃত্তিমূলক অধ্যয়নের জন্য, যেমন ভোকেশনাল বা টেকনিক্যাল স্কুল বা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার জন্য।
M-2 ভিসা: M-1 ভিসাধারীর স্বামী বা স্ত্রী এবং ২১ বছরের কম বয়সী অবিবাহিত সন্তানেরা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারে।

জাতীয়
সরকারি সব ভবনে সোলার প্যানেল স্থাপনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

দেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ শীর্ষক বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবেল এনার্জি এজেন্সির (আইআরইএনএ) ২০২৪ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌরবিদ্যুৎ প্রসার ও ধার্যকৃত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে। ভারতে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৭ দশমিক ১৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৩৯ দশমিক ৭ শতাংশ উৎপাদন হলেও বাংলাদেশে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার মাত্র ৫ দশমিক ৬ শতাংশ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা ২০২৫ অনুযায়ী, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২০ শতাংশ ও ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এরই মধ্যে ৫ হাজার ২৩৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার স্থলভিত্তিক ৫৫টি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের টেন্ডার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এটি বাস্তবায়ন হতে ২০২৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেন। এর অংশ হিসেবে সব সরকারি ভবন, স্কুল-কলেজ-মাদরাসা ও সব সরকারি হাসপাতালের ছাদে রুফটপ সোলার সিস্টেম স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারি ভবনে সোলার প্যানেল বসানোর কাজটি বেসরকারি উদ্যোগে করা যায় কি না সে ব্যাপারে বিবেচনা করুন। যারা বসাবে তারা নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থেই এর রক্ষণাবেক্ষণ করবে, কার্যকরভাবে এটা পরিচালনা করবে। সরকারের পক্ষ থেকে শুধু ছাদটা দেওয়া হবে, বাকি কাজ তারাই করবে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যেসব প্রতিষ্ঠানে রুফটপ সোলার করেছে তাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। তারা কী ধরনের সমস্যায় পড়েছে সেগুলো জানতে হবে। সেসব সমস্যা সমাধানের দিকে যেতে হবে।
এ প্রক্রিয়ায় সরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসার ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য কোনো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে না। পাশাপাশি সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত ছাদের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়া পাবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন প্রমুখ।
জাতীয়
মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনে দেশের জনস্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা ও অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, মাদক শুধু ব্যক্তি নয়, গোটা জাতির ভবিষ্যৎকেই ধ্বংস করছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, “মাদকের কারণে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যুবসমাজকে এই ভয়াবহতা থেকে মুক্ত রাখতে না পারলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।” তিনি জানান, নারী ও শিশুদের মাদক চোরাচালানে ব্যবহার উদ্বেগজনক। এজন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, নতুন নতুন সিনথেটিক ও সেমি-সিনথেটিক ড্রাগস মাদক সমস্যা আরও জটিল করে তুলছে। এসব মাদক নিয়ন্ত্রণে আইনগত কাঠামো শক্তিশালী করার পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনবল সংকট প্রসঙ্গে তিনি জানান, প্রায় ১৮ কোটি মানুষের দেশে অধিদপ্তরের মোট জনবল ২,৯৪৩ জন। এর মধ্যে ১,৬২২ জন মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ইদানীং আমরা সেই প্রতিরোধ কম দেখতে পাচ্ছি, এটি বাড়াতে হবে।”
সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, “বাংলাদেশে মাদক উৎপাদন হয় না, বাইরে থেকে প্রবেশ করছে। আমাদের বিশাল সীমান্ত রয়েছে, তাই স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ জরুরি।” তিনি জানান, প্রতিটি বিভাগীয় পর্যায়ে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ।
কাফি
জাতীয়
সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নাই: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নেই।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও অভিযোগ নিষ্পত্তির আইনি কাঠামোর পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনারে এই দাবি করেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকদের ফ্রিডম নাই এটা ভুল। আমি মনে করি, দেশে সাংবাদিকতায় এত ফ্রিডম, যা উন্নত বিশ্বেও নাই।
তিনি বলেন, গত ১০ মাসে বর্তমান সরকার সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমকে কোনো চাপ প্রয়োগ করেনি, কোনো বাধা দেয়নি; যেমনটা আওয়ামী লীগ আমলে ছিল।
এ সময় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গণমাধ্যমে ১৫ বছর ধরে অরাজকতা চলেছে। ফলে, অবৈধ নির্বাচনগুলো বৈধতা পেয়েছে। ফ্যাসিজম সেই সুযোগ পেয়েছে। অনিয়ম ধরার মূল হাতিয়ার গণমাধ্যম। এটা ঠিক থাকলে জালিয়াতির নির্বাচনগুলো ঠেকানো যেত।
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, সংবাদ মাধ্যমের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা পৃথক হতে হবে, নন প্রফিট হতে হবে। নয়তো সেখান থেকে স্বাধীন গণমাধ্যম চর্চা সম্ভব না।
কাফি
জাতীয়
শেখ মুজিবও ক্ষমতার লোভ সামলাতে পারেননি, আদালতকে আউয়াল

রাষ্ট্রদ্রোহ ও অন্যায় প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর শেরে বাংলা থানার মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ক্ষমতার লোভ শেখ মুজিবও সামলাতে পারেননি।
নির্বাচন কমিশনের অসহায়ত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, মৌলিক সংস্কার ছাড়া আগামী ১ হাজার বছরেও এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এ মামলায় রিমান্ড শুনানিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। এসময় তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার এ আবেদন করেন।
শুনানিকালে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটের তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে তোলা হয়। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, এই আসামি ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার আমলে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি এদেশে কলঙ্কজনক নির্বাচন হয়। সেই ডামি নির্বাচনে আ.লীগ ও ২/১টি দল ছাড়া আর কেউ অংশ নেয়নি। সেই নির্বাচন ছিল ডামি নির্বাচন, একতরফা, লোক দেখানো ও প্রহসনের নির্বাচন। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিতে পারেননি। তখন তিনি (আউয়াল) বলেছেন, ‘কেউ নির্বাচনে না এলে আমি কি বসে থাকবো?’ তিনি ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে চলে যান। অন্যায় করেছেন বলেই তিনি গা ঢাকা দেন।
শুনানিতে ওমর ফারুক আরও বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘সারাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে’। এত বড় মিথ্যা বলে তিনি কীভাবে তার ফ্যামিলির সামনে মুখ দেখান। ওইদিন সকাল ৮টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ২৭.১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানান। তার এক ঘণ্টা পর ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানান। অথচ আমরা দেখেছি কেন্দ্রগুলোতে কোনো মানুষ ছিল না। কুকুর-বিড়াল কেন্দ্রে শুয়ে আছে। ওই এক ঘণ্টা তিনি কোথায় ছিলেন জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে বলেন, ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। কতটা হাস্যকর কথাবার্তা।
শুনানিতে সরকারি এই কৌঁসুলি আরও বলেন, আসামির বিরুদ্ধে তৎকালীন সরকারের সঙ্গে আঁতাত করার অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনে থোক বরাদ্দ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। সংবিধান বহির্ভূত বক্তব্য দিয়ে তিনি রাষ্ট্রদ্রোহ করেছেন। আমরা তার সর্বোচ্চ রিমান্ড প্রার্থনা করছি।
আসামি পক্ষের আইনজীবী এমিল হাসান রুমেল তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে বলেন, তার বয়স ৭০। তিনি অনেক দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছেন। আমরা যেন ফ্যাসিস্ট দমাতে গিয়ে নিজেরা ফ্যাসিস্ট না হয়ে যাই।
এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, প্রসিকিউশনের বক্তব্যের সঙ্গে আমিও একমত। নির্বাচনটি ডামি ও প্রহসনের নির্বাচন ছিল। এসময় তাকে থামিয়ে বিচারক বলেন, প্রত্যেক জেলায় নির্বাচনী ইনকোয়ারি কমিটি করা হয়। যেখানে যুগ্ম জেলা জজ পদমর্যাদার একজন দায়িত্বে থাকেন। আগে যার ভাতা ছিল ২২ হাজার টাকা সেটা আপনি ৫ লাখে উন্নীত করেছেন। এতে কি জনগণের টাকা অপচয় হয়নি? এ বিষয়ে তার জানা নেই জানিয়ে বলেন, পাঁচ বছরের মুদ্রাস্ফীতি হিসেব করে হয়তো ভাতা বাড়ানো হয়েছিল।
