রাজনীতি
আ. লীগ নিষিদ্ধ না হলে স্বাধীনতা সংকটে পড়বে: নুর

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে এ দেশে আবার স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব নিয়ে সংকট তৈরি হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
শনিবার (১০ মে) রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিলের আগে এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে আমরা যারা নেতৃত্ব দিয়েছি— বড় বড় রাজনৈতিক দল অতীতে যেভাবে সমঝোতা করে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়েছে, রাজনীতি করেছে তাদের আগে আঘাত পড়বে আমাদের বুকে। কাজেই এটা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আর কোনো আপস করা হবে না এবং সরকারকে আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।
নুরুল হক নুর বলেন, এ আন্দোলনে আমাদের কিছু ছাত্রনেতা সামনে ছিল। আমরা নাহিদকে জিজ্ঞেস করতে চাই, সাত মাস সরকারে থেকে কেন এই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে পদক্ষেপ নিল না। নাহিদ, আসিফ, মাহফুজ সরকারের বিশেষ সহকারী ছিল। সেখান থেকে প্রমোশন পেয়ে তারা উপদেষ্টা হয়েছেন। তারা যদি উপদেষ্টা পরিষদের মিটিংয়ে বলতেন যে, মাননীয় উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা আমাদের ভাইয়েরা রক্ত দিয়ে আন্দোলন সফল করেছে। তাদের ত্যাগ ছাড়া আমাদের এখানে আসার কোরো সুযোগ ছিল না। তাদের কৃপায় আমরা এখানে এসেছি।
তাদের দাবি হচ্ছে ফ্যাসিবাদকে চিরতরে নির্মূল করে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করা। আপনি প্রধান উপদেষ্টা, আপনার প্রথম সিদ্ধান্ত ফ্যাসিবাদকে এ দেশ থেকে চিরতরে নিষিদ্ধ করা। তারা কি বলেছেন, বলেন নাই। তারা আন্দোলনের মাধ্যমে নেতা হয়ে পুরানো বন্দোবস্তের মাধ্যমেই ক্ষমতার অপপ্রয়োগ, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য এবং নিজেরা দল গঠনের মধ্যে ব্যস্ত থেকেছে।
তিনি আরও বলেন, যমুনা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন। এটি একটি স্পর্শকাতর জায়গা। একটা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল যাদের সমর্থনে এই সরকার আছে, সেই জায়গা থেকে কী আমরা যমুনার সামনে ঘেরাও করতে পারি? আমরা তো যমুনার সামনে যেতে পারি না। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপ আলোচনার অনেক রাস্তা আছে। এতদিন খবর নেই, হঠাৎ করে তারা রাতের মধ্যে বিভিন্ন জনকে ডেকে লোকজনকে জড়ো করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের আজকে অনুরোধ করা হয়েছে আমরা যেন নিরাপত্তার কারণে ওই এলাকাটি এড়িয়ে চলে। আমরা সরকারের প্রতি সহনশীল, আমরা যমুনার দিকে যাব না। আমরা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে এসেছি।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, আমাদের কথা পরিষ্কার, জাতীয় সংলাপ করেন আর নাই করেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ সিদ্ধান্তে আসতে হবে। অন্যথায় আজকে আমরা যমুনা ঘেরাও না করে আপনাদের ছাড় দিচ্ছি। পরবর্তীতে কোনো রাজপথের কর্মসূচিতে ছাড় দেওয়া হবে না।
উপদেষ্টা পরিষদকে দুর্বল ও ভঙ্গুর মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই উপদেষ্টা পরিষদ দিয়ে বিপ্লব পরবর্তী সরকার চলছে না। তথাকথিত সুশীল কিংবা এনজিও ব্যক্তিত্ব দিয়ে এই সরকার চলবে না। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হবে না। উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের অনুভূতি ও ন্যূনতম সেন্টিমেন্ট বোঝার চেষ্টা করছে না। সরকার যদি বুঝতে পারত তাহলে চেয়ারে বসার পরপরই তারা আওয়ামী লীগকে গণহত্যার দায়ে নিষিদ্ধ করত। এখন পর্যন্ত সরকারের নয় মাস অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু তারা টেস্ট আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
মিছিলের আগে বিক্ষোভ সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন। বক্তব্য শেষে তারা পল্টন এলাকায় মিছিল করেন। এরপর প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় স্মারকলিপি দিতে যান তারা।

রাজনীতি
জোটবদ্ধ ইসলামি দল হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি : চরমোনাই পীর

