রাজনীতি
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা উচিত হয়নি: নাহিদ

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা উচিত ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে বাজেটোত্তর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বেকার সমস্যা ও কর্মসংস্থানের আন্দোলন থেকেই শুরু হয়েছিল। ফলে তরুণদের ব্যাপক প্রত্যাশা ছিল, বেকার সমস্যার সমাধান এবং কর্মসংস্থানের উদ্যোগ বাজেটে থাকবে। কিন্তু সেটা আমরা বাজেটে দেখতে পাইনি। গত এক বছরে ২৬ লাখ বেকার বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু কর্মসংস্থানের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো বিষয় লিপিবদ্ধ হয়নি।
ব্যাংকের প্রতি নির্ভরশীলতা অব্যাহত রয়েছে। এই বাজেট বা অর্থনৈতিক নীতিমালা থেকে যে বেকার সমস্যার সমাধান বা কর্মসংস্থান কার্যকরভাবে বৃদ্ধি পাবে, সেটা আমরা মনে করছেন না বলেও জানান নাহিদ ইসলাম।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে তেমন কোনো নতুনত্ব নেই। এই সময়ে শিক্ষাখাতে ন্যূনতম দুই শতাংশ বরাদ্দ থাকা উচিত ছিল বলে আমরা মনে করি। একইভাবে স্বাস্থ্য ও অন্যান্য খাতেও বরাদ্দ বাড়েনি।
তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট কমানো উচিত হয়নি। আমরা এর নিন্দা জানাই। আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা নিজেদের উদ্যোগে বিদেশে যান। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে তাদের যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, সেটিও যখন কমানো হয়, তখন সরকারের প্রবাসী ভাই-বোনদের প্রতি উদ্যোগ স্পষ্ট হয় না। প্রবাসীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দক্ষ করে গড়ে তোলার প্রস্তাব আমরা দিয়েছিলাম, কিন্তু দেখা গেল প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট কমানো হয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য ইনসেনটিভ থাকবে, এটাই ছিল আমাদের প্রত্যাশা। কিন্তু এই বাজেটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন, এমন কোনো উদ্যোগ আমরা দেখতে পাইনি। ই-কমার্স এবং ডিজিটাল মাধ্যমে ভ্যাট ৫ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে ডিজিটাল অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, এই বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। আমরা মনে করি, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা উচিত হয়নি। এটি বন্ধ করা উচিত।
তিনি বলেন, জুলাই শহীদ ও আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আমরা এটিকে সাধুবাদ জানাই। এই টাকা যেন যথাযথভাবে খরচ করা হয়।
শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য দেওয়া প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান নাহিদ ইসলাম।
এর আগে সোমবার উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, বিপর্যস্ত আর্থিক খাত সংস্কার ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের মতো চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট ব্যয়ের পরিমাণ বা আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি জিডিপি’র ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় টাকার অংকে বাজেটের আকার কমছে ৭ হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
কাফি

রাজনীতি
লন্ডনে যাচ্ছেন জোবাইদা রহমান

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিনী ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. জুবাইদা রহমান লন্ডনে ফিরে যাচ্ছেন।সেখানেই স্বামী ও মেয়ের সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হন তিনি। বেলা ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি ফ্লাইটে জুবাইদা রহমান ঢাকা ছাড়বেন বলে জানা গেছে।
এরইমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসা থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার তার যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানের সঙ্গে ঢাকা ছেড়েছিলেন জুবাইদা রহমান। একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাফরুল থানায় তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। মামলায় জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৩৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয় ঢাকার একটি আদালত। তবে গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার সেই সাজা স্থগিত করা হয়।
