Connect with us
৬৫২৬৫২৬৫২

মত দ্বিমত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যেসব অর্জন

Published

on

আয়কর

গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকারের ৮মাস অতিবাহিত হয়েছে। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে মানুষের বাকস্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অধিকার ফিরলেও আইনশৃঙ্খলা আর গণহত্যার বিচারে ধীরগতি নিয়ে অস্বস্তিতে অনেকেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানের দায়িত্ব সমূহ ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ, আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করা, আহতদের সুচিকিৎসা করা ও নিহতদের পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে এবং নির্বাচনের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা। পাশাপাশি সকল খাতে সার্বিক সংস্কার নিশ্চিত করা। এই দাবিগুলোর প্রতি জনগণের প্রত্যাশা ছিল বিশাল এবং তা ছিল যথার্থ। তবে সরকার এই দায়িত্বসমূহ কতটুকু পালন করতে পেরেছে সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। আইন শৃঙ্খলা এবং ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের বিচারে সরকারের ধীরগতিতে অসন্তুষ্ট দেশের নাগরিক সমাজ। বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকারের অতিরিক্ত নমনীয়তা এই দায়িত্ব সমূহ যথাযথ পালনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পতনের ঐতিহাসিক দিন। এর পরবর্তী কয়েকদিনে বিপ্লবী জনতার চাপে সরকারের পতন ঘটে। ড. ইউনূস সে সময়ে প্যারিসে ছিলেন, যার কারণে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণে কিছুটা বিলম্ব হয়। তবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের আহ্বানে তিনি সম্মত হনএবং দেশের জনগণও তাকে সমর্থন জানায়। ৮ আগস্ট, ২০২৪-এ তিনি শপথ গ্রহণ করেন প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে, যা ইতিহাসের একটি মাইলফলক হয়ে দাঁড়ায়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর,দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল বিপর্যস্ত। শেখ হাসিনার সরকার লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে ব্যাংকগুলোর তহবিল প্রায় খালি হয়ে গিয়েছিল,এবং ভারতসহ অন্যান্য দেশের ঋণ পরিশোধের চাপ ছিল। এরপর শুরু হয় ভয়াবহ বন্যা, ভারত ত্রিপুরার ডুমুর বাঁধ খুলে দিলে স্রোতের মতো পানি বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়,এবং একযোগে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তবে,এই দুর্দিনে সরকারের পাশাপাশি বহু সামাজিক সংগঠনও মানুষের পাশে দাঁড়ায়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এমন অবস্থায়, বিভিন্ন ছদ্মাবরণে পতিত সরকারের সমর্থকরা দাবি আদায়ের নামে মাঠে নামে।আনসারদের কর্মসূচি থেকে শুরু করে শ্রমিকদের আন্দোলন,গার্মেন্টস ভাঙচুর,শিক্ষার্থীদের অটোপাশের দাবি- এসব কিছু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে ঘটে। এসব আন্দোলনের পেছনে দেখা যায় সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ।এর মধ্যে একটি বড় ষড়যন্ত্র শুরু হয় ইসকন নেতা চিন্ময় কৃঞ্চ দাসের গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে,যেখানে দেশি-বিদেশি চক্র সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করে। ভারতের টেলিভিশন চ্যানেল মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে এই সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়াতে থাকে। বাস্তবতা হলো, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিই মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া,ভারতীয় গণমাধ্যমসহ কিছু দেশি-বিদেশি চক্র একযোগে ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে থাকে,যা সরকারকে ব্যর্থ করতে তাদের সর্বাত্মক চেষ্টা ছিল। এই ষড়যন্ত্রের মধ্যে ৪৯টি ভারতীয় গণমাধ্যম ১২ আগস্ট থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এসব মিডিয়া পণ্য হিসেবে কেবল গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, যা বাস্তবতার কিছুই ছিল না। তবে,এখনো এসব ষড়যন্ত্র থেমে যায়নি। বরং নতুন নতুন আক্রমণ আসতে পারে, যার মোকাবিলা করা কঠিন।

এখন প্রশ্ন হলো, দেশের মানুষ কী চায়! দেশের মানুষ একটি সুন্দর বাংলাদেশ চায়, যেখানে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার থাকবে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি হবে,এবং ক্ষমতায় আসা কিংবা টিকে থাকার জন্য কোনো দল বা গোষ্ঠীর গোলামি করবে না। জনগণ স্বাধীনভাবে কথা বলবে,এবং গণমাধ্যমও ক্ষমতাকে প্রশ্ন করতে সক্ষম হবে। ফ্যাসিস্ট,খুনি ও লুটেরা সবাই বিচারের মুখোমুখি হবে। নির্বাচন শিগগিরই অনুষ্ঠিত হবে এবং সৎ, যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিরা মনোনয়ন পাবে।এমন একটি বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হলে, ড. ইউনূস সরকারের দোষত্রুটি নিয়ে অযথা সময় নষ্ট না করে, ঐক্যবদ্ধভাবে গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি একত্রিত করে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
ড. ইউনূস এই দেশের হাল ধরার পর আজ পর্যন্ত কোনো গুরুতর ভুল করতে দেখা যায় নাই। কাউকে তাচ্ছিল্য করে কোনো নোংরা ভাষাও ব্যবহার করেননি। আজ পর্যন্ত এমন কোনো কথা বলেননি যার জন্য আমরা তাঁর প্রতি কেউ বিরক্ত হবে।

ভারত হয়তো তার সোনার ডিম দেওয়া মুরগী হারালো। তবে ভারত বসে নেই । ভারত ট্রাম্পের কাছে গিয়েছে, কূটনৈতিক ভাবে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে, মিডিয়ার মাধ্যমে নানা প্রোপাগাণ্ডা চালিয়েছে। তবুও কি কোনো কূটনীতিক চাপ বাংলাদেশকে দিতে পেরেছে? কারন,ড. ইউনূস এর বৈশ্বিক ইমেজ। অনেকেই বলেছিলো সামিট গ্রুপ,এস আলম গ্রুপের ব্যাংক হিসাব জব্দ করলে অর্থনৈতিক স্থবিরতা আসবে। ড. ইউনূস তাদের সবার ব্যাংক হিসাব ক্লোজ করালেন। উল্টো মানি লণ্ডারিং এর মামলা দিলেন। অর্থনৈতিক অবস্থা আগের চেয়ে উন্নতর দিকে। ৩/৪ মাস ধরে ডলার স্থিশীল রয়েছে। লুট হওয়া ব‍্যাংকগুলোকে বন্ধ না করে ধিরে ধিরে বাচিঁয়ে তুলছেন !

উগ্রবাদী সংগঠন ইসকন যখন মাঠে নেমেছিলো, তখন ইসকনের উগ্র কর্মীদেরকে ভারত থেকে বিভিন্ন তথ্য দেওয়া হয়েছিলো,’ইউনূস সরকার হিন্দুদের গায়ে আঘাত দিলে তাকে ব্যবহার করে ভারত বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করবে’। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ইসকন সমর্থকরা চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর গায়ে গরম পানি ঢাললো,আইনজীবী সাইফুলকে শহীদ করলো। সরকার যারা গরম পানি ঢেলেছে তাদের সবাইকে গ্রেপতার করেছে। চিন্ময় এর মতো ’র’-এর এজেন্টকে গ্রেপ্তার করলে ভারত বড় ঝামেলা করবে, অথচ চিন্ময়ের গ্রেপতার হওয়াতে অনেক হিন্দু খুশি হয়েছিলো। ভারতকে কোন শব্দ করতে না দিয়ে উলটো পুরো ইসকনকে ঠান্ডা করে দিয়েছেন।

ড: মুহাম্মদ ইউনূস দ্রব‍্যমুল‍্যের লাগাম টেনে ধরেছেন। বাজারের সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আগের চেয়ে বেশ কমেছে, এমনকি এই রোজাতেও। সয়াবিন তেল নিয়েও যে সংকট ছিলো তা রোজার প্রথম ৫ দিনে সহনশীল ছিল। সর্বশেষ কখন আমরা পিয়াজ ৩০-৩৫ টাকা, ডিমের ডজন ১২০ আর আলু ২০ টাকা, ৪০০ টাকার কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা কেজি,১০০ টাকার তরকারি এখন ৩০/৪০ টাকা ছিল তা অনেকেই ভুলে গেছি।

এদিকে রোজার শেষে ঈদুল ফিতরের উৎসবও আরও রঙিন হয়ে ধরা দিয়েছে দেশবাসীর কাছে। এদেশে চিরায়ত চিত্র সড়কে নাড়ীর টানে ঘরে ফেরা যানবাহনের যাত্রীদের ভোগান্তি। এবার সেই দুর্দশার চিত্রও উধাও! ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িফেরা মানুষের প্রধান রুট ঢাকা-উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে কোনো যানজট নেই। হাইওয়ে পুলিশ ২৪ ঘণ্টা কঠোর শ্রম দিয়ে মহাসড়ক যানজট মুক্ত রেখেছে। একই দৃশ্য দেখা গেছে অন্যান্য মহাসড়কেও। প্রশাসনের আন্তরিক তদারকির কারণে মহাসড়কে নেই যানবাহনের বাড়তি চাপ, দুই-একটি ঘটনা ছাড়া স্বস্তির ঈদযাত্রা দেখা গেছে রাজধানীর সবচেয়ে বড় বাসস্ট্যান্ডগুলোতে। গাবতলী, মহাখালী বাস টার্মিনালের যাত্রীদের অনেকে বলছেন, সড়কে যা ঘটেছে, তা বিশ্বাসই হচ্ছে না তাদের। জীবনে এত নির্বিগ্নে ঈদযাত্রা তারা কখনও করতে পারেনি। ঈদের মধ্যে গত ৪০ বছরেও এমন দৃশ্য দেখেনি দেশের মানুষ।

