অন্যান্য
টিউলিপ সিদ্দিকের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে মুখ খুললেন প্রেস সচিব

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তা হাতে পেয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দফতর। মঙ্গলবার (১০ জুন) লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, “আমরা একটি চিঠি পেয়েছি। এটি একটি আইনগত বিষয়, এবং আইনিভাবেই এর সমাধান করা হবে।”
প্রেস ব্রিফিংয়ে লন্ডনের এক সাংবাদিক টিউলিপ সিদ্দিকের পাঠানো চিঠি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে শফিকুল আলম এই মন্তব্য করেন।
তিনি আরও জানান, টিউলিপ সিদ্দিক অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন না।
এর আগে রোববার (৮ জুন) টিউলিপ সিদ্দিকের চিঠি পাঠানোর খবর বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর সোমবার (৯ জুন) চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে পৌঁছান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সফরের আগেই টিউলিপ তাকে হাউস অব কমন্সে মধ্যাহ্নভোজ বা বিকেলে চা পানের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি পাঠান।
তবে রোববার সংবাদমাধ্যমে প্রেস সচিব বলেছিলেন, তখন পর্যন্ত তারা চিঠিটি হাতে পাননি।
এমএস

অন্যান্য
স্ত্রীকে ভালোবাসা মানে জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা

শেক্সপিয়র থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত: সকল স্বামীর জন্য চিরন্তন ভালোবাসার পাঠ
‘She is mine own, And I as rich in having such a jewel As twenty seas, if all their sands were pearl…’— উইলিয়াম শেক্সপিয়র (Othello)
স্ত্রীকে ভালোবাসা মানে কি কেবল একটি নাম, একটি সম্পর্ক, একটি সামাজিক চুক্তি? না, তা তো নয়। স্ত্রীকে ভালোবাসা মানে—একটি ঘুমন্ত শহরের মধ্যে জেগে থাকা একটি আলোকে ভালোবাসা, যে আলোটা জানালার কাচে পড়ে থাকে যখন আপনি দেরিতে বাড়ি ফেরেন। ভালোবাসা মানে সেই হাতজোড়া, যেগুলো সারাদিনের কাজের ক্লান্তি সত্ত্বেও আপনার জামাটা গুছিয়ে রাখে।
স্ত্রীকে ভালোবাসা মানে—একটি ঘরের নিঃশব্দতা ভালোবাসা, যে ঘরটি প্রতিদিন আপনাকে নিজের মতো করে গ্রহণ করে, ভালোবাসা মানে প্রতিদিনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সেই অদেখা স্নেহকে চিনে ফেলা, যা হয়তো কখনও উচ্চারিত হয় না—তবু জানালায় শুকিয়ে রাখা আপনার ভেজা শার্টটাই বলে দেয়, সে মানুষটি আপনার কথা ভাবে।
তবু, এই সমাজে, আমাদের রিকশার আড্ডায়, চায়ের দোকানে, কিংবা বন্ধুর বিয়েতে গিয়ে পুরুষেরা বলে— ‘বউয়ের কারণে মুডটাই অফ’, ‘এই সংসার কি আর ভালো লাগে?’ ‘একঘেয়ে! যেন জীবনটা আটকে গেছে…’
কিন্তু আমরা কি একবারও চুপ করে ভেবেছি? যে নারীটি আপনাকে এই আটকে যাওয়া জীবনের মাঝেও হাসতে শেখায়, যিনি রাতে পাশে না পেলে ঘুমাতে পারেন না, যিনি আপনার প্রতিটি অভিমান মুখ দেখে বুঝে ফেলেন— তাকে কি আমরা ভালোবাসার মতো ভালোবাসতে পেরেছি?
