সারাদেশ
একদিনে বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ে নিহত ১০

দেশের পাঁচ জেলায় বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ে ১২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই উপজেলায় বজ্রপাতে ৫ জন, কিশোরগঞ্জে কলেজ শিক্ষার্থীসহ তিনজন, শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ধান কাটতে গিয়ে এক কৃষক, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ধান কাটার সময় এক শ্রমিক এবং ময়মনসিংহে কালবৈশাখী ঝড়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জেলার নাসিরনগর ও আখাউড়া উপজেলায় বজ্রপাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বিকেল ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে নাসিরনগর উপজেলায় তিনজন ও আখাউড়া উপজেলায় দুজন রয়েছেন।
স্থানীয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, বজ্রপাতের সময় কৃষিকাজ ও মাঠে অবস্থানের সময়ই অধিকাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া নাসিরনগরে বজ্রাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন হামিদা বেগম (৪০) নামের এক নারী। তার কণ্ঠনালি ঝলসে গেছে এবং তিনি বর্তমানে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
নাসিরনগরের হতাহতরা হলেন, চাঁনপুর গ্রামের কৃষি শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক (৩৫), গোকর্ণ গ্রামের বাসিন্দা মো. শামসুল হুদা (৬৫), কচুয়া গ্রামের শিশু জাকিয়া (৭), ভলাকুট ইউনিয়ন দুর্গাপুর গ্রামের হামিদা বেগম (৪০),
আখাউড়ায় নিহতরা হলেন, রুটি গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়া (৬০) ও বনগজ গ্রামের যুবক জাকির খাঁ (২২)।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আবহাওয়া হঠাৎ রূপ পরিবর্তন এবং বজ্রপাতের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আখাউড়ায় বজ্রাঘাতে দুটি গরুও মারা গেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ শাহীন বলেন, এটি একটি হৃদয়বিদারক দিন। বজ্রপাতের সময় নিরাপদে থাকার বিষয়ে সচেতনতা আরও বাড়ানো জরুরি। নাসিরনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, নিহতদের পরিবারকে প্রশাসনিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।
আখাউড়া থানা পুলিশের ওসি মো. ছমিউদ্দিন বলেন, বজ্রপাতের সময়ে খোলা মাঠে অবস্থান করায় এ দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। সচেতনতার অভাবকেও কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ: ভৈরব ও কুলিয়ারচর উপজেলায় বজ্রপাতে এক কলেজ শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মৃত আফসার উদ্দিনের ছেলে ফারুক মিয়া (৬০), শ্রীনগর ইউনিয়নের ইউনুস মিয়ার ছেলে ফয়সাল মিয়া (২৮) ও কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের হাজারী নগর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী সফু মিয়ার ছেলে কবির হোসেন (১৭)। তিনি ভৈরবের হাজী আসমত কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ছাড়া আহত হয়েছেন হোসেনপুর উপজেলার আড়াইবাড়িয়া গ্রামের আবু বকর (৬০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত ফারুক মিয়া বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হাওরে জমিতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন এ ছাড়া ফয়সাল মিয়া বাড়ির পাশের জমিতে ধানের খড় আনতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন। অপরদিকে কবির হোসেন জমিতে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. উম্মে হাবিবা জুই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বজ্রপাতে তিনজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
অপরদিকে হোসেনপুর উপজেলার কুড়িঘাটে এলাকায় বজ্রপাতে আহত হন আড়াইবাড়িয়া গ্রামের আবু বকর। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তিনি বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান জিকো।