হাসিনা যাওয়ার সময় আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া থেকেও ঋণ নিয়ে রেখেছিলো। ড.ইউনূস আস্তে আস্তে ঋণ পরিশোধ করা শুরু করেছেন জানুয়ারি থেকে। কাতার থেকে জ্বালানি কেনা হলেও ২৫৪ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রেখেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। তবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরের মধ্যেই ২৩ এপ্রিল বকেয়া টাকার সর্বশেষ পেমেন্ট দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বিভিন্ন সংস্থার সর্বমোট বকেয়া ছিল ৩.২ বিলিয়ন ডলার। অন্তর্বর্তী সরকার সেটি ৬০০ মিলিয়নে নামিয়ে এনেছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব ৪ দিনের জন্য বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। গুতেরেসের সফর এই সরকারের বিশ্বব্যাপি স্বীকৃতি বাড়াবে৷ তাছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন আগামী বছর মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে সেখানে তাদের সাথে ইফতার করতে চান!

ড.মুহাম্মদ ইউনূসের কণ্ঠে যে মমত্ত দেখা যায় তা কৃত্তিম নয়। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক টানে উচ্চারিত তার প্রতিটি শব্দই যেন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের হৃদয়ের গভীরতম যন্ত্রণার প্রতিধ্বনি হয়ে উঠেছিল। এ ভাষা শুধুই কথা নয়, এ ভাষা ছিল অনুভূতির। একটি হারানো শেকড়ের আহাজারি ও একটি জাতির অস্তিত্ব সংকটের নির্জন কান্না। তার কণ্ঠে কোনো জটিল রাজনীতি নাই,নেই কোনো চাতুরতা বা কূটনৈতিক ভাষা। শুধু এক প্রবীণ মানুষের মমতা আর এক নিঃস্ব জাতির বেদনার প্রতি গভীরতম সংবেদনশীলতা।

ড. ইউনুসের বক্তব্য কখনও অ-কাজের কথা বলেন না। সবচেয়ে বেশী আকর্ষণ করে সেটা হলো তিনি কখনও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করেন না, অস্বীকারও করেন না, ছোটও করেন না আবার মহাভারত বি-শা-লও বলেন না। ইতিহাস ইতিহাসের জায়গায় রেখে দেন। কারও কোন সমালোচনা বা ব্যাঙ্গ করে কথা বলেন না। তিনি কাউকে ভয় দেখান না,প্রতিশোধ নিবেন ও না। তিনি নিজেকে নিয়ে অহংকার করেন না। দুনিয়ার কারও চাটুকারিতাও করেন না। তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন না, রাগ করে কথাও বলেন না। তিনি ঠান্ডা মাথার এক দারুণ খেলোয়াড়। তিনি ভবিষ্যতের কথা বলেন।স্বপ্নের কথা বলেন। তরুণদের এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। তিনি ধর্ম নিয়ে ক্রিটিসাইজ করেন না। তিনি এক অনন্য অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। এটাকেই বলে আন্তর্জাতিক ব্যাক্তিত্ব।

ডঃ ইউনুসের সফলতা যাই হোক না কেন, সুযোগ পেলেই আমরা ড.ইউনুসকে শূলে চড়াই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করি। যেটা না সেটাও বলি। কিন্তু বিগত ৮মাসে ২০০’র অধিক আন্দোলন আর হঠাৎ করে সকল ক্ষেত্রে তীব্র বৈষম্য অনুভূত হওয়া জাতিকে নিয়ে তিনি যে কাজগুলো করছেন সেগুলোর জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোটাও জরুরী।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্জনসমূহ:
১.বিশ্বের ৭৫ তম দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক গুম বিরোধী সনদে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ।
২.আওয়ামী আমলে অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির কারণে বাফুফের উপর ফিফা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো৷ বাফুফের উপর সে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ফিফা।
৩.সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ থেকে ৩২ করা হয়েছে।
৪.ধর্ষণের তদন্ত ১৫ দিন এবং বিচার ৯০ দিনের মধ্যে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
৫.সর্বশেষ ৮ মাসে দেশী বিদেশী ঋণ পরিশোধ করেছে ৬২ হাজার কোটি টাকা।
৬. রেমিট্যান্স প্রবাহ বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে । দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে ২৭.৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। যা গতবছরের এই সময়ের তুলনায় ৪ বিলিয়ন বেশি।
৭. বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পতন থেকে রক্ষা করেছেন। রিজার্ভ বেড়ে ২ হাজার ১৪০ কোটি ডলার।
৮. ডলারের দামের পতন ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।
৯. রমজানে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার আশংকাকে আশ্চর্যজনকভাবে সফল হয়েছেন। রোজায় জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি।
১০. হাসিনা ও তার পরিবারের একাউন্ট থেকেই উদ্ধার করেছে ৬৩৫ কোটি টাকা।
১১. দেশের খাদ্যপণ্যে ভর্তুকি বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ।
১২. গত ২২ মাসের তুলনায় সর্বনিম্ন মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে এই ফেব্রুয়ারিতে।
১৩. স্কুলের বইগুলোতে হাসিনার উল্টাপাল্টা সিলেবাস আর পারিবারিক তোষামোদির গল্প বাদ দিয়ে সাজানো গোছানো সিলেবাস দেওয়া হচ্ছে।
১৪. এখন থেকে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকেরা পাবেন দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা।
১৫. লুট হওয়া ব্যাংকগুলোর নিশ্চিত ধ্বংস হতে রক্ষা করেছেন।
১৬. আদানির কাছে বিদ্যুৎ খাত ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন। পুরো রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ ভালো আছে।
১৭. রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১৫% এর বেশি। ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে তার সময়ে।
১৮. বিগত বছরগুলোতে বর্ডার কিলিং গড়ে বছরে ৫০০ এর অধিক ছিল। গতবছর ছিল ৫৭৭জন। (তথাকথিত বন্ধুর দ্বারা হত্যা।) ইউনুস সরকারের সময় তা ৭ মাসে ১০ জন।
১৯. দেশটাকে রাজ্য থেকে আবার রাষ্ট্রের মর্যাদায় আসীন করেছেন তিনি। তাই জুলাই বিপ্লবকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলা হয়।
২০. বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে ভারতের সাথে চোখে চোখ রেখে কথা বলার মতো সৎ সাহস একমাত্র প্রফেসর ইউনুসের আছে।
২১. সকল সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব একমাত্র তার পক্ষেই আদায় করা সম্ভব হয়েছে।
২২. বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসে একমাত্র তার আমলেই সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ও ডিজিটাল প্লাটফর্মে তুমুল সমালোচনা ও তার বিরুদ্ধে কুৎসিত ভাষায় অপপ্রচার করা যাচ্ছে। কাউকে তিনি গ্রেফতার করেন নি। যা ফ্যাসিসট জমানায় কল্পনাও করা যেত না।
২৩. প্রবাসীদের ভিআইপি মর্যাদা দিয়েছেন তিনি। ঘোষণা করেছেন রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে।
২৪. তার যোগ্য নেতৃত্বে আরব আমিরাতে বেশ কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি কারাগার থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছে।
২৫. জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে তিনি মাত্র ৭ সদস্যের প্রতিনিধি নিয়ে যোগদান করেন। ফ্যাসিস আমলে প্রতি বহরে থাকতো প্রায় ৩০০ জন। যার বিপুল খরচ জাতি বহন করতো।
২৬. বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র বক্তা তিনি যার প্রতি ঘন্টা বক্তব্যের মূল্য প্রায় কোটি টাকা।
২৭. রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার। যা মেরামত ও সংস্কার করছেন তিনি।
২৮. প্রতিটি হত্যাকান্ডের বিচার কাজ শুরু করেছেন তিনি।
২৯. রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজে দেশে পাঠানোর জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে আগামী ঈদ তারা নিজ ভিটা বাড়িতে করতে পারে।
৩০. বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে যোগ্য রাষ্ট্রনায়ক ড. ইউনুস। পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বাধিক সমাদৃত বাঙালি তিনি।
অনেক কিছু বলা সহজ। গালি দেওয়া সহজ ৷ নির্বাচন দ্রুত চাওয়াও সহজ ৷ হাসিনার রেখে যাওয়া রুগ্ন অর্থনীতিকে যে কারো জন্য এসে ঠিক করতে ঘাম ছুটে যেতো। পারতো কিনা সেটা নিয়েও ঢের সন্দেহ আছে। উপরন্তু, অর্থনীতি, দ্রব্যমূল্য, মুদ্রাস্ফীতি ঠিক রাখতে না পারলে ক্ষমতায় আসলেও যে টিকতে মুশকিল হবে, এটা রাজনৈতিক দলগুলো ভালো করেই জানে।