এই লেখা তাদের জন্য নয় যারা ‘ভালোবাসি’ বলে ভোলায়, এই লেখা তাদের জন্য—যারা ভিতরে ভিতরে শুকিয়ে গেছেন, ভুলে গেছেন ভালোবাসা মানে কী।
একবার শুধু ফিরে তাকান—নতুন করে নয়, পুরনো চোখেই, কিন্তু মন দিয়ে। ভালোবাসা সেখানে ছিল, আছে—শুধু আপনি অনেকদিন দেখেননি।
এই লেখার প্রতিটি শব্দ যেন আপনার হৃদয়ে পড়ে- ঠিক সেইভাবে, যেভাবে আপনার স্ত্রী একদিন চুপচাপ আপনার পকেটে লুকিয়ে রেখেছিল একটা ছোট চিরকুট: “যেও না, আজ একটু আগে ফিরো…”
বিচিত্র জগতে এক নারী: কবিদের চোখে স্ত্রী
‘যে স্বামী সকালে ঘুম থেকে উঠে স্ত্রীকে কমপক্ষে পাঁচ মিনিট জড়িয়ে ধরে রাখে, তাঁর কর্মজীবনে বিপদের ঝুঁকি কমে।’ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
‘বউয়েরা ঘরের লক্ষ্মী। এদের যত বেশি ভালোবাসা দেওয়া যায়, সংসারে তত বেশি শান্তি আসে।’ — হুমায়ুন আহমেদ
‘স্ত্রীকে সময় দিন, না হলে বিশ্বাস করুন—সংসার আর যুদ্ধক্ষেত্র মনে হবে না।’ — সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
‘সেই পুরুষই কাপুরুষ, যে স্ত্রীর কাছে প্রেমিক হতে পারেনি।’ — কাজী নজরুল ইসলাম
‘প্রতিদিন স্ত্রীকে একবার ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ বললে মন থেকে সব দুশ্চিন্তা উধাও হয়ে যায়।’ — সত্যজিৎ রায়
‘মন ভালো রাখতে স্ত্রীকে ফেসবুক, ফোনবুক, সব একাউন্টের পাসওয়ার্ড দিয়ে দিন। নিরাপত্তা আর ভালোবাসা—দুয়োটাই বাড়বে।’ — মার্ক জুকারবার্গ
‘মেয়েদের মনে ভালোবাসা আর অভিমান—দু’টোই প্রবল। অভিমানকে কখনো ভালোবাসার চেয়ে বড় করে দেখবেন না।’ — ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
‘একটি শিশুকে জন্ম দিতে মা যে কষ্ট সহ্য করে, তা বাবা সারা জীবন ভালোবেসেও শোধ করতে পারে না।’ — জীবনানন্দ দাশ
ভালোবাসা—জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রতিজ্ঞা
‘মন দিয়ে ভালোবাসো যদি কাউকে—বিয়ে কর, কারণ ভালোবাসার মধ্যে রয়েছে শুধু ভালোবাসা।’— রহমান মৃধা
‘বারবার বিয়ে না করে—বিয়ে কর একবার, ভালোবাসো বারবার।’— রহমান মৃধা
যেখানে ক্লান্ত মানুষজন জীবনের একঘেয়েমি ভুলতে নতুন সম্পর্কে ঝাঁপিয়ে পড়ে, আমি সেখানে বলি—
একই মানুষকে নতুন করে ভালোবাসার মাঝেই আছে জীবনের সবচেয়ে গভীর রোমাঞ্চ। ভালোবাসা পুরোনো হয় না—ভালোবাসা প্রতিদিন নতুন হয়, যদি আপনি সত্যিই দেখতে জানেন। ভালোবাসা—সীমাহীন, নীরব এক প্রতিজ্ঞা (সুইডেন থেকেও শিখি)
“Att älska är inte att hitta någon att leva med, utan någon man inte kan leva utan.”
“ভালোবাসা মানে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া নয়, যার সঙ্গে বাঁচা যায়—ভালোবাসা হলো এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া, যার অভাবেই বাঁচা যায় না।” — সুইডিশ প্রবাদ
“Kärleken ser inte med ögonen, utan med själen.”