শেরপুর: জেলার নালিতাবাড়ীতে জমিতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন খবির উদ্দিন (৪৫) নামে এক কৃষিশ্রমিক। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরেক শ্রমিক সকুল (২০)। সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত খবির উদ্দিন ও আহত সকুল দুজনেই একই উপজেলার উত্তর কাপাশিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, খবির উদ্দিন, সজমুল মিয়া এবং আরও কয়েকজন শ্রমিক মজুরির বিনিময়ে আন্ধারুপাড়ার কৃষক সারোয়ার হোসেনের বোরো ধান কাটছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে খোলা মাঠেই বজ্রপাতে খবির উদ্দিন ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং সকুল আহত হন। পরে তাদের নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক খবির উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত সকুল প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন।
নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফাহাদ রহমান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা। তিনি বলেন, আমরা সংবাদ পাওয়া মাত্রই আমাদের ফোর্স পাঠিয়েছি। বজ্রপাতের সময় ৮-৯ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। এর মধ্যে একজন নিহত হন ও ৩-৪ জন আহত হন। তবে আহতদের অবস্থা এখন ভালো।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নয়াগোলা-বুলপুরে বজ্রপাতে আব্দুল কাইয়ুম (৫৫) নামে একজন ধান কাটা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কাইয়ুম নয়াগোলা-সাতনইল মহল্লার মৃত্যু সাইফুউদ্দিনের ছেলে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, বিকেলে সদর উপজেলার বুলনপুর এলাকায় ধান কাটছিলেন আব্দুল কাইয়ুম। বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে তিনি ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারান। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে পরিবারে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে নিহত বেড়ে ২ জনে দাঁড়িয়েছে। রোববার (১১ মে) বিকেল ৪টার দিকে সদর উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মরাকুড়ি বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, স্থানীয় ছনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা মজি মিয়ার ছেলে মো. সজীব (২৩) এবং পার্শ্ববর্তী চর ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত আফছর আলীর ছেলে মো. সুরুজ মিয়া (৬০)।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান শফিক খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নিহত সজীবের প্রতিবেশী চাচা মো. আজাদ জানান, ঘটনার সময় নিহত সজীব গরুর খাবারের জন্য মাঠে ঘাস কাটতে গিড়য়েছিল। এ সময় হঠাৎ ঝড় শুরু হলে সে একটি কড়ই গাছের নিচে আশ্রয় নেয়। কিন্তু ঝড়ের কবলে গাছটি উপড়ে গিয়ে সজীবের ওপর পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মাসুম মিয়া খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে সজীব নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।
অপরদিকে, ঝড়ের সময় বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন সুরুজ আলী নামে এক ব্যক্তি। এ সময় হঠাৎ ঝড়ের কবলে একটি গাছের ডাল ভেঙে তার মাথায় পড়লে ঘটনাস্থলেই সেও মারা যায় বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মোবারক হোসেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজধানী
রাজধানীতে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড

কয়েকদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকায়ও। গতকাল শনিবার চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। ঢাকায় রেকর্ড করা হয় ৪০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা বছরের সর্বোচ্চ।
আজ রোববারও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে তা গতকালের তুলনায় কিছুটা কম। ঢাকায়ও আজ তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
রবিবার (১১ মে) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আজ ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে ৪১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তথ্য সন্ধ্যা ৬টার দিকে আপডেট হতে পারে বলে জানান তিনি।
আগামীকাল তাপমাত্রা আরও কমবে জানিয়ে তিনি বলেন, কোথাও কোথাও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। ঢাকায় বৃষ্টি না হলেও আকাশ মেঘলা থাকতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার (১২ মে) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। এই সময়ে চলমান তাপপ্রবাহ কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ছাড়ালো ৪১ ডিগ্রি

