পুঁজিবাজার
রাশেদ মাকসুদ কমিশনের অযোগ্যতার ভয়াবহ তথ্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও

পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক দরপতন অব্যাহত আছে। এতে পুঁজি হারিয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরে আসার প্রত্যাশায় ফের সক্রিয় হন বিনিয়োগকারীরা। তবে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ দায়িত্ব নেওয়ার দীর্ঘ ৯ মাসেও তা দৃশ্যমান না হওয়া আশাহত বিনিয়োগকারীরা। ফলে কমিশনের ওপর আস্থাহীনতায় পুঁজিবাজার ছাড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। এছাড়াও, রাশেদ মাকসুদ দায়িত্ব নেওয়ার পর স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কমিশনের দূরত্ব হয়েছে। ফলে কমিশনের ওপর আস্থা হারিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কমিশনকে উৎখাত করতে আন্দোলন করেছে। যে কমিশনকে বাজারের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেই কমিশন নিজের শৃঙ্খলাই ফিরিয়ে আনতে পারেনি।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের গণমাধ্যমগুলো রাশেদ মাকসুদ কমিশনের অযোগ্যতার এমন সব তথ্য তুলে ধরে আসছে। এবার জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেতে এ ভয়াবহ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
২০১৬ সালের ২০ জুন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ছিলো ৩২ লাখ ৭৬৬ জন। আর গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দিন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী ছিল ১৬ লাখ ৬৮ হাজার ৮৯৫ জন। তবে গত ২৫ মে এই সংখ্যা কমে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ২২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর তিন দিন দেশে কোনো সরকার ছিল না। নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হতে যাচ্ছে-এমন খবরে পুঁজিবাজারের সূচক বেড়েছিল। কিন্তু সরকার গঠনের পর থেকে আবার তা কমতে থাকে।
বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা ভাষাহীন হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরের পুঁজিবাজারকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। মুহাম্মদ ইউনুস সরকার গঠনের পর মানুষ আশা করেছিল পুঁজিবাজার ভালো হবে। গত ৫ আগস্টের পর যখন কমিশনে চেয়ারম্যান ছিলেন না তখন ইনডেক্স ভালো বেড়েছিল। আমরা ধারণা করেছিলাম পুঁজিবাজার এভাবেই চলবে এবং বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি ফিরে পাবেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সমালোচনা করে ইকবাল হোসেন বলেন, মার্কেটের ধারাবাহিক পতন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে পুঁজিবাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনার পরিবর্তে বিনিয়োগকারীরা আরও আস্থা হারিয়েছে। তিনি দায়িত্বে নেওয়ার পর পুঁজিবাজারের সূচক ১২০০ পড়ে গেছে। পুঁজিবাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার মতো ক্যাপিটাল লস হয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারেজদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কনফিডেন্সের অভাবে বিনিয়োগকারীদের ধরে রাখা যাচ্ছে না। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০ শতাংশ ইনডেক্স হারিয়েছি।
মোবারক হোসেন নামে এক সাধারণ বিনিয়োগকারী জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যমকে বলেন, দেড় বছর আগে একটি শেয়ার ৩৪৪ টাকায় কিনেছিলাম। ফ্লোর প্রাইজ তোলার আগেও দাম ছিল ২৩৭ টাকা। এখন এই শেয়ারের দাম নেমে এসেছে ৬৭ টাকায়। জিপিএইচ ইস্পাতের ফ্লোর প্রাইজ ৩৪ টাকা থাকলে এর দাম এখন ১৭ টাকা ৬০ পয়সায় নেমেছে। আমার কেনা সব শেয়ারের দাম তলানিতে নেমেছে। আমরা পরিচিত একজনের এক কোটি টাকার শেয়ার আছে, তিনি এখন ২০ লাখও পাবেন না। সবই লুটপাট হয়ে গেছে।
শরিফুল ইসলাম নামে আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, সাইফ পাওয়ারের ৩০ টাকার শেয়ারের দাম এখন ৭ টাকা। ভালো-মন্দ সব শেয়ারের দামই কমেছে। আমার যতগুলো শেয়ার আছে সবগুলোর দাম কমেছে, আমি এখন অনেকটা নিঃস্ব। সামনে কি আছে তা কেউ বলতে পারবে না।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে ঢাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন বলেন, আগের সরকার শেয়ারবাজারে লুটপাট করেছে। কিন্তু এই সরকারের যাওয়ার সময় ঘনিয়ে এলেও তারা শেয়ারবাজার ঠিক করেনি। কে ক্ষমতায় থাকবে আর কে ক্ষমতায় থাকবে না সেটি দেখে বড় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করবে না, এটাই স্বাভাবিক। এই সরকার আর কতদিন ক্ষমতায় থাকবে তা কেউ বলতে পারছে না।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে কারসাজি হলেও তখনকার নিয়ন্ত্রণ কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এখন এসব কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা সামনে আসার পর সেগুলোর শেয়ারের দাম পড়ে গেছে। অন্যদিকে ভালো কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামও প্রতিনিয়ত কমছে।
