আন্তর্জাতিক
‘যুদ্ধ প্রস্তুতি’ ঘিরে তৎপর ভারত, যেভাবে চলবে মহড়া

জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই আবহে ভারত যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবেলার মহড়ায় তৎপর হয়েছে। ১৯৭১ সালের পর প্রথম রাজ্যে রাজ্যে নিরাপত্তা মহড়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। এই মহড়া শুরু হতে চলেছে বুধবার। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে আর কী করা যাবে না, সাধারণ নাগরিকদেরকে সেই সচেতনতার পাঠ দিতেই ভারতের রাজ্যে রাজ্যে এই অসামরিক মহড়া চালানো হবে।
ভারতের ২৭টি রাজ্য এবং ৮ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মোট ২৫৯টি ‘অসামরিক প্রতিরক্ষা জেলা’ বা ‘সিভিল ডিফেন্স ডিস্ট্রিক্ট’ রয়েছে। তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ৩১টি জায়গাও। কেন্দ্র সরকার রাজ্যগুলোকে মহড়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে। তাতে মনে করা হচ্ছে ওই জেলাগুলোতেও মহড়া চলবে।
ভারতীয় পত্রিকা এনডিটিভি জানায়, দিল্লি ও মুম্বাইয়ের মতো বেশি-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোসহ ২৪৪ টি ডিফেন্স ডিস্ট্রিক্টে হবে মহড়া। এর সঙ্গে আরও আছে খুবই স্পর্শকাতর কয়েকটি এলাকা যেগুলোতে মহড়া চালানো হবে। যেমন: রাজধানী দিল্লির পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক ঘাঁটি, শোধনাগার, জলবিদ্যুৎ বাঁধ।
ভারতের সব রাজ্যকে পাঠানো নির্দেশে মূলত বিমান হামলা হলে কী করতে হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যগুলোকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, বিমান হামলার সময়কার সতর্কতামূলক সাইরেন ব্যবস্থা সক্রিয় আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে বুধবারের মহড়ায়। রাতে হামলার ক্ষেত্রে যুদ্ধবিমানের খবর পাওয়া মাত্র যাতে হঠাৎ করে সব আলো নিভিয়ে দিয়ে ‘ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট’ করে শত্রু বিমানবাহিনীকে বিভ্রান্ত করে দেওয়া যায়, তারও মহড়া সেরে রাখতে হবে।
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে সম্ভাব্য হামলা থেকে যথাসম্ভব ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভবন, সেতু, তেলের ডিপো, রেলস্টেশন বা বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো আগে থেকেই ঢেকে দেওয়া বা সেগুলোকে যথাসম্ভব লুকানোর প্রস্তুতিও সেরে রাখাতে হবে রাজ্যগুলোকে। তাছাড়া, সিভিল ডিফেন্স বা অসামরিক প্রতিরক্ষা প্রোটোকল সম্পর্কে নাগরিক ও শিক্ষার্থীদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, হামলার সময় বা জরুরি অবস্থায় নাগরিকদের মধ্যে সমন্বয় রেখে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার প্রশ্নে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে তা অভ্যাস করিয়ে রাখতে হবে মহড়ায়।
এজন্য জেলাশাসক, বেসামরিক প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক, হোমগার্ডদের সঙ্গে স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়েছে কিছু কিছু জেলায় এরই মধ্যেই মহড়া শুরু হয়ে গেছে। পুলিশ, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কিংবা ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেজপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) এর সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে এই মহড়া চলছে।
বার্তা সংস্থা এএনআই এর শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, জম্মুর স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিমান হামলার সাইরেন শুনে তাদের শ্রেণীকক্ষের ডেস্কের নিচে আশ্রয় নিচ্ছে এবং তাদেরকে অন্যান্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উত্তর প্রদেশে পুলিশ এবং স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা আগুনের মহড়ায় অংশ নিয়েছেন। তারা বড় একটি লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে ছোট্ট একটি বক্সে লাগা আগুন নেভাচ্ছেন এবং আহতদের পিঠে করে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।
লাক্ষ্নৌতে বুধবারের মহড়ার প্রস্তুতিতে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়েছে এবং মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যাওয়ার সময় যাতে কেউ পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা না ঘটে সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উত্তর প্রদেশে ১৯ টি স্থানকে উচ্চ-ঝুঁকির স্থান হিসাবে চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। দিল্লি পুলিশকেও কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে হামলার সময় কি জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে সে বিষয়ে ব্রিফিং দেওয়া হয়েছে।
রাজস্থান এবং পাঞ্জাবের মতো পাকিস্তানের সীমান্তঘেঁষা রাজ্যগুলো নিয়েও উদ্বেগ বিরাজ করছে। জঙ্গিরা যাতে সীমান্ত এলাকাগুলোতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য এসব জায়গায় পুলিশ ও সীমান্ত কর্মকর্তাদেরকে সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।
পাঞ্জাবের ২০ টি জেলায় চলবে নিরাপত্তা মহড়া। তাছাড়া, উড়িষ্যার ১২ টি স্থানেও মহড়া চলবে। কর্নাটকের তিনটি স্থানে, গুজরাটের ১৫ টি স্থানে এবং মহারাষ্ট্রের ১৬ টি স্থানে বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেনের মহড়া চলবে। মনিপুরেও এরই মধ্যে মহড়ার প্রস্তুতি নিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ৫ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল

বিমান হামলার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানে প্রায় সাড়ে পাঁচশ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। পাকিস্তানে বাণিজ্যিক ফ্লাইটের ষোল শতাংশ এবং ভারতের প্রায় তিন শতাংশ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে বলে ফ্লাইট ট্র্যাকিং সার্ভিস ফ্লাইটরাডার২৪ জানিয়েছে।
তাদের হিসেব অনুযায়ী পাকিস্তানে মোট ১৩৫টি ফ্লাইট আর ভারতে ৪১৭টি নির্ধারিত ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ওদিকে ভারতের শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন্সগুলো তাদের যাত্রীদের জন্য ভ্রমণ নির্দেশিকা জারি করেছে।
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে জম্মু, শ্রীনগর এবং লাদাখের লেহ বিমানবন্দরসহ বেশ কিছু বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করায় তারা তাদের নির্ধারিত ফ্লাইটগুলো ১০ মে সকাল পর্যন্ত বাতিল করেছে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পাকিস্তান দেশটির প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করেছিল।
আট ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর লাহোর ও করাচিসহ বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও এভিয়েশন সূত্র জানায়, লাহোর ও করাচি বিমানবন্দর থেকে একাধিক ফ্লাইট পুনরায় চালু হয়েছে। করাচি থেকে আজ দুটি আন্তর্জাতিক ও একটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে, যা ধীরে ধীরে ফ্লাইট কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
লাহোর থেকে করাচিগামী প্রথম ফ্লাইটটি ছিল একটি বেসরকারি এয়ারলাইনের পিএ-৪০১, যা নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে গেছে। অন্যদিকে করাচি থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর সময়সূচি ছিল ভিন্নরকম। দুবাইগামী পিকে-৬০৭ নির্ধারিত সময়ের আগেই ছেড়ে যায়, তবে ইস্তাম্বুলগামী টিকে-৭০৯ ফ্লাইটটি বিলম্বিত হয়।
এছাড়া, জেদ্দা থেকে লাহোরগামী পিকে-৮৪২ ফ্লাইটটি উত্তেজনার কারণে করাচিতে অবতরণ করেছিল। আজ সকালে সেটিকে লাহোরে পাঠানো হয়েছে।
যদিও বিমানবন্দর কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছে, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) ১২ ঘণ্টার জন্য তাদের নিয়মিত ফ্লাইট চলাচল স্থগিত রেখেছে।
উল্লেখ্য, জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বন্দুকধারীদের হামলার দুই সপ্তাহ পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত আজাদ কাশ্মীরের অন্তত ৯টি স্থানে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতীয় সামরিক বাহিনী মাত্র ২৫ মিনিটে অন্তত ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে পাকিস্তানে। এতে পাকিস্তানে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত।
যদিও পাকিস্তানের দাবি, ভারতের হামলায় ২৬ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে অন্তত ১০ জন নিহত ও ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
সশস্ত্র বাহিনীকে পাল্টা জবাব দেওয়ার অনুমতি দিলো পাকিস্তান

ভারতের হামলার জবাবে সময় অনুযায়ী যথাযথ স্থানে পছন্দ মতো পাকিস্তান প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি)। একই সঙ্গে সামরিক বাহিনীকে ‘‘সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপ’’ গ্রহণের জন্য অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তানের নিরাপত্তাবিষয়ক এই সর্বোচ্চ কমিটি।
বুধবার ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এনএসসির বৈঠকে ভারতের হামলার নিন্দা জানানো হয়।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আত্মরক্ষায় ভারতের বিমান হামলার জবাব দেওয়ার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে বলে জানিয়েছে এনএসসি। এই বিষয়ে ভারতের হামলার প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য দেশের সামরিক বাহিনীকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের বরাত দিয়ে এনএসসি বলেছে, নিরীহ পাকিস্তানিদের প্রাণহানি ও পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘনের প্রতিশোধ নেওয়ার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে।
এনএসসির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’’
বিবৃতিতে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি বলেছে, ‘‘ভারতের নগ্ন আগ্রাসনে সমগ্র পাকিস্তানি জাতি সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতা, ত্যাগ ও মাতৃভূমির প্রতিরক্ষায় তাদের সময়োচিত কাজের প্রশংসা করছে।’’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ভারতের অবৈধ কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব স্বীকার এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম ও আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘনের জন্য দেশটিকে জবাবদিহি করার আহ্বান জানায়। পাকিস্তান শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তারা কখনও সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতার লঙ্ঘন বা জনগণের কোনও ক্ষতি হতে না দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে।
জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার দুই সপ্তাহ পর বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। এই হামলায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী মাত্র ২৫ মিনিটে অন্তত ২৪ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে পাকিস্তানে। এতে পাকিস্তানে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত।
যদিও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বলেছে, ভারতের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। অন্যদিকে, কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে অন্তত ১০ জন নিহত ও ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতীয় অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা জম্মু-কাশ্মিরে এখন পর্যন্ত তিনটি ভারতীয় বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
‘সাদা পতাকা’ উড়িয়ে আত্মসমর্পণ করেছে ভারত, দাবি পাকিস্তানের

