জাতীয়
ঢাবির সাবেক উপাচার্যসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, আওয়ামী লীগের নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান সোহাগসহ মোট ১৩ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় একটি মামলার আবেদন করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।
রোববার (৪ মে) শাহবাগ থানায় এই মামলার আবেদন জমা দেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর। তিনি বলেন, “আমরা একটি এজাহার পেয়েছি। আইনানুগ প্রক্রিয়ায় আমরা বিষয়টি বিবেচনা করছি।”
উল্লেখ্য, উপাচার্য ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এর আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা এসএম কামরুল আহসান শাহবাগ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাশেদ খানকেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বর্তমান মামলায় সেই বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন রাশেদ।
এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, ৮ ও ৯ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসা ছাত্রলীগের আনুমানিক ৫০০ জন নেতাকর্মী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়, দমনপীড়ন করে, গুলি ছোড়ে এবং উপাচার্যের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরে অংশ নেয়। এই হামলায় লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর গুলিবিদ্ধ হন, যার ফলে তার যকৃত ও ফুসফুসে ক্ষতি হয় এবং এখনও শরীরের মধ্যে গুলিটি রয়ে গেছে।
রাশেদ খান দাবি করেন, ওই সময় ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নেন এবং তিনি নিজেও রাবার বুলেটে আহত হন। একই সময় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা—including সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক—ঢাবি ক্যাম্পাসের আশপাশে অবস্থান করছিলেন। তাদের শাহবাগ জাদুঘরের সামনে রাত দুইটায় দেখা যায়।
তিনি অভিযোগ করেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে বিভ্রান্ত ও কলুষিত করতে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড, ছাত্রলীগ এবং কিছু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সম্মিলিতভাবে উপাচার্যের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে যুক্ত ছিলেন।
মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির পাশাপাশি যাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন:ঢাবির তৎকালীন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পরবর্তী উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল,সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ,ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন,
ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবিদ আল হাসান,সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহের হোসেন প্রিন্স,ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়,
ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাকিব হাসান সুইম এবংমুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
হাসিনা ও সাবেক বিমান সচিব মোকাম্মেলকে দুদকে তলব

বিগত ১৫ বছরে দেশের বিভিন্ন বিমান বন্দরের উন্নয়ন কাজের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং একই মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোকাম্মেল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত ৫ মে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো পৃথক চিঠিতে তাদের আগামী ৮ মে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া তলবি চিঠি ধানমন্ডির সুধাসদন ও গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে।
অন্যান্য তলবি চিঠিও তাদের ঢাকা ও নিজ বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
তলবকৃতদের মধ্যে মাহবুব আলী গ্রেপ্তার হলেও শেখ হাসিনা ভারতে এবং মোকাম্মেল হোসেন কাগজে-কলমে পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হক এবং বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমানসহ শীর্ষ ৮ কর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধানে সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা প্রতারণা, জাল জালিয়াতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিগত ১৫ বছরে দেশের বিভিন্ন বিমান বন্দরের উন্নয়ন কাজের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও আত্মসাৎ করেছেন।
দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্রথমে পাঁচ সদস্য অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়। পরবর্তীতে দুদকের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্ব ৭ সদস্যদের টিম পুনর্গঠন করা হয়েছে।