“ভালোবাসা চোখ দিয়ে দেখে না, দেখে আত্মা দিয়ে।” — শেক্সপিয়র (সুইডিশ অনুবাদ)
“Det finns inget vackrare än en man som älskar sin kvinna i tystnad, men med hela sitt hjärta.”
“নীরবে কিন্তু হৃদয়ের সমস্ত ভালোবাসা দিয়ে যে পুরুষ তার নারীকে ভালোবাসে, তার চেয়ে সুন্দর কিছু নেই।” — মারিয়ানা বাকুনদ
শেষ কথা
ভালোবাসা কেবল একটি আবেগ নয়—এটি প্রতিদিনের চর্চা। একটি নীরব প্রতিজ্ঞা, যা সময়ের সঙ্গে আরও গভীর, আরও মধুর হয়ে ওঠে।
স্ত্রীর মুখে হাসি ফোটানোর চেয়ে পবিত্র কাজ আর কিছু হতে পারে না—কারণ সেই হাসির মধ্যেই লুকিয়ে থাকে আপনার জীবনের সৌভাগ্য, সন্তুষ্টি ও সার্থকতা।
তাই বলি—ভালোবাসুন, শ্রদ্ধা করুন, প্রতিদিন নতুন করে কাছে টেনে নিন।
ভালোবাসা তখনই জীবন্ত থাকে, যখন তা নিঃশব্দে, নিঃশর্তে, প্রতিদিন একটু একটু করে দেওয়া হয়।
“ভালোবাসা কোনো দাবি নয়—ভালোবাসা শুধু নিজেকে নিঃশব্দে বিলিয়ে দেওয়া।” — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
“I do love nothing in the world so well as you—is not that strange?” — Much Ado About Nothing
ভালোবাসা সবসময়ই একটু “অদ্ভুত”। কিন্তু সেই অদ্ভুততাই তো জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সত্য।
রহমান মৃধা, সুইডেন প্রবাসী বাংলাদেশি, গবেষক, লেখক ও সাবেক পরিচালক, ফাইজার Rahman.Mridha@gmail.com
অন্যান্য
টোকাইয়ের মৃত্যু, জাতির আত্মা নিহত: শাসকের রাজনীতি বনাম শোষিতের লাশ

ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে দিনের আলোয় এক তরুণকে পাথর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হলো। শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে দেখেছে, কেউ এগিয়ে আসেনি। কেউ চিৎকার করেনি। এই নীরবতা শুধু আইন-শৃঙ্খলার নয়, এ এক জাতির আত্মার মৃত্যু। সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল—আলোচনায় সবার মুখে এক নাম: ‘টোকাই’।
কিন্তু আমার প্রশ্ন: কে মরেছে, কে মেরেছে—তা নয়। প্রশ্ন হলো: কেন বারবার মরছে এই শ্রেণিটাই? যে মরেছে, সে পথের মানুষ—দিন আনে দিন খায়। যার পেছনে নেই কোনো রাজনৈতিক পরিচয়, নেই কোনো আমলার ছায়া, নেই কোনো সাংবাদিকের কলম বা নেতার পৃষ্ঠপোষকতা। আর যারা মারছে? তারা হলো ক্ষমতার দালাল, রাজনীতির পেছনের অস্ত্রধারী বাহিনী। তাদের হাতে ছুরি থাকে, আর সেই ছুরির পেছনে থাকে রাষ্ট্রের নীরব অনুমোদন।
এদেশে যখন খুন হয় কেউ, যখন লাশ পড়ে থাকে রাস্তায়, তখন খেয়াল করুন—মৃতের নামের পাশে থাকে পরিচয় একটাই: “টোকাই”, “অজানা যুবক”, “কাজের ছেলে”, “ভবঘুরে”, “রিকশাওয়ালা”। কখনো কি শুনেছেন, কোনো মন্ত্রীর ছেলে রাস্তায় গুম হয়েছে? কোনো সচিবের মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে? কোনো জেনারেলের ভাগ্নে কুপিয়ে খুন হয়েছে? না—একবারও না। কারণ এই রাষ্ট্র, এই সমাজ ও এই বিচারব্যবস্থা অলিখিতভাবে ঘোষণা করেছে—“মরার অধিকার কেবল শোষিত শ্রেণির।” ঘটনার সময় মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটে আনসার ও নিরাপত্তাকর্মী ছিল। ফুটেজে দেখা যায়—তারা দাঁড়িয়ে ছিল, কিন্তু কিছুই করেনি।
পুলিশ পরে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। রিমান্ড দিয়েছে। মামলা হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—এই বিচার কাদের জন্য? আজ পর্যন্ত কয়টা টোকাইয়ের হত্যার বিচার শেষ হয়েছে?
রাষ্ট্র যখন প্রতিক্রিয়া দেখায় না, সেটি অবহেলা নয়—এটি এক সামষ্টিক নিষ্ঠুরতা।
এই টোকাইরা কারা?
তারা জন্ম নেয় বস্তিতে, ফুটপাথে, কোনো ঘূর্ণিঝড়ের রাতে বা কোনো অস্থির রাজনৈতিক সময়ে। তাদের ঠাঁই নেই স্কুলে, হাসপাতালের ওয়ার্ডেও ‘ভিআইপি রোগী’দের চাপে তারা জায়গা পায় না।
তবু তারা ব্যবহার হয়—
•মিছিলে ভাড়া খাটা শ্রমিক হিসেবে
•গ্যাং লিডারের ছায়া বাহিনী হিসেবে
•লাঠি হাতে স্লোগান দেওয়া পেটুয়া হিসেবে
•ভোট কারচুপির ‘ইতর’ হাতিয়ার হিসেবে
•পিকেটিং, চাঁদাবাজি, রাজনৈতিক অস্থিরতার ‘ইন্ধন’ হিসেবে তারা গুলি খায়, জেলে যায়, মরেও যায়। আর রাষ্ট্র কেবল দেখে—তামাশা। তবে সত্যিটা আরও নিষ্ঠুর।
এই দেশে ধর্ষণ হয় প্রতিদিন। কিন্তু ধর্ষণের শিকার হয়—
•গার্মেন্টস কর্মীর মেয়ে,
•কোনো পাহাড়ি কিশোরী,
•বাসার কাজের মেয়ে,
•পথে থাকা কিশোরী।
কিন্তু ধর্ষণ হয় না—
•পুলিশ কর্মকর্তার কন্যা,
•সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীর বোন,
•মন্ত্রীর মেয়ে,
•কোনো সচিবের আত্মীয়া।
এটা কি কাকতালীয়? না। এটা হলো এক নিষ্ঠুর সামাজিক চুক্তি—ক্ষমতাবান নিরাপদ, শোষিত অসহায়। তাদের শরীর স্পর্শের আগেই রাষ্ট্র প্রহরায় দাঁড়িয়ে যায়।
আর আমরা? আমরা দেখি, ক্যামেরা চালাই, পোস্ট দেই। আলোচনায় বলি—“কী ভয়াবহ!” কিন্তু প্রতিরোধ করি না। রাস্তায় দাঁড়াই না। জবাব চাই না। তাহলে আসল অপরাধী কারা? ছুরি চালানো ছেলেটি? না।
সবচেয়ে বড় অপরাধী—
•যারা দেখেছে, কিন্তু মুখ বন্ধ রেখেছে,
•যারা ক্যামেরা ধরেছে, কিন্তু বাঁধা দেয়নি,
•যারা জানে কারা এসব ঘটায়, তবুও চুপ থেকেছে,
• যারা দরিদ্রের রক্ত দিয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতা পোক্ত করে।
তারা রাষ্ট্রের সম্মানিত দানব। আর আমি? আমি নিজেও সেই অপরাধীদের একজন। আমি জানি কারা মারছে। জানি কারা ব্যবহার করছে। জানি কারা এই রাজনীতি পরিচালনা করে। তবুও প্রতিবাদ করিনি। মিছিল করিনি। জবাব চাইনি। শুধু লিখেছি, পড়েছি, চা খেতে খেতে আলোচনা করেছি। এভাবে জাতি বাঁচে না। আমরা গড়ে তুলেছি এক ভয়াবহ মানবিক দেউলিয়াপনার সমাজ যেখানে প্রতিবাদ বিলাসিতা, সহানুভূতি বিলুপ্ত, ন্যায়বোধ নিঃশেষ।
আমরা মানুষ নই, হেঁটে বেড়ানো যান্ত্রিক ক্যামেরা মাত্র—
যারা মৃত্যু দেখে ভিডিও করে, যারা আর্তনাদ শুনে মিম বানায়, যারা বিচার চাইলে বলে—“গেটআউট”। এই সমাজ শুধু ভয়ঙ্কর নয়, আত্মঘাতীও। এই রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নয়, এ এক প্রতিষ্ঠানিক খুনের কারখানা। আজ টোকাই মরেছে। আগামীকাল মরবে গার্মেন্টস কর্মী, তারপর কোনো প্রতিবাদী শিক্ষক, তারপর এক সাংবাদিক, তারপর আপনি। হ্যাঁ—আপনি।
কারণ রাষ্ট্র যখন কেবল গরিবদের মারতে অভ্যস্ত হয়ে যায়, তখন তার পরবর্তী শিকার হতে পারে যে কেউ। তাই বলছি— এই লেখা কোনো আবেগ নয়। এটি কোনো পলিশড ভাষণ নয়। এটি একটি জাতির বিবেকের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অভিযোগপত্র। আপনি আজ যদি মুখ না খোলেন, আপনি আজ যদি প্রতিবাদ না করেন, আপনি যদি আজও চুপ থাকেন— তাহলে আগামী লাশটা কাঁধে তোলার সময়, হয়তো আপনি নিজেই হবেন সেই লাশের পরিচিত মুখ।
