অর্থনীতি
৩৯০ কোটি টাকায় টোটালগ্যাজ বাংলাদেশ অধিগ্রহণ করছে ওমেরা পেট্রোলিয়াম

ফরাসি কোম্পানি টোটালগাজের বাংলাদেশের ব্যবসা অধিগ্রহণ করবে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠান ওমেরা পেট্রোলিয়াম। ৩২ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশী প্রায় ৩৯০ কোটি টাকার এই অধিগ্রহণ সম্পন্ন হলে দেশের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বাজারে ওমেরার অবস্থান আরও দৃঢ় হবে। বর্তমানে ওমেরার বাজার হিস্যা ২২ শতাংশ, যেখানে টোটালগাজের হিস্যা প্রায় ৫ শতাংশ।
দুই কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, এই চুক্তির আওতায় ১৯ মিলিয়ন ডলার ইক্যুইটিতে ব্যবহৃত হবে, বাকি ১৩ মিলিয়ন ডলার যাবে দায়-দেনা ও সম্পদ অধিগ্রহণে, যার মধ্যে ব্যাংক ঋণও রয়েছে।
কয়েক মাস ধরে আলোচনার পর সমঝোতা
এ চুক্তির জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক মাস ধরে জটিল আলোচনা চলে। টোটালগ্যাজ বাংলাদেশের ১১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে স্থানীয় শেয়ারহোল্ডারদের হাতে, আলোচনার অন্যতম বাধা ছিল এই অংশীদারদের অনিচ্ছা। তবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা লোকসান মুখে পড়া টোটালগ্যাজ অবশেষে বাংলাদেশ থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে।
“উভয়পক্ষ ইতোমধ্যে সব আইনি নথি বিনিময় করেছে। খুব শিগগিরই আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করব, বলেন ওমেরা পেট্রোলিয়ামের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
ওমেরার সম্প্রসারণ ও এলপিজি বাজারের চিত্র
ওমেরা পেট্রোলিয়ামের মালিক ওমেরা এলপিজি, একটি যৌথ মালিকানাধীন কোম্পানি। এর ৬২ শতাংশ অংশীদারত্ব এমজেএল বাংলাদেশের, আর ২৫ শতাংশ অংশীদারত্ব হচ্ছে বিবি এনার্জি (এশিয়া) প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাকি ১৩ শতাংশের অংশীদার নেদারল্যান্ডসভিত্তিক উন্নয়ন ব্যাংক- এফএমও।
২০০২ সালে টোটালগ্যাজ বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের শীর্ষ তিনটি এলপিজি আমদানিকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্থান করে নেয়। তবে স্থানীয় কোম্পানিগুলোর আক্রমণাত্মক বিনিয়োগ এবং সম্পূর্ণ আমদানি-নির্ভর বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেনি তারা।
বাংলাদেশে টোটালগ্যাজের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে এলপিজি আমদানি, সংরক্ষণ, বোতলজাতকরণ এবং ১২ কেজি, ১৫ কেজি ও ৩৩ কেজি সিলিন্ডারে বাজারজাতকরণ। শিল্প খাতের জন্য তারা বাল্ক বা পাইকারি সরবরাহও করে থাকে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তাদের ১ লাখ টন ধারণক্ষমতার টার্মিনাল এবং বগুড়ায় একটি সেকেন্ডারি স্থাপনাও রয়েছে।
উত্থান-পতনের মধ্যেও এলপিজি খাতের বিকাশ
২০১০ সালে যেখানে দেশের এলপিজি চাহিদা ছিল মাত্র ৭০ হাজার টন, সেখানে এখন বার্ষিক চাহিদা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭ লাখ টনে। প্রতি বছর এই খাত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে চাহিদা ৩০ লাখ টনে পৌঁছানোর পূর্বাভাস রয়েছে।
প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ কমে আসার আশঙ্কায় সরকার ২০০০ এর দশকের শুরুতে—নতুন গ্যাস সংযোগে বিধিনিষেধ আরোপ করে, এবং এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহ দেয়। ২০০৯ সাল থেকে এপর্যন্ত ৫৮টি এলপিজি ব্যবসার লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে।
বাজারে এখন বসুন্ধরা গ্রুপ, যমুনা স্পেসটেক, বেক্সিমকো, মেঘনা, সিটি গ্রুপের মতো শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোর আধিপত্য রয়েছে। তবে ক্রমবর্ধমান পরিচালন ব্যয় এবং প্রচণ্ড মূল্য প্রতিযোগিতার কারণে— বিশেষ করে ফ্রি সিলিন্ডার অফারসহ নানা প্রণোদনার কারণে — কিছু কোম্পানি আর্থিকভাবে চাপে পড়েছে। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে এলপিজি ব্যবসা থেকে সরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।

