খেলাধুলা
মায়ামির জয়রথে মেসি-সুয়ারেজের সোনালি ছোঁয়া

অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটল। লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজের সমন্বয়ে ইন্টার মায়ামি ফিরল জয়ের ধারায়। শনিবার নিউইয়র্ক রেড বুলসকে ৪-১ গোলে পরাজিত করে টানা তিন ম্যাচের জয়-খরা কাটাল ডেভিড বেকহামের দল। একইসাথে চ্যাম্পিয়ন্স কাপ থেকে বিদায়ের হতাশাও খানিকটা ঝেড়ে ফেলল তারা।
ম্যাচ শুরু থেকেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল—মায়ামি এদিন জয় ছাড়া কিছু ভাবেনি। চতুর্থ মিনিটেই লুইস সুয়ারেজের পাস থেকে ফাফা পিকল্ট নিখুঁত ফিনিশিংয়ে ম্যাচের প্রথম গোল করেন। এরপর গোলের ধারা অব্যাহত থাকে। ৩০তম মিনিটে রাইট-ব্যাক মার্সেলো ওয়েইগান্ট ব্যবধান বাড়ান, কিছুক্ষণ পর নিজেই এক গোল করেন সুয়ারেজ—স্কোরলাইন হয় ৩-০।
প্রথমার্ধের শেষদিকে নিউইয়র্ক কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। বায়ার্ন মিউনিখের সাবেক স্ট্রাইকার এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মোটিং একটি গোল পরিশোধ করেন। তবে সেটিই ছিল তাদের একমাত্র সান্ত্বনা।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ফয়সালা করে দেন মেসি। টানা চার ম্যাচে গোলহীন থাকার পর ৬৭ মিনিটে দুর্দান্ত এক একক প্রচেষ্টায় গোল করে স্কোরলাইন ৪-১ করেন, যা ম্যাচের চূড়ান্ত ফলাফল হয়ে দাঁড়ায়।
এ জয় মায়ামিকে উপহার দিয়েছে বহুল প্রত্যাশিত তিন পয়েন্ট। এখন ১০ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে তারা ইস্টার্ন কনফারেন্সের চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। ভ্যাঙ্কুভারের কাছে চ্যাম্পিয়ন্স কাপ থেকে বিদায় নেওয়ার পর এমন জয় দলকে নতুন উদ্দীপনা দেবে—এতে কোনো সন্দেহ নেই।
পুরো ম্যাচজুড়েই মায়ামির খেলায় ছিল গতি, ধার এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—স্পষ্ট লক্ষ্য। মেসি ও সুয়ারেজ আবারও প্রমাণ করলেন, প্রয়োজনের সময় তারা এখনও দলের মূল চালিকাশক্তি।

খেলাধুলা
ইনিংস ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ

ম্যাচের ফল কী হবে, সেটি বোঝা গিয়েছিল তৃতীয় দিনেই। চতুর্থ দিনে কেবল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলো শ্রীলঙ্কা। কলম্বো টেস্টে লঙ্কানদের কাছে এক ইনিংস এবং ৭৮ রানের বড় পরাজয়ের লজ্জায় ডুবলো বাংলাদেশ। এতে করে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে হেরেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৮.৪ ওভারে ৬ উইকেটে ১১৫ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। শেষ ভরসা ছিলেন লিটন দাস। তিনিই ছিলেন শেষ স্বীকৃত ব্যাটার। কিন্তু ভরসা দিতে পারেননি লিটন। চতুর্থ দিনের খেলা শুরু হতেই উইকেট দিয়ে এসেছেন। করেন ১৪ রান।
এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেনি বাংলাদেশ। ৪৪.২ ওভারে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৩ রানে অলআউট হয় টাইগাররা।
এর আগে ২১১ রান পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগের তিন ইনিংসের বেশি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট করেও রান করতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। ওই তিন ইনিংসে যথাক্রমে ০, ৪, ০ রানে আউট হয়েছিলেন তিনি।
আগের সব ব্যর্থতা ভুলতে কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে নতুন কৌশল অবলম্বন করেন বিজয়। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিকে ছুঁড়ে ফেলে এবার তিনি বেছে নেন আক্রমণাত্মক স্টাইল। কিন্তু ডানহাতি ব্যাটারের নতুন ভঙ্গিও কাজে দিলো না। কয়েকটি বাউন্ডারি হাঁকালেও ইনিংস বড় করতে পারেননি বাংলাদেশ ওপেনার।