র্দুনীতিগ্রস্থ একটা দেশ আর ব্যক্তি স্বার্থকেন্দ্রিক একটা জাতিকে ঠিক করতে ড. ইউনুস হয়তো হিমশিম খাচ্ছে অনেক কিছু করতে। প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যদি সম্মত না হতেন তাহলে দ্বিতীয় অন্য কোন ব্যক্তিকে সেই জায়গায় তখন চিন্তা করতে পারিনি।

বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হলো ২০২৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বেলজিয়াম, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, স্লোভেনিয়া এবং সুইডেনের ভিসা আবেদন এখন থেকে করা যাবে ঢাকার সুইডেন দূতাবাস থেকে। এছাড়াও, পর্তুগাল, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও ক্রোয়েশিয়া তাদের নিজস্ব ভিসা অফিস চালু করেছে ঢাকায়, যা ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকারের দক্ষ কূটনৈতিক তৎপরতার ফলে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দীর্ঘদিনের দাদাগিরির রাজনীতি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কাটিয়ে সরকার বাংলাদেশিদের জন্য সহজ, স্বচ্ছ এবং দ্রুত ভিসা প্রক্রিয়া নিশ্চিত করেছে। ফলে: ভিসা আবেদনকারী বাংলাদেশিদের জন্য সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। ভিসা প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও সহজ হবে। বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। দক্ষ জনশক্তি, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের জন্য ইউরোপে যাওয়ার পথ আরও উন্মুক্ত হবে।

ড. ইউনুস সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ বিশ্ব মঞ্চে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং জনসাধারণের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘবের এই পদক্ষেপ তার নেতৃত্বের আরেকটি সফলতা। ইউরোপের নতুন দুয়ার উন্মুক্ত হলো- এটি বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল অগ্রগতি!

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে সেদেশের সরকার ও চীনা কম্পানিগুলোর কাছ থেকে ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে দেশটির প্রায় ৩০টি কম্পানি বাংলাদেশের বিশেষ চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে। এ ছাড়া মোংলা বন্দর আধুনিকীকরণ প্রকল্পে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে চীন। চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা হিসেবে আরো ১৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। অনুদান ও অন্যান্য ঋণ সহায়তা হিসেবে আসবে বাকি অর্থ। বাংলাদেশের বিদ্যমান শুল্ক ও কোটামুক্ত রপ্তানি সুবিধা আরো দুই বছর বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছে চীন। এর আগে চীনা বাজারে ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য এই সুবিধা ছিল। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে চীনা উপ প্রধানমন্ত্রী ডিং জুয়েশিয়াংয়ের এক বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে চীনা উপ প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন।

চীন বাংলাদেশ থেকে আম নিতে আগ্রহী। বাংলাদেশও চীনে আম পাঠাতে চায়। বাংলাদেশ চীনে আম রপ্তানির জন্য ৬ বছর আগে দেশটির কাছে আবেদন করেছিল। তবে নানা জটিলতায় সেটা আর কার্যকর হয়নি। তবে প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের মধ্যে দিয়ে সেদেশে আম রপ্তানির দুয়ার খুলেছে। আগামী মে-জুন মাস থেকে চীনে আম রপ্তানি শুরু হবে। এর মধ্যে দিয়ে বিদেশে বাংলাদেশি আমের চাহিদা বাড়বে।

তিস্তা নদী প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক আগেই থেকে চীনের সহায়তা চেয়ে আসছে বাংলাদেশ। এবার প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে এই প্রকল্পে সহায়তার আশ্বাস মিলেছে। তবে শুধু তিস্তা প্রকল্প নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকেননি অধ্যাপক ইউনূস। তিনি নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য চীন থেকে ৫০ বছরের মাস্টারপ্ল্যান চেয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক চীন সফরে সেদেশের পানিসম্পদমন্ত্রী লি গোইয়িংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেসময় নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বৈঠকে তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা ও ঢাকার চারপাশের দূষিত পানি পরিষ্কারের বিষয়ে সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন ড. ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে একটি চুক্তি ও ৮টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং কারিগরি সহযোগিতা–সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে। এ ছাড়া দুই দেশের চিরায়ত সাহিত্যের অনুবাদ ও প্রকাশনা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিনিময় ও সহযোগিতা, সংবাদ বিনিময়, গণমাধ্যম, ক্রীড়া ও স্বাস্থ্য খাতে সই হয়েছে ৮টি সমঝোতা স্মারক।

ড. ইউনূস এর প্রশংসা আগে একজন সহ্য করতে পারতেন না,তিনি রোগ ছড়িয়ে পালিয়েছেন । তিনি যথযত সম্মান প্রাপ্য অথচ ড. ইউনূস দেশে র্দীঘদিন ধরে অবহেলিত ছিলেন। তাঁকে আরেকটু দেশটা গোছানোর সময় দিন। তিনি থাকার জন্য আসেন নাই। নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়ে একের পর এক চমক দেখিয়ে যাচ্ছেন। জুলাই অভ্যুত্থানের মতো এত বড় একটি ঘটনার পর সারাদেশে যেখানে বিশাল বিশৃঙ্খলা থাকার কথা, সেখানে সরকার দারুণভাবে সব পরিস্থিতি সামলে নিয়েছে। দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ড. ইউনূস একটার পর একটা সফলতা অর্জন করে চলেছেন। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে চীন ও ভারত কূটনীতিতেও তিনি দারুণ চমক দেখিয়ে এখন সারাদেশের মানুষের প্রিয়ভাজন হয়ে উঠেছেন। সাধারণ মানুষের চাওয়া ড. ইউনূস আরও অন্তত: চার বছর ক্ষমতায় থাকলে দেশের অর্থনৈতিক চেহারা পাল্টা যাবে। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। দু-চারটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া দেশের পরিস্থিতি শুধু সামাল দেওয়াই নয়, দারুণভাবে দেশ পরিচালনা করে চলেছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার।

লেখক: অধ্যাপক সরওয়ার জাহান
উদ্দোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা
সাউদার্ণ ইউনিভার্সিটি

অর্থসংবাদ/কাফি

শেয়ার করুন:-

মত দ্বিমত

নতুন নেতৃত্বের খোঁজে বাংলাদেশ: ছাত্র আন্দোলন, নৈতিক সংকট এবং বিকল্প পথের সন্ধান

Published

on

আয়কর

একটি রাষ্ট্র তখনই বিকশিত হয়, যখন রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিশ্বাসযোগ্যতা, আদর্শ এবং জনসম্পৃক্ততায় অনড় থাকে। বাংলাদেশের বাস্তবতা আজ ঠিক এর উল্টো পথে হাঁটছে। বহুকাল ধরে চলমান শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতা, রাজনৈতিক দলগুলোর স্বার্থান্বেষী ভূমিকা, এবং জাতির অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা গভীর নৈতিক ও সাংগঠনিক সংকট; এই তিনটি উপাদান আজ জাতিকে এক ভয়াবহ মোড়ের মুখে দাঁড় করিয়েছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

রাজনৈতিক অপশাসন ও বিরোধী দলের ব্যর্থতা

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

অতীতের সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থেকেও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, আইনের শাসন ও প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিরোধী দলগুলোর অবস্থাও খুব একটা আলাদা নয়। বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃত্বে গঠিত ঐক্যজোট গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা এবং সময়োপযোগী কৌশলের দিক থেকে দুর্বল, নানান নৈতিক প্রশ্নে দুষ্ট। এই অবস্থায় জনগণের সামনে বাস্তবিক অর্থেই কোনও কার্যকর বিকল্প নেই।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ছাত্র সমাজ ও নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনা

এই নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক পটভূমিতে নতুন আলো দেখাতে শুরু করেছে কিছু তরুণ নেতৃত্ব ও ছাত্রসমাজ। ২০২৪ সালের ‘জুলাই আন্দোলন’ হোক বা সাম্প্রতিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ—এসব ক্ষণিকের প্রতিবাদ হলেও এতে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে। একজন ‘হাসনাত’ বা তার মতো কিছু তরুণ নেতৃত্ব প্রতীক হয়ে উঠছে বিকল্প রাজনৈতিক নৈতিকতার। কিন্তু অতি অল্প সময়ের মধ্যেই তারা নিজেদেরকে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত করছে। দ্রুত না শুধরালে তারা সংখ্যার ঘূর্ণিপাকে হারিয়ে যাবে। এই মুহূর্তে তাদের জাতীয় নেতৃত্বের আসনে বসানো বাস্তবসম্মত নয়, তবু সমাজের একাংশ এই ধরনের বিকল্প চিন্তার দিকে ঝুঁকছে।

সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষতা ও সক্রিয় পর্যবেক্ষণ

যদিও সামরিক বাহিনী প্রকাশ্যে নিরপেক্ষতার ভূমিকা বজায় রেখেছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়, তখন তাদের ভূমিকাও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিগত অভিজ্ঞতা বলে দেয়, সেনাবাহিনীর ‘নীরব উপস্থিতি’ কখনো কখনো রাষ্ট্রীয় ভারসাম্যের গোপন রক্ষাকবচ হয়ে ওঠে। তবে এই ‘প্রতীক্ষমাণ সংযম’ কতদিন অব্যাহত থাকবে, তা দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক চিত্রের উপর নির্ভর করছে।

