আন্তর্জাতিক
ক্ষেপণাস্ত্রের ‘সফল পরীক্ষা’ পাকিস্তানের

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যখন চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে, ঠিক তখনই ইসলামাবাদ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। শনিবার পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ৪৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ‘আবদালি অস্ত্র ব্যবস্থা’ (এডব্লিউএস) নামের একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ করেছে তাদের সামরিক বাহিনী। ইসলামাবাদ আরও দাবি করেছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাটি তাদের ‘ইন্দুস’ সামরিক মহড়ার অংশ।
ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভি একাধিক সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, প্রতিবেশী পাকিস্তানের এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে ‘গুরুতর উসকানি’ হিসেবে দেখতে পারে নয়াদিল্লি।
তবে পাকিস্তানের ভাষ্য, ‘‘সামরিক বাহিনীর অপারেশনাল প্রস্তুতি যাচাই এবং ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত নেভিগেশন সিস্টেম ও অন্যান্য কারিগরি সক্ষমতা প্রমাণ করাই ছিল এডব্লিউএস ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের মূল উদ্দেশ্য।’’
পাকিস্তানের সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং সামরিক বাহিনীর প্রধানরা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য তাদের বাহিনীর অপারেশনাল প্রস্তুতি ও কৌশলগত দক্ষতার ওপর ‘‘পূর্ণ আস্থা’’ রেখেছেন।
পেহেলগামের হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্ত রেখা লাগোয়া এলাকায় উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে উভয় দেশের নিরাপত্তা বাহিনী একে অপরের দিকে গুলিবর্ষণ করছে, যা অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের শামিল।
কাশ্মীরে হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি করেছিলেন, ভারত আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারে। যদিও তার সেই দাবির ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বাস্তবে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। এর আগে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফও একই ধরনের আশঙ্কার কথা বলেছিলেন।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি নাগরিক নিহত হন। এই হামলার পর ভারতে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি আরও জোরালো হয়েছে।
ভারত দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, পাকিস্তান কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন দিয়ে আসছে। এই বিতর্কিত ভূখণ্ড নিয়ে প্রতিবেশী দেশ দুটি এর আগেও দুবার যুদ্ধে জড়িয়েছে।
পেহেলগামের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ‘সিন্ধু নদ পানি বণ্টন চুক্তি’ বাতিল এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের দ্রুত দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভারতের এই পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ‘সিমলা চুক্তি’ বাতিল করেছে। এই হামলার পর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তান থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে এবং পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজকে তাদের জলসীমায় প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক ইরানি সেনাসহ গ্রেপ্তার ১৩০ জন

একের পর এক অভিবাসনপ্রত্যাশী ইরানি নাগরিকদের গ্রেপ্তার করছে যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস পুলিশ (ইউ এস ইমিগ্রেশন অ্যান্ট কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইসিই)। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে মোট ১৩০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ইরানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ইরানের একজন সাবেক সেনাসদস্যও রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি-ডিএইচএস) সূত্রে জানা গেছে- গ্রেপ্তার ওই ইরানি সেনার নাম রিদওয়ার কারিমি। মার্কিন নাগরিকের বাগদত্ত সঙ্গী হিসেবে একটি বিশেষ ভিসায় গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশ করেছিলেন রিদওয়ার। যুক্তরাষ্ট্রে এসে ওই নাগরিককে বিয়েও করেছিলেন, কিন্তু তারপর আর নিজের ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস হালনাগাদ করেননি। অর্থাৎ তিনি যে বিয়ে করেছেন- তা স্থানীয় অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেননি।
গত ২২ জুন যেদিন ইরানের তিন পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন বিমান বাহিনী, তার পরের দিন তাকে আলবামা অঙ্গরাজ্য গ্রেপ্তার করে কাস্টমস পুলিশ।
বর্তমানে আলবামায় মার্কিন কাস্টমস পুলিশের বন্দিশালায় আছেন রিদওয়ার। তার অন্তস্বত্ত্বা স্ত্রী মরগান কারিমি স্বামীর বুধবার মার্কিন সাময়িকী নিউজউইকে স্বামীর মুক্তির জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
রিদওয়ার কারিমিসহ ১৩০ জন ইরানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত সপ্তাহে। তাদের সবার বিরুদ্ধে অবৈধ অভিবাসন এবং কয়েক জনের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
কাস্টমস পুলিশসূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে আইসিই বন্দিশালায় ৬৭০ জন অনুপ্রবেশকারী ইরানি নাগরিক আছেন।
আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় নিহত আরও ৭১ ফিলিস্তিনি

