আইন-আদালত
আবরার ফাহাদ হত্যা: হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। সম্প্রতি ১৩১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
এর আগে, ২০২৪ সালের ১৬ মার্চ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।
বুয়েটের ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন আবরার ফাহাদ। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর নির্মম নির্যাতনে নিহত হন তিনি। ওই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সে সময় উত্তাল হয়ে উঠেছিল বুয়েটসহ সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেইসঙ্গে প্রতিবাদ বিক্ষোভে সোচ্চার হয়ে উঠেছিল দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল তখনকার ফ্যাসিস্ট সরকার। এ ঘটনার জের ধরেই তীব্র আন্দোলনের মুখে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
আবরার ফাহাদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ওই ঘটনার পর যে বর্ণনা দিয়েছিলেন তাতে বলা হয়েছিল, ঘটনার দিনই কুষ্টিয়ার বাড়ি থেকে বুয়েটে এসে শেরে বাংলা হলে নিজের ১০১১ কক্ষে এসেছিলেন আবরার। ফেসবুকে ভারতবিরোধী একটি পোস্টের জের ধরে রাত ৮টার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। পরে রাত ৩টার দিকে জানা যায় যে আবরারকে হত্যা করে একতলা ও দোতলার সিঁড়ির মাঝামাঝি ফেলে রাখা হয়েছে। পরে জানা যায় আবরারকে ‘শিবির আখ্যা’ দিয়ে দুই দফায় দুটি কক্ষে নিয়ে মারধর করা হয় এবং পরে বুয়েট মেডিকেলের ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর মধ্যে খবর পেয়ে রাত ২টার দিকে টহল পুলিশের একটি দল হল গেটে গেলে তাদের হলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে চারটার দিকে পুলিশ আবার হলে যায়। এরপর ডাক্তার মৃত ঘোষণার পর তারা মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে বলা হয় যে, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এ মামলায় আরও পাঁচ শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার ওরফে অপু, মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাকারুল ইসলাম ওরফে তানভির, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মুনতাসির আল জেমী, মো. মিজানুর রহমান মিজান, এস এম মাহমুদ সেতু, সামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মোর্শেদ ওরফে অমর্ত্য ইসলাম, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম (পলাতক), মোহাম্মদ মোর্শেদ উজ্জামান মণ্ডল ওরফে জিসান (পলাতক), মুজতবা রাফিদ (পলাতক)। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন অমিত সাহা, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, মো. আকাশ হোসেন, মুহতাসিম ফুয়াদ ও মো. মোয়াজ ওরফে মোয়াজ আবু হোরায়রা।
নিম্ন আদালতের রায় খতিয়ে দেখতে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে তা অনুমোদনের জন্য মামলার যাবতীয় কার্যক্রম উচ্চ আদালতে পাঠাতে হয়। এটাকেই ডেথরেফারেন্স বলা হয়। পরে কারাবন্দি আসামিরা জেল আপিল করেন। পাশাপাশি অনেকে ফৌজদারি আপিলও করেন। বিগত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আবরার ফাহাদের নাম ফের আলোচনায় আসে। শিক্ষার্থীদের কাছে আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে আবরার ফাহাদের নাম জায়গা করে নেয়। শিক্ষার্থীরা তার নামেও সে সময় স্লোগান দেন। গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আববার ফাহাদ হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর গত বছরের ২৮ নভেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চে এই ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আইন-আদালত
পুতুলের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ

এবার প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ রোববার এ আদেশ দেন। দুদক ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করে দুদক। শুনানি নিয়ে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
এর আগে ১০ এপ্রিল প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির মামলায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। আর প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা পৃথক তিনটি মামলায় ১৩ এপ্রিল শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
তিনটি মামলাতেই শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করে দুদক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
এস আলমের আরও এক কোটি টাকার জমি জব্দের আদেশ

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে থাকা ৫৬৩ দশমিক ৫৭ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের আবেদন সূত্রে জানা যায়, এসব জমির দলিল মূল্য এক হাজার এক কোটি ৭৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাতপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পদসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির পূর্বে সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে পরে উক্ত টাকা উদ্ধার করা দুরূহ হয়ে পরবে।
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা ১৫৯ দশমিক ১৫ একর জমি জব্দের আদেশ দেন ঢাকার আদালত। এসব জমি ঢাকা ও চট্টগ্রামে অবস্থিত। আর এসব জমির বর্তমান বাজার মূল্য ৪০৭ কোটি টাকা বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদনে উল্লেখ করেন।
তারও আগে গত ১৭ এপ্রিল এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা এক হাজার ৩৬০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। এসব হিসাবে দুই হাজার ৬১৯ কোটি সাত লাখ ১৬ হাজার টাকা রয়েছে। গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা।
এছাড়াও গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের আট হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। গত ১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একই দিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
পারভেজ হত্যার প্রধান আসামি পাঁচ দিনের রিমান্ডে

রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলামের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুবের আদালত এ আদেশ দেন। এদিন তাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মাইন উদ্দিন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড নামঞ্জুর ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গত বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে গাইবান্ধা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৪)। তার মিডটার্ম পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় বন্ধু তরিকুল, সুকর্ণ, ইমতিয়াজসহ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে র্যানকন বিল্ডিংয়ের সামনের একটি পুরি-শিঙাড়ার দোকানে দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলছিলেন, হাসাহাসি করছিলেন।
তাদের পেছনেই দাঁড়ানো ছিল ইউনিভার্সিটি অব স্কলারসের দুজন ছাত্রী। পারভেজ তাদের নিয়ে হাসাহাসি করেছে কি না সেটি জানতে আসেন মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জহর গিফফারি পিয়াস (২০) ও মাহাথির হাসান (২০) নামের তিনজন। পরে বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। যা দেখা যায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজেও। পরে এ ঘটনা প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস পর্যন্ত গড়ায়।
শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হতেই গেটের সামনে পারভেজের ওপর হামলা হয়। তাতে ছুরিকাঘাতে মারা যান প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৪)।
এ ঘটনায় শনিবার (১৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেছেন। এতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন– মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জহর গিফফারি পিয়াস (২০), মো. মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজি (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। এ ছাড়া অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ২১ এপ্রিল এ মামলায় গ্রেপ্তার আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) ও আল আমিন সানির (১৯) সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এদের মধ্যে ২৩ এপ্রিল কামাল আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। একইদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বনানী থানার কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব মো. হৃদয় মিয়াজীর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এদিকে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এ মামলায় গ্রেপ্তার একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মাহাথির হাসান আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
এশিয়াটিকের সকল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ

দেশের প্রভাবশালী বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউকেশনস লিমিটেডের ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
এ-সংক্রান্ত চিঠি সবগুলো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছে সিআইসি।
সিআইসির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, দেশের প্রভাবশালী বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউকেশনস লিমিটেডের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছি।’
সিআইসি কর্মকর্তারা জানান, এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউকেশনস লিমিটেডের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি তদন্ত চলছে। আয়কর নথিতে দেখানো সম্পদ, আয় ও খরচের বাইরে তাদের আর কোনো আয় ও সম্পদ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে সূত্র জানিয়েছে, এশিয়াটিক মার্কেটিং কমিউকেশনস লিমিটেডের সাথে সম্পর্ক আছে এমন ব্যক্তিদের লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে সিআইসি। এছাড়া বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও অন্যদের তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে। কর গোয়েন্দারা ইতিমধ্যে কয়েকজনের লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করেছেন এবং তাদের ব্যাংক লেনদেন ফ্রিজ করার প্রক্রিয়া চলছে।
একজন সিনিয়র সিআইসি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এশিয়াটিকের সম্পদ ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত অন্যান্য কয়েকজনের লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করছি। এখন পর্যন্ত আমরা কয়েকজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছি এবং তাদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার প্রক্রিয়ায় রয়েছি।’
তবে ব্যাংকগুলোর কাছে এখনও অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ না পাঠানোয় তিনি কোনো ব্যক্তির নাম জানাতে রাজি হননি।
সিআইসির কোনো কর্মকর্তাও রেকর্ডের বিবরণী দেখাতে রাজি হননি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
এস আলমের আরও ১৫৯ একর জমি জব্দ

শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা ১৫৯ দশমিক ১৫ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার আদালত। এসব জমি ঢাকা ও চট্টগ্রামে অবস্থিত। যার বর্তমান বাজারমূল্য ৪০৭ কোটি টাকা বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদনে উল্লেখ করেছেন।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং সংগঠনের অভিযোগটি অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য টিম গঠন করা হয়েছে। সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎপূর্বক নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের স্থাবর সম্পদসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন।
অনুসন্ধান নিষ্পত্তির আগে এসব সম্পদ হস্তান্তর হলে পরবর্তীসময়ে তা উদ্ধার করা দুরূহ হয়ে পড়বে। তাই মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা এসব সম্পদ জব্দের আদেশ দেওয়া প্রয়োজন।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা এক হাজার ৩৬০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। এসব হিসাবে দুই হাজার ৬১৯ কোটি সাত লাখ ১৬ হাজার টাকা রয়েছে। তার আগে গত ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার পাঁচশো টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪ টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের আট হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত।
গত ১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একইদিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে।