ব্যাংক
ঈদের ছুটিতে বিশেষ এলাকায় ব্যাংক খোলা ৩ দিন

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে আগামী ৫ জুন থেকে ১৪ জুন টানা ১০ দিন ছুটি থাকবে। এসময় বন্ধ থাকবে ব্যাংকও। তবে তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বেতন-বোনাসসহ অন্যান্য ভাতা পরিশোধ ও রপ্তানি বিল বিক্রয়ের সুবিধার্থে পোশাকশিল্প এলাকায় ৫, ১১ ও ১২ জুন সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা রাখতে বলা হয়েছে। ওই তিন দিন সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে লেনদেন চলবে নির্ধারিত সময়ে।
রবিবার ( ২৫ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অব সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন, বোনাস ও অন্যান্য ভাতাদি পরিশোধের সুবিধার্থে আগামী ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) সীমিত পরিসরে ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে। শিল্পঘন ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত পোশাক শিল্পের লেনদেনে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখাগুলোতে লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এবং ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বাকি সময় ব্যাংকের লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এছাড়া ওষুধ শিল্প খাতসহ আমদানি ও রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান বা গ্রাহকদের গুরুত্বপূর্ণ ও বৈদেশিক লেনদেন সম্পাদনের লক্ষ্যে ১১ জুন ও ১২ জুন বুধবার এবং বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটির দিন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকার অথরাইজড ডিলার (এডি) শাখা সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। এ দু’দিন বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখাগুলোতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত লেনদেন হবে এবং লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালিত ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
নির্দেশনায় বলা হয়, ছুটির দিনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিধি মোতাবেক ভাতাদি প্রাপ্য হবেন।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জনস্বার্থে এ নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ব্যাংক
বিদেশে ভাষা শিক্ষা কোর্সে টাকা পাঠানো সহজ করল বাংলাদেশ ব্যাংক

বিদেশে ভাষা শিক্ষা কোর্সে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য অর্থ পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে ভাষা কোর্সের জন্য বৈদেশিক শিক্ষা ফি পাঠাতে আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগবে না।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, স্বীকৃত বিদেশি প্রতিষ্ঠানে ভাষা শিক্ষা কোর্সে ভর্তি হলে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত নথিপত্র উপস্থাপন সাপেক্ষে অনুমোদিত ব্যাংকের মাধ্যমেই সরাসরি প্রয়োজনীয় অর্থ পাঠাতে পারবেন। আগে শুধু ব্যাচেলর বা উচ্চতর ডিগ্রির ক্ষেত্রে এই সুবিধা থাকলেও এখন ভাষা শিক্ষাকেও এই কাঠামোর আওতায় আনা হলো।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপের কিছু দেশে ভাষা দক্ষতা থাকলে শিক্ষার্থীরা সহজে চাকরি ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায়। এই নীতির ফলে রিক্রুটিং এজেন্সির ওপর নির্ভরতা কমে সরাসরি বিদেশে যাওয়ার পথ খুলবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ পদক্ষেপকে সময়োপযোগী উল্লেখ করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈধ উপায়ে অর্থ পাঠানোর সুযোগ সহজ হওয়ায় এখন আরও বেশি শিক্ষার্থী স্বল্প খরচে বিদেশে নিজ উদ্যোগে পড়তে যেতে পারবেন, যা দেশের রেমিট্যান্স আয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
ইসলামী ব্যাংকের এমডি মুনিরুল মওলাকে অপসারণ

বিভিন্ন আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে অপসারণ করা হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল (মঙ্গলবার) এ বিষয়ে অনাপত্তি দিয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২০ জুন থেকে তার অপসারণের আদেশ কার্যকর হবে। এর আগে গত ৬ এপ্রিল তাকে বাধ্যতামূলক তিন মাসের ছুটিতে পাঠিয়েছিল পরিচালনা পর্ষদ।
জানা গেছে, মুনিরুল মওলার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও জালিয়াতির প্রমাণাদি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হয়েছে। দুদক নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।
ইসলামী ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এমডি মনিরুল মওলাকে শুধু অপসারণ করলেই দায়মুক্তি পাওয়া যায় না। দুদকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে এমনটাই প্রত্যাশা করি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, ইসলামী ব্যাংকের অডিট প্রতিবেদনে এমডির জালিয়াতিতে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পরিচালনা পর্ষদ অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয়, যা বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দিয়েছে।
বিগত ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের দখলে নেয়। এরপর থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ব্যাংকটি থেকে ৯১ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ বের করে নেয়। গ্রুপের নিয়ন্ত্রণের পর মুনিরুল মওলাকে দ্রুত পদোন্নতি দিয়ে প্রথমে অতিরিক্ত এমডি এবং ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমডি পদে বসানো হয়। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর ব্যাংকের বেশিরভাগ পরিচালক আত্মগোপনে গেলেও মনিরুল মওলা তখনো বহাল ছিলেন।
বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪২ দশমিক ২২ শতাংশ। বিপুল পরিমাণ খেলাপির কারণে ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকার প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকটি। ঘাটতি পূরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ২০ বছরের সময় প্রার্থনা করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
এনআরবি ব্যাংকের নতুন ডিএমডি রাশিদুল হুদা

এনআরবি ব্যাংক পিএলসির নতুন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন এম. রাশিদুল হুদা। এনআরবি ব্যাংকে যোগদানের পূর্বে তিনি আরআর গ্রুপের অর্থ উপদেষ্টা ছিলেন।
ব্যাংকিং এবং কর্পোরেট খাতে তিন দশকেরও বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রাশিদুল হুদা এনআরবি ব্যাংক পিএলসিতে তার দক্ষতা এবং নেতৃত্বে ব্যাংকের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি এবং সাফল্যের জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ হবে।
তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ১৯৮৯ সালে একজন ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার হিসেবে তার ব্যাংকিং কর্মজীবন শুরু করেন, যেখানে তিনি ১৯৯৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তিতে তিনি আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংক, এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক পিএলসি, মেঘনা ব্যাংক পিএলসি এবং এ বি ব্যাংক পিএলসি সহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
তার কর্মজীবন জুড়ে,হুদা কর্পোরেট ব্যাংকিং এবং ক্রেডিট ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সহ ব্যাংকিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে ব্যতিক্রমী দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। এই গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী সম্পর্কে তার গভীর জ্ঞান ব্যাংকের কৌশলগত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।
হুদা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং স্নাতক উভয় ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি ক্রমাগত পেশাদার উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিকভাবে অসংখ্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনে অনীহা অনেকের: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিশ্ব ডিজিটাল লেনদেনের দিকে ঝুঁকলেও বাংলাদেশে এখনো অনেক মানুষ কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করতে দ্বিধা বোধ করে।
শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসি ও মাস্টারকার্ডের যৌথভাবে আয়োজিত নতুন কার্ড সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ড. আহমেদ বলেন, অন্যান্য দেশে যেখানে নগদ লেনদেন প্রায় দেখাই যায় না, সেখানে বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার তুলনামূলকভাবে কম। তিনি নগদবিহীন লেনদেন উৎসাহিত করার বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলোচনার কথা উল্লেখ করেন, তবে অনেক লোকের কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা নিতে না চাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন। বর্তমানে এই প্রবণতা নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
তিনি উন্নত দেশগুলোর উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে ছোটখাটো কেনাকাটা ছাড়া তেমন কেউ নগদ ব্যবহার করে না। নগদবিহীন লেনদেনের সুবিধা তুলে ধরে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে লেনদেন স্বচ্ছ থাকে, যেকোনো সময় শনাক্ত করা যায় এবং প্রয়োজনে জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায়।
অর্থ উপদেষ্টা বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে ক্রেডিট কার্ডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের তুলনায় ব্যবসায়ীদের ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ছে উল্লেখ করে, সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং ব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে চলার আহ্বান জানান তিনি।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যবসায়ীদের দ্রুত এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ড. আহমেদ। তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি, যাতে দেশ পিছিয়ে না পড়ে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. জাকির হোসেন চৌধুরী ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মো. আনোয়ারুল হক উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিও ড. মো. জাহিদ হোসেন ও সিএফও ড. তাপস চন্দ্র পাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
ফের নগদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা: বাংলাদেশ ব্যাংক

মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ আবারও দুষ্কৃতকারীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে নগদে পুনরায় অবৈধ টাকা বা ই-মানি তৈরির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শনিবার (১৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান। তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন্সিক অডিটে সহায়তা করার অপরাধে নগদের ২৩ জন কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আগামী ১৯ তারিখে আদালতে ফুল বেঞ্চের একটি শুনানি রয়েছে। এরপরই নগদের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। তবে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক আশঙ্কা করছে, এর আগে প্রতিষ্ঠানটিতে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মে হাইকোর্ট ‘নগদ’-এ প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেন। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নগদের পরিচালনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিযুক্ত প্রশাসক দল তাদের দায়িত্ব হারায়। ফলে ‘নগদ’-এর উপর বাংলাদেশ ব্যাংক ও ডাক বিভাগ উভয়ের নিয়ন্ত্রণ রহিত হয়।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক ‘নগদ’-এর অর্থ তছরুপের অভিযোগে যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল, তাদের মধ্যে একজনকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি হলেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক পরিচালক মো. সাফায়েত আলম। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি নতুন মানবসম্পদ কর্মকর্তা নিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা শুরু করেছেন। গত দুই দিনে শীর্ষ পর্যায়ের ২৩ জন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আরও দুই আসামিকে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ‘নগদ’-এর পরিচালনায় নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেওয়া আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আপিল করেছে এবং আগামী ১৯ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরও জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ‘নগদ’-এ প্রশাসক নিয়োগ দেয়। প্রশাসক নিয়োগের পর নিরীক্ষায় ‘নগদ লিমিটেড’-এ বড় ধরনের জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া যায়। ভুয়া পরিবেশক ও এজেন্ট দেখিয়ে আর্থিক জালিয়াতি এবং অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক অর্থ বা ই-মানি তৈরি করা হয়েছে। এসব কারণে ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব অমিল পাওয়া যায়। সাবেক সরকারের আমলে ‘নগদ’ নিয়মের বাইরে গিয়ে গ্রাহক তৈরি এবং সরকারি ভাতা বিতরণে একচেটিয়া সুবিধা পায়। প্রতিষ্ঠানটিতে যখন এসব অনিয়ম ঘটে, তখন আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি এর পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন। এই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের ডাক বিভাগের আটজন সাবেক ও বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি), ‘নগদ’-এর সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (সিইও) ২৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।
আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘জনগণের টাকার নিরাপত্তা দেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব। আগে প্রতিষ্ঠানটি যেনতেনভাবে চলেছে। এ জন্য সরকার পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক দায়িত্ব নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছিল। এখন আদালতের আদেশের কারণে সেই দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হয়েছে। আমরা সেই আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছি। আশা করি, জনগণের টাকার নিরাপত্তা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আবার দায়িত্ব ফিরে পাবে।’