ডা. জুবাইদা রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিন বিভাগে বিদ্যায়ন করে রেকর্ড নম্বর ও স্বর্ণপদক নিয়ে এমএসসি করেছেন। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় প্রথম হয়ে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দেওয়ার আগে ১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানের সঙ্গে ডা. জুবাইদার বিয়ে হয়। তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা দম্পতির জায়মা রহমান নামে এক কন্যাসন্তান রয়েছে। যিনি যুক্তরাজ্যে বার-এট ল’ ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন এবং মা-বাবার সঙ্গে সেখানেই থাকছেন।
রাজনীতি
ঋণ নিয়ে ঋণ শোধ করার মতো বাজেট: আমিনুল হক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও আগের স্বৈরাচার সরকারের মতো ঋণ নিয়ে ঋণ শোধ করার মতো বাজেট পেশ করেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক।
আজ বুধবার (৪ জুন) রাজধানীর উত্তরায় এক দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি।
আমিনুল হক বলেন, গত ১৭ বছর স্বৈরাচার সরকার ঋণ করে ঋণ পরিশোধ করেছে; তাতে মানুষের কোনো মান উন্নয়ন হয়নি। মানুষ গত ১৭ বছর যে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে, তার মূল্যায়ন করে বাজেট দিতে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি অত্যন্ত মন্থর। বিদেশিরা এখানে বিনিয়োগ করতে ভরসা পাচ্ছে না। বিনিয়োগ গত ১০ বছরে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে। তার অন্যতম কারণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।
আমিনুল হক বলেন, জনগণের ভোটের অধিকারই জবাবদিহিতা তৈরি করতে পারে। জনগণের সরকার বাংলাদেশের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকবে। সেই জবাবদিহিতার সরকারই একমাত্র পারবে বাংলাদেশের পরিপূর্ণ সংস্কার করতে।
তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার কথা উল্লেখ করে আমিনুল হক আরও বলেন, ৩১ দফার মধ্যে জনগণের কথা বলা আছে, দেশের কথা আছে। সকল দলের কথা আছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা আছে, দেশ গড়ার কথা আছে। তাই আসুন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামান পপি, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আফাজ উদ্দিন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, মাহাবুব আলম মন্টু প্রমুখ।
কাফি
রাজনীতি
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আ.লীগের জন্য: রাশেদ প্রধান

বৈষম্য দূরীকরণের আন্দোলন থেকেই গণঅভ্যুত্থান রচিত হয়। আমরা আশা করেছিলাম গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার কর্মসংস্থান নিয়ে বিশদ পরিকল্পনা প্রকাশ করবে। কিন্তু সেই হাজারো চাকরিপ্রত্যাশী ও ২৭ লাখ শিক্ষিত বেকার যুবসমাজের জন্য আলাদা কোনো ঘোষণা নাই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান।
তিনি বলেন, বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। এ সুযোগ কাদের জন্য? দেশকে লুটপাট করে খাওয়া আওয়ামী লীগ ব্যতীত কার কাছে কালো টাকা আছে?
বুধবার (৪ জুন) বিকাল ৩টায় পল্টনস্থ শফিউল আলম প্রধান মিলনায়তনে যুব জাগপার সাংগঠনিক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ প্রধান বলেন, মানুষের আয় ও ব্যয়ের তারতম্য কমানো, বেকারত্ব- দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে বাজেটে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এবারের বাজেটে বেশকিছু ভালো উদ্যোগ বা প্রত্যাশার কথা বলা হলেও যে কাঠামোতে বাজেট দেওয়া হয়েছে, সেটি গতানুগতিক এবং পুরাতন। এই সরকারের সামনে ভিন্নধর্মী একটা বাজেট উপস্থাপনের সুযোগ ছিল, যা তারা কাজে লাগায় নাই। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর বিপরীতে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি ও সামাজিক বৈষম্য দূর করা এবারের বাজেটের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। বরাবরের মতো এবারও ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি বাজেট। যা ব্যাংক ঋণ ও বৈদেশিক অনুদান থেকে পূরণ করা হবে। অর্থাৎ এবারের বাজেটেও বিদেশ নির্ভরতা কমানো হয়নি।