টিমের অপর সদস্যরা হলেন- সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা, এস. এম. রাশেদুল হাসান, এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর, মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ও উপসহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
যাদের দুর্নীতির অনুসন্ধান চলমান রয়েছে তারা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হক ও সাবেক যুগ্মসচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার,বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক, সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. হাবিবুর রহমান ও মাহবুব আনাম ও অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার লুৎফুল্লাহ মাজেদ।
পৃথক ঘটনায় গত ২৭ জানুয়ারি তিন বিমানবন্দরের চার উন্নয়ন প্রকল্পের ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হক এবং বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমানসহ ১৯ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চার মামলা করে দুদক।
২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের পর থেকে তারিক আহমেদ সিদ্দিক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও গুমসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদের মধ্যে গত ২০ নভেম্বর যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হক। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
তরুণদের রাজনীতিতে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং সমাজে অর্থপূর্ণ পরিবর্তন আনতে তরুণদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আরও সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৬ মে) নরওয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একদল তরুণ রাজনৈতিক কর্মী রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধান উপদেষ্টা এই আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা তরুণদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করছি, না হলে তারা নীতিনির্ধারণে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবে না।
সফররত নরওয়েজিয়ান প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন সোশ্যালিস্ট ইয়ুথ লীগের উপ-নেতা নাজমা আহমেদ, ওয়ার্কার্স ইয়ুথ লীগের আন্তর্জাতিক নেতা এবং কেন্দ্রীয় বোর্ডের সদস্য ফাওজি ওয়ারসাম, সেন্টার পার্টির সদস্য ডেন স্কোফটারড, কনজারভেটিভ পার্টির সদস্য ওলা সভেনেবি, খ্রিস্টান ডেমোক্র্যাটস দলের সদস্য হ্যাডল রাসমাস বুল্যান্ড, গ্রিন পার্টির সহযোগী গ্রুপ গ্রিন ইয়ুথের সদস্য টোবিয়াস স্টোকল্যান্ড ও ইয়ং লিবারেলসের সাবেক নেতা থাইরা হাকনসলোক্কেন।
প্রধান উপদেষ্টা তাদের রাজনৈতিক পটভূমি, দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মকাণ্ড নিয়ে খোঁজখবর নেন। তিনি নরওয়েতে মূলধারার রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণের শতাংশ সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করেন।
সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বাংলাদেশে তরুণদের সঙ্গে সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তারা বলেন, অনেক বাংলাদেশি তরুণই তাদের জীবনে একবারও ভোট দিতে পারেননি। তারা জানতে চান, তরুণদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নতুন সরকারের প্রধান অঙ্গীকারই হলো প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। গত ১৫ বছর ধরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। টানা তিন মেয়াদে একটি ভুয়া ভোট ব্যবস্থা চালু ছিল। কর্তৃপক্ষ একে বিশাল সাফল্য বললেও বাস্তবে কেউই ভোট দিতে পারেনি। তরুণদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার অত্যাবশ্যক।
দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে ‘পুরনো যুগের’ আখ্যায়িত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে প্রধান চ্যালেঞ্জটির মুখোমুখি হচ্ছে তা হলো ‘জঙ্গল পরিষ্কার করা’ যা এটি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ধ্বংসস্তূপ থেকে টুকরোগুলো তুলে নিয়ে নতুন সূচনার জন্য একটি নতুন কাঠামো তৈরি করাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ। এটি আমাদের জন্য একটি পরিবর্তনশীল সময়। আমি শুধু আশা করি এই রূপান্তর সংক্ষিপ্ত হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
রাখাইনের প্রশাসনে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব চায় বাংলাদেশ: নিরাপত্তা উপদেষ্টা

বাংলাদেশ চায়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে গঠিত আরাকান আর্মির প্রশাসনে রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হোক, এ কথা জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।