চুয়াডাঙ্গায় শুরু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড রোদে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রচণ্ড গরমে জেলা শহরে বিভিন্ন সড়কের পিচ গলে যেতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। রোদের তাপে শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান-রিকশাচালকরা গরমে অস্থির হয়ে পড়েছেন। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষ।
শুক্রবার (৯ মে) বেলা ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের অর্দ্রতা ছিল ২৪ শতাংশ। যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এদিকে, তীব্র তাপপ্রবাহে শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালকরা অস্থির হয়ে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষ। শহরের কোর্টরোড-বড়বাজার সড়কে পিচ গলে যেতে দেখা গেছে।
তীব্র তাপপ্রবাহে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে চুয়াডাঙ্গা ভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ জেলাবাসীকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহে বয়স্কদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে সবচেয়ে বেশি। ৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা পার হলেই ঝুঁকি থাকে। এ জন্য অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বেশি বেশি পানি, ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে। শিশু-কিশোরদের ঘন পানি ও শরবত পান করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরে ভ্রাম্যমাণ একজন বাদাম বিক্রেতা বলেন, শহরের অলিগলিতে পায়ে হেঁটে ভাজা বাদাম বিক্রি করে সংসার চালাই। তীব্র গরমে বেচাকেনা নেই। গত দুই দিন সামান্য গরম কম ছিল। আজ তো অতিরিক্ত গরম। আজ রাস্তাঘাটে লোকজন চলাচল কম করছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের একজন মুরগি খামারি বলেন, তীব্র গরমে বয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে। এ ছাড়া ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে আরও বেশি হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। পোল্ট্রি, লেয়ার, কালার বার্ড, সোনালিসহ বিভিন্ন জাতের মুরগি মারা যাচ্ছে গরমে। এতে খামারিদের পথে বসার অবস্থা হয়ে পড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের জুয়েল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, রোদের প্রচুর তেজ। বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। ঘরের মধ্যেও প্রচণ্ড গরম। ফ্যানের বাতাস যেন আগুন হয়ে ঝরছে।
চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক জামিনুর হক বলেন, আজ চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যা আগামী ১৩ মে পর্যন্ত ক্রমেই বাড়তে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৯ মে) ভোরে শহরের দেওভোগ এলাকার চুনকা কুটির থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদি জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৪টি ও ফতুল্লা থানায় একটি মামলা আছে। তাকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলায় গ্রেফতার করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে পুলিশের একটি দল শহরের দেওভোগ এলাকার আইভীর বাড়ি চুনকা কুটিরে প্রবেশ করে। এসময় আইভীর গ্রেফতারের খবরে স্থানীয় বাসিন্দা ও তার নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে এলে পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় আইভীর বাড়ির দিকে যাওয়ার চারটি রাস্তায় বাঁশ, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও আইভীর সমর্থকরা। আশেপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে আইভীর বাড়ির দিকে যাওয়ার আহ্বান জানান তারা।
বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে আইভী বলেন, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলায় যদি আমার শাস্তি হয় তাহলে আমি তা মাথা পেতে নেব। আমি কোনো অন্যায় করিনি, চাঁদাবাজি করিনি, হত্যা করিনি। যখন নারায়ণগঞ্জের একটা মানুষও কথা বলতো না প্রতিবাদ করতো না তখন ত্বকী হত্যার প্রতিবাদসহ সব প্রতিবাদ আমি করেছি। আমি আপনাদের সেবা দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, নতুন সরকার এসেছে। আমি কোনো অপরাধ করিনি তাহলে কেন আমাকে গ্রেফতার, জানতে চাই সরকারের কাছে। আমার ভাইকে আমরা হারিয়েছি এক মাস হয়নি, তিনটা ছেলে-মেয়ে। এমন অবস্থায় আমি তো বাড়িতেই ছিলাম, পালাইনি তবে কেন গ্রেফতার?
