অর্থনীতি
দীর্ঘ ছুটিতে এটিএম বুথে টাকার সংকট, ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত চলছে টানা ১০ দিনের ছুটি। এই ছুটির সময় ব্যাংকগুলোও বন্ধ রয়েছে। ফলে নগদ টাকা তোলার একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে এটিএম বুথ। কিন্তু ঈদের এই লম্বা ছুটিতে বুথগুলোতেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা। নগদ টাকা তুলতে গিয়ে গ্রাহকরা পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে।
বুধবার (১১ জুন) সকালে রাজধানীর বংশাল এলাকার বাসিন্দা রহমান জরুরি প্রয়োজনে টাকা তুলতে যান ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি বুথে। সেখানে গিয়ে দেখেন, মেশিনে কোনো টাকা নেই। এরপর আশপাশের আরও চারটি বুথ ঘুরেও একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন তিনি। অবশেষে নিরূপায় হয়ে এক বন্ধুকে ফোন করে নগদ টাকা ধার নিতে বাধ্য হন।
তিনি বলেন, আমি হাসপাতালে এক আত্মীয়কে ভর্তি করাতে যাচ্ছিলাম। নগদ টাকা দরকার ছিল। একের পর এক বুথ ঘুরেও টাকা তুলতে পারিনি। সময়টা খুবই সংকটপূর্ণ ছিল’ হতাশ কণ্ঠে বলেন রহমান।
ঈদকে ঘিরে এবার টানা ১০ দিনের ছুটি পড়ায় ব্যাংক লেনদেন বন্ধ রয়েছে। ফলে গ্রাহকরা নির্ভর করছেন এটিএম বুথের ওপর। কিন্তু বেশিরভাগ বুথেই নেই পর্যাপ্ত টাকা। অনেক জায়গায় ‘নো ক্যাশ’ বা ‘আউট অব সার্ভিস’ সাইন ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
ধানমণ্ডির একটি পোশাক কারখানার কর্মী রুনা আক্তার জানান, বোনকে জরুরি টাকা দেব এজন্য বুথে টাকা তুলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কয়েকটা বুথ ঘুরেও টাকা পাইনি। পরে বাসে করে মিরপুর গিয়ে টাকা তুলেছি। এতে সময় ও ভাড়া দুটোই বেশি খরচ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ২৯ মে সার্কুলার দিয়ে ঘোষণা দেয়, ঈদুল ফিতরের আজহার ছুটিতে গ্রাহকদের নির্বিঘ্নে আর্থিক লেনদেনের সুযোগ দিতে দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে তাদের এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা সরবরাহ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি বছর ঈদের আগে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এমন নির্দেশনা দেয়, যেন বুথগুলোতে পর্যাপ্ত টাকা মজুত রাখা হয় এবং সার্বক্ষণিক রিফিলের ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায় না।
ছুটির মধ্যে এটিএম বুথে টাকা না থাকায় গ্রাহকদের ভোগান্তি নিয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় বেশ কিছু ব্যাংকের কর্মকর্তার সঙ্গে। তারা জানান, এটিএম বুথ সাধারণত দুইভাবে পরিচালিত হয়—একটি হলো ব্যাংক শাখার সঙ্গে থাকা বুথ, অন্যটি আলাদা বা স্বাধীন বুথ। শাখা–সংলগ্ন বুথগুলো পরিচালিত হয় সেই শাখার মাধ্যমে। ঈদের ছুটিতে গত বৃহস্পতিবার ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব বুথে নতুন করে টাকা জমা দেওয়া যায়নি, কারণ শাখার সব কর্মকর্তা ছুটিতে ছিলেন। তবে কিছু ব্যাংক বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে শুধুমাত্র এটিএমে টাকা ভরার জন্য কিছু কর্মকর্তাকে দায়িত্বে রেখেছে। যার ফলে কিছু বুথে টাকা থাকলেও বেশির ভাগই ছিল খালি।
কিছু এটিএম বুথে ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) রয়েছে, যেখানে টাকা জমা দেওয়া ও তোলা—দুই সুবিধা থাকে। তবে এসব বুথেও টাকা না থাকায় ভোগান্তি বাড়ছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, কোনো গ্রাহক সিআরএম বুথে টাকা জমা দিলেই পরক্ষণেই অন্য গ্রাহক সঙ্গে সঙ্গে তা তুলে নিচ্ছেন। জমা পড়া টাকাতেই চলছে লেনদেন। ফলে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। কিছু গ্রাহক সেবা পেলেও তা খুবই সীমিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আমরা আগেই নির্দেশনা দিয়েছি যাতে প্রতিটি বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখা হয়। তবে মাঠপর্যায়ে অনেক ব্যাংক সেই নির্দেশনা মানছে না বলে অভিযোগ আসছে।
