অর্থনীতি
চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার জট নিরসনে বিশেষ আদেশ জারি

পণ্যজট নিরসন ও খালাস প্রক্রিয়া সহজ করতে চট্টগ্রাম বন্দরে দ্রুত নিলাম, বিলিবন্দেজ ও ধ্বংস কার্যক্রম সংক্রান্ত বিশেষ আদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) এ তথ্য জানিয়েছেন এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল-আমিন।
এর আগে গত ১৪ মে এ সংক্রান্ত বিশেষ আদেশ জারি করা হয়। এক বিবৃতিতে এনবিআর জানায় দ্রুত পণ্য খালাস, শ্রম, অর্থ ও কর্মঘণ্টা সাশ্রয়, রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় রোধ, নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরসন, ভৌত অবকাঠামো, জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং কনটেইনার জট হ্রাসসহ বন্দরের সামগ্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আদেশ জারি করা হয়েছে।
২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অখালাসকৃত কনটেইনার জট বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করছে। দীর্ঘদিনের পুরোনো কেমিকেল ও বিপজ্জনক পণ্য বিস্ফোরণ ঝুঁকিসহ বন্দরের সামগ্রিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করেছে। উক্ত ঝুঁকি নিরসনে বিদ্যমান প্রমিত নিলাম প্রক্রিয়ায় সময়ক্ষেপণ এড়ানো সম্ভব হয় না। শর্তযুক্ত বা নিয়ন্ত্রিত পণ্য খালাসে জটিলতা, অনিষ্পন্ন মামলা, নিলামের দরদাতা কর্তৃক পণ্য খালাস না করা, লজিস্টিকসের অভাবসহ নানাবিধ কারণে কর্তৃপক্ষ স্বল্পতম সময়ে নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছে না।
এমন পরিস্থিতিতে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিলাম ও নিষ্পত্তিযোগ্য পণ্যের (যানবাহন ব্যতীত) বিক্রয়, ব্যবস্থাপনা ও ধ্বংস কার্যক্রম প্রক্রিয়া সহজীকরণে নিম্নবর্ণিত নির্দেশনা সম্বলিত বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- নিষ্পত্তিযোগ্য পণ্যসমূহের সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ ব্যতীত প্রথম নিলামে (বিশেষ ক্ষেত্র ব্যতীত) প্রাপ্ত সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রয় করা যাবে।
আমদানি নীতি বা রপ্তানী নীতি অনুযায়ী শর্তসাপেক্ষে, নিয়ন্ত্রিত বা নিষিদ্ধ অথবা পণ্যের গুনগতমান নষ্ট হওয়ার কারণে বা অন্য কোনো কারণে নিলামের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয় অথবা সম্ভব হয় নাই তা ধ্বংস বা নিষ্ক্রিয়করণের লক্ষ্যে নিলাম ব্যতীত বিশেষায়িত সংস্থা বা প্রযুক্তিগত সক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট বিনামূল্যে হস্তান্তর করা যাবে।
দুটি নিলামের মাধ্যমেও কোনো পণ্য বিক্রয় করা সম্ভব না হলে অথবা দরপত্র পাওয়া না গেলে ৩য় নিলাম ব্যতিরেকে ব্যাপক প্রচার প্রচারণাপূর্বক পণ্য গ্রহণে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের নিকট সর্বোচ্চ প্রস্তাব মূল্যে বিক্রয় এবং পরীক্ষণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ব্যবহার উপযোগিতা রয়েছে মর্মে প্রত্যয়নকৃত মেয়াদোত্তীর্ণ বিপজ্জনক পণ্য বা কেমিক্যাল জাতীয় পণ্যসমূহ প্রকৃত ব্যবহারকারী বা বিশেষায়িত সংস্থা বা প্রযুক্তিগত সক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট সর্বোচ্চ অফার মূল্যে বিক্রয়ের বিধান রাখা হয়েছে।
নিলাম প্রক্রিয়া সহজীকরণে জারিকৃত এ আদেশ বাস্তবায়িত হলে বন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা কন্টেইনার জট কমবে এবং বন্দরের কার্যক্রম নির্বিঘ্ন, সহজ, সময় সাশ্রয়ী, আমদানি-রপ্তানীকারকদের খরচ কমাসহ সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এতে বন্দরের সুবিধাভোগীরা সুফল ভোগ করবে বলে এনবিআর আশা করছে।