রহমান মৃধা, গবেষক, লেখক ও সাবেক পরিচালক, ফাইজার সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com
অন্যান্য
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরও কমলো

বিশ্ববাজারে আরও একবার কমেছে অপরিশোধিত তেলের দাম। যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক পুনর্বহালের শঙ্কা এবং ওপেক প্লাস জোটের সম্ভাব্য উৎপাদন বৃদ্ধির ঘোষণা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চীনের দুর্বল চাহিদা ও আমেরিকায় তেলের মজুত বেড়ে যাওয়ার তথ্য। খবর রয়টার্স
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) লন্ডনের বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৫৮ সেন্ট বা ০ দশমিক ৮ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৬৮ দশমিক ৫৩ ডলারে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম কমে হয়েছে ৬৬ দশমিক ৮৮ ডলার, যা আগের দিনের তুলনায় ৫৭ সেন্ট কম।
তেলের দামে এই পতনের পেছনে মূলত দুটি বিষয় কাজ করছে- এক, ৯ জুলাইয়ের পর যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ শুল্ক আবার চালু করতে পারে এমন আশঙ্কা এবং দুই, ওপেক+ জোট দৈনিক ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে আভাস মিলেছে। ফলে বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও চাহিদা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল আমদানিকারক দেশ চীনে পরিষেবা খাতের প্রবৃদ্ধি গত ৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। জুন মাসে চাহিদা দুর্বল হয়েছে এবং নতুন রপ্তানি আদেশ কমেছে বলে জানিয়েছে একটি বেসরকারি জরিপ সংস্থা।
মার্কিন জ্বালানি তথ্য সংস্থা (ইআইএ) জানিয়েছে, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত তেলের মজুত ৩.৮ মিলিয়ন ব্যারেল বেড়ে হয়েছে ৪১৯ মিলিয়ন ব্যারেল। অথচ বিশ্লেষকরা ধারণা করেছিলেন, মজুত কমে যাবে অন্তত ১.৮ মিলিয়ন ব্যারেল।
বৃহস্পতিবার প্রকাশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের জুন মাসের কর্মসংস্থান প্রতিবেদন। বিশ্লেষকদের মতে, এই তথ্য দেখে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর সুদের হার কমলে অর্থনৈতিক গতি বাড়বে, যা ভবিষ্যতে তেলের চাহিদা বাড়াতে পারে বলে আশা করছেন বিনিয়োগকারীরা।
অন্যান্য
মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে চাই: গভর্নর

সরকারিভাবে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য রয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায়। এটি করতে পারলে আমরা সফল হবো বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গুগল পে’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) ট্র্যাসি এন জ্যাকবসন ও সিটি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হাসেন