আমলাতন্ত্র ও সচিবালয়ের ভূমিকা

বর্তমানে সচিবালয়ভিত্তিক আমলাতন্ত্র রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত, দুর্নীতিগ্রস্ত ও দলীয়করণের শিকার। সচিবালয়ের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তপ্রক্রিয়া এখন আর জনস্বার্থনির্ভর নয়, বরং ক্ষমতাসীনদের অনুগত নীতিগত ‘হ্যাঁ-মানুষ’-এর দল হয়ে উঠেছে। ফলে বাস্তবায়ন-ভিত্তিক রাষ্ট্রীয় কাঠামো দুর্বল হয়ে গেছে, এবং জনগণের প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা ক্রমাগত কমে আসছে।

সাংবিধানিক ভারসাম্য ও নৈতিক নেতৃত্বের শূন্যতা

বাংলাদেশে কার্যকর সাংবিধানিক ভারসাম্য আজ একটি রূপকথা মাত্র। নির্বাহী, আইনসভা ও বিচার বিভাগের পারস্পরিক নিরপেক্ষতা ও শক্তি-বণ্টনের যে তাত্ত্বিক কাঠামো সংবিধানে ছিল, তা এখন ক্ষমতাকেন্দ্রিক দখলদারিত্বে পরিণত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে জাতির সামনে এখন প্রয়োজন এমন একটি নৈতিক নেতৃত্ব, যেটি দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে দেশকে পুনর্গঠন করতে পারবে।

ড. ইউনুস: বিতর্কের মধ্যেও একটি গ্রহণযোগ্যতা

ড. মুহাম্মদ ইউনুস এমন এক ব্যক্তি যাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে এখনো বাংলাদেশি নৈতিক নেতৃত্বের মুখ হিসেবে দেখা হয়। তার প্রতি সরকারের দমনমূলক আচরণ দেশের বিচারব্যবস্থা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির সংকটকেই স্পষ্ট করেছে। যদিও তাঁকে সরাসরি রাজনীতিতে দেখতে চায় না অনেকেই, তবু একজন পরামর্শদাতা, নীতিনির্ধারক বা তত্ত্বাবধায়ক নেতৃত্ব হিসেবে তিনি গ্রহণযোগ্য হতে পারেন।

জাতির সামনে এখন মূল প্রশ্ন দুটি

১. আমরা কি ব্যর্থ, দুর্নীতিগ্রস্ত ও দলান্ধ নেতৃত্বের গোলকধাঁধায় ঘুরে ঘুরে নিজেদেরই ধ্বংস করছি?
২. নাকি আমরা এখন বিকল্প ভাবনার, নৈতিক নেতৃত্বের এবং নতুন প্রজন্মকে সামনে আনবার একটি ঐতিহাসিক সুযোগের সামনে দাঁড়িয়ে?

আজ আমাদের দরকার সুসংগঠিত একটি জাতীয় জাগরণ—যেখানে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশপ্রেম, সততা ও সাহসিকতা থাকবে। রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাশি সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জাগরণ আবশ্যক। সময় এসেছে এই প্রশ্নটি জোর দিয়ে তোলার: আমরা কি বর্তমানকে অস্বীকার করে ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে পারি?

রহমান মৃধা, গবেষক ও লেখক
(সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন)
Rahman.Mridha@gmail.com

অর্থসংবাদ/কাফি

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

বিদায় নাডাল: এক কিংবদন্তির শেষ অধ্যায়ে হৃদয়ের র‍্যাকেট হাতে কিছু কথা

Published

on

আয়কর

ব্যক্তিগত সংযুক্তি: হৃদয়ের রকেটে বাজে টেনিসের সুর
আমি নিজে কোনো পেশাদার খেলোয়াড় নই। তবে খেলার সঙ্গে আমার প্রেম বহুদিনের। ছোটবেলায় ফুটবল আর ব্যাডমিন্টনে কাটিয়েছি বিকেলগুলো—বন্ধুদের সঙ্গে গলির মাঠে ঘাম ঝরানো সেই সময়গুলো ছিল সরল আনন্দের এক নাম। জীবনের মোড় ঘুরে যখন সুইডেনে পা রাখি, তখন টেনিসের প্রতি আমার আগ্রহ যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। আর হবে নাই বা কেন—বিশ্ব ক্রীড়াজগতে সুইডেন তো এক বিস্ময়, এক টেনিস-জাতি। বোর্গ থেকে শুরু করে এডবার্গ—এই দেশকে টেনিসের ‘মক্কা’ বলা হয়, সার্থকভাবেই।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আমি একজন সুইডিশ প্রবাসী ক্রীড়াপ্রেমিক ও অভিভাবক, আমি টেনিস জগতে নিজের সন্তানদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে খেলাটির সঙ্গে গড়ে তুলেছি গভীর সম্পর্ক। আমার এই ভালোবাসা যেন আমার সন্তানদের মধ্যেও রক্তের সাথে বইতে থাকে। আমার ছেলে ও মেয়ে—দুজনেই সুইডেনের পতাকা বুকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লড়েছে। দেশ, কোর্ট, টুর্নামেন্ট, প্রশিক্ষণ আর প্রতিযোগিতার ভেতর দিয়ে তারা নিজেরাই হয়ে উঠেছে টেনিস-যোদ্ধা। শত শত ট্রফি, হাজারো ম্যাচ—সবই যেন আমাদের পরিবারের জীবনরেখায় লেখা এক ক্রীড়া-সাহিত্য।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

টেনিসকে আমি কেবল খেলা হিসেবে দেখিনি, দেখেছি এক ধরণের দর্শন, এক জীবনভাবনা হিসেবে। বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে খুব কাছ থেকে দেখেছি, কথা বলেছি, কিছু অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেছি—সেইসব দিনগুলো আমাকে শেখায়: খেলার চেয়েও বড় কিছু হচ্ছে মনোবল, সম্মান ও আত্মত্যাগ।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তবে জীবনের পথ সবসময় মসৃণ নয়। আমার ছেলে জনাথনের হঠাৎ করে পাওয়া একটি গুরুতর ইনজুরি আমাদের পরিবারে দীর্ঘ এক নীরবতা এনে দেয়। কোর্ট, র‍্যাকেট, সেই যুদ্ধ—সব যেন থমকে যায়। তবে থেমে যায় না হৃদয়ের স্পন্দন। প্রতিটি ম্যাচ, প্রতিটি মুহূর্ত মনে পড়ে ক্ষণে ক্ষণে।

আজ, জনাথান আবার হাতে তুলে নিয়েছে র‍্যাকেট। চলছে নতুন প্রস্তুতি। নিজেকে ফিরে পাওয়ার লড়াই। চোখে আগুন, মনে দৃঢ়তা—প্রিপারেশন, ডেডিকেশন এবং মোটিভেশন মিলিয়ে যেন এক নতুন সূচনা। ঠিক এই সময়েই, আরেকজন কিংবদন্তির বিদায় দেখতে বসেছি।

রাফায়েল নাডাল, যিনি ‘ক্লে কোর্টের রাজা থেকে অনুপ্রেরণার প্রতীক’ নামে পরিচিত। ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় করে টেনিস ইতিহাসে নিজের স্থান নিশ্চিত করেছেন। তার মধ্যে ১৪টি এসেছে ফ্রেঞ্চ ওপেনে, যা একটি অনন্য রেকর্ড। তার খেলার প্রতি নিষ্ঠা, প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান এবং নম্রতা তাকে কেবল একজন ক্রীড়াবিদ নয়, বরং একজন মানবিক আদর্শে পরিণত করেছে। ২০২৫ সালের রোলাঁ গারোসের প্রথম দিন, এক ঐতিহাসিক আবেগে ভেসেছিল ক্লে কোর্ট। রাফায়েল নাডাল—যিনি আগেই টেনিস থেকে অবসর নিয়েছেন—তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয় তাঁর ভালোবাসার কোর্টেই। ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নকে ঘিরে কান্নাভেজা বিদায়ী মুহূর্ত যেন গলে গিয়েছিল কোটি ভক্তের হৃদয়ে। গোটা টেনিসবিশ্ব শোকাহত, আবেগে আলোড়িত।

বিদায়ের মুহূর্ত: নাডালের কণ্ঠে হৃদয়ের স্বর
ফ্রান্সের রোলাঁ গারোস টেনিস টুর্নামেন্ট (ফ্রেঞ্চ ওপেন) ঐতিহাসিক কোর্টে যখন নাডাল বিদায় জানালেন, তখন কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়, এক দিগন্তই যেন অস্ত গেল। তিনি বললেন, ‘আমি শান্তি নিয়ে বিদায় নিচ্ছি, কারণ আমি জানি আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়েছি।’

তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির সাথে তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা কেবল প্রতিযোগী ছিলাম না, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সহযাত্রী ছিলাম।’ এই কথাগুলো যেন নতুন প্রজন্মকে জানিয়ে দিল—সফলতা কেবল ট্রফিতে নয়, চরিত্রেও। ‘আমাদের সম্পর্ক কেবল প্রতিযোগিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; আমরা একে অপরকে সম্মান করতাম এবং একসঙ্গে বেড়ে উঠেছি।’