গ্রাহক ভোগান্তি কমাতে বিশেষ করে ঈদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রতিটি বুথে সার্বক্ষণিক নজরদারি ও জরুরি ভিত্তিতে রিফিল টিম সক্রিয় রাখার দাবি জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
কাফি

অর্থনীতি
অর্থ পাচারে অভিযুক্তদের সঙ্গে সমঝোতার কথা ভাবছে সরকার

বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালীদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতায় পৌঁছানোর কথা বিবেচনা করছে বাংলাদেশ। সরকারের সম্পদ পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ঢাকায় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আর্থিক সমঝোতা অন্যতম বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ পুনরুদ্ধারে ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় তিনি ১০ কোটি ডলার পর্যন্ত অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্য রাখছেন।
গত আগস্টে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, বিগত সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ থেকে বহু বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। সাক্ষাৎকারে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কথিত কার্যকলাপের প্রকৃতির ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ নির্ভর করবে।’
তার ভাষায়, ‘যদি আইন লঙ্ঘনের প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে হালকা ধরনের হয় তবে আমরা দেওয়ানি মামলা করব এবং সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আর্থিক সমঝোতার কথা বিবেচনা করা হবে। তবে সম্ভাব্য কোন ব্যক্তিরা এ প্রক্রিয়ার আওতায় আসতে পারেন সে বিষয়ে কোনো উদাহরণ দেননি তিনি।
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার পরিবারসহ আগের সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১১টি তদন্ত শুরু করেছে। বর্তমান প্রশাসন কিছু অভ্যন্তরীণ ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করেছে এবং শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশ থেকে পাচার করা সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায় বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করছে।
পাচার করা অর্থ শনাক্ত ও পুনরুদ্ধারে প্রচেষ্টা এগিয়ে নিতে মুহাম্মদ ইউনূস এ সপ্তাহে যুক্তরাজ্য সফরকালে আরও উৎসাহব্যঞ্জক সহযোগিতা কামনা করেন।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা চুরি হওয়া অর্থ। আইনগতভাবে এবং আমি বলব নৈতিকভাবেও যুক্তরাজ্য সরকারের উচিত এই অর্থ শনাক্ত করতে সহায়তা করা।’
সরকারের নির্দেশনায় তৈরি ও গত ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত একটি অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে অনুমান করা হয়, শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের সাবেক কর্মকর্তা আহসান মনসুর ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মিত্ররা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ দখল করে জাল ঋণ নিয়ে কিংবা সরকারি অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো থেকে আত্মসাৎ করে দেশের বাইরে অর্থ পাচার করেছেন।
মনসুর জানান, তার দল আন্তর্জাতিক মামলা পরিচালনায় অর্থ জোগানো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং বাংলাদেশে এসে সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে। মামলা পরিচালনায় অর্থের জোগান দেয়া সংস্থাগুলোর খরচের মধ্যে রয়েছে আইনজীবীর ফি, আদালতের ব্যয় ইত্যাদি। বিনিময়ে মামলায় সফল হলে সমঝোতার ভিত্তিতে বা পুরস্কার হিসেবে কিংবা আগেই নির্ধারণ করা অর্থ গ্রহণ করে থাকে তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘আমরা লিটিগেশন ফান্ডিংয়ের দিকে নজর দিচ্ছি এবং এ নিয়ে খুবই ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। আমরা চাই, যতটা সম্ভব অর্থ এ উৎস থেকে জোগাড় করা।’
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক লিটিগেশন ফান্ডার অমনি ব্রিজওয়ে জানিয়েছে, তাদের নির্বাহীরা এ বছরের প্রথমার্ধে ঢাকায় সফর এবং আহসান মনসুরসহ ১৬টির বেশি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করেছেন।