মঙ্গলবার (৬ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “রাখাইনের নতুন বাস্তবতায়, আমরা চাই সেখানে রোহিঙ্গারা প্রশাসনের সর্বস্তরে প্রতিনিধিত্ব করুক। জাতিসংঘের মাধ্যমে আরাকান আর্মিকে আমাদের এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।”
নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রশ্ন উঠলে উপদেষ্টা জানান, তাদের জন্য ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতির আলোকে নেওয়া হবে।
সীমান্ত নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সীমান্তের ওপারে যেই থাকুক না কেন, বাংলাদেশ তার সঙ্গে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করবে। এতে কে কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না। বর্তমানে সীমান্তে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদারের প্রয়োজন নেই।”
রাখাইনে জাতিসংঘের প্রস্তাবিত মানবিক করিডোর বিষয়ে খলিলুর রহমান বলেন, “সব রাজনৈতিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সবাই একমত হলেও, করিডোর বাস্তবায়নের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ। জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, বাংলাদেশ কখনো তা সমর্থন করে না।”
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মার্চে বাংলাদেশ সফরে এসে রাখাইনে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালানোর জন্য বাংলাদেশের সহযোগিতা চান এবং একটি ‘মানবিক প্যাসেজ’ তৈরির প্রস্তাব দেন। এরপর ২৭ এপ্রিল, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানান, এ প্রস্তাবে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
জাপানি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে প্রতারণা

জাপানের বিখ্যাত নিপ্পন কোম্পানির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এনএসিএসবিডিডট লিমিটেডের সঙ্গে প্রতারনার অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে মামলায় ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে এখন প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
মামলার কাগজপত্র ঘেটে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে ব্যবসা পরিচালনা শুরু করে। কোম্পানির বাংলাদেশ অংশের জন্য খোরশেদ আলম (মাইকেল) নামের এক ব্যক্তিকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করে। খোরশেদ আলমের পাসপোর্ট নম্বর বিআর ০৩২৪২৬১।
কোম্পানির এমডি হয়েও খোদ এই খোরশেদ আলম জাপানি এই কোম্পানির সঙ্গে জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কোম্পানির নামে ক্রয় করা ফ্ল্যাট ও গাড়ী নিজের নামে লিখে নেওয়ার সকল আয়োজন সম্পন্ন করেন। শুধু তাই নয় আড়াই হাজার ইকনোমিক জোনে কোম্পানির একটি নিজস্ব কারখানা স্থাপনের জন্য জমি ক্রয়ের কথা বলে জাপানি এই কোম্পানির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকার হাতিয়ে নিয়েছেন। এসব ঘটনা টের পেয়ে নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিং সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেড খোরশেদ আলমকে বরাখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে ঢাকার নিম্ন আদালতে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা করে। মামলা নম্বর- ৬১৩/২০২২। যা পরবর্তীতে পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পিবিআই তদন্তের পর খোরশেদ আলমকে প্রতারক ও জালিয়াত চিহ্নিত করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এই মামলা মোকাবেলার জন্য কোর্টে হাজিরা দিতে একধিকবার ঢাকা সফর করেছেন নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিং সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক কায়োরি ফানহাসি। তিনি কয়েকবার ঢাকা সফর করে কোর্টে হাজিরা দিয়ে এ সমস্যার কোন সমাধান পাননি। ব্যর্থ হয়ে সবশেষ তিনি গত ২০ এপ্রিল জাপানে ফিরে যান।
খোরশেদ আলমের জালিয়াতির কথা জানতে পেরে এই কোম্পানির বাংলাদেশ অংশের জন্য খোরশেদ আমলমের স্থলে আরিফ হোসেন ভুইয়া নামের এক ব্যক্তিকে ব্যবস্থপনা পরিচালক নিয়োগ করে। যিনি অতীতে দেড় দশকের বেশি সময় জাপানে লেখাপড়া ও ব্যবসা বাণিজ্য করেছেন। ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে মামলা মোকদ্দমা ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে কোম্পানি এখন বাংলাদেশ থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সর্বশেষ গত মাসে ঢাকা সফরের সময় হতাশা ব্যক্ত করে এ ঘটনার দ্রুত সমাধান না হলে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিং সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক কায়োরি ফানহাসি।