১৯ বলে ১৯ রান (২টি চার ও একটি ছক্কা) করে আউট হয়ে গেছেন বিজয়। শ্রীলঙ্কার পেসার আসিথা ফার্নান্দোর বলে শর্ট লেগ অঞ্চলে পাবন রত্মায়েকের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের ফেরত গেছেন এই ব্যাটার।
বিজয়ের আউটের পরপরই পড়েছে চা বিরতির ঘণ্টা। তার আগে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ৬.৫ ওভারে ১ উইকেটে ৩১ রান করে বাংলাদেশ। সাদমান অপরাজিত ছিলেন ১২ রানে। তবে বিরতির পরের ওভারেই উইকেট দিয়েছেন সাদমান। প্রভাত জয়সুরিয়ারে কভার ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। করেছেন ১২ রান। ৩১ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর মুমিনুল হকও বেশিদূর এগোতে পারেননি। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ১৫ রানেই থেমেছে মুমিনুলের ইনিংস। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দলকে ভরসা দিতে পারেননি। তিনিও সেট হয়ে আউট। ১৯ রান করে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে এলবিডব্লিউ বাংলাদেশ দলপতি।
মুশফিকুর রহিম এই দলে সবচেয়ে অভিজ্ঞ। তার ওপর ভরসা ছিল। শুরুটাও করেছিলেন ভালো। সেট হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ৫৩ বল খেলা ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটলো প্রভাত জয়সুরিয়ার বলে বোল্ড হয়ে। ২৬ করে ফেরেন মুশফিক। ১০০ তুলতেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তখনই বলতে গেলে শেষ আশা।
ইনিংস হার বলতে গেলে অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় তখন। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে ছিলেন কেবল লিটন দাস। তার সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজ থাকলেও একটা আশা থাকতো। কিন্তু দিনের একদম শেষ বলে থারিন্ডু রথনায়েকে এলবিডব্লিউ করে ফিরিয়েছেন মিরাজকে (১১)।
শেষ ভরসা লিটন আউট হয়েছেন চতুর্থ দিনের শুরুতেই। প্রভাত জয়সুরিয়ার বল ডিফেন্ড করলেও এজ হয়ে ক্যাচ হয়েছেন লিটন। করেছেন ১৪ রান। জয়সুরিয়া নিজের পরের ওভারেই স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন নাঈম হাসানকে (৫)। এরপর লেজ গুটিয়ে দিতে খুব সময় নেয়নি শ্রীলঙ্কা। তাইজুল ইসলাম আর এবাদত হোসেন ৬ রান করে আউট হন।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ২৪৭ রান। জবাবে প্রথম ইনিংসে ৪৫৮ রানে গিয়ে থামে লঙ্কানরা। এতে ২১১ রানের বড় লিড পায় স্বাগতিকরা। দুই ইনিংসেও শ্রীলঙ্কার এক ইনিংসের রান পার করতে পারেনি বাংলাদেশ।
কাফি
খেলাধুলা
এশিয়ান কাপ আরচ্যারিতে সোনা জিতেছেন বাংলাদেশের আলিফ

সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত এশিয়ান কাপ আরচ্যারিতে বাংলাদেশের আরচ্যার আব্দুর রহমান আলিফ সোনা জিতেছেন। আজ রিকার্ভ পুরুষ ব্যক্তিগত ইভেন্টের ফাইনালে জাপানের মিয়াতা গাকুতোকে পরাজিত করেন ৬-৪ সেট পয়েন্টে।
প্রথম সেটে আলিফ ২৮ স্কোর করেন। তার প্রতিপক্ষ জাপানি আরচ্যার মিয়াতা করেন ২৭ পয়েন্ট। তাতে বাংলাদেশের আলিফ ২-০ সেট পয়েন্টে লিড পায়। দ্বিতীয় সেটে আলিফ ২৯ আর জাপানি আরচ্যার ২৮ করলে বাংলাদেশের সোনার সম্ভাবনা বাড়ে।
পরের দুই সেটের একটি জিতলে শেষ সেট প্রয়োজন হতো না। বাংলাদেশের আরচ্যার আলিফ তৃতীয় ও চতুর্থ সেটে হেরে যান৷ মিয়াতার ২৮ ও ২৭ স্কোরের বিপরীতে আলিফ করেন ২৭ ও ২৬। ফলে ৪-৪ সেট পয়েন্টে সমতা আসে।
পঞ্চম ও শেষ সেট শিরোপা নির্ধারণীতে পরিণত হয়। আলিফ শেষ সেটে ৩০ এর মধ্যে ২৯ পয়েন্ট সংগ্রহ করেন। জাপানি আরচ্যার মিয়াতা ২৬ পয়েন্ট পেলে আলিফ শেষ সেট জেতেন৷ এতে ৬-৪ সেট পয়েন্টে রিকার্ভ পুরুষ ব্যক্তিগত ইভেন্টে বাংলাদেশের সোনা নিশ্চিত হয়।