অর্থনীতি
একনেকে ৯ হাজার কোটি টাকার ১৭ প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একনেক সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মোট ৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ১৮০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৩০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এ ছাড়া একনেক সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টার নিজস্ব ক্ষমতাবলে ইতোমধ্যে অনুমোদিত ১৫টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প– ‘উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত)’ এবং ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি এবং স্থানীয় জনসমাজের সমন্বিত সেবা ও জীবন-জীবিকা উন্নয়ন’ প্রকল্প। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘৭টি বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদকাশক্তি নিরাময় ও পূনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ’। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘নবনির্মিত ৪টি মেরিন একাডেমিতে সিমুলেটর ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থাপনের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি’। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘অ্যাক্সেস টু জাস্টিস ফর উইমেন : স্ট্রেংথেনিং কমিউনিটি ডিসপুট রিসল্যুশন অ্যান্ড ইম্প্রোভিং কেস ম্যানেজমেন্ট’। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধিন)’। শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ (৩য় সংশোধিত ৪র্থ বার বৃদ্ধি)’। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প– ‘কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প ও ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে সমন্বিত সেবা জোরদারকরণ এবং কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রম’। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘টিভিইটি টিচারস ফর দ্য ফিউচার (টিটিএফ) প্রোগ্রাম’। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ৩য় সংশোধিত’ প্রকল্প।
এছাড়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের চারটি প্রকল্প– ‘কার্যক্রম বিভাগে একটি নতুন ডিজিটাল ডাটাবেজ সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে উন্নয়ন বাজেট ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি শক্তিশালীকরণ (৩য় সংশোধিত)’, ‘ইম্প্রুভমেন্ট অব পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইপিআইএমএস)’, ‘প্রকিউরমেন্ট মডারনাইজেশন টু ইম্প্রুভ পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি (পিএমআইপিএসডি) ও ‘স্ট্যাটিস্টিক্যাল ক্যাপাসিটি এনহেঞ্চমেন্ট অ্যান্ড মডারনাইজেশন প্রজেক্ট (এসসিইএমপি)। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প ‘স্ট্রেংথেনিং পাবলিক অডিট দ্রু ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড ক্যাপাসিটি এনহেঞ্চমেন্ট (এসপিএডিটিইসি) এবং ‘স্ট্রেংথেনিং ডোমেস্টিক রেভিনিউ মোবিলাইজেশন প্রজেক্ট (এসডিআরএমপি) প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
অর্থনীতি
দেশে প্রথমবারের মতো গুগল পে চালু হচ্ছে আজ

বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হতে যাচ্ছে গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা ‘গুগল পে’। আজ মঙ্গলবার (২৪ জুন) এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সেবাটির উদ্বোধন করবেন।
গুগল, মাস্টারকার্ড ও ভিসার সহায়তায় সেবা চালু করছে সিটি ব্যাংক। এটি হতে যাচ্ছে গুগল পের সঙ্গে যুক্ত হওয়া দেশের প্রথম ব্যাংক।
প্রথম ধাপে শুধু সিটি ব্যাংকের মাস্টারকার্ড ও ভিসা কার্ডধারীরা তাদের কার্ড গুগল ওয়ালেটে যুক্ত করে গুগল পে ব্যবহার করতে পারবেন। পরে অন্য ব্যাংকও যুক্ত হলে সে সুযোগ আরও প্রসারিত হবে।
গুগল পে ব্যবহার করে গ্রাহকেরা দেশে বা বিদেশে যে কোনো পয়েন্ট অব সেল (POS) টার্মিনালে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ট্যাপ করে নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত এবং নিরাপদ লেনদেন করতে পারবেন। এতে আলাদা করে কার্ড বহনের প্রয়োজন হবে না।
সেবাটি ব্যবহারের জন্য গ্রাহকের একটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন থাকতে হবে এবং গুগল পে অ্যাপ ডাউনলোড করে সিটি ব্যাংকের কার্ড যুক্ত করতে হবে। এরপর যে কোনো দোকান বা রেস্তোরাঁয় স্মার্টফোন ট্যাপ করেই অর্থ পরিশোধ সম্ভব হবে।
গুগল পে লেনদেনে কোনো ফি নেয় না এবং কার্ডের মূল তথ্যের পরিবর্তে একটি ‘টোকেন’ ব্যবহার করে গ্রাহকের তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
অর্থনীতি
আইএমএফের দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য এক দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ ছাড় করেছে। সংস্থাটির বোর্ড সভায় ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়।
আর এর মধ্যদিয়ে দুই কিস্তিতে বাংলাদেশ আইএমএফের কাছ থেকে ১৩০ কোটি ডলার পাচ্ছে। এর আগে তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফের সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠক কিস্তি ছাড় করা হয়।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) এ কিস্তি রিজার্ভের যোগ হতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এতে বেড়ে যাবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় আইএমএফের বোর্ড বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আইএমএফ শিগগিরই বিষয়টি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত মোট রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার, যা বিপিএম ৬ অনুযায়ী ২১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন। নতুন ঋণ যোগ হওয়ায় রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়াবে ২৮ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারে।
এদিকে, আইএমএফ জুনে নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভের (এনআইআর) লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ২০ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। তবে সরকারের অনুরোধে তা কমিয়ে ১৮ বিলিয়নের নিচে নামানো হয়। ঋণ ছাড়ের ফলে বর্তমানে এনআইআর দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার, যা সংশোধিত লক্ষ্য পূরণে সহায়ক।
আইএমএফের শর্ত না মানায় ঋণের অর্থ ছাড়ের বিষয়টি গত ডিসেম্বর থেকে ঝুলে ছিল। দরকষাকষি করছিল বাংলাদেশ ও দাতা সংস্থাটি। এতে কোনো পক্ষই চুক্তি থেকে একেবারে সরে আসেনি। অবশেষে গত মে মাসে সমঝোতা হয়। যার আলোকে আইএমএফ ঋণের দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাবটি নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়।
বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলার জন্য সহায়ক হিসাবে ২০২২ সালে আইএমএফের কাছে ঋণ সহায়তা চায় বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ কঠিন শর্ত আরোপ করে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ওই বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনেই ঋণের প্রথম কিস্তি ছাড় করে দাতা সংস্থা আইএমএফ।
অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে ২৬.৮২ বিলিয়ন ডলার

