সারাদেশ
একদিনে বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ে নিহত ১০

দেশের পাঁচ জেলায় বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ে ১২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই উপজেলায় বজ্রপাতে ৫ জন, কিশোরগঞ্জে কলেজ শিক্ষার্থীসহ তিনজন, শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ধান কাটতে গিয়ে এক কৃষক, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ধান কাটার সময় এক শ্রমিক এবং ময়মনসিংহে কালবৈশাখী ঝড়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জেলার নাসিরনগর ও আখাউড়া উপজেলায় বজ্রপাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বিকেল ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে নাসিরনগর উপজেলায় তিনজন ও আখাউড়া উপজেলায় দুজন রয়েছেন।
স্থানীয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, বজ্রপাতের সময় কৃষিকাজ ও মাঠে অবস্থানের সময়ই অধিকাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া নাসিরনগরে বজ্রাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন হামিদা বেগম (৪০) নামের এক নারী। তার কণ্ঠনালি ঝলসে গেছে এবং তিনি বর্তমানে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
নাসিরনগরের হতাহতরা হলেন, চাঁনপুর গ্রামের কৃষি শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক (৩৫), গোকর্ণ গ্রামের বাসিন্দা মো. শামসুল হুদা (৬৫), কচুয়া গ্রামের শিশু জাকিয়া (৭), ভলাকুট ইউনিয়ন দুর্গাপুর গ্রামের হামিদা বেগম (৪০),
আখাউড়ায় নিহতরা হলেন, রুটি গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়া (৬০) ও বনগজ গ্রামের যুবক জাকির খাঁ (২২)।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আবহাওয়া হঠাৎ রূপ পরিবর্তন এবং বজ্রপাতের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আখাউড়ায় বজ্রাঘাতে দুটি গরুও মারা গেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ শাহীন বলেন, এটি একটি হৃদয়বিদারক দিন। বজ্রপাতের সময় নিরাপদে থাকার বিষয়ে সচেতনতা আরও বাড়ানো জরুরি। নাসিরনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, নিহতদের পরিবারকে প্রশাসনিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।
আখাউড়া থানা পুলিশের ওসি মো. ছমিউদ্দিন বলেন, বজ্রপাতের সময়ে খোলা মাঠে অবস্থান করায় এ দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। সচেতনতার অভাবকেও কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ: ভৈরব ও কুলিয়ারচর উপজেলায় বজ্রপাতে এক কলেজ শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মৃত আফসার উদ্দিনের ছেলে ফারুক মিয়া (৬০), শ্রীনগর ইউনিয়নের ইউনুস মিয়ার ছেলে ফয়সাল মিয়া (২৮) ও কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের হাজারী নগর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী সফু মিয়ার ছেলে কবির হোসেন (১৭)। তিনি ভৈরবের হাজী আসমত কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ছাড়া আহত হয়েছেন হোসেনপুর উপজেলার আড়াইবাড়িয়া গ্রামের আবু বকর (৬০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত ফারুক মিয়া বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হাওরে জমিতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন এ ছাড়া ফয়সাল মিয়া বাড়ির পাশের জমিতে ধানের খড় আনতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন। অপরদিকে কবির হোসেন জমিতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. উম্মে হাবিবা জুই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বজ্রপাতে তিনজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
অপরদিকে হোসেনপুর উপজেলার কুড়িঘাটে এলাকায় বজ্রপাতে আহত হন আড়াইবাড়িয়া গ্রামের আবু বকর। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তিনি বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান জিকো।
শেরপুর: জেলার নালিতাবাড়ীতে জমিতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন খবির উদ্দিন (৪৫) নামে এক কৃষিশ্রমিক। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরেক শ্রমিক সকুল (২০)। সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত খবির উদ্দিন ও আহত সকুল দুজনেই একই উপজেলার উত্তর কাপাশিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, খবির উদ্দিন, সজমুল মিয়া এবং আরও কয়েকজন শ্রমিক মজুরির বিনিময়ে আন্ধারুপাড়ার কৃষক সারোয়ার হোসেনের বোরো ধান কাটছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে খোলা মাঠেই বজ্রপাতে খবির উদ্দিন ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং সকুল আহত হন। পরে তাদের নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক খবির উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত সকুল প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন।
নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফাহাদ রহমান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা। তিনি বলেন, আমরা সংবাদ পাওয়া মাত্রই আমাদের ফোর্স পাঠিয়েছি। বজ্রপাতের সময় ৮-৯ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। এর মধ্যে একজন নিহত হন ও ৩-৪ জন আহত হন। তবে আহতদের অবস্থা এখন ভালো।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নয়াগোলা-বুলপুরে বজ্রপাতে আব্দুল কাইয়ুম (৫৫) নামে একজন ধান কাটা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কাইয়ুম নয়াগোলা-সাতনইল মহল্লার মৃত্যু সাইফুউদ্দিনের ছেলে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, বিকেলে সদর উপজেলার বুলনপুর এলাকায় ধান কাটছিলেন আব্দুল কাইয়ুম। বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে তিনি ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারান। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে পরিবারে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে নিহত বেড়ে ২ জনে দাঁড়িয়েছে। রোববার (১১ মে) বিকেল ৪টার দিকে সদর উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মরাকুড়ি বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, স্থানীয় ছনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা মজি মিয়ার ছেলে মো. সজীব (২৩) এবং পার্শ্ববর্তী চর ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত আফছর আলীর ছেলে মো. সুরুজ মিয়া (৬০)।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান শফিক খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নিহত সজীবের প্রতিবেশী চাচা মো. আজাদ জানান, ঘটনার সময় নিহত সজীব গরুর খাবারের জন্য মাঠে ঘাস কাটতে গিড়য়েছিল। এ সময় হঠাৎ ঝড় শুরু হলে সে একটি কড়ই গাছের নিচে আশ্রয় নেয়। কিন্তু ঝড়ের কবলে গাছটি উপড়ে গিয়ে সজীবের ওপর পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মাসুম মিয়া খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে সজীব নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।
অপরদিকে, ঝড়ের সময় বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন সুরুজ আলী নামে এক ব্যক্তি। এ সময় হঠাৎ ঝড়ের কবলে একটি গাছের ডাল ভেঙে তার মাথায় পড়লে ঘটনাস্থলেই সেও মারা যায় বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মোবারক হোসেন।