খালেদ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন, গুগল পেমেন্টসের গ্রুপ প্রোডাক্ট ম্যানেজার শাম্মী কুদ্দুস, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মোহাম্মদ কামাল, ভিসা বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সাব্বির আহম্মেদসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকারিভাবে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য রয়েছে। তবে আমরা চাই ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে। এটি করতে পারলে আমরা সফল হবো।
বিদেশি ব্যাসায়ীরা দেশে আসলে টাকা পাচার করবেনা বরং দেশের উপকার হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি ক্যাশলেস জগতে প্রবেশ করতে, তবে এরই মধ্যে তা সম্ভব হচ্ছে। দেশে গুগল পে চালুর মাধ্যমে ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
তিনি আরো বলেন, আমরা আশা করবো বাংলাদেশে আরও দেশি ও বিদেশি উদ্যোক্তাদের মিলন মেলা হবে। বিদেশিদের কোন কাজ বাংলাদেশে সম্পন্ন করলে দিন শেষে উপকারভোগী হয় দেশ।
গভর্নর বলেন, স্কুলের বাচ্চাদের ধীরে ধীরে ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা চাচ্ছি আর্থিক খাত সম্পূর্ণ ঠিক করতে। এরই মধ্যে ২০ টি ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষ হয়েছে, জুলাই শেষে আরও ৭ টি ব্যাংকের শেষ করা হবে। কোনো অবস্থাতেই ব্যাংকিং খাতকে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে দেয়া হবেনা।
ডলারে দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুবাই থেকে আমাদের দেশের ডলারের দাম নির্ধারণ করা হবে না। যার জন্য ডলার বাজারে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
সিটি ব্যাংক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন বলেন, এই অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের ভবিষ্যৎমুখী ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা আমাদের গ্রাহকদের জন্য আরও স্মার্ট ও সুবিধাজনক পেমেন্ট সল্যুশন নিয়ে আসতে পেরে গর্বিত।
গুগল ওয়ালেটের সূচনার মধ্য দিয়ে সিটি ব্যাংক আবারও প্রমাণ করলো তারা দেশের ডিজিটাল উদ্ভাবনের অগ্রদূত, যারা নিরাপদ, আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের আর্থিক সেবা নিশ্চিত করে আসছে।
অন্যান্য
শেয়ার বিক্রয় করবেন এনসিসি ব্যাংকের উদ্যোক্তা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠান এনসিসি ব্যাংক পিএলসির এক উদ্যোক্তা শেয়ার বিক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, কোম্পানির উদ্যোক্তা সোহেলী হোসেন ১ কোটি ১১ লাখ ৪ হাজার ২৩১টি শেয়ার বিক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। বর্তমানে এই উদ্যোক্তার কাছে কোম্পানিটির ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩৫টি শেয়ার আছে।
আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ঘোষণাকৃত শেয়ার বর্তমান বাজার মূল্যে ব্লক মার্কেটে বিক্রয় করবেন এই উদ্যোক্তা।
এসএম