তিনি বলেন, নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে ১০০ কোটি টাকার তহবিল এবং কিছু নিত্যপণ্যের দাম কমানো ইতিবাচক। জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি টাকা বরাদ্দকে স্বাগত জানাই। তবে তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। বিগত ১০ মাসে যোদ্ধাদের সুচিকিৎসা আমরা দেখি নাই।
কাফি
রাজনীতি
পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব: তারেক রহমান

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে এক বিবৃতিতে পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে বেপরোয়া শিল্পায়ন ও অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ যে হারে প্রকৃতি ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে, সেই প্রেক্ষাপটে এই দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক বৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি উল্লেখ করেন, প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই বিএনপি একটি পরিবেশবান্ধব দল হিসেবে পরিচিত। গাছ লাগানো, খাল খনন ও রক্ষণাবেক্ষণ, এবং ক্ষতিকর প্লাস্টিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনার মতো কার্যক্রমে বিএনপি সবসময় সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ১৯৭৭ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ‘পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প’ চালু করেছিলেন, যা পরবর্তীতে পরিবেশ অধিদপ্তরে রূপ নেয়। এছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করেন এবং দেশের প্রথম পরিবেশ আদালত প্রতিষ্ঠা করেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সবসময়ই ছিল একটি সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও টেকসই বাংলাদেশ গড়ে তোলা।’
তিনি জানান, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি একটি বাস্তবভিত্তিক ও ভবিষ্যতমুখী পরিবেশ নীতিমালা গ্রহণ করবে।
প্রস্তাবিত উদ্যোগগুলো হলো: আগামী পাঁচ বছরে ২৫ থেকে ৩০ কোটি গাছ রোপণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ও টেকসই কৃষিনীতির উপর ভিত্তি করে জাতীয় গ্রিন রিকভারি প্ল্যান প্রণয়ন। ক্ষতিকর প্লাস্টিক ও বিষাক্ত রাসায়নিক নিষিদ্ধ করে পরিবেশবান্ধব বিকল্পের প্রচলন। জলাবদ্ধতা দূর ও জলজ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নদী ও খাল পুনঃখনন ও পুনর্গঠনের উদ্যোগ। দক্ষিণাঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জলবায়ু সহনশীল কৃষি ও অবকাঠামোগত সহায়তা। স্কুল পর্যায়ে পরিবেশ শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করে পরিবেশ সচেতন নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা।
তারেক রহমান বলেন, ‘পরিবেশ সংরক্ষণ কোনো বিলাসিতা নয়, এটি একটি অপরিহার্যতা। আমাদের উচিত দলমত নির্বিশেষে একযোগে কাজ করে এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তোলা, যা আগামী প্রজন্মের জন্য সবুজ, বাসযোগ্য ও টেকসই হবে।’
তিনি বিশ্ব পরিবেশ দিবসের এই দিনে সবাইকে প্রকৃতির প্রতি দায়িত্বশীল হতে এবং আশার বীজ বপনের আহ্বান জানান।
কাফি
রাজনীতি
এনসিপির নতুন আর্থিক ও তহবিল পরিচালনা নীতিমালা প্রকাশ

আর্থিক ও তহবিল পরিচালনা নীতিমালা প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি); যেখানে নির্ভরযোগ্য, স্বচ্ছ এবং জনভিত্তিক রাজনীতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পূর্ণকালীন রাজনৈতিক কর্মীদের ভাতা ও বোনাস দেবে দলটি। সেই কাঠামোর বিষয়টিও নীতিমালায় জানানো হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) বিকেলে রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নীতিমালা প্রকাশ করেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আর্থিক ও তহবিল পরিচালনা নীতিমালাটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য হলো দলের প্রতিটি টাকার উৎস ও ব্যয়ের হিসাব স্বচ্ছ, নৈতিক ও আইনি কাঠামোর মধ্যে রাখা। দলের অর্থনীতি হবে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও অডিটযোগ্য এবং কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত অর্থের ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করা হবে। দেশের প্রচলিত আইন, যেমন- গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, নির্বাচন কমিশন নীতিমালা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পুরোপুরি মেনে চলা হবে।