এই প্রতিটি শব্দ যেন ক্রীড়া জগতের নৈতিকতা ও সৌন্দর্যের প্রতিচ্ছবি।
নাডাল শুধু এক খেলোয়াড় নন, তিনি অধ্যবসায়ের প্রতীক। ইনজুরি, ব্যথা, প্রতিপক্ষ—সব বাধা পেরিয়ে তিনি খেলেছেন হৃদয় দিয়ে। বারবার ফিরে এসেছেন, জিতেছেন, কখনো হেরেছেন, কিন্তু কখনো হেরে যাননি।

ভালোবাসার চোখে বিদায়: একটি ইতিহাসঘন মুহূর্ত
নাডালকে গোটা বিশ্বের টেনিস ভক্তরা বিদায় জানিয়েছেন হৃদয়ের অন্তরস্থল থেকে, তবে সবচেয়ে আবেগময় ও ঐতিহাসিক মুহূর্তটি ছিল রোলাঁ গারোসের ক্লে কোর্টে সময়ের সেরা তিন তারকা—নোভাক জোকোভিচ, রজার ফেদেরার এবং অ্যান্ডি মারে—এর সরাসরি উপস্থিতি। এত প্রতিযোগিতা, এত ফাইট, জয়-পরাজয়ের শত শত অধ্যায়—তারপরও আজকের এই বিদায়ের দিনে তাদের চোখে ছিল জলের ঝিলিক, মুখে ছিল ভালোবাসার মৃদু হাসি। তাদের আন্তরিক আলিঙ্গন আর চোখের ভাষা যেন বলে দেয়, খেলার চেয়েও বড় কিছু আছে—মানবতা, শ্রদ্ধা আর বন্ধুত্ব।

এই ভালোবাসার দৃশ্য যেন ছুঁয়ে যাক যুদ্ধবিধ্বস্ত মাটি, রক্তমাখা বুলেট আর বিভক্তির দেয়াল। ছুয়ে যাক ধর্ম-বর্ণ-রাজনীতির বিভেদ। মুছে যাক অতীতের হিংস্রতা আর ফিরে আসুক শান্তির এক রোদেলা সকাল—সবার হৃদয়ে। আমি কেনো মাঝে মাঝে এমন মানুষদের কথা লিখি? কারণ নাডাল, ফেডেরার বা জোকোভিচ কেবল ক্রীড়াবিদ নন—তারা মূল্যবোধ, আত্মমর্যাদা ও নৈতিকতার জীবন্ত উদাহরণ। রোলাঁ গারোঁতে টেসলার বিজ্ঞাপন ফিরিয়ে দিয়ে নাদাল আমাদের মনে করিয়ে দিলেন—সবকিছু টাকায় কেনা যায় না। “আমি চাই না আমার সবচেয়ে বিশেষ দিনটি অর্থের বিনিময়ে বিক্রি হোক”—এই একটিমাত্র বাক্যে তিনি যা বললেন, তা অনেক রাজনীতিবিদও আজ বলেন না। dignity মানে শুধু না বলা নয়, নিজেকে চিনে নিজের মূল্যে অটল থাকা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই নৈতিক সাহসিকতা আজ আমাদের রাজনীতিতে প্রায় অনুপস্থিত। আহা, যদি আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বেও এমন সত্য বলার সাহস থাকত!

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নাডাল: একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি
বাংলাদেশে যেখানে প্রতিনিয়ত আলোচনা হয় দুর্নীতি, শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতা, লুটপাট আর রাজনৈতিক বঞ্চনার গল্প—সেখানে নাডালের জীবনের গল্প হতে পারে এক বিকল্প আলোকবর্তিকা। টেনিসের কোর্ট থেকে উঠে আসা এক শিক্ষা—কঠোর পরিশ্রম, শৃঙ্খলা, শ্রদ্ধা, সংযম এবং ভালোবাসার শক্তি দিয়ে কীভাবে একটি মানুষ নিজেকে বিশ্ববাসীর কাছে অনুপ্রেরণায় পরিণত করতে পারে।

বিশ্ববিখ্যাত ফুটবলার Pelé-র একটি বাণী এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে যায়: ‘Success is no accident. It is hard work, perseverance, learning, studying, sacrifice and most of all, love of what you are doing or learning to do.’ — Pelé (সাফল্য কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটি কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য, শেখা, পড়াশোনা, আত্মত্যাগ এবং সর্বোপরি, আপনি যা করছেন বা যা শিখছেন তা ভালোবাসার ফলাফল।)

নাডাল তার জীবন দিয়ে এই কথাগুলোর প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তাই আজ যখন তিনি বিদায় নিচ্ছেন, আমি শুধু একজন দর্শক হিসেবে নয়—একজন ক্রীড়ামনস্ক বাবা হিসেবে, একজন সুইডিশ-প্রবাসী অভিভাবক হিসেবে, আর একজন মানবিক চিন্তাবিদ হিসেবে আবেগে আপ্লুত হয়ে লিখতে বসেছি।

শেষ কথা: এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের দিকে
রাফায়েল নাডাল তার বিদায় দিয়ে কেবল নিজের অধ্যায়ের সমাপ্তি টানলেন না, আমাদের জন্য রেখে গেলেন এক জীবন্ত শিক্ষা—কোনো লক্ষ্যই অসম্ভব নয়, যদি থাকে অন্তরের ভালোবাসা, পরিশ্রমের ইচ্ছা এবং মানুষের প্রতি সম্মান।

আমার ছেলে আজ আবার টেনিসের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, নতুন দিনের জন্য। আমিও প্রস্তুত হচ্ছি—এই খেলার সৌন্দর্যকে আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে, নতুন করে ভালোবাসতে। আজকের দিনে বিদায় জানাচ্ছি এক কিংবদন্তিকে, আর বরণ করে নিচ্ছি ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে—হৃদয় দিয়ে।

রহমান মৃধা, গবেষক ও লেখক, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন।

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

বারোটা বেজে গেছে, দায়িত্ব ছেড়ে দিন

Published

on

আয়কর

নাতির বয়সি উপদেষ্টাদের দিয়ে অভিজ্ঞ সরকার হয় না—এই বক্তব্য ইতিহাসের প্রতি অবমাননা, তরুণদের প্রতি ঘৃণা। সম্প্রতি একজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদের মন্তব্য— ‘নাতির বয়সি উপদেষ্টাদের দিয়ে অভিজ্ঞ সরকার হয় না’— সমাজের বিভিন্ন স্তরে এক গভীর আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এমন বক্তব্য শুধু তরুণদের নেতৃত্বের যোগ্যতাকে খাটো করে দেখায় না, বরং এটি ইতিহাস, ত্যাগ এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনার মুখে এক নির্লজ্জ চপেটাঘাত।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ইতিহাস কি বলে?
বাংলাদেশের ইতিহাস মূলত তরুণদের হাত ধরেই রচিত হয়েছে। যাঁরা আজ ‘নাতির বয়সি’ বলে তুচ্ছ করছেন, তারাই অতীতে যুগান্তকারী আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন।
•১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন: স্কুল-কলেজের ছাত্ররাই রাজপথে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাদের ‘অভিজ্ঞতা’ ছিল না, ছিল আদর্শ।
•১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ: অসংখ্য তরুণ অস্ত্র হাতে দেশ রক্ষায় লড়েছে। শিশু মুক্তিযোদ্ধারাও জীবন বাজি রেখে রণাঙ্গনে নেমেছিল।
•১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন: তরুণ প্রজন্মের গণজাগরণই স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তাদের তখন কেউ ‘অভিজ্ঞ’ সার্টিফিকেট দেয়নি। তারা নিজেরাই নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন রক্ত আর ত্যাগ দিয়ে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

একজন শিশু মুক্তিযোদ্ধার আত্মপ্রকাশ
এই বক্তব্যের প্রতিবাদে, আমি নিজেই একজন শিশু মুক্তিযোদ্ধা। কই কেউ তো ১৯৭১-এ আমাকে তখন বলেনি— ‘যুদ্ধে যেয়ো না, স্কুলে যাও!’ আজ ২০২৪-এর নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের জ্ঞান-যোগ্যতা, বিশ্বদর্শন, প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্লেষণ—সবকিছুকে অস্বীকার করে ‘নাতির বয়সি’ বলে উপেক্ষা করা কি সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধাচরণ নয়? এই প্রশ্ন শুধু একটি ব্যক্তিগত ক্ষোভ নয়—এটি একটি ঐতিহাসিক ও নৈতিক দাবি, যা গোটা জাতির পক্ষ থেকে উঠে এসেছে।

বিশ্বপরিপ্রেক্ষিত
বিশ্বজুড়ে তরুণ নেতৃত্ব ইতিহাস বদলে দিয়েছে।
•সানা মারিন (ফিনল্যান্ড) ৩৪ বছর বয়সে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।
•জাস্টিন ট্রুডো (কানাডা) ও ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (ফ্রান্স) তরুণ বয়সেই নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে রাষ্ট্র চালাচ্ছেন।
তাদের কেউ ‘নাতির বয়সি’ ছিল না—তারা ছিল যথার্থ নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি।

দেখেছেন সামাজিক প্রতিক্রিয়ায় তীব্র প্রতিঘাত?
এই বিতর্কিত বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসংখ্য প্রতিবাদ উঠে এসেছে। কিছু উল্লেখযোগ্য মন্তব্য:
•তরুণদের অবদান অস্বীকার করা মানে ইতিহাসকে অস্বীকার করা।
•বয়স দিয়ে অভিজ্ঞতা মাপা যায় না; নেতৃত্ব আসে চেতনা ও দক্ষতা থেকে।
•এই বক্তব্য তরুণদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার একটি অপচেষ্টা।