কমিশন সূত্র জানায়, কোম্পানি তালিকাভুক্তি থেকে শুরু করে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিগত কমিশনের সময় অভিযোগ দাখিল করা হয়। কিন্তু ওই কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান কমিশন আগের অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ায় বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নতুন করে বড় বিনিয়োগকারীরা আর আসছে না। আগে যারা বিনিয়োগ করেছিলেন তারাও সরে যাচ্ছেন। বিনিয়োগকারীদের মনে ভয় ধরেছে। বাজারে তার প্রভাব পড়েছে। আগে বাজার চাঙা করে নিয়ন্ত্রণ কমিশন এসবে হাত দিলে ভালো হতো।
এরআগে, রাশেদ মাকসুদের অপসারণ দাবিতে দীর্ঘদিন ঘরে আন্দোলন করে আসছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বহু বার প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। রাশেদ কমিশনে আস্থা না পেয়ে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কার্যালয়ের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিনিয়োগকারীরা। এছাড়াও, তার অপসারণের দাবিতে কফিন ও কাফন মিছিল করেছে ক্ষতিগ্রস্ত বিক্ষুদ্ধ বিনিয়োগকারীরা।
এসএম

পুঁজিবাজার
বাজেট পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে: সিএসই

প্রস্তাবিত ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে বিভিন্ন প্রণোদনা ও ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে এবং ব্রোকারেজ হাউজসহ বাজার-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর করের বোঝা হ্রাস পাওয়ায় পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।
মঙ্গলবার (৩ জুন) গণমাধ্যমে সিএসইর পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেছেন। যা দেশের ৫৪তম বাজেট এবং অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘোষিত বাজেটে পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়নে তিনটি প্রত্যক্ষ প্রণোদনার প্রস্তাব করা হয়েছে; যেমন: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্পোরেট করের ব্যবধান ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭.৫ শতাংশ করা। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান কর্পোরেট করহার ৩৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২৭.৫ শতাংশ করা এবং পুঁজিবাজারে লেনদেনের ওপর উৎস অগ্রিম কর বিদ্যমান ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০৩ শতাংশ করা। এসব প্রণোদনা ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে এবং ব্রোকারেজ হাউজসহ বাজার-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর করের বোঝা হ্রাস পাওয়ায় পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে সিএসই মনে করে।
সিএসই জানায়, বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা পুঁজিবাজার উন্নয়নে গত ১১ মে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রদত্ত পাঁচটি নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য সরাসরি কোন প্রণোদনার প্রস্তাব প্রস্তাবিত বাজেটে উল্লেখ না থাকলেও স্মর্তব্য যে, গত বছরের ৪ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তালিকাভুক্ত কোম্পানি হতে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের অর্জিত ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মূলধনি আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত রাখার বিধান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ৫০ লক্ষ টাকার উর্ধ্বে মূলধনি আয়ের উপর কর ১৫ শতাংশ হ্রাস করেছে।
এছাড়া, সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকাউন্টের উপর ধার্য বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ ফি ৭৫% হাসের নীতিগত সিদ্ধান্ত, এবং গ্রাহক একাউন্টে অর্জিত সুদের ২৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ব্যয়ের জন্য ইনভেস্টর্স প্রটেকশন ফান্ডে জমার সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে বড় প্রভাব রাখবে বলে আশা করা যায়।
বাজেটে প্রস্তাবিত পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট আরো কিছু বিষয় উল্লেখ করা যায়, যেমন: করমুক্ত দানের আওতায় স্থাবর/অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বিদ্যমান তালিকায় আপন ভাই ও বোনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদ আয়ে উৎস কর ৫% এর পরিবর্তে ১০% করা হয়েছে। এর ফলে প্রকৃত সুদ আয় কমে যাওয়ায় শেয়ারে বিনিয়োগে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
অন্যদিকে, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোন শেয়ার বা তহবিলের স্পনসর, ডিরেক্টর বা প্লেসমেন্ট হোল্ডার হস্তান্তর কার্যক্রম করার পূর্বে উৎস কর ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ (পূর্বে এ হার ছিল ৫%) নির্ধারণ করা হয়েছে, যা পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।