অর্থের উৎস
এনসিপি বিভিন্ন উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহ করবে।
মাসিক সদস্য ফি: সদস্যরা নির্দিষ্ট রশিদ, মোবাইল পেমেন্ট বা ব্যাংকের মাধ্যমে চাঁদা দিতে পারবেন।
গণ-অনুদান: ১০০ টাকা ক্যাম্পেইন এবং ছোট দান, বড় স্বপ্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ জনগণের ক্ষুদ্র অনুদান সংগ্রহে জোর দেওয়া হবে, যাতে দলের কাজে গণমানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়। ব্যক্তিগত অনুদান থেকেও আয় আসবে।
দলীয় আয়: টি-শার্ট, মগ, বই বিক্রি, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং অনলাইন কোর্স থেকে আয় করা হবে।
অনলাইন গণচাঁদা: ওয়েবসাইটে ডিজিটাল রসিদের মাধ্যমে দেশের ও বিদেশের প্রবাসীরা অর্থ দান করতে পারবেন।
কর্পোরেট অনুদান: নিরপেক্ষভাবে যাচাই করে শুধু বৈধ ও নৈতিক উৎস থেকে কর্পোরেট অনুদান গ্রহণ করা হবে।
নীতিমালায় স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোনো কালো টাকা, অজানা উৎস, বিদেশি সরকার বা অপরাধ সংশ্লিষ্ট অর্থ গ্রহণ একেবারেই নিষিদ্ধ। এনসিপি আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেবে। যেমন-
* প্রতিটি অনুদানে স্বয়ংক্রিয় রসিদ, অনলাইন এন্ট্রি এবং ইউনিক আইডি থাকবে।
* ৫ হাজার টাকার বেশি দানের ক্ষেত্রে দাতার পরিচয় গোপন রাখা হলেও, দলীয়ভাবে তা সংরক্ষিত থাকবে।
* সব লেনদেন গুগল শিট বা সফটওয়্যারে রেকর্ড হবে, যা কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণযোগ্য।
* তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে, অনুদানের একটি অংশ কেন্দ্রীয়ভাবে পুনর্বণ্টন করা হবে।
* বাজেট অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যয় করা যাবে না এবং ব্যয়ের ক্ষেত্রে ৬টি অগ্রাধিকার ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
এ ছাড়া, জোর করে বা হুমকি দিয়ে অর্থ সংগ্রহ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কথা বলুন বা হুইসেলব্লোয়ার পলিসির মাধ্যমে যে কেউ অনৈতিক অর্থ লেনদেন গোপনে রিপোর্ট করতে পারবেন। অনিয়ম প্রমাণিত হলে সতর্কীকরণ, বরখাস্ত এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দলের বাজেট, অনুদান ও ব্যয়ের স্বচ্ছ ও নৈতিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এই কমিটি গঠিত হবে। কোষাধ্যক্ষ সভাপতি হিসেবে থাকবেন এবং ৫ জন সদস্য থাকবেন যারা তথ্যপ্রযুক্তি, অডিট, ব্যাংকিং, আইন ও ডায়াসপোরা প্রতিনিধি হবেন। কমিটির মেয়াদ ২ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩ মেয়াদ পর্যন্ত কাজ করতে পারবে।
কমিটির প্রধান দায়িত্বগুলোর মধ্যে রয়েছে— বাজেট তৈরি ও অনুমোদন, তহবিল সংগ্রহ কৌশল প্রণয়ন (যেমন- QR কোড, ইভেন্ট ফান্ডরেইজিং), বণ্টন ও অনুমোদন, অডিট তদারকি (অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিরীক্ষা), নীতিমালা হালনাগাদ, গোপনীয়তা রক্ষা, কোষাধ্যক্ষের ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরুরি ব্যয় অনুমোদন এবং আর্থিক তদন্ত শুরু করার ক্ষমতা থাকবে। প্রতি ছয় মাস অন্তর আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং দলের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। ৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনে পূর্ণ নিরীক্ষা বাধ্যতামূলক। আর্থিক কমিটির বিষয়ে কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে এনসিপি’র শৃঙ্খলা কমিটি তদন্ত করবে।
পূর্ণকালীন রাজনৈতিক কর্মীদের জন্য ভাতা ও বোনাস কাঠামো
এনসিপি বিশ্বাস করে, টেকসই ও মেধাভিত্তিক রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পূর্ণকালীন সংগঠকদের জন্য কাঠামোবদ্ধ ভাতা এবং ফেলোশিপ প্রোগ্রাম প্রয়োজন। তরুণ নেতারা নৈতিক আয় বজায় রেখে জনসেবায় পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারেন, সে লক্ষ্যে এনসিপি কাজ করে যাচ্ছে। ফেলোদের অভিজ্ঞতা, দায়িত্ব ও কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে চারটি স্তরে শ্রেণিবদ্ধ করা হবে এবং ভাতার পরিমাণ অঞ্চলভেদে জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নির্ধারণ করা হবে।
এনসিপি এই নীতিমালার মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ ও নৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। বিস্তারিত নীতিমালা এনসিপি’র ওয়েবসাইটে (www.ncpbd.org/funding-policy.pdf) পাওয়া যাবে।