এই প্রতিক্রিয়াগুলো স্পষ্ট করে দেয়—জনগণ এমন ধারার অবজ্ঞাপূর্ণ রাজনীতিকে আর গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়।

বিএনপির পতনের ইঙ্গিত?
এমন অপমানজনক বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি কি নিজেদের রাজনৈতিক পতনের ঘণ্টা বাজাতে শুরু করেছে?
সালাউদ্দিন, রিজভীসহ একদল নেতাকর্মীর অযাচিত ও সময়োচিত অবস্থানহীন কথাবার্তা বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করে তুলছে। অন্যদিকে, তারেক রহমান লন্ডনে বসে লংডিস্টান্সে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নির্দেশনার মাধ্যমে দল পরিচালনার যে অভ্যাস গড়ে তুলেছেন—তা দল নয়, দেশকেই ভয়ংকর এক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কারণ যাদের তিনি ‘সাহসী নেতা’ বলছেন, বাস্তবে তাদের অনেকেই অতীতে সন্ত্রাস ও সহিংসতার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। বিশ্বাস না হলে নিরপেক্ষ তদন্ত করুন এবং প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

বিএনপির রাজনীতি এখন প্রশ্নবিদ্ধ—নৈতিক, সাংগঠনিক এবং কৌশলগত দিক থেকে। আপনিও কি আমার মত ভাবছেন, নাকি অনেকটা বদলে গেছেন? খুব জানতে ইচ্ছে করে।

বিএনপি কি চায় বাঁচতে? তাহলে গ্রহণ করতে হবে বাস্তবতা
যদি বিএনপি সত্যিই জনগণের আস্থা ফিরে পেতে চায়, তবে কৌশলগত ও আদর্শিকভাবে তাকে মৌলিক পরিবর্তনের পথে হাঁটতেই হবে। তা না হলে এই দল এক সময় শুধু ইতিহাসের বইতেই রয়ে যাবে।

প্রথমত, বিএনপিকে জিয়াউর রহমানের সেই মূল আদর্শে ফিরে যেতে হবে—যেখানে আত্মনির্ভরতা, রাষ্ট্রচিন্তা, জাতীয় স্বার্থ, এবং জনগণের শক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। দলকে পুনর্গঠনের কেন্দ্রে থাকতে হবে জনগণকেই—উপদেষ্টা, কর্মী বা বংশানুক্রমিক নেতৃত্ব নয়। জনগণ হতে হবে বিএনপির প্রাণকেন্দ্র।

দ্বিতীয়ত, তারেক রহমানকে দীর্ঘকাল প্রবাসে বসে ‘নির্দেশনা দিয়ে রাজনীতি’ বন্ধ করতে হবে। তাকে অনতিবিলম্বে দেশে ফিরতে হবে, মাঠে নামতে হবে, জনগণের চোখে চোখ রেখে তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে। শুধুমাত্র বক্তৃতা আর হুমকি নয়, দরকার বিশ্বাসযোগ্যতা ও সাহসের রাজনীতি।

তৃতীয়ত, নতুন প্রজন্মকে একঘরে করে নয়—তাদের হাত ধরেই ভবিষ্যতের জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচি সাজাতে হবে। আর এই প্রক্রিয়ায় পুরাতনদের বিদায় অনিবার্য। শুধু বয়স নয়, সময়, পরিস্থিতি এবং যুগবোধ বিবেচনায় তাদের অবদানকে সম্মান জানিয়ে অবসর নিতে হবে। বাস্তবতা হলো—৫৪ বছর ধরে যারা পারেনি, তারা এই বৃদ্ধ বয়সে পারবে—এই ধারণা শুধু অলীকই নয়, আত্মপ্রবঞ্চনাও।

বারোটা বাজে একবার—তাদের জন্য তা বাজছে দীর্ঘকাল। এখন সময়, সেই শব্দ শুনে স্থান ছেড়ে দেওয়ার।

সবশেষে বলতে চাই, বিএনপির সমস্যার সমাধানই কিন্তু দেশের সর্বাঙ্গীন সমাধান নয় বরং বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামাজিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল এবং বহুপ্রতিষ্ঠিত সমস্যা দ্বারা বিপর্যস্ত। দুর্নীতি, মতপ্রকাশের সংকট, প্রশাসনিক অবনতি, বিচারহীনতা, রাজনৈতিক সন্ত্রাস এবং নেতৃত্বহীনতা দেশের সর্বাঙ্গীন উন্নয়নের পথে গুরুতর বাধা সৃষ্টি করছে। রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে থাকা দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারে সাধারণ জনগণের বিশ্বাস হ্রাস পাচ্ছে, যা গণতন্ত্র ও শাসন ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত হুমকিস্বরূপ।

তবে এই সংকট থেকে উত্তরণের পথও রয়েছে। প্রয়োজন দৃঢ় রাজনৈতিক সংকল্প, স্বচ্ছ প্রশাসনিক সংস্কার, দুর্নীতি দমনে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। নতুন ও যোগ্য নেতৃত্বের বিকাশ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের স্বাধীনতা দেশের উন্নয়নকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে পারে।

বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের এই প্রতিবেদন এক সুস্পষ্ট আহ্বান—সমাজের প্রতিটি স্তরে প্রকৃত সংস্কার ছাড়া দেশের প্রগতি সম্ভব নয়। এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব নয়, বরং প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য। এই প্রতিবেদন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশপ্রেমিক এবং সচেতন নাগরিকেরা সম্মিলিত উদ্যোগে পরিবর্তনের বাণী ছড়িয়ে দেবেন, তবেই বাংলাদেশকে একটি মুক্ত, সমৃদ্ধ এবং স্বচ্ছ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

ব্যাংক খাতের সংকট উত্তরণের দশ উপায়

Published

on

আয়কর

সম্প্রতি বড় অংকের মূলধন ঘাটতির কারণে নিজেদের অ্যাকাউন্ট ফাইনাল করতে পারছে না ১৯টি ব্যাংক। ফলে বড় ধরণের বেকায়দায় পড়েছে ব্যাংকগুলো। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর তারল্য সংকটে পড়ে এসব ব্যাংক। গ্রাহকদের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের অবস্থাও ছিলনা কোন কোন ব্যাংকের। নানা রকম গুজবের কারণে কোন কোন ব্যাংকে গ্রাহকরা নিজেদের জমানো টাকা তুলতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ফলে এ সংকট আরো তীব্র আকার ধারণ করে। কেন্দ্রীয় ব্যংক তারল্য সুবিধা দিয়ে এসব ব্যাংককে সহযোগিতা দিলেও মূলধন ঘাটতির সমস্যা সমাধান হয়নি।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

পালাতক আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্ণীতির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে সীমা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত বিনিয়োগ গ্রহণ, বেনামী বিনিয়োগ ও কোন ডকুমেন্ট বিহীন অর্থ লুটের কারণেই সৃষ্টি হয় এমন বিপর্যয়কর অবস্থা। এ লেখায় ব্যাংক খাতের সমস্যার কারণ ও তা প্রতিকারের কিছু উপায় আলোচনা করব।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ব্যংক খাত ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে। আশির দশকে বেশ কিছু বেসরকারি ব্যাংক গড়ে ওঠায় ব্যাংক খাত উন্নত হতে থকে। গড়ে উঠতে থাকে ছোট-বড় নানান শিল্প কারখানা। বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে থাকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

২০০৮ সালের পর দেশের অর্থনীতির উপর শ্যেন দৃষ্টি পড়ে অর্থলোলুপ গোষ্ঠীর। পতিত স্বৈরাচারের মদদপুষ্ট একটি শ্রেণী অর্থনীতি ধ্বংসের নীলনকশা আঁকতে থাকে। তারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দখল করে একের পর এক ব্যাংক। দখল করে নেয় বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ও সুশৃঙ্খল ব্যাংক হিসেবে পরিচিত ইসলামী ব্যাংকসহ বেশ কটি ব্যাংক। তাদের ব্যাংক পরিচালনার যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতার বিষয় বিবেচনা করা হয় না। রাতারাতি ব্যাংকের মালিক বনে গিয়ে তারা আকর্ষণীয় মুনাফার প্রলোভন দিয়ে ব্যাংকে আমানত রাখতে সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করে। এক পর্যায়ে জনগণের জমানো অর্থ নিয়ম ভঙ্গ করে তারা নামে-বেনামে ঋণ গ্রহণ করতে শুরু করে।

আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। পরিচালকরা পরস্পরকে সহযোগিতা করে অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ পাইয়ে দিতে। এভাবে ব্যাংক খাত থেকে নিয়ম বহির্ভুতভাবে তারা বের করে নেয় ৪৫ হাজার কোটি টাকা। (২৭ আগস্ট ২০২৪, দ্যা ডেইলি স্টার)। এসব পরিচালকদের বেশিরভাগই রাজনৈতিক আশির্বাদপুষ্ট। ব্যবসায়িক হিসাব, আর্থিক পরিস্থিতি ও ব্যাংকিং নীতি বিবেচনায় নিলে এই ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোর বেশিরভাগই ঋণ পাওয়ার যোগ্য ছিল না। তাই তারা একে অপরকে ঋণ দেয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যাংকের পরিচালক তার নিজ ব্যাংক থেকে নির্দিষ্ট অংকের বেশি ঋণ নিতে পারেন না। এই নিয়ম ফাঁকি দিতেই তারা নিজের ব্যাংক থেকে অপরকে ঋণ দেওয়ার ধূর্ত পদ্ধতি বেছে নেন।