অমনি ব্রিজওয়ের এনফোর্সমেন্ট বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উইগার উইলিঙ্গা বলেন, ‘আমরা, বিশেষ করে বিদেশে অবৈধভাবে পাচার করা অর্থ সংশ্লিষ্ট খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ব্যাংক খাতকে সহায়তা করতে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছি।’
অর্থনীতি
পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ব্রিটিশ বাণিজ্য মন্ত্রী এবং বোর্ড অব ট্রেডের সভাপতি জনাথন রেনল্ডস। বুধবার (১১ জুন) ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এই সাক্ষাৎ হয়। সাক্ষাৎকালে তারা বন্ধুত্বপূর্ণ দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও বাণিজ্য বৃদ্ধির কৌশল এবং বাংলাদেশে ব্রিটিশ বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।
রেনল্ডস বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া অবৈধ অর্থ পুনরুদ্ধারে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগের প্রতি যুক্তরাজ্যের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন, বিশেষ করে ব্যাংক খাত সংস্কার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখা এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার বিষয়গুলো।
বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) শুরু করার প্রস্তাব দেন। তিনি জানান, ঢাকা এরই মধ্যেই জাপানসহ একাধিক দেশের সঙ্গে এফটিএ আলোচনা শুরু করেছে।
বৈঠকে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্যদূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন এবং ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক অংশগ্রহণ করেন।
অর্থনীতি
রাইস কুকার-গ্যাস স্টোভ উৎপাদনে শতভাগ কর অব্যাহতি

দেশে ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাতে উৎপাদন ও রপ্তানি ক্রমেই বাড়ছে। মেইড ইন বাংলাদেশ ট্যাগযুক্ত পণ্য কেবল দেশেই নয়, পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশেও। হোম অ্যাপ্লায়েন্সের পণ্যে বিনিয়োগ আকর্ষণ ও বাজার সম্প্রসারণে ২০২১ সালে উৎপাদন পর্যায়ে শর্ত সাপেক্ষে শতভাগ কর অব্যাহতি দেয় সরকার। এবার এই তালিকায়যুক্ত হয়েছে রাইস কুকার ও গ্যাস স্টোভ।
অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যে হিসাবে ওই দুই পণ্যে শতভাগ কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা ২০৩০ সাল পর্যন্ত চলবে। সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে ওয়াশিং মেশিন, ব্লেন্ডার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেক্ট্রিক সেলাই মেশিন, ইন্ডাকশন কুকার, কিচেনহুড ও কিচেন নাইভসের পাশাপাশি রাইস কুকার ও গ্যাস স্টোভ অব্যাহতির তালিকায় যুক্ত করা হয়। যা আগামী ১ জুলাই থেকে যা কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
এনবিআর সূত্র বলছে, দেশীয় উৎপাদনকারী ও দেশে বিনিয়োগ উৎসাহ দিতে ২০২১ সালে হাউসহোল্ড বা গৃহস্থালি পণ্য উৎপাদনে ১০ বছরের জন্য শতভাগ কর অব্যাহতি দেয় এনবিআর। ওই বছরের ৩ জুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে, ওয়াশিং মেশিন, ব্লেন্ডার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেক্ট্রিক সেলাই মেশিন, ইন্ডাকশন কুকার, কিচেনহুড ও কিচেন নাইভস উৎপাদন হতে অর্জিত আয়ের উপর আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ অনুযায়ী শর্তা সাপেক্ষে ১০ বছরের জন্য সম্পূর্ণ কর অব্যাহতি দেওয়া হয়। অব্যাহতির ক্ষেত্রে পাঁচটি শর্ত দেওয়া রয়েছে।
শর্তের মধ্যে রয়েছে-উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর ১৮ ধারার অধীন নিবন্ধিত হতে হবে এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) কর্তৃক নিবন্ধিত হতে হবে।
দ্বিতীয়ত, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে আবশ্যিকভাবে তার নিজস্ব কারখানায় অন্যূন ৩০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করতে হবে।
তৃতীয়ত, এই প্রজ্ঞাপনের অধীন অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানকে আয়কর অধ্যাদেশের বিধানাবলি পরিপালন করতে হবে।