তবে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত বা অগ্রিম কর্তিত আয় চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বাজেটে বিবেচনা করলে তাতে সরাসরি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কিছুটা উপকৃত হতো। আবাসন খাতের মতো পুঁজিবাজারেও অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে দেখা যেত পুঁজিবাজারে গতি সঞ্চারিত হয় কিনা।
উল্লেখ করা প্রয়োজন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সম্প্রতি “চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (কমোডিটি ডেরিভেটিভ) প্রবিধানমালা, ২০২৫ অনুমোদন দিয়েছে। ফলশ্রুতিতে দেশের প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হিসেবে নিবন্ধন সনদ পাওয়া চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে কমোডিটি মার্কেট অপারেশন চালুর মাধ্যমে ডেরিভেটিভ পন্যের যুগে
প্রবেশ করতে যাচ্ছে যা নিঃসন্দেহে দেশের পুঁজিবাজারের জন্য একটি অনন্য মাইলফলক। সিএসই আশা করে, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ বিকাশে সিএসইকে কর অবকাশ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপগুলো প্রশংসার দাবি রাখে। পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেগুলো যথেষ্ট কিনা তা সময়ই বলে দেবে। সিএসই মনে করে পুঁজিবাজারের বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণ এবং পুঁজিবাজারকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমন্বিত ও কৌশলগত উদ্যোগ প্রয়োজন।
সার্বিকভাবে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা, বাজেটে উল্লিখিত প্রস্তাবনা, এনবিআর এবং বিএসইসি কর্তৃক গৃহীত সকল সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারের দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়নে সরকারের সদিচ্ছা, আন্তরিকতা, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী এবং দৃঢ় প্রতিশ্রুতির পরিচায়ক প্রতীয়মাণ হওয়ায় সিএসই পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং এনবিআরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছে সিএসই।
কাফি
পুঁজিবাজার
পুঁজিবাজার উন্নয়নে সরকার অত্যন্ত ইতিবাচক ও আন্তরিক: বিএসইসি চেয়ারম্যান

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রশংসনীয়। এছাড়া সরকার পুঁজিবাজার উন্নয়নের বিষয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক ও আন্তরিক বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
পাঠানো বক্তব্যে তিনি বলেন, জুলাই অভূত্থান পেরিয়ে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। জাতির ক্রান্তিলগ্নে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সফলতার সাথে গত ২ জুন আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অর্থ বিল অনুমোদন করেছে যা প্রশংসনীয়।
তিনি আরও বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তৃতায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার পাঁচটি দিকনির্দেশনার বিষয়ও গুরুত্ব সহকারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার এই নির্দেশনার মধ্যে পুজিবাজারে বহুজাতিক কোম্পানির সরাসরি তালিকাভুক্তি এবং নেতৃত্বস্থানীয় দেশীয় ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির তালিকাভুক্তির বিষয়েরও উল্লেখ ছিল। এছাড়া উক্ত নির্দেশনায় পুঁজিবাজারের প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য বিদেশী পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে উল্লেখ ছিল। এছাড়াও নির্দেশনায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনিয়মের ব্যাপারে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে উল্লেখ ছিল। এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে, পুঁজিবাজারকে আগামীর অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ভূমিকা পালনে সরকারের নীতি সহায়তা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
রাশেদ মাকসুদ বলেন, সরকার পুঁজিবাজারের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে এর উন্নয়নের জন্য পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যকার করপোরেট করহারের ব্যবধান ৫% হতে ৭.৫%-এ বৃদ্ধি করেছে যার ফলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি করপোরেট করহারে ছাড় পাবেন। এটি দেশী বিদেশী লাভজনক ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহী করবে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে আরেকটি ইতিবাচক খবর রয়েছে। পুঁজিবাজারে কর্মরত ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেনের ওপর ধার্য কর ০.০৫% হতে ০.০৩%-এ হ্রাস করা হয়েছে। বর্তমানে পুঁজিবাজারের তারল্য সংকট এবং লেনদেনের স্বল্প ভলিউম পরিলক্ষিত হচ্ছে; এই কর ছাড়ের ফলে আগামীতে পুঁজিবাজারের লেনদেনের বৃদ্ধি পাবে এবং বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে বলে আশা করা যায়।