এরপর বিচারক আবারও বলেন, এই যে ইনকোয়ারি কমিটি করা হয়েছিল নির্বাচনের সময় কোথাও কী তারা সরেজমিনে গিয়েছিলেন? তখন আউয়াল বলেন, একজন রিটার্নিং অফিসারের অধীনে ৪-৫টা সংসদীয় আসনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাকে সহযোগিতা করতে আরও ৪-৫ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার থাকেন। একটা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য ২ ভাগ দায়িত্ব কমিশনের বাকি ৯৮ ভাগ দায়িত্ব মাঠ পর্যায়ে কাজ করা অফিসারদের।
নির্বাচনের আগে এমন অবস্থা জেনে আপনি পদত্যাগ করলেন না কেন? বিচারকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই অবস্থায় পদত্যাগ করা সম্ভব ছিল না। আমার এক বন্ধুও আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল পদত্যাগের কথা, আমি বলেছি তুমি যদি আগে বলতা এমন ভয়ংকর নির্বাচন হবে তাহলে আমি দায়িত্বই নিতাম না।
আউয়াল পূর্বের নির্বাচনের কথা তুলে ধরে বলেন, ৭২ এর সংবিধান প্রণয়নের তিন মাসের মাথায় অনুষ্ঠিত ৭৩ এর নির্বাচনে আ.লীগ ২৯৩টি আসন পায়। সেই নির্বাচনও সুষ্ঠু ছিল না। ক্ষমতার লোভ এমন যে শেখ মুজিবও তা সামলাতে পারেননি। ৯৬ সালে আ.লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করে। পরবর্তী সময়ে তারাই আবার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সংবিধান সংশোধন করে।
এসময় পাবলিক প্রসিকিউটর উত্তেজিত হয়ে আদালতকে বলেন, তিনি নিজেকে জাস্টিফাই করছেন। তার এসব বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ নেই। এসময় আউয়াল বলেন, জাস্টিফাই না করতে দিলে রিভলবার দিয়ে গুলি করে মেরে ফেলেন। এসময় উপস্থিত আইনজীবীরা চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে এজলাসে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।
নির্বাচন কমিশনের অসহায়ত্ব তুলে ধরে আউয়াল আরও বলেন, মৌলিক সংস্কার ছাড়া আগামী ১ হাজার বছরেও এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আধ ঘণ্টার দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
এর আগে বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর মগবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে মামলা করে বিএনপি। মামলায় মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত ২২ জুন বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহউদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এছাড়া সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে এ মামলায়।
পরবর্তী সময়ে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওই তিন নির্বাচনে ‘গায়েবি মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের’ ভয় দেখিয়ে, বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেপ্তার’ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্ত্বেও সংবিধান লঙ্ঘন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পূর্ণ করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
কাফি
জাতীয়
সরকারি কর্মচারীদের জন্য শাহজালাল বিমানবন্দরে হচ্ছে ‘কল্যাণ ডেস্ক’

চাকরিতে থাকা বা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের (কর্মকর্তা-কর্মচারী) বিদেশ থেকে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতায় কল্যাণ ডেস্ক স্থাপন করা হচ্ছে।
সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালকের কাছে পাঠানো একটি চিঠি থেকে তথ্য জানা গেছে।
‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কল্যাণডেস্ক স্থাপনের জন্য মালামাল, লেবার, ডিজাইন ও ঠিকাদার প্রবেশের পাস প্রদান সংক্রান্ত’ শিরোনামের চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত বা অবসরপ্রাপ্ত অসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ থেকে আগমন ও বহির্গমনের সহায়তা সার্ভিস পরিচালনার জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে টার্মিনাল-১ এর ভিতরে ১ নম্বর গেটের দ্বিতীয় তলায় ১৪০ বর্গফুট জায়গায় কল্যাণডেস্ক স্থাপনের লক্ষ্যে নির্বাচিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে (নোভা কনস্ট্রাকশন ইন্টারন্যাশনাল) সাতদিন লেবার, ডিজাইনার, ঠিকাদার ও স্থাপনার মালামালের ট্রাকসহ বিমানবন্দরে দিন-রাত ভর যাওয়ার পাস দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।