চতুর্থত, এই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন হতে অর্জিত আয় ব্যতিরেকে অন্যান্য সকল প্রকার আয়ের ক্ষেত্রে এই প্রজ্ঞাপনের সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।
পঞ্চমত, এসব শর্তাবলির পরিপালন এবং তফসিল অনুযায়ী অনুমোদন সাপেক্ষে ২০২১ সালের ১ জুলাই হতে ২০৩০ সালের ৩০ জুনের মধ্যে ওয়াশিং মেশিন, ব্লেন্ডার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেক্ট্রিক সেলাই মেশিন, ইন্ডাকশন কুকার, কিচেনহুড এবং কিচেন নাইভস-এ সকল পণ্যের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করেছে এমন কোম্পানি এই প্রজ্ঞাপনের সুবিধা প্রাপ্য হবে।
তফসিল অনুযায়ী, প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত অব্যাহতির সুযোগ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে এই প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত শর্তাবলি পরিপালন করার হবে মর্মে নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা প্রদানপূর্বক আনুষঙ্গিক দলিলাদিসহ এনবিআরে আবেদন করতে হবে। এছাড়া কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্দিষ্ট আবেদন ফর্মের স্থানে প্রত্যয়ন এবং সই করে দুই কপি এনবিআরে দাখিল করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোম্পানির আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটি কোম্পানির সব তথ্য যাচাই ও পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দেবেন। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানকে কর অব্যাহতি দেওয়া হবে।
কমিটির আহ্বায়ক হবেন এনবিআরের প্রথম সচিব (করনীতি), সদস্য সচিব দ্বিতীয় সচিব (কর আইন-১)। এছাড়া সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনার ও যেকোনো প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে থাকবেন। তবে প্রজ্ঞাপন সংশোধনের মাধ্যমে কমিটিতেও সংশোধন আনা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হবে প্রথম সচিব (কর আপীল ও অব্যাহতি) ও সদস্য সচিব দ্বিতীয় সচিব (কর অব্যাহতি)। তবে সদস্য পদে পরিবর্তন আনা হয়নি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, বাংলাদেশের কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানি তালিকায় রয়েছে রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এলইডি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন, ব্লেন্ডার, রাইসকুকার, গ্যাস স্টোভ, ইন্ডাকশন কুকার, ফ্যান, হট প্লেট, রেফ্রিজারেটর কম্প্রেসর ও কম্প্রেসরর তৈরির যন্ত্রাংশ। খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারের কাছ থেকে রপ্তানি প্রণোদনা ও অন্যান্য নীতি সহায়তা পেলে দেশীয় ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ পোশাক শিল্পের মতো আরেকটি বড় রপ্তানি খাত হয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
কাফি
অর্থনীতি
কাগজে চামড়ার দাম বাড়লেও বাজারে বাড়েনি, হতাশ মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে রাস্তায় ফেলে রাখা বা পুঁতে ফেলার ঘটনা গত বছরের তুলনায় কম হলেও, কাঁচা চামড়ার ন্যায্য দাম না পাওয়ার অভিযোগ এবারও ছিল তীব্র। ছোট মৌসুমি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, ফড়িয়াদের কাছে জিম্মি হয়ে তারা কম দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।
অন্যদিকে, আড়তদারেরা বলছেন, লবণ মাখানো ছাড়া কাঁচা চামড়ার নির্ধারিত কোনো দাম নেই। অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী না জেনে নিম্নমানের চামড়া কিনেছেন বলেই তারা কাঙ্ক্ষিত দামে বিক্রি করতে পারেননি। তবে আড়তের মালিকদের দাবি, এমন ঘটনা খুব কমই ঘটেছে।
চামড়ার নির্ধারিত ও প্রকৃত বাজার মূল্য:
এ বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ৬০-৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা গত বছর ছিল ৫৫-৬০ টাকা। ঢাকার বাইরে এই দাম ছিল ৫৫-৬০ টাকা (গত বছর ৫০-৫৫ টাকা)। খাসির লবণযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট ২২-২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০-২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এছাড়া, ঢাকায় কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে সর্বনিম্ন ১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, ঢাকায় মাঝারি আকারের গরুর ২৫ বর্গফুটের একটি লবণযুক্ত চামড়ার দাম হওয়ার কথা ছিল ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬২৫ টাকা।
তবে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, পুরান ঢাকার পোস্তাসহ বিভিন্ন এলাকার তথ্য অনুসারে, ঈদের দিন লবণ ছাড়া বড় ও মাঝারি গরুর কাঁচা চামড়া বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায়। তুলনামূলক ছোট ও কিছুটা খারাপ মানের চামড়ার দাম ছিল মাত্র ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। ঢাকার বাইরে এই দাম আরও কম ছিল।
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা হতাশ:
সরকার নির্ধারিত দাম না পেয়ে খুলনা, যশোর, ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়েছেন। ঝিনাইদহের মৌসুমি কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী ফিজার মোল্লা বলেন, “আড়তদারেরা মাত্র ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় চামড়া কিনছেন। নির্দিষ্ট কিছু ব্যবসায়ীর হাতে চামড়ার ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ থাকায় আমরা সিন্ডিকেটের ফাঁদে পড়েছি।”
ফেনীর পরশুরামে কোরবানির গরুর চামড়া নদীতে ফেলার অভিযোগে রোববার রাতে শুক্কুর আলী (৪৩) নামে এক মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। শুক্কুর আলী জানিয়েছেন, ৬০০ টাকা দিয়ে চামড়া কিনে বিক্রি করতে না পারায় তিনি তা নদীতে ফেলে দিয়েছেন। দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায়, আর ছাগলের চামড়া মাত্র ১০ টাকায়। অনেকে ছাগলের চামড়ার দাম না পেয়ে নদীতে ফেলে দিয়েছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।
আড়তদার ও সরকারের বক্তব্য:
ঢাকার পোস্তা এলাকায় কাঁচা চামড়ার আড়তদারদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সভাপতি মঞ্জুরুল হাসান বলেন, “চামড়ার দাম না পাওয়ার মূল কারণ সময়মতো লবণ দিয়ে সংরক্ষণ না করা। এতে অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট চামড়ার জন্য আড়তদারেরা ভালো চামড়ার দাম দেবেন কীভাবে?”
ঢাকার আড়তদারদের দাবি, লবণ ছাড়া ভালো মানের এক পিস চামড়া ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় কেনেন তাঁরা। লবণযুক্ত হলে কিনবেন ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়।
মৌসুমি ব্যবসায়ীদের চামড়ার দাম না পাওয়ার বিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “আমরা যে দাম নির্ধারণ করেছিলাম, তা লবণসহ চামড়ার দাম। অভিজ্ঞতাহীন কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী চামড়া নিয়ে আধা পচা করে ফেলছে। আধা পচা চামড়া ৭০০-৮০০ টাকা বিক্রি হলেও তো অনেক বেশি।”
কেনাবেচা ও সংরক্ষণ পরিস্থিতি:
সারা দেশ থেকে ঢাকায় কাঁচা চামড়া পরিবহনে সরকার ১০ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা মেনে গতকাল পর্যন্ত ঢাকার বাইরে থেকে পোস্তার আড়ত কিংবা সাভারের ট্যানারিগুলোতে চামড়া আসেনি। বিএইচএসএমএ সূত্রে জানা যায়, ঈদের দিন থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চার দিনে ঢাকার পোস্তায় মাত্র ৮০ হাজার পিস চামড়া সংরক্ষণ করা হয়েছে। আড়তদারেরা রাজধানীর ভেতর থেকে কাঁচা চামড়া কিনে নিজেরা লবণ দিয়ে এগুলো সংরক্ষণ করেছেন। সরকার-নির্ধারিত সময় শেষে ১৭ তারিখ থেকে লবণযুক্ত চামড়া কেনা শুরু হবে। আড়তদারদের পাশাপাশি ট্যানারিগুলোও নিজেদের চামড়া কেনা শুরু করবে।
২৫ লাখের বেশি চামড়া সংরক্ষণ:
গত বছর দেশে মোট ১ কোটি ৪ লাখ গরু, ছাগল ও মহিষ কোরবানি হয়েছিল। এ বছর তা কিছুটা কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার কোরবানির তথ্য সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। এবার দুই সিটিতে মাত্র ৬ লাখ ৩২ হাজার ৮৩৪টি কোরবানি হয়েছে, যা গত বছরের অর্ধেক।