সারাদেশ
চট্টগ্রামে পিকআপ-কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ৫

চট্টগ্রামে পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) চট্টগ্রামের আকবর শাহের সিটি গেট এলাকায় ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ও আহতরা সবাই মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন। তারা চট্টগ্রামের ফিশারি ঘাটে যাচ্ছিলেন মাছ নিয়ে আসার জন্য।
নিহতদের মধ্যে ৩ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- কালা দাশ (৩০), আকাশ দাশ (২৮), অজিত দাশ (৩০) ।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ পরিসহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন।
তিনি বলেন, ভোরে সিটি গেট এলাকায় কাভার্ড ভ্যান-পিকআপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পিকআপটি চট্টগ্রামের দিকে আসার পথে দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ড ভ্যানকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ৩ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন আরও ৫ জন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে হাসপাতালে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় পিকআপ ভ্যানের সামনে থাকা ৩ জন ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। বাকিদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে দুজনকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের সুরতহাল করা হচ্ছে। পিকআপ ভ্যানটিতে মোট ১০ জন মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন।
এ দিকে ফায়ার সার্ভিস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, চট্টগ্রামের আকবর শাহের সিটি গেইট এলাকায় ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ভোর ৫টা ৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
স্টেশন থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব ৫ কিলোমিটার জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের একটি ইউনিট উদ্ধার কাজ করেছে।
সারাদেশ
মাটির নিচে মিলল লুটের পাথর, দুই দিনে উদ্ধার এক লাখ ঘনফুট

সিলেটের অন্যতম পর্যটনরকেন্দ্র সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া বিপুল পরিমাণ পাথর মাটির নিচে লুকানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাটির নিচ এসব পাথর জব্দ করেছে জেলা প্রশাসন।
এছাড়াও দিনভর অভিযান চালিয়ে আরও ৪৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এসব পাথর জব্দ করা হয়। এ নিয়ে গত দুই দিনে প্রায় এক লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা পাথরের মধ্যে ৫০ শতাংশ পুনরায় সাদা পাথরে ফেলা হয়েছে। বাকিগুলোও প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেল থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (গোপনীয় শাখা, মিডিয়া সেল) মো. মাসুদ রানা বলেন, শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত পাথর পুনরায় সাদাপাথরে ফেলা হচ্ছে। বুধবার মধ্য রাত থেকে শুরু করে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত সবমিলিয়ে প্রায় এক লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর অভিনব পন্থায় লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার খবর পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। এসময় মাটিচাপা অবস্থায় বিপুল পরিমাণ পাথর জব্দ করা হয়। জব্দ করা পাথরের মধ্যে ৭ ট্রাক পাথর সাদাপাথরে পুনরায় ফেলা হয়েছে। আরও আনুমানিক ৫ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে। সেগুলোও সাদাপাথর পর্যটন এলাকায় পুনরায় ফেলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কলাবাড়িতে অভিযান পরিচালনা শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (রাজস্ব শাখা, জেলা ব্র্যান্ডিং ও পর্যটন সেল) মাহমুদ আশিক কবির বলেন, কলাবাড়ি এলাকায় ক্রাশার মালিকরা মাটির নিচে পাথর মজুত করে রেখেছেন। সেখান থেকে ৭ ট্রাক পাথর সাদা পাথর জিরোপয়েন্টে ফেলা হয়েছে। আরও আনুমানিক ৫ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা অবস্থায় রয়েছে। শনিবার সেগুলোও সাদাপাথরে ফেলা হবে।
সারাদেশ
বাড়ছে পদ্মার পানি, পানিবন্দি ২০ হাজার পরিবার

কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে হুহু করে বাড়ছে পানি। এতে দৌলতপুরের সীমান্তবর্তী চরাঞ্চলের দুটি ইউনিয়ন রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারির অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ২০ হাজার মানুষ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। বৃহস্পতিবার তুলনায় পদ্মায় আজও পানি বেড়েছে চার সেন্টিমিটার।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৫৭৩ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে এর প্রধান শাখা গড়াই নদেও পানি বেড়েছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, প্রতি বছরই এই সময়ে পানি বাড়ে পদ্মায়। তবে পানি আর বাড়বে না, দ্রুতই বন্যা পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে বলেও জানান তিনি।
পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। আজ সকালে সেখানে বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, অর্থাৎ ১২ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটার, পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত দুই দিনে পানি বেড়েছে ৪ সেন্টিমিটার।
সারাদেশ
রাজশাহীতে একই পরিবারের ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

‘চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’- এমনি একটি চিরকুট পাওয়া গেছে রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বামুনশিখড় এলাকায় একই পরিবারের ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার হওয়া সেই বাড়ি থেকে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন- মিনারুল ইসলাম (৩০), তার স্ত্রী মনিরা বেগম (২৮), ছেলে মাহিম (১৩) ও মেয়ে মিথিলা (১৮ মাস)। মাহিম খড়খড়ি উচ্চ বিদয়ালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করেত। তাদের মরদেহ দুটি ঘরে পাশাপাশি পড়ে ছিল। আর মিনারুলের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল।
উদ্ধারকৃত চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম। এই কারণে যে, আমি যদি মরে যাই, তাহলে আমার ছেলে-মেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে। কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের বোঝা নিয়ে আর খাওয়ার অভাবে। তাই আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম, সেই ভালো। কারো কাছে কিছুই চাইতে হবে না। আমার জন্য কাউকে কারো কাছে ছোট হতে হবে না। আমার জন্য আমার বাবা অনেক লোকের কাছে ছোট হয়েছে। আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার আবু সুফিয়ান বলেন, মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে সেটা নিহত মিনারুলের লেখা। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সারাদেশ
৭০ ট্রাক জব্দ, ৩৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার

লেটের কোম্পানীগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথরে অবৈধভাবে পাথর লুট ও পাচারের বিরুদ্ধে বুধবার রাত থেকে শুরু করে আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত বড় ধরনের অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন।
অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩০টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। এর মধ্যে প্রায় ৭০টি ট্রাকে থাকা প্রায় ৩৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করে নদীতে পুনরায় ফেলার প্রক্রিয়া চলছে। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, উদ্ধারকৃত পাথরের বড় অংশ ধলাই নদীতে ফেরত দেওয়ার কাজ চলছে, যাতে নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ ও পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায়। একই সঙ্গে রাতের মধ্যেই পাথর লুটের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন রাঘব বোয়ালকে গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সাদাপাথর এলাকায় প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পাচার করে আসছে। সম্প্রতি এই লুটপাটের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে ধলাই নদীর তীরবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অবৈধভাবে উত্তোলিত সব পাথর উদ্ধার ও জড়িতদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
এবিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা ও পরিবেশ বাঁচাতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন, মজুত বা পাচারে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। চেকপোস্টে গতরাত থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩০টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। এ সময় প্রায় ৭০টি গাড়িতে সাদাপাথর এলাকার পাথর শনাক্ত হলে সেগুলো পুনরায় প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।