সোনা জেতায় তাৎক্ষণিকভাবে আলিফকে ১ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার আর্থিক পুরস্কার প্রদান করেন ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিব উদ্দিন আহমেদ চপল।
আলিফ বাংলাদেশের উদীয়মান রিকার্ভ আরচ্যার। বিকেএসপির এই আরচ্যার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলছেন কয়েক বছর যাবত। এশিয়ান কাপ আরচ্যারির সোনা জয় তার ক্যারিয়ারের সেরা সাফল্য। তার আগে বাংলাদেশের রোমান সানা এমন কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন৷
আলিফ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। তাই তাকে ও বিকেএসপির আরেক আরচ্যার সাগর ইসলামকে বিকেএসপি ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক পর্যন্ত বিকেএসপির তত্ত্বাবধানে রাখতে চায়। সাগর প্যারিস অলিম্পিকে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। আলিফও তার সম্ভাবনার পথ উন্মুক্ত করছেন।
খেলাধুলা
ক্লাবে হামজা চৌধুরীর বেতন: অবাক করা তথ্য!

বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন উদ্দীপনা এনেছেন ইংলিশ বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি ফুটবলার হামজা চৌধুরী। জাতীয় দলে তার যোগদানের পর থেকেই ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে হামজার বেতন, ভবিষ্যৎ ক্লাব এবং নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত এএফসি বাছাইপর্বে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেই তিনি ইংল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। শেফিল্ড ইউনাইটেডে ধারে খেলার মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২৭ বছর বয়সী হামজাকে ফিরতে হচ্ছে তার মূল ক্লাব লিস্টার সিটিতে, যেখানে তার সঙ্গে এখনো দুই বছরের চুক্তি বাকি রয়েছে।
বেতনের অঙ্ক: ক্লাবগুলো সাধারণত খেলোয়াড়দের বেতনের তথ্য গোপন রাখে, তবে ফুটবলারদের আয় নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ক্যাপোলজির তথ্য অনুযায়ী, শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলাকালীন হামজা প্রতি সপ্তাহে ৪১ হাজার ৪৭৩ ইউরো আয় করতেন, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা। দৈনিক হিসাবে তার আয় ছিল প্রায় ৫ হাজার ৯২৪ ইউরো (প্রায় ৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা)।
জানুয়ারির শেষ থেকে মে মাস পর্যন্ত মোট ১২৪ দিনে তার মোট আয় দাঁড়ায় প্রায় ৭ লাখ ৩৪ হাজার ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ কোটি টাকারও বেশি। শেফিল্ড ইউনাইটেডে তিনিই ছিলেন সর্বোচ্চ বেতনভোগী খেলোয়াড়, যেখানে বেন ব্রেরেটন দিয়াজ ও রিয়ান ব্রুস্টার তার সমান বেতন পেতেন। এর আগে লিস্টার সিটিতে তার সাপ্তাহিক আয় ছিল তুলনামূলকভাবে কম—১৭ হাজার ৭৭৪ ইউরো, অর্থাৎ প্রায় ২৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।
ইউরোপিয়ান ফুটবলে ভবিষ্যৎ: ইউরোপিয়ান ফুটবলে হামজার ভবিষ্যৎ নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। গ্রিসের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব অলিম্পিয়াকোস তাকে দলে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। গ্রিক ক্রীড়া সাংবাদিক গিওর্গস সানাকাস জানিয়েছেন, চ্যাম্পিয়নস লিগ সামনে রেখে দল গোছাতে চায় অলিম্পিয়াকোস এবং তাদের পরিকল্পনার অন্যতম অংশ হিসেবে রয়েছে হামজার নাম।