তবে, কোরবানির সংখ্যা যা-ই হোক, এবার ট্যানারির মালিকদের ৮০-৯০ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে। এর বিপরীতে সরকারের দেওয়া লবণ দিয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ২৫ লাখের বেশি চামড়া সংরক্ষণের হিসাব পাওয়া গেছে।
তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং কোরবানির ৭ লাখ ৭৪ হাজার গরু, মহিষ ও ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করেছে। খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ৩ লাখ ২৬ হাজার ৭৯৪ পিস গরু, মহিষ ও ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া বরিশাল বিভাগে ১ লাখ ৬৭ হাজার, রংপুর বিভাগে ২ লাখ ৮১ হাজার, রাজশাহী বিভাগে ২ লাখ ৮৭ হাজার এবং সিলেট বিভাগে ২ লাখ ৯ হাজার চামড়া সংরক্ষণ করা হয়েছে। সাভারের ট্যানারিপল্লিতে ৩ লাখ ৮৬ হাজার চামড়া সংরক্ষণ করা হয়েছে।
দাম নির্ধারণ বর্গফুটে, বিক্রি পিসে:
চামড়ার দাম বর্গফুটে নির্ধারণ হলেও বিক্রি হয় সাধারণত পিস হিসাবে। মৌসুমি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে আড়তদার ও ট্যানারির মালিক সবাই পিস হিসাবেই চামড়া কেনেন। এক্ষেত্রে ছোট-বড় চামড়ার দামে কিছুটা পার্থক্য হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পোস্তার একজন আড়ত মালিক জানান, “আমরা দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসা করছি। চামড়া দেখলে অনুমান করতে পারি কত ফুট হবে। সে অনুসারেই দামদর করে চামড়া কিনে থাকি। সাধারণত ২ লাখ টাকা দামের গরুর চামড়া ২৭ থেকে ২৮ বর্গফুট হয়। লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হলে তার দাম আসে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা।”
অর্থনীতি
বাণিজ্য উত্তেজনার প্রভাবে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমবে: বিশ্বব্যাংক

বিশ্বব্যাংক ২০২৫ সালের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ পয়েন্ট কমিয়ে দিয়েছে। সংস্থাটির মতে, এ বছর বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৩ শতাংশ হবে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) সংস্থাটির ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট’ বা ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ এবং অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে প্রায় সব অর্থনীতির জন্যই একটি বড় ‘প্রতিবন্ধকতা’ তৈরি হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তাদের মাত্র ৬ মাস আগের পূর্বাভাসের তুলনায় বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে। সংস্থাটির পূর্বাভাসে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপ এবং উদীয়মান ৬টি অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে।
সংস্থাটির মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে একের পর এক শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যকর শুল্কহার ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে দুই অঙ্কে উঠেছে, যা গত প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে সর্বোচ্চ। চীনসহ অন্যান্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক বৃদ্ধির পাল্টা জবাব দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক ট্রাম্পের অনিয়মিত বাণিজ্যনীতির কারণে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করছেন, শুল্ক বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে এবং এখনো অনুমোদন না পাওয়া করছাড় নীতির মাধ্যমে পুষিয়ে নেওয়া যাবে।
বিশ্বব্যাংক সরাসরি মন্দার পূর্বাভাস না দিলেও জানিয়েছে, চলতি ২০২৫ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে এমন এক দুর্বল অবস্থায় নামবে, যা ২০০৮ সালের পর মন্দা ব্যতিরেকে সবচেয়ে দুর্বল। আগামী ২০২৭ সাল নাগাদ বৈশ্বিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) গড় প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ, যা ১৯৬০-এর দশকের থেকে কোনো একক দশকে সবচেয়ে ধীরগতির প্রবৃদ্ধি।