ইসলামপন্থিদের ঐক্যের ব্যাপারে গণ-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাইর পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, জোটবদ্ধ ইসলামি দল হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি।
শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী নির্বাচনে ইসলামি দলগুলোর পাশাপাশি দেশপ্রেমিক বিভিন্ন দল নিয়ে ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, এই ঐক্য গড়তে পারলে আগামী দিনে আমাদের হাতেই আসবে রাষ্ট্রক্ষমতা।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমরা বারবার রক্ত দিয়েছি, কিন্তু সফলতা পাই নাই।
কারণ, আমরা প্রতিবারই নেতা ও নীতি বাছাই করতে ভুল করেছি। আমরা ৫৪ বছরে অনেক দলকে দেশ শাসন করতে দেখেছি। কিন্তু ইসলামি দলকে এখনো ক্ষমতায় নিতে পারি নাই। এবার ইসলামপন্থীদের ঐক্যের ব্যাপারে গণপ্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি শুরু থেকেই ইসলামপন্থী সব ভোট একবাক্সে আনার কথা বলে আসছি। আগামী নির্বাচনে শুধু ইসলামি দলই নয়, বরং দেশপ্রেমিক আরো অনেক রাজনৈতিক দলও একবাক্স নীতিতে আসতে পারে, ইনশাআল্লাহ। যদি আমরা একত্রে নির্বাচন করতে পারি, যদি কার্যকর ঐক্য গড়ে তুলতে পারি, তাহলে বাংলাদেশে ইসলামপন্থীরাই হবে প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের হাতেই আসবে ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। যে যত শতাংশ ভোট পাবে তাদের তত শতাংশ প্রতিনিধিত্ব থাকবে। এটা এখন জনগণের দাবি, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের দাবি।’
এ সময় তিনি বিএনপিকেও পিআর সিস্টেমে নির্বাচনে আসা উচিত বলে মত দেন।
সংস্কারের প্রশ্নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অটল ও অবিচল জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কারে কালক্ষেপণ ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে বেইমানির শামিল।
এ সময় ৭২-এর সংবিধান জন-আকাঙ্ক্ষার ব্যাপারে বধির ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাজনীতি
পিআর সিস্টেম ছাড়া নির্বাচন দেশের মানুষ মেনে নেবে না : পরওয়ার

পিআর (প্রোপরশোনাল রিপ্রেজেন্টেশন) বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব সিস্টেম ছাড়া নির্বাচন দেশের মানুষ মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে না।’
এ সময় তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কিছু ভূমিকায় জনগণের মধ্যে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তিনি নির্বাচনের আগে গণহত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
ইসলামী দলগুলোর ঐক্য প্রচেষ্টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলেও মন্তব্য করেন মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এর আগে দুপুরে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল মহাসমাবেশে যোগ দেয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আকতার হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মহাসমাবেশে যোগ দেয়।
রাজনীতি
সংস্কার কমিশন দু’একটা দলের জন্য পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে: নুর

আনুপাতিক হারে (পিআর) নির্বাচন হলে কোনো সমস্যা নেই উল্লেখ করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, সংস্কার কমিশনকে বলতে চাই দু-একটি দলকে ভিত্তি করে সংস্কারের নকশা পরিবর্তন করা যাবে না। দু-একটি দলকে প্রাধান্য দিয়ে বেশিরভাগ জনগণের আকাঙ্খার বিপরীতে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন না। আনুপাতিক হারে নির্বাচন হলে কোনো সমস্যা নেই।
আজ শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলনের ডাকা মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নুর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছরের বেশি না হলে সমস্যা কি। আমরা এ কথাগুলো দফায় দফায় বারবার বলেছি। সংস্কার কমিশন ও ঐকমত্য কমিশন কেন জানি দু’একটা দলের জন্য পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে।
তিনি আরও বলেন, যেমনিভাবে জাতীয় নির্বাচন হবে, একইভাবে আমরা স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানাচ্ছি।
রাজনীতি
জুলাই স্পিরিট যতদিন থাকবে, কোনো ষড়যন্ত্র দেশকে পিছিয়ে দিতে পারবে না: সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম মন্তব্য করেছেন যে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে কোনও নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তিকে সামনে রেখে কিছু হবে না। তিনি বলেছেন, “কারও অপপ্রচার বা প্রপাগাণ্ডায় কিছু যায়-আসে না। চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে সবাই ঐক্যবদ্ধ।”
শনিবার (২৮ জুন) বিকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের’ দাবিতে ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত মহাসমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, বিগত দিনে পাঞ্জাবি-টুপি পরিহিতদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আগামীতে দেশ, জনগণ ও খুনিদের বিচার প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আমরা এক থাকলে হাসিনার মতো কেউ আর আসতে পারবে না। যত বড় খুনিই হোক তাদের প্রতিহত করা হবে।”
তিনি সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন।
মহাসমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
রাজনীতি
জামায়াতের ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বছরপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর মগবাজারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এবং ৫ আগস্ট দেশজুড়ে গণমিছিল করা হবে।
এছাড়াও, পয়লা জুলাই থেকে ৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পর্যন্ত নানা কর্মসূচি থাকছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে রংপুরে দোয়া ও আলোচনা সভা
- ৬ থেকে ৮ আগস্ট সাংবাদিক ও সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনা
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “জুলাই সনদ ঘোষণায় জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার।” তিনি আরও বলেন, “শহীদ আবু সাঈদ, যার দুঃসাহসে, অকুতোভয় চেতনা সারা দুনিয়াকে নাড়া দিয়েছিল। বাংলাদেশের সব মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে এসেছিল, তার সাহসিকতার স্মরণে আমরা রংপুরে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। ১৯ জুলাই জামায়াত ঘোষিত যে ৭ দফা, সেটা বাস্তবায়নের জন্য ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছি।”