এছাড়াও পুঁজিবাজারে কর্মরত মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট করহার ১০ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে। পূর্বে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ৩৭.৫% হারে কর দিতে হতো। এখন যা ২৭.৫% করা হচ্ছে। এর ফলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজার উন্নয়নে কাজ করতে উৎসাহ পাবে। পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন মার্চেন্ট ব্যাংক। পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে ভালো শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানোয় মার্চেন্ট ব্যাংকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে অন্তর্বতীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই সরকারের উদ্যোগের ফলে গত বছরের ৪ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার বিক্রি থেকে অর্জিত মূলধনী মুনাফা (ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স) এর উপর করের হার কমানো হয়েছিল। এসময় অর্জিত মূলধনী মুনাফার উপর সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ থেকে অর্ধেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। উপরোক্ত পদক্ষেপসমূহ থেকে স্পষ্ট হয় যে, সরকার পুঁজিবাজার উন্নয়নের বিষয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক ও আন্তরিক।
এছাড়াও বিনিয়োগকারীদের কল্যাণ ও সুরক্ষার্থে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারীদের বিও অ্যাকউন্টের উপর ধার্যকৃত বার্ষিক মেইনটেন্যান্স ফি ৪৫০ টাকা থেকে প্রায় ৭০% হ্রাস করে ১৫০ টাকা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং সমন্বিত গ্রাহক হিসাব হতে অর্জিত সুদের ২৫% ইনেভেস্টর প্রটেকশন ফান্ডে জমারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সরাসরি উপকৃত হবেন।
বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবি বিবেচনায় এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্জিত ডিভিডেন্ডের উপর ট্যাক্স মওকুফ করা এবং এক লক্ষ টাকার উর্ধ্বে অর্জিত ডিভিডেন্ডের উপর ১৫ শতাংশ ট্যাক্স নির্ধারণ করে উহাকে চূড়ান্ত কর হিসেবে গণ্য করার বিষয়টি বাজেটে পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
অর্থসংবাদ/কাফি
পুঁজিবাজার
বিএসইসির যুগ্মপরিচালক হলেন রাজউক পরিচালক মনির হোসেন

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) যুগ্মপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদার। তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে দায়িত্ব পালন করবেন। বর্তমানে তিনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পরিচালকের (উপসচিব) দায়িত্ব পালন করছেন।
রবিবার (০১ জুন) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আবুল হায়াত মো. রফিক স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এতে বলা হয়, তিনি আগামী ১৮ জুনের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় আগামী ১৮ জুন অপরাহ্ণ হতে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হবেন ( স্ট্যান্ড রিলিজ)। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এসএম
পুঁজিবাজার
এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান এশিয়া ইন্স্যুরেন্স পিএলসি পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ২১ জুন দুপুর ২টা ৪৫মিনিটে কোম্পানিটির পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সভায় ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। সভায় বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এছাড়াও, একই সভায় ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মাচ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ এ প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি।
এসএম
পুঁজিবাজার
মিডল্যান্ড ব্যাংকের সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৪ কোম্পানির মধ্যে ২৩৯টি কোম্পানির শেয়ার কমেছে। এদিন দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে মিডল্যান্ড ব্যাংক পিএলসি।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, মঙ্গলবার (৩ জুন) কোম্পানির শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ২ টাকা ৫০ পয়সা বা ৯ দশমিক ০৫ শতাংশ কমেছে।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ কমেছে। আর তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা সোনারগাঁও টেক্সটাইলের দর কমেছে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- উত্তরা ফাইন্যান্স, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, কেডিএস এক্সেসরিজ, জিলবাংলা সুগার মিলস, শাশা ডেনিমস, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ভিএফএস থ্রেড ডায়িং লিমিটেড।
এসএম