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
আমতলী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষের নজিরবিহীন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা

আমতলী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহা. বায়েজিদ হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপ, চাঁদাবাজি ও ঘুষ বাণিজ্যের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তার নজিরবিহীন অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি চরম অস্তিত্বের সংকটে পড়ছে। ছাত্র ও শিক্ষকদের গ্রুপিং, পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে শিক্ষক, স্টাফদেরকে দমন-পীড়নসহ নানান অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সুন্দরবন অধ্যুষিত দক্ষিণ বাংলার বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় আমতলীতে মরহুম পীর সাহেব আল্লামা আব্দুল লতীফ (রাহি.) ১৯২৩ সালে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেছেন।২০২১ সালে করোনাকালীন সময়ে আমতলী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পছন্দের প্রতিনিধি নিয়ে নিয়োগ, বোর্ড ম্যানেজ করে অধ্যক্ষ নিয়োগের পথ সুগম করেন। অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েই তিনি মাদরাসার নামে সঞ্চিত সকল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ উত্তোলন করে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। একটি নিরপেক্ষ এবং বস্তুনিষ্ট অডিট হলে তার আর্থিক লেনদেনের অস্বচ্ছতা প্রকাশ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। নিয়োগের কিছুসময় পরেই তিনি মাদরাসার জন্য সরকারী বরাদ্দকৃত অর্থ এবং জমি থেকে আয়ের টাকায় নিজের জন্য কোয়ার্টার নির্মাণ করেন। নির্মাণ ব্যয়ে আর্থিক অস্বচ্ছতার অনেকগুলো অভিযোগ রয়েছে। মাদরাসা গভর্নিং বডির নির্দেশনা অনুসারে কোয়ার্টার নির্মাণের পরে অধ্যক্ষের নিয়মিত মাদরাসায় অবস্থান করার কথা থাকলেও তিনি সপ্তাহের ২ থেকে ৩ দিন নড়াইলে নিজের বাড়িতে অবস্থান করেন। ফলে মাদরাসা অধিকাংশ সময় অভিভাবক শূন্য হয়ে থাকে।
জানা গেছে, মুহা. বায়েজিদ হোসেন অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরে আমতলী মাদরাসার শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী লিল্লাহ বোর্ডিং আানুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেন। বর্তমানে আমতলী মাদরাসায় অসহায়, দরিদ্র শিক্ষার্থীর ফ্রি খাবারের কোন ব্যবস্থা নেই। এই অধ্যক্ষ, তার স্ত্রী, তার কন্যা এবং তার শ্যালিকার পুত্র নিয়মিতভাবে লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের জন্য বরাদ্দের খাবার খাচ্ছেন। সরকারীভাবে বেতনের সঙ্গে বাসা ভাড়া পেলেও তিনি মাদরাসার অর্থে অধ্যক্ষের জন্য নির্মিত ভিলার কোন ভাড়া পরিশোধ করেন না। বিদ্যুৎ বিল, এমনকি ইন্টারনেট বিলও তিনি পরিশোধ করেন না। তার কন্যা চলতি বছর অন্য মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা অংশগ্রহন করলেও নিয়মিত আমতলী মাদরাসায় ক্লাস করেছেন এবং নানান সুবিধা গ্রহন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, এছাড়া তার বিরুদ্ধে মাদরাসার শতবর্ষ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য মাদরাসার ফান্ড থেকে টাকা তছরুপের অভিযোগ এসেছে। মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন এবং সভাপতির অনুমোদন ছাড়াহ অধ্যক্ষের নিজস্ব পকেট কমিটির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক শরণখোলা শাখায় একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলেন। অ্যাকাউন্টের নাম শতবর্ষ উদযাপন কমিটি। অ্যাকাউন্টে নম্বার: ২০৫০৩৭৪০২০১৬৯৮৯১৬। উক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মাদরাসার শতবর্ষ উৎসব পালনের জন্য চাঁদা আদায় করেন। অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েই সন্ন্যাসী বাজার শাখা অগ্রণী ব্যাংকে আমতলী মাদরাসার একটি ব্যাংক একাউন্ট (হিসাব নং ২২০০) থেকে গভর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়াই লেনদেন করেন। বিধি অনুসারে অধ্যক্ষ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বাক্ষরে প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্ট থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারেন। কিন্তু সুচতুর অধ্যক্ষ মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা বোরহান উদ্দীনকে নিয়ে উক্ত ব্যাংক থেকে যখন তখন টাকা তুলে খরচ করছেন।