কাশ্মীরের বিভাজনরেখা নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) একটি সামরিক চৌকিতে ‘সাদা পতাকা’ উত্তোলন করে পালিয়েছে ভারতীয় সেনারা—এমন দাবি করেছে পাকিস্তান। আত্মসমর্পণের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত এই সাদা পতাকা তোলার ঘটনা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
বুধবার (৭ মে) সকালে আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, পাকিস্তান সরকার তাদের অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে এ দাবি করেছে।
পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার নিজ এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, প্রথমে তারা (ভারত) তদন্তের প্রস্তাব থেকে পিছিয়ে যায়, এখন আবার সীমান্ত থেকে পালিয়েছে।
তবে আল জাজিরা জানিয়েছে, পাকিস্তানের এই দাবি তারা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
এদিকে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর হামলার কয়েক ঘণ্টা পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিশ্ববাসীর উদ্দেশে এক লাইনের একটি বার্তা দেন। এনডিটিভি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জয়শঙ্কর সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদের প্রতি জিরো টলারেন্স বা শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে।’
গত মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত দুই দেশের সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে তিনজন ভারতীয় বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে পাকিস্তানের আইএসপিআর জানিয়েছে, ভারতীয় হামলায় অন্তত আটজন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে দুটি মসজিদসহ ৯টি স্থানে হামলার কথা স্বীকার করেছে ইসলামাবাদ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান এই উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলও দুই দেশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানে ভারতের হামলা: কী বললেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের একাধিক স্থানে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ভারত। এতে দুই শিশুসহ অন্তত ৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৩৫ জন। এ পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (পূর্বে টুইটার নামে পরিচিত) দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমরা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমি আজ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই বক্তব্য পুনরায় তুলে ধরছি, যেখানে তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, এই উত্তেজনা দ্রুত প্রশমিত হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য উভয় দেশের নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে।”
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
চীন প্রতিক্রিয়া জানাল পাক-ভারত যুদ্ধ পরিস্থিতিতে

জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা যুদ্ধের রূপ ধারণ করতে চলেছে ইতোমধ্যে। দুই সপ্তাহ ধরে চলা হুমকি-ধমকির পর পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরসহ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। পাকিস্তানও প্রতিউওরে পাল্টা হামলা চালানো শুরু করেছে ।
দুই প্রতিবেশী পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট যুদ্ধের মতো চূড়ান্ত পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হওয়া গভীর হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন।উভয় পক্ষকেই শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। খবর রয়টার্সের।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার (৭ মে) সকালে ভারত ও পাকিস্তানে সামরিক অভিযানকে দুঃখজনক বলে মনে করছে চীন। চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা উভয় পক্ষকে শান্তি ও স্থিতিশীলতার বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করার, শান্ত থাকার, সংযম প্রদর্শনের এবং পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে, এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি দেশটি।
মূলত, ভারত-পাকিস্তান, দুই দেশেরই প্রতিবেশী এবং পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ভারত ও পাকিস্তান এমন প্রতিবেশী, যাদের আলাদা করা সম্ভব নয়—এরা চীনেরও প্রতিবেশী। চীনের অবস্থান সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিপরীতে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।
এরপর থেকে দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে পরিস্থিতি, রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করেছে যা এখন।
বুধবার (৭ মে) সকালে এক ব্রিফিংয়ে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফফরাবাদে ‘কাপুরুষোচিত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। এ হামলায় দুই শিশুসহ অন্তত ৮ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। ইতোমধ্যে এর বদলা নিতে শুরু করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
একইদিন সকালে আরেক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি সেনাদের গোলাবর্ষণে তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এর আগে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে হামলার পর ভারত সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করেছে। এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের ৯টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। তবে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো স্থাপনাকে নিশানা বানানো হয়নি এ অভিযানে।