গাজায় বিতর্কিত মানবিক প্রকল্পের আড়ালে পরিচালিত খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রগুলো এখন ‘জল্লাদখানা’য় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন খাবারের লাইনে অপেক্ষারত সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকাজুড়ে অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৭ জুন) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজা সিটি থেকে দির আল-বালাহ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এসব হামলায় হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রও রেহাই পায়নি। হাসপাতাল সূত্র জানায়, নিহতদের বড় অংশ নারী ও শিশু।
বিশেষ করে, নেতজারিম করিডোরে অবস্থিত খাদ্য সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষারত অবস্থায় গুলিতে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আহত হয়েছেন।
গাজার সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে অন্তত ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চার সপ্তাহ আগে মার্কিন ও ইসরায়েলি সমর্থিত জিএইচএফ-এর বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে কমপক্ষে ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪ হাজার ৬৬ জন আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে এসব ত্রাণ কেন্দ্রকে ‘মৃত্যুর ফাঁদ’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে এসব ঘটনায় এখনও ৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বৃহস্পতিবার আবারও গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধের পক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি এই সহায়তা কার্যক্রমকে ইসরায়েলের জন্য ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর প্রতি সহানুভূতির কোনো স্থান নেই।
আল জাজিরা জানিয়েছে, হামাসের হাতে সহায়তা যাওয়ার আশঙ্কায় ইসরায়েল গাজায় দুই দিনের জন্য সহায়তা সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এরইমধ্যে উত্তর গাজাগামী সহায়তা করিডোরগুলো বৃহস্পতিবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা দুর্ভিক্ষের মুখে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য সরাসরি সহায়তা প্রবেশের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।
অন্যদিকে, গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে তেল আবিবে তাদের পরিবার জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলি সরকারের প্রতি যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থে জিম্মিদের বলি দেওয়া হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রের মুখে জোরালো থাপ্পড় মেরেছে ইরান: খামেনি

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র বিজয় অর্জন করেছে ও জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের মুখে জোরালো থাপ্পড় মেরেছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই কথা বলেন তিনি।
যুদ্ধের সময় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল।
বিবৃতিতে খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে নামে, কারণ তারা বিশ্বাস করেছিল- হস্তক্ষেপ না করলে জায়োনিস্ট শাসনের (ইসরায়েল) সম্পূর্ণ পতন হবে। কিন্তু এই যুদ্ধ থেকে তারা কিছুই পায়নি। বরং ইরান বিজয় অর্জন করেছে ও যুক্তরাষ্ট্রের মুখে জোরালো থাপ্পড় মেরেছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) যুদ্ধবিরতির পর এটি ছিল খামেনির প্রথম প্রকাশ্য বিবৃতি। এক সপ্তাহের অনুপস্থিতি ভেঙে তিনি এমন এক সময় জাতির সামনে এলেন, যখন তার সুস্থতা ও নেতৃত্বে থাকা নিয়েই ব্যাপক জল্পনা চলছে।
আন্তর্জাতিক
ইরানের ঘরে ঘরে ‘বিজয়’ উৎসব

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত যুদ্ধবিরতির পর ঘরে ঘরে বিজয়ের আবহ বিরাজ করছে ইরানে। দেশটির শীর্ষ নেতারা যুদ্ধবিরতিকে ‘ঐতিহাসিক জয়’ হিসেবে বর্ণনা করছেন। সরকারপক্ষ বলছে, এই অর্জন প্রমাণ করে ইরান এখন কেবল আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক শক্তিও।
ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ বলেন, “এই বিজয় পশ্চিমাদের শিং ভেঙে দিয়েছে। পুরো বিশ্ব আজ আমাদের সক্ষমতা নতুন চোখে দেখছে।” পার্লামেন্টের স্পিকার গালিবাফের উপদেষ্টা মেহদি মোহাম্মাদি একে “নতুন যুগের সূচনা” বলে অভিহিত করেছেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি বলেন, “পারমাণবিক কর্মসূচি এখন আর কেউ থামাতে পারবে না। আমাদের অটল অবস্থান কেউ নাড়াতে পারবে না।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার ট্রুথ সোশ্যালে জানান, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতির আগেই ইরান ইসরায়েলের দিকে একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে যেখানে অন্তত চারজন নিহত হয়। বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা এখনো অনিশ্চিত হলেও ইরান এই মুহূর্তে এটিকে কৌশলগত বিজয় হিসেবে ব্যবহার করছে জনমত গঠনে এবং আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে। সরকারি প্রচারণা ও ঘরে ঘরে ‘বিজয় উৎসব’ মূলত অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও জাতীয়তাবাদী আবেগকে জোরদার করতেই।
কাফি
আন্তর্জাতিক
তেহরানে জোরালো হামলার নির্দেশ, পাল্টা হুঙ্কার ইরানের

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ইরানে জোরালো হামলার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। যদিও ইরানের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতিতে কোনো হামলা চলানো হয়নি বলে জানানো হয়। তারপরেও যদি ইসলায়েল হামলা চালায় তাহলে ভয়াবহ জাবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিবিসি, আল-জাজিরা ও সিএনএন এ তথ্য জানায়।
ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করে, তারা ইরান থেকে আসা ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে।
এরপর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, ইরান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। জবাবে তেহরানে জোরালো হামলা করতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান জেনারেল স্টাফ জানান, ইরানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জবাবে সামরিক বাহিনী ‘শক্তির সাথে’ জবাব দেবে।
ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ সামাজিক মাধ্যম এক্সে জানান, ‘তেহরান কাঁপবে’।
এদিকে, ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর ইরান থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়নি।
ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সতর্ক করে বলেছে, আরও যেকোনো আগ্রাসনের জবাবে ইরান একটি সিদ্ধান্তমূলক, দৃঢ় এবং সময়োপযোগী প্রতিক্রিয়া জানাবে।
উল্লেখ্য, কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।
হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও দশজন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ৫০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার (২৩ জুন) রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
তবে, ট্রাম্পের এমন দাবি নাকচ করে দেয় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তখনও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। পরদিন বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২ টায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইরানি-ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই যুদ্ধবিরতি সম্মতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
কাফি