এ ব্যাপারটি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও এডিসি জেনারেল অবগত হয়ে অভিযোগ আমলে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু বেপরোয়া অধ্যক্ষ উক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থোত্তলন করে নিজের মর্জি মতো খরচ করে চলছেন। মাদরাসার মুহাদ্দিস নিয়োগের জন্য একজন প্রার্থীর কাছ থেকে নিয়োগ বোর্ডের খরচের নামে টাকা নিয়েছেন অধ্যক্ষ বায়েজিদ হোসেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ নিয়োগ বোর্ডের অর্থ ভিন্ন খাত থেকে এসেছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ল্যাসপেন্সার মাওলানা মুহা: বায়েজিদ হোসেনের বিরুদ্ধে নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, নাশকতাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে পুলিশের সঙ্গে মারামারিসহ রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের দায়ে অনেকবার জেল খেটেছেন বলে নড়াইলের স্থানীয় মানুষেরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নড়াইলে ওলামালীগের সক্রিয় নেতা মুহা: বায়েজিদ হোসেন বিগত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সময়ে স্থানীয় এমপি এডভোকেট আমিরুল আলম মিলনের ডান হাত হিসেবে চলতেন। মিলনের পরে তিনি এএইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের নির্বাচনেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি নড়াইলের বিনাভোটের এমপি মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং তার পিতা গোলাম মর্তুজার লোক হিসেবে সব জায়গায় পরিচয় দিয়ে সুবিধা আদায় করে নিতেন। মাশরাফির বাবাকে দিয়ে বিভিন্ন যায়গায় ফোন দিয়ে তদ্বিরও করতেন। তিনি মাদরাসা ক্যাম্পাসে সরকার দলীয় লোক ছাড়া কাউকে সহ্য করতেন না। আমতলী মাদরাসায় বিরোধী সকল রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করে দেন। উপরন্তু আমতলী মাদরাসাকে আওয়ামীকরণের অংশ হিসেবে বিগত গভর্নিং বডিতে মাদরাসা পাশ্ববর্তী দুই আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দীন খান জাকির এবং মাস্টার সাঈদুর রহমানকে বিদ্যুৎসাহী সদস্য হিসেবে সম্পৃক্ত করেন। ঐতিহ্যময় আমতলী মাদরাসায় এমন আওয়ামীকরণ এর আগে কখনও হয়নি।
সূত্র মতে, আমতলী মাদরাসার অধ্যক্ষ পুরো মাদরাসাকে কুক্ষীগত করার জন্য তিনি মাদরাসার হিফজখানা, লিল্লাহ বোডিং, এতিমখানা সহ মাদরাসা ক্যাম্পাসে অবিস্থত বেসরকারিভাবে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ গ্রহন করেন। কোথাও নিজের পছ্ন্দমতো লোকদের বসান। এসব প্রতিষ্ঠানকে তিনি শতভাগ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করেন। শতবছর ধরে চলে আসা আমতলী লিল্লাহ বোর্ডিং বন্ধ করে দেন। কিন্ত লিল্লাহ বোডিংয়ের জন্য বাজারের দোকান ভাড়া, ছ’মিল, চাষযোগ্য বিলান জমির ফসল এবং মানুষের দান-খয়রাত ও যাকাতের টাকার আয়-ব্যায়ের কোন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের লক্ষ লক্ষ টাকা কোথায় যায় অধ্যক্ষ এবং তার পোষ্য লোকজন ছাড়া আর কেউ জানে না।
সম্প্রতি আমতলী তাহফিজুল কুরআন মাদরাসা তথা হিফজখানার নজিরবিহীন স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম নিয়ে অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন সোচ্চার হলে প্রতিষ্ঠাতার নামে গঠিত আল্লামা আব্দুল লতীফ (রাহি.) ট্রাস্টের উদ্যোগে একটি সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত সাধারণ সভায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে হিফজখানার জন্য একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। নবনির্বাচিত কমিটি গত ২৮ এপ্রিল সকালে হিফজখানা পরিদর্শনে গেলে অধ্যক্ষ পুরো ভবনটিতে তালা লাগিয়ে দেয়। এ সময় উক্ত প্রতিষ্ঠানে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহন করছিলো।