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ আরও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, সোমবার (২৩ জুন) পর্যন্ত দেশের মোট (গ্রস) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার ৬৮২ কোটি ৩২ লাখ ডলার বা ২৬ দশমিক ৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্দেশিত হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী, এ সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ১৭৫ কোটি ডলার বা ২১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত রোববার (১৫ জুন) পর্যন্ত দেশের মোট (গ্রস) রিজার্ভ ছিল প্রায় ২ হাজার ৬১৫ কোটি ডলার বা ২৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। আর আইএমএফের নির্দেশিত হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী, এ সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৮৬ কোটি ৩৮ লাখ ডলার বা ২০ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।
তার আগে গত ২৭ মে পর্যন্ত দেশের মোট (গ্রস) রিজার্ভ ছিল প্রায় ২ হাজার ৫৮০ কোটি ডলার বা ২৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। আইএমএফের নির্দেশিত হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী, এ সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৬ কোটি ২২ লাখ ডলার বা ২০ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার।
গত ২২ মে পর্যন্ত দেশের মোট (গ্রস) রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫৬৪ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার বা ২৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। আর বিপিএম৬ অনুযায়ী, এ সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার বা ২০ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।
দেশের নিট (প্রকৃত রিজার্ভ) রিজার্ভ নির্ধারণ করা হয় বিপিএম৬ মানদণ্ড অনুসারে। যেখানে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিয়ে প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ নিরূপণ করা হয়।
চলতি জুন মাসের প্রথম ২১ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় দুই বিলিয়ন (১৯৯ কোটি) ডলার রেমিট্যান্স। টাকায় এর পরিমাণ প্রায় ২২ লাখ ৪ হাজার ২৭৮ কোটি (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। আর প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি ডলার বা ১১৫৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের জুন মাসের প্রথম ২১ দিনে ১৯২ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। আর চলতি মাস জুনের প্রথম ২১ দিনে এসেছে ১৯৯ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি বছরের একই সময়ে ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি এসেছে। শতকরা হিসাবে চার শতাংশ বেশি এসেছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে চলতি মাস জুনের ২১ তারিখ পর্যন্ত মোট ২৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতি
বাজেট সহায়তা হিসেবে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিলো এআইআইবি

ক্লাইমেট রেসিলেন্স ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি)। দেশীয় মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২.২০ টাকা ধরে)। এই ঋণ মূলত বাজেট সহায়তা হিসেবে ব্যবহার হবে।
সোমবার (২৩ জুন) বাংলাদেশ ও এআইআইবির সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মিরানা মাহরুখ এআইআইবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রজত মিশ্রা ঋণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এ কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো পরিবেশের পরিবর্তন প্রতিরোধকল্পে মজবুত ভিত্তি তৈরি। জলবায়ু নীতিমালা সংস্কারের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অভিযোজন এবং প্রশমনমূলক কার্যক্রমকে আরও অগ্রসর করা। যাতে টেকসই, সহনশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করে। গৃহীত এ ঋণ পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৫ বছরে পরিশোধযোগ্য। ঋণের সুদের হার এককালীন ০.২৫ শতাংশ পরিশোধ করা হবে।
কাফি