যদি শেষ পর্যন্ত চুক্তি চূড়ান্ত হয়, তাহলে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো মর্যাদাপূর্ণ আসরে খেলা প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হবেন হামজা চৌধুরী। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে তার শক্তিশালী উপস্থিতি, খেলার পড়ার দক্ষতা এবং মাঠের নিয়ন্ত্রণের কারণে অলিম্পিয়াকোসের কোচ হোসে লুইস মেন্দিলিবারের নজর কেড়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, অলিম্পিয়াকোস গ্রিসের সবচেয়ে সফল ক্লাবগুলোর একটি। তারা রেকর্ড ৪৮ বার গ্রিক লিগ এবং ২৯ বার গ্রিক কাপ জিতেছে। ২০২৪–২৫ মৌসুমে তারা গ্রিক সুপার লিগের শিরোপা জয়ের সুবাদে সরাসরি চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার সুযোগ পেয়েছে।
বাজারমূল্য: ট্রান্সফার মার্কেটের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে হামজার বাজারমূল্য ৪৫ লাখ ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৩ কোটি টাকা। লিস্টারের কাছ থেকে কী পরিমাণ অর্থে হামজাকে কিনতে পারে অলিম্পিয়াকোস, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
খেলাধুলা
ব্রাজিলের বিশ্বকাপ টিকিট নিশ্চিত, নায়ক ভিনিসিয়ুস

কার্লো আনচেলত্তির অধীনে প্রথম ম্যাচে গোলশূন্য ড্র দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল ব্রাজিল। তবে প্রথম জয় ও বিশ্বকাপে জায়গা পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি এই ইতালিয়ান কোচকে। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আজ ঘরের মাঠ সাও পাওলোর নেউ কুইমিকা অ্যারেনায় প্যারাগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।
সেলেসাওদের হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন রিয়াল মাদ্রিদের তারকা ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ম্যাচের ৪৪তম মিনিটে ম্যাথিয়াস কুনহার অ্যাসিস্টে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
আগের ম্যাচে ইকুয়েডরের বিপক্ষে বল দখল ও রক্ষণে শক্তিশালী থাকলেও আক্রমণে ছিল নিষ্প্রভ ব্রাজিল। তবে আজ প্যারাগুয়ের বিপক্ষে সেই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠে আনচেলত্তির দল।
সার্বিকভাবে ম্যাচে আধিপত্য ছিল ব্রাজিলেরই। বল দখলে: ৭৩% , শট নিয়েছে: ১১টি (৪টি লক্ষ্যে), প্যারাগুয়ের শট: মাত্র ৫টি
বিরতির আগে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়া ব্রাজিল দ্বিতীয়ার্ধেও নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখে। একাধিকবার তারা ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি।
এই জয়ের ফলে ১৬ ম্যাচ শেষে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ব্রাজিল। সমান ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে প্যারাগুয়ে রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
দক্ষিণ আমেরিকা (কনমেবল) অঞ্চল থেকে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলবে শীর্ষ ৬ দল। সপ্তম স্থানে থাকা ভেনেজুয়েলার পয়েন্ট ১৮। ফলে শেষ দুই ম্যাচে হারলেও ব্রাজিলের বিশ্বকাপ অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়ে গেছে।
এটি ছিল কার্লো আনচেলত্তির অধীনে ব্রাজিলের প্রথম জয়—তাও বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে। এখন দেখার বিষয়, অভিজ্ঞ এই কোচ কিভাবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের ষষ্ঠবারের শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দিতে পারেন।
এমএস
খেলাধুলা
বিরাট কোহলির নামে থানায় অভিযোগ