সূত্র জানায়, স্থানীয় জনতার চাপের মুখে অধ্যক্ষ মুহা বায়েজিদ হোসেন তালা খুলে দিলেও আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা তার গুন্ডা বাহিনী মাদরাসা প্রতিষ্ঠাতার পরিবারের সদস্যসহ স্থানীয়দের উপর হামলা চালায়। ঘটনার এক পর্যায়ে আলীয়া শাখার তৃতীয় পিরিয়ড চলাকালে অধ্যক্ষের নির্দেশে ডাবল ঘন্টা পিটিয়ে নিরীহ ছাত্রদেরকে মাঠে জড়ো করা হয়। অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠ মাদরাসার শিক্ষক মো. জাকারিয়া হোসাইন, মো. রিয়াজ, সেলিম মোড়ল ক্লাসরুম থেকে ছাত্রদেরকে এনে নানান ধরণের উস্কানী দিতে থাকে। এতে যুক্ত হয় অধ্যক্ষের লাঠিয়াল বাহিনীর অন্যতম হোতা ফাজিল শ্রেণীর ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান দোহা, দাখির পরীক্ষার্থী মো. জাকারিয়া হোসাইন, অধ্যক্ষের শালিকাপুত্র দশম শ্রেণীর ছাত্র মো. গালিবসহ কয়েকজন। তারা উত্তেজক স্লোগান দিয়ে মাদরাসা প্রতিষ্ঠাতার পরিবারের সদস্যদের ওপর মব লিংঞ্চিং তথা উচ্ছৃঙ্খল ছাত্ররা যেন হামলা করে তার জন্য উস্কানী দিতে থাকে। অধ্যক্ষের নির্দেশে ছাত্ররা হিফজখানা ভবনে হামলার জন্য ধাওয়া করলে এসময় কিছু বিবেকবান শিক্ষক, স্থানীয় জনগন এবং পুলিশের হস্তক্ষেপের কারণে বড় ধরণের সহিংসতা এবং রক্তপাত এড়ানো সম্ভব হয়।
এ ঘটনায় মাদরাসার শুভাকাঙ্খী ও স্থানীয়রা হতবাক হয়ে পড়ে। শান্তিপ্রিয় প্রত্যন্ত গ্রামবাসী এরকম সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসের আগে কখনো দেখেনি। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মাদরাসার দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের বেপরোয়া দুর্নীতি ও অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অবিলম্বে মুহা. বায়েজিদ হোসেনের অপসারন চায়।
দুর্নীতি অনিয়মের কথা অস্বীকার করে মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহা. বায়েজিদ হোসেন বলেন, ‘‘সঠিক নিয়মের মাধ্যমে আমি মাদরাসা পরিচালনা করছি’’।
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও ঘুষের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘নিয়োগ প্রক্রিয়া মেনেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক একাউন্ট ১৯৯৬ সাল থেকে যেভাবে পরিচালিত হয়ে আসছিল সেভাবে চালানো হচ্ছে’’।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সারাদেশ
উল্লাপাড়ায় শিবির নেতার ওপর হামলা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় সরকারি আকবর আলী কলেজ শাখা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি রিয়াদ হোসেনের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুর ১২টার দিকে কলেজে প্রবেশের সময় রিয়াদের ওপর এ হামলা চালানো হয়।
তিনি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং একই সঙ্গে কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কলেজে প্রবেশের সময় একই শ্রেণির অপর শিক্ষার্থী ও কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রুবায়েত হোসেন রেকাত তাকে বাধা দেন। পরে রেকাতের নেতৃত্বে কয়েকজন অনুসারী রিয়াদের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে।
এ বিষয়ে ছাত্রশিবির উল্লাপাড়া উপজেলা উত্তর শাখার সভাপতি গোলাম মোস্তফা সাদ জানান, রিয়াদের হাতে ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা দেখতে পেয়ে তারা উত্তেজিত হয় এবং সম্প্রতি বিএনপির সাবেক উপজেলা সদস্য সচিব আজাদ হোসেন আজাদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে।
তার দাবি, এই হামলায় পৌর এলাকার ঝিকিরা গ্রামের সোহাগসহ বহিরাগতরা অংশ নেয়।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আলহাজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, “ছাত্রদলের কাছ থেকে এ ধরনের সন্ত্রাসী আচরণ আমরা প্রত্যাশা করি না। এ ধরনের হামলা এক সময় পতিত স্বৈরাচার আমলে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ করত। বিএনপি নেতার ওপর হামলায় ছাত্রশিবিরের কোনো সদস্য জড়িত ছিল না—আমরা শতভাগ চ্যালেঞ্জ করে তা বলতে পারি।”
তিনি অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
অর্থসংবাদ/কাফি