এছাড়া বিভিন্ন নামে বেনামে কোম্পানী খুলে ভুয়া ঋণ গ্রহণ করেছে অনেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী এবং ব্যাংক পরিচালক। তারা গড়ে তুলেছে অদৃশ্য মাফিয়া চক্র। বিভিন্ন প্রলোভন ও টোপ দিয়ে ব্যাংকের অসাধু কিছু কর্মকর্তাকে হাত করে তারা ব্যাংক থেকে বের করে নিয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। যেসব ব্যাংকার তাদের অনিয়মের বিরোধিতা করেছে তাদেরকে ব্যাংক থেকে বিতাড়ন, পুলিশি হয়রানিসহ নানানভাবে হয়রানি করা হয়েছে। এসব লুটেরা গোষ্ঠী ব্যাংক খাত থেকে বের করে নিয়েছে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতায় এসব ঘটনা ঘটেছে। (যুগান্তর ১৩ আগস্ট ২০২৪)

এর বাইরে খেলাপী ঋণ ব্যাংক খাতের গলার কাটা। পরিচালকদের এই বড় ধরণের অনিয়মের পাশাপাশি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩.৪৫ লাখ কোটি টাকা যা ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ২০.২০ শতাংশ (বাংলাট্রিবিউনডটকম ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)।

ব্যাংক খাত থেকে বের করে নেয়া এসব ঋণ ও খেলাপী ঋণের বেশিরভাগই পাচার হয়েছে দেশের বাইরে। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের নেতা ও তাদের দোসর ব্যবসায়ীরা ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। (প্রথম আলো ২ ডিসেম্বর ২০২৪)। অর্থাৎ বছরে গড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। ব্যাংক থেকে পুনঃপুন অর্থ লোপাটের এসব খবরে গ্রাহকদের মনে দানা বেঁধেছে ভয় এবং হতাশা। ফলে তারা ব্যাংকে জমানো টাকা নিজেদের হাতে সংরক্ষণ করছেন। একদিকে অর্থ পাচার ও খেলাপী ঋণ অন্যদিকে আতঙ্কিত গ্রাহকদের টাকা উত্তোলনের ফলে ব্যাংক খাতে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের তারল্য সংকট।

পাঁচ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখতে পায় ব্যাংক খাত। আর্থিক খাতে সংস্কারের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে একজন দক্ষ অর্থনীতিবিদকে গভর্নরের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন। প্রতিটি বেদখল হওয়া ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেয়া হয়। গঠন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন নতুন পর্ষদ। এসব পর্ষদ কাজ করছে খাদের কিনারা থেকে ব্যাংকগুলোকে উদ্ধারের জন্য। ১৫ বছরের অপশাসন ও লুটপাটে ধ্বংসের দারপ্রান্তে ব্যাংক খাত। এ অবস্থা থেকে ব্যাংক খাতকে ফিরিয়ে আনতে এই দশটি উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।

প্রথমত: ব্যাংকগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অনুকূল কর্মপরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অসাধু, অযোগ্য ও জাল সনদে চাকরি প্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারি অপসারণ করে সৎ, দক্ষ ও পেশাদার ব্যাংকারদের পদায়ন করলে গ্রাহকবান্ধব ব্যাংকিং সেবা প্রদান সহজ হবে।

দ্বিতীয়ত: যারা নামে বেনামে ব্যাংক থেকে অর্থ বের করে বিদেশে পাচার করেছে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসক বসিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত আয় থেকে ব্যাংকের অর্থ পরিশোধ করার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

তৃতীয়ত: রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যারা অস্ত্রের মুখে ব্যাংক দখল করেছিল সেসব দখলদারদের সকল শেয়ার এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পদ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বিক্রি করার ব্যবস্থা করতে হবে। বিক্রয়লব্ধ অর্থ থেকে ব্যাংকের টাকা পরিশেধের ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রকৃত মালিকদের হাতে ব্যাংকগুলো ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

চতুর্থত: যেসব পরিচালক নিয়ম ভেঙে নিজ ব্যাংক এবং অন্য ব্যাংক থেকে নামে বেনামে বিনিয়োগ নিয়ে খেলাপী হয়েছেন তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং তারা যে টাকা ব্যাংক থেকে নিয়েছে তা ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

পঞ্চমত: ব্যাংকগুলোতে ঋণ খেলাপীদের তালিকা তৈরি করে তা প্রকাশ করা এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপীদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

ষষ্ঠত: যেসব ব্যাংকের টাকা অন্য ব্যাংকে আমানত (প্লেসমেন্ট) হিসেবে রাখা আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় পাওনাদার ব্যাংককে এসব টাকা ফেরত দেয়ার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সপ্তমত: দুর্নীতিবাজ এবং লুটেরাদের দোসর ব্যাংক কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

অষ্টম পদক্ষেপ হিসেবে ব্যংকগুলো থেকে কি পরিমাণ অর্থ লুট হয়েছে তার সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা এবং যারা এসব কাজে জাড়িত তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

নবম পদক্ষেপ হিসেবে লুটেরাদের নিষ্পেষণে যেসব ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগছে, ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সেই ব্যাংকগুলোকে পর্যাপ্ত তারল্য সরবরাহ করতে হবে। এবং দশম পদক্ষেপ হিসেব ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির অর্থ যেমন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় লুট হয়েছে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করতে হবে যেন লুটেরাদের নিয়ে যাওয়া ভুয়া বিনিয়োগের বিপরীতে ব্যাংকের কোন প্রভিশন সংরক্ষণ করা না লাগে।

আগামীতে যেন কেউ এভাবে ব্যাংক দখল করতে না পারে সেজন্য ব্যাংকবান্ধব আইন প্রণয়ন করতে হবে। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন সম্ভব হলে দেশের ব্যাংক খাত ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি নতুন উচ্চতায় উন্নীত হবে বলে আশা করা যায়।

লেখক: রিয়াজ উদ্দিন, ব্যাংকার। riyazenglish@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের প্রস্তাব: দুই প্রজন্মের নেতৃত্বে নতুন স্বপ্ন

Published

on

আয়কর

বাংলাদেশ আজ একটি কঠিন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। দলে দলে বিভক্ত নেতৃত্ব, আত্মসাৎ করা গণতন্ত্র, দুর্নীতির অতল গহ্বর—সবকিছু মিলিয়ে রাষ্ট্রের অস্তিত্বই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। এমন মুহূর্তে প্রয়োজন একটি সাহসী, গ্রহণযোগ্য ও ঐতিহাসিক রূপরেখা—যা আমাদের জাতিকে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর পথ দেখাবে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখন কার্যত দলে কোণঠাসা, বিপরীতে মাঠ পর্যায়ে কর্তৃত্ব দখল করেছে এমন এক সিনিয়র নেতা চক্র যারা তারেক রহমানের আদর্শ বা নেতৃত্বকে বিশ্বাস করে না। এই চক্রের সঙ্গে মিশে আছে ভারতের ছায়া, হানিট্র্যাপ এবং আওয়ামী শাসনামলের সুযোগ-সুবিধা গ্রহীতারা। মাঠ পর্যায়ে এই নেতারা তারেক রহমানের অভিপ্রায়, ভাষণ, পরিকল্পনা—কোনোটিই বাস্তবায়ন করছে না। বরং তাদের উগ্রতা, দম্ভ ও কূটকৌশলে আজ বিএনপি পরিণত হয়েছে এক বি-টিমে, আওয়ামী লীগের বিকল্প মুখোশধারী শক্তিতে। জাতি দেখছে, বোঝছে—এবং হতাশ।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তবে হতাশার মাঝেই দেখা যাচ্ছে নতুন আশার আলোকছটা—জাতীয় সরকার গঠনের একটি ঐতিহাসিক প্রস্তাব। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত নাগরিক মতবিনিময় সভায় প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করা হয়েছে এই প্রস্তাব—অন্তর্বর্তীকালীন সর্বদলীয় জাতীয় সরকার গঠনের রূপরেখা, যার মূল কাণ্ডারি হবেন রাষ্ট্রপতি হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তারেক রহমান।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এই সরকারের মেয়াদসীমা সর্বোচ্চ ১৮ থেকে ২৪ মাস। এই সময়ের মধ্যে কোনো জাতীয় নির্বাচন হবে না। বরং চলবে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তুতি, প্রশাসন ও রাজনীতির depoliticization এবং গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠন। এই সরকারের রাষ্ট্রপতি হবেন ড. ইউনূস—একজন নিরপেক্ষ, আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত, সাহসী ও মানবিক ব্যক্তিত্ব। আর প্রধানমন্ত্রী হবেন তারেক রহমান—জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক উত্তরসূরি, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রতীক এবং জনগণের প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দু।

এই অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন কাঠামো হবে সর্বদলীয়, যেখানে থাকবে বড় রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সমাজ, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব। মন্ত্রী পরিষদে দায়িত্ব ভাগাভাগি হবে প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী পর্যায়ে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে উপ-রাষ্ট্রপতি মিলেই একটি ভারসাম্যপূর্ণ, সমন্বিত প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তুলবে। সরকারের মূল দায়িত্ব হবে দুর্নীতি দমন, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা, বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং একটি জনগণের সংবিধান রচনার প্রক্রিয়া শুরু করা।