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) আইপিএল শিরোপা উদ্যাপন ঘিরে ১১ জনের প্রাণহানির ঘটনায় বিরাট কোহলির নামে এক ব্যক্তি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে কোহলিকে ‘আইপিএলের মাধ্যমে জুয়া’ প্রচার করে ভিড় উসকে দেওয়ার জন্য দায়ী করা হয়েছে। অভিযোগকারী ভারতের সাবেক অধিনায়কের বিরুদ্ধের মামলা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন।
তবে বেঙ্গালুরু পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়নি। প্রাণহানির ঘটনায় এরই মধ্যে যে মামলা হয়েছে, সেটির চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে।
৩ জুন আহমেদাবাদে পাঞ্জাবকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয় আরসিবি। পরদিন দলটি বেঙ্গালুরুতে ফিরলে ভক্ত–সমর্থকদের ঢল নামে। বিরাট কোহলি–রজত পতিদাররা যখন এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ভেতরে বিজয় উদ্যাপন করছিলেন, তখন স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড়ে পদদলিত হয়ে ১১ জন নিহত ও অনেকে আহত হন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮–এর খবরে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় সমাজকর্মী এইচ এম ভেঙ্কটেশ কাবন পার্ক থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভেঙ্কটেশ অভিযোগপত্রে লিখেছেন, কোহলি আরসিবি দলের একজন বিশিষ্ট সদস্য হিসেবে ‘আইপিএলের মাধ্যমে জুয়া’ প্রচার করে ভিড় উসকে দেওয়ার জন্য দায়ী। তাঁর দাবি, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ বা আইপিএল ‘কোনো খেলা নয়, বরং জুয়া, যা ক্রিকেট খেলাকে কলুষিত করেছে।’
দলের বিজয় উদ্যাপনের সময় বিপুলসংখ্যক ভক্তের ভিড় তৈরিতে কোহলির ভূমিকা এই বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী, যা পরবর্তী সময়ে পদদলিত হওয়ার ঘটনা সৃষ্টি করেছে বলে দাবি ভেঙ্কটেশের।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বেঙ্গালুরু দলের জুয়ায় অংশ নেওয়া এবং একটি নির্দিষ্ট স্থানে লোক জড়ো হতে উসকানি দিয়ে এ দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপট তৈরিতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম বিরাট কোহলি। অতএব আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি, দয়া করে বিরাট কোহলি এবং তার দলের সদস্যদের এই দুর্ঘটনার এফআইআরে অভিযুক্ত করুন এবং ব্যবস্থা নিন।
তবে বেঙ্গালুরু পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগটি গৃহীত হলেও এই পর্যায়ে কোনো নতুন এফআইআর দায়ের করা হবে না। একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, এরই মধ্যে দায়ের করা একটি মামলার অধীন চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে। বিষয়টি বিস্তারিত পর্যালোচনার অধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরসিবির উদ্যাপনে প্রাণহানির ঘটনায় পুলিশ যে মামলা করেছে, সেখানে বিবাদী করা হয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ফ্র্যাঞ্চাইজি, কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এবং ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডকে। এ তিন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে অবহেলা, ভিড় ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতা এবং প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়াই অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য দায়ী করা হয়েছে।
এরই মধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হচ্ছেন আরসিবির বিপণনপ্রধান নিখিল সোসালে, ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুনীল ম্যাথিউ, একই প্রতিষ্ঠানের টিকেটিং অপারেশনস লিড সুমান্থ এবং সিনিয়র ইভেন্ট ম্যানেজার কিরণ কুমার।