অর্থনীতি
জ্বালানি তেলের আমদানি কর কমিয়ে ২ শতাংশ করলো সরকার

দেশের জ্বালানি খাতে কিছুটা স্বস্তি আনার লক্ষ্যে রিফাইন্ড পেট্রোলিয়াম (পরিশোধিত জ্বালানি) আমদানির ওপর আগাম কর হার সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ নির্ধারণ করেছে সরকার।
রোববার (২২ জুন) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের চূড়ান্ত বাজেটে এই প্রস্তাব অনুমোদন পায়।
এই সিদ্ধান্তের ফলে জ্বালানি খাতে বিশেষ করে আমদানি নির্ভর পরিশোধিত জ্বালানির খরচ কিছুটা হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে আমদানিকারকদের ওপর করের পূর্বব্যয় কমে আসায় জ্বালানি সরবরাহ শৃঙ্খলায় স্থিতিশীলতা বাড়বে।
বর্তমানে বিপুল পরিমাণ রিফাইন্ড পেট্রোলিয়াম পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত দেশের শিল্প ও পরিবহন খাতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ, জ্বালানি খরচ কমলে উৎপাদন খরচ হ্রাস পাবে এবং পরিবহন ব্যয়েও স্থিতিশীলতা আসবে।
কাফি
অর্থনীতি
১৮ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১.৮৬ বিলিয়ন ডলার

প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে চলতি জুন মাসেও। এই মাসের প্রথম ১৮ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রায় ১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন বা ১৮৬ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। সে হিসেবে প্রতিদিন রেমিট্যান্স আসছে ১০ কোটি ৩৩ লাখ ডলার।
রবিবার (২২ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে জুন মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত মোট ২৯ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। যা তার আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স।
এর আগে সদ্য বিদায়ী মে মাসও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। পুরো মে মাসে এসেছিল ২৯৭ কোটি বা ২.৯৭ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ছিল ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা। আর প্রতিদিন এসেছিল ৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলার বা ১১৬৯ কোটি টাকা। আর দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সে এসেছিল গত মার্চ মাসে ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে আসে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এব সবশেষ মে মাসে এসেছে ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
অর্থনীতি
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাজেট অনুমোদন