এই প্রেক্ষাপটে জামাতসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। তারা দেশের পরিকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা ও কাজ করে আসছে। তাদের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা ও ভূমিকা অবশ্যই মান্যতা পাওয়ার যোগ্য এবং এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিচালনায় তাদের উপস্থিতি প্রয়োজন। জাতীয় পুনর্গঠন কোনো একক গোষ্ঠীর দ্বারা সম্ভব নয়—সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে সংলাপে এনে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।

এনসিপি ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের মানুষ স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে। তাদের এই আন্দোলন ও সংগ্রাম নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপনে এক অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। তাদের অভিজ্ঞতা ও রাজনৈতিক ত্যাগকে রাষ্ট্র গঠনে কাজে লাগানো এখন সময়ের দাবি। এনসিপি-সহ সকল জাতীয়তাবাদী, ইসলামী ও গণমুখী ধারার প্রতিনিধিত্ব অন্তর্ভুক্ত করেই হতে হবে একটি সুষ্ঠু, স্থিতিশীল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এই সংকটপূর্ণ সময়ে প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভূমিকা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। সংবিধান রক্ষা, জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং জনস্বার্থে নিরপেক্ষভাবে অবস্থান নেওয়া—এটাই তাদের কর্তব্য। তারা রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করবে, যাতে অন্তর্বর্তী সরকার নিঃশঙ্কভাবে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে। সামরিক বাহিনীকে একটি জবাবদিহিমূলক, সংবিধাননিষ্ঠ, সুশৃঙ্খল ও শান্তির বাহিনী হিসেবে জাতীয় ঐক্যের রক্ষাকবচ হতে হবে।

এই মুহূর্তে আমাদের রাষ্ট্রকে প্রয়োজন এমন এক কাঠামো, যেখানে দলীয় ছত্রছায়ায় চলা দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের অবসান ঘটানো যাবে। যেখানে গণতন্ত্র কেবল ভোটাধিকারেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং নীতি, নৈতিকতা ও জবাবদিহিতার ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে। যেখানে রাজনীতি মানে হবে শোষণ নয়, সেবা। এই লক্ষ্যেই এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ডাক দেওয়া হচ্ছে।

আজকের প্রজন্ম দুর্নীতির ভারে নুয়ে পড়া রাষ্ট্র চায় না। তারা চায় সততা, উদ্ভাবন, ন্যায়বিচার আর আত্মমর্যাদার বাংলাদেশ। এই নতুন প্রজন্মের জন্য, একটি নিরপেক্ষ, স্বল্পমেয়াদী এবং সর্বদলীয় অন্তর্বর্তী সরকারই একমাত্র কার্যকর পথ হতে পারে।

তারেক রহমানের প্রতি আহ্বান—আপনি মায়ের পথ অনুসরণ করুন। দৃঢ় হোন। যারা আপনার বিশ্বাস ভেঙেছে, তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় দিন। দল পুনর্গঠনে সাহসী হোন। জাতীয় ঐক্যের নতুন ভিত্তি তৈরি করুন। জাতি আজও আপনার দিকে তাকিয়ে। আপনি ফিরে আসুন, রাষ্ট্র গড়ার এই ঐতিহাসিক দায়িত্বে নেতৃত্ব দিন।

এটি কেবল সময়ের ডাক নয়, এটি ইতিহাসের অনিবার্য বাস্তবতা। যদি জাতি আবার জেগে উঠে, তবে তা হবে এই অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্য দিয়েই—যার রাষ্ট্রপতি হবেন ড. ইউনূস, প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমান। এই রাষ্ট্র হবে জনগণের, ভবিষ্যতের, নতুন প্রজন্মের। এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজ, ছাত্র-জনতা ও দেশপ্রেমিক প্রশাসনিক অংশের একটি ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি।

লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

পুঁজিবাজারের সর্বশেষ

আয়কর আয়কর
অর্থনীতি10 hours ago

আয়করে অর্ধশতাধিক পরিবর্তন: পুঁজিবাজার বিকাশেও প্রস্তাব

আসন্ন বাজেটে আয়কর খাতে অর্ধশতাধিক পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে কর বাড়ছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে কমছে। ব্যক্তির...

আয়কর আয়কর
পুঁজিবাজার13 hours ago

লোকসানে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ...

আয়কর আয়কর
পুঁজিবাজার14 hours ago

লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানালো এনআরবি ব্যাংক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি এনআরবি ব্যাংক পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। কোম্পানিটি...

আয়কর আয়কর
পুঁজিবাজার16 hours ago

লোকসানে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন...

আয়কর আয়কর
পুঁজিবাজার16 hours ago

রাশেদ মাকসুদ কমিশনের অযোগ্যতার ভয়াবহ তথ্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও

পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক দরপতন অব্যাহত আছে। এতে পুঁজি হারিয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতার পট...

আয়কর আয়কর
পুঁজিবাজার18 hours ago

ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ৩.৭১ শতাংশ

বিদায়ী সপ্তাহে (২৪ মে-২৯ মে) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ৩ দশমিক...

আয়কর আয়কর
পুঁজিবাজার18 hours ago

সপ্তাহজুড়ে সিটি ব্যাংকের সর্বোচ্চ দরপতন

বিদায়ী সপ্তাহে (২৪ মে-২৯ মে) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট ৩৯৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে...

Advertisement
AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

সোশ্যাল মিডিয়া

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
আয়কর
জাতীয়8 hours ago

দেশে আবারও কমল জ্বালানি তেলের দাম

আয়কর
প্রবাস9 hours ago

চীনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন

আয়কর
অর্থনীতি9 hours ago

২০০ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলসহ চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ঢাকায়

আয়কর
প্রবাস9 hours ago

বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল সৌদি আরব: ১৪ দেশের জন্য ব্লক ওয়ার্ক ভিসা স্থগিত

আয়কর
আন্তর্জাতিক9 hours ago

অবশেষে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করল ভারত

আয়কর
ধর্ম ও জীবন10 hours ago

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের বিশেষ আমল ও ফজিলত

আয়কর
অর্থনীতি10 hours ago

দুর্নীতির কারণে দেশের আর্থিক খাত ‘অত্যন্ত খারাপ’: আবদুল আউয়াল মিন্টু

আয়কর
আবহাওয়া10 hours ago

ঈদের দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে

আয়কর
অর্থনীতি10 hours ago

আয়করে অর্ধশতাধিক পরিবর্তন: পুঁজিবাজার বিকাশেও প্রস্তাব

আয়কর
আইন-আদালত11 hours ago

ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে শেখ হাসিনার বিচারকাজ

আয়কর
জাতীয়8 hours ago

দেশে আবারও কমল জ্বালানি তেলের দাম

আয়কর
প্রবাস9 hours ago

চীনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন

আয়কর
অর্থনীতি9 hours ago

২০০ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলসহ চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ঢাকায়

আয়কর
প্রবাস9 hours ago

বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল সৌদি আরব: ১৪ দেশের জন্য ব্লক ওয়ার্ক ভিসা স্থগিত

আয়কর
আন্তর্জাতিক9 hours ago

অবশেষে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করল ভারত

আয়কর
ধর্ম ও জীবন10 hours ago

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের বিশেষ আমল ও ফজিলত

আয়কর
অর্থনীতি10 hours ago

দুর্নীতির কারণে দেশের আর্থিক খাত ‘অত্যন্ত খারাপ’: আবদুল আউয়াল মিন্টু

আয়কর
আবহাওয়া10 hours ago

ঈদের দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে

আয়কর
অর্থনীতি10 hours ago

আয়করে অর্ধশতাধিক পরিবর্তন: পুঁজিবাজার বিকাশেও প্রস্তাব

আয়কর
আইন-আদালত11 hours ago

ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে শেখ হাসিনার বিচারকাজ

আয়কর
জাতীয়8 hours ago

দেশে আবারও কমল জ্বালানি তেলের দাম

আয়কর
প্রবাস9 hours ago

চীনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন

আয়কর
অর্থনীতি9 hours ago

২০০ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলসহ চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ঢাকায়

আয়কর
প্রবাস9 hours ago

বাংলাদেশকে দুঃসংবাদ দিল সৌদি আরব: ১৪ দেশের জন্য ব্লক ওয়ার্ক ভিসা স্থগিত

আয়কর
আন্তর্জাতিক9 hours ago

অবশেষে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করল ভারত

আয়কর
ধর্ম ও জীবন10 hours ago

জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের বিশেষ আমল ও ফজিলত

আয়কর
অর্থনীতি10 hours ago

দুর্নীতির কারণে দেশের আর্থিক খাত ‘অত্যন্ত খারাপ’: আবদুল আউয়াল মিন্টু

আয়কর
আবহাওয়া10 hours ago

ঈদের দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে

আয়কর
অর্থনীতি10 hours ago

আয়করে অর্ধশতাধিক পরিবর্তন: পুঁজিবাজার বিকাশেও প্রস্তাব

আয়কর
আইন-আদালত11 hours ago

ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে শেখ হাসিনার বিচারকাজ