এ বিষয়টি মীমাংসার জন্য বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে সঙ্গে যোগাযোগ করেছে নিপ্পন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কোন সমাধান পাননি। আমিন ল্যান্ডস্কেপ নামের একটি কোম্পানির কাছ থেকে অফিস স্পেস কেনার জন্য ১ কোটি ৬০ লাখ পরিশোধ করেছেন। কিন্তু সেই কোম্পানিও ফ্ল্যাট বুঝে দেয়নি গত ৫ বছরেও।
বরখাস্ত হওয়া সাবেক এমডি খোরশেদ আলম, আমি ল্যান্ডস্কেপের মালিক মো. হেলালউদ্দিন ও একেএম সামসুদ্দিনের সঙ্গে যোগাসাজশ করে ফ্ল্যাটের টাকা মেরে দেওয়ার পায়তারা করছে বলে জানান আরিফ হোসেন ভুইয়া।
এই আমি ল্যান্ডস্কেপের নামেও জালিয়াতির মামলা করেছে নিপ্পন কর্তৃপক্ষ। মামলা নম্বর সি আর ১০৪/২০২৫। বিদেশী বিনিয়োগ কথা বিবেচনা নিয়ে মামলাটি সরাসরি আমলে নেয় আদালত। আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়। কিন্তু অজানা কারণে তাদেরকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ। অবশ্য তারা স্বেচ্ছায় আত্ম সমপর্নের কথা জানিয়ে হাজিরা দেওয়ার কথা বললেও এখনও পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল সোমবার খোরশেদ আলম মাইকেল বলেন, এ বিষয়ে আমি আদালতে বক্তব্য দেব।
জানা গেছে, এই কোম্পানীটি জাপানের বিখ্যাত নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিং সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেডের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪০টির অধিক দেশে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০১৫ সালে বিনিয়োগ ও ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করে। প্রাথমিকভাবে ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগও করে। সে সময় খোরশেদ আলম (মাইকেল) নামের এক ব্যক্তিকে এনএসিএসবিডিডট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করে। কোম্পানি দুই/তিন বছরের মধ্যে তাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিকল্পনা করে। সে মোতাবেক একটি স্থায়ী কার্যালয় স্থাপন, এবং আড়াইহাজার ইকনোমিক জোনে একটি নিজস্ব কারখানা স্থাপনের জন্য সিদ্ধন্ত গ্রহন করে। সে অনুযায়ী এনএসিএসবিডিডট লিমিটেডের অনুকুলে খোরশেদ আলমকে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য টাকাও দেয় নিপ্পন এয়ারকন্ডিশনিং সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেড। খোরশেদ আলম আড়াইহাজারে জমি না কিনে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে নিপ্পন থেকে মোটা অঙ্কের টাকার ছাড়িয়ে নেয়। একইভাবে স্থায়ী কার্যালয় স্থাপনের জন্য রাজধানীর ভাটারা এলাকায় একটি অফিস স্পেস কেনার জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা প্রদান করেন কোম্পানির পক্ষে। পরে তিনি ঐ ফ্লাটটি নিজের নামে লিখে নিতে কাগজপত্র প্রস্তুত করেন। অথচ এটি হওয়ার কথা কোম্পানির নামে শুধু তাই নয়-কোম্পানির ব্যবহারের জন্য একাধিক গাড়ী ক্রয় কথা থাকলেও সেটাও তিনি নিজ নামে নিবন্ধন করে নেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
এপ্রিলে ৫৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৮৩ জন: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সারাদেশে ৫৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৩ জন নিহত এবং ১২০২ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
মঙ্গলবার (৬ মে) সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো এক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণে এই তথ্য পেয়েছে।
সংগঠনটি বলছে, এই মাসে রেলপথে ৩৫টি দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ৮টি দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও একজন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৬১০টি দুর্ঘটনায় ৬২৮ জন নিহত এবং ১২০৭ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২১৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২২৯ জন নিহত ও ২২৪ জন আহত হয়েছেন।
এপ্রিল মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে, সেখানে ১৩৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩৬ জন নিহত ও ৩৭৭ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সিলেট বিভাগে, সেখানে ২৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৫১ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে এপ্রিল মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে— দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশার অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে এসব জাতীয় সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালকের অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো।
দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা; উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসবিহীন যানবাহন স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া।
কাফি