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
আজ রবিবার (২২ জুন) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরিষদের বৈঠকে বাজেটের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বাজেট অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে তা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে। এক্ষেত্রে আজই বরাদ্দ সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ এবং শুল্ক–কর সংক্রান্ত আরেকটি অধ্যাদেশ জারি করার কথা রয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। গত ২ জুন সোমবার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার নতুন বাজেট।
প্রস্তাবিত এ বাজেট নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গত ১৯ জুন পর্যন্ত নাগরিকদের নিকট থেকে মতামত গ্রহণ করা হয়। এরপর কিছু সংযোজন বিয়োজন কর বাজেটের খসড়া চূড়ান্ত করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থনীতি
এনবিআর সংস্কার না হলে রাজস্ব ঘাটতি থাকবেই: সিপিডি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার না হলে রাজস্ব ঘাটতি চলতেই থাকবে বলে মনে করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্কার না হওয়ায় প্রতিবছর এনবিআর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে না।
রবিবার (২২ জুন) সকালে রাজধানী গুলশানের একটি হোটেলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নিয়ে আয়োজিত ডায়ালগে এসব কথা জানান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, প্রতিবছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে না.. কেনো সেটা পারেনা? কারণ সেখানে কোনো কাঠামোগত বা প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখনো হয়নি। সংস্কার ছাড়া এই ধরনের কাঠামো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে রেখে এ রকম ঘাটতি চলতেই থাকবে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠানটির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, বিজিএমইএ এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইনামুল হক খান, ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা, শ্রমিক নেতা রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সূচনা বক্তব্যে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এবার বাজেটে ঘোষণার পর আমরা যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়নি, যার কারণে জনগণ ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মতামত নীতি নির্ধারকদের কাছে পৌঁছানো যায়নি। আমার কাছে মূল বিষয় হচ্ছে রাজস্ব আয়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে প্রত্যক্ষ আয় বেশি, পরোক্ষ আয় কম। কিন্তু আমাদের দেশে উল্টো আমাদের পরোক্ষ কর যা মূলত সাধারণ জনগণের ওপর পরে সেটা বেশি। আমাদের রাজস্ব আয়ের দুই তৃতীয়াংশ হচ্ছে পরোক্ষ কর। এক তৃতীয়াংশ হচ্ছে প্রত্যক্ষ কর। কিন্তু বাজেটের দর্শন হচ্ছে পুনর্বন্টন। যাদের আয় বেশি তাদের থেকে বেশি কর আদায় করা। যারা অবহেলিত বা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী রয়েছে তাদের ওই করের টাকা ব্যয় করা। অর্থাৎ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা। পুনর্বন্টনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে বাজেটে সে বড় ধরনের পরিবর্তন দিতে পারে নাই। অথচ জুলাই-আগস্টের পর আমাদের বড় আকাঙ্খা ছিল। এবারে ব্যতিক্রমী বাজেট হবে, আমরা দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো।
মূল প্রবন্ধে ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, অর্থনৈতিক সমস্যা ও সংকটের সময় অন্তর্বর্তী সরকার বাজেটটি দিয়েছে। গত ৩ বছর ধরে অর্থনীতি সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে। অর্থনীতির মূল সূচকগুলো নিম্নমুখী। সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা দুর্বলতম অবস্থায় ছিল। উচ্চমূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ, ব্যাংকিং খাতে দুর্বলতা- সব কিছু মিলিয়ে এই বাজেটটি প্রণীত হয়েছে। সেজন্য এই বাজেটের অগ্রাধিকার ঠিক করাটা চ্যালেঞ্জের। তবে মূল চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থীতিশীলতান পুন:রুদ্ধার করা। সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলোর যেসব প্রক্ষেপণ দেওয়া হয়েছে সেগুলো উচ্চাকাঙ্ক্ষী মনে হয়েছে। অর্থনীতির বেশিরভাগ সূচক নিম্নমুখী, এর মধ্যে রপ্তানি, রিজার্ভ, রেমিট্যান্স এইগুলো ভালোর দিকে আছে। টাকা ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগে একেবারে স্থবিরতা রয়েছে। রাজস্ব আদায়ে ব্যর্থতা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না।
উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রক্ষেপণ প্রসঙ্গে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, জিডিপির প্রবৃদ্ধি ২০২৬ এর জন্য সাড়ে ৫ শতাংশ বলা হচ্ছে। ২০২৫ এর রিভাইজড বাজেটে এটা ছিল ৫ শতাংশ। অন্যদিকে বিবিএস বলেছে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। ৪ শতাংশ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ করতে গেলে বেশ কিছুটা উল্লম্ফন দরকার। এই প্রবৃদ্ধির জন্য দরকার বিনিয়োগ।
বিনিয়োগ কোথা থেকে আসবে এমন প্রশ্ন করে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, মূল বিনিয়োগ সরকারি বিনিয়োগ হয়ে আসছে। কারণ ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ আসছে না। সরকারি বিনিয়োগ ও জিডিপির অনুপাত সামান্য কম দেখানো হয়েছে। ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ ও জিডিপির অনুপাত দেখানো হয়েছে এখানে উন্নতি বা ২৪.৩ শতাংশ হবে। এই প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হলে অতিরিক্ত ১ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকা লাগবে। সাধারণ সময়ের তুলনায় যা ১২ শতাংশ বেশি। অর্থনৈতিক সংকটের এসময় ব্যক্তিখাতের প্রবৃদ্ধি হঠাৎ এতো বেড়ে যাবে সেটা বোধগম্য না।
ফাহমিদা বলেন, মূল্যস্ফীতির প্রবণতা কিছুটা কমেছে। ২০২৬ এ সাড়ে ৬ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি মে ২০২৫ এ ১০ শতাংশের ওপরে। সেখান থেকে সাড়ে ৬ শতাংশে আনতে হলে বেশ খানিকটা প্রচেষ্টা দিতে হবে। বাজেট অন্তর্বর্তী সরকার প্রণয়ন করবে কী না আমরা জানি না। কিংবা নতুন সরকার করবে.. তারপরও যেসব অসামঞ্জস্যতা, ঘাটতি পাচ্ছি। বাজেটের একটা মধ্যবর্তী রিভিউ হওয়া প্রয়োজন। সেটা এসেসমেন্ট করে জনসম্মুখে প্রকাশ করা প্রয়োজন। বাজেটের মধ্যবর্তী একটা সংশোধন, এসেসমেন্ট ও রিভিউ করা দরকার। তারপর কাঠামোর মধ্যে থেকে পরিমার্জন করা প্রণয়ন, যাতে এর মধ্যে স্বচ্ছতা থাকে। এছাড়া বাজেট বাস্তবায়নেও নজর দেওয়া উচিত।
অর্থনীতি
কালোটাকা সাদা করার সুবিধা থাকছে না: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুবিধা তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তবে অপ্রদর্শিত অর্থ হিসেবে বাজেটে কিছু সুযোগ থাকতে পারে বলে জানান তিনি।
শনিবার (২১ জুন) দুপুরে গবেষণা প্রতিষ্ঠান র্যাপিড আয়োজিত বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা জানান।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ খুব একটা কাজে আসে না। পাঁচ কোটি টাকা দিয়ে কিনে কেউ যদি এক কোটিও দেখাতে না পারে, তাহলে এটা থাকার তো কোনো দরকার নেই। এতই যখন আলোচনা হয়েছে, তা তুলে দেওয়া হোক।
এ সময় তৈরি পোশাকশিল্প মালিকরা বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বা উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের বিষয়টি একটি প্রস্তুতিহীন পরিকল্পনা। তারা এজন্য প্রস্তুত নন।
বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি রুবানা হক বলেন, এটি একটি প্রস্তুতিহীন পরিকল্পনা, আমরা কোনোমতেই এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের জন্য প্রস্তুত নই।
অর্থনীতিবিদরা বলেন, গ্র্যাজুয়েশন-পরবর্তী প্রযুক্তির ব্যবহারে শিল্পখাতে কর্মসংস্থান কমার শঙ্কা আছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় বাড়াতে হবে।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, গ্র্যাজুয়েশন আমাদের হয়ে গেছে ২০২১ সালে। এখন আমরা প্রথম তিন বছরের পর দুই বছর এক ধরনের গ্রেস পিরিয়ডে আছি। এখন নতুন করে যদি তিন বা পাঁচ বছর চাওয়া হয়–এটা এক